মুন্সিগঞ্জে মিরকাদিম পৌরসভায় দুই মাস বয়সী এক শিশুকে ঘর থেকে চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পৌরসভার গোপালনগর এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে শিশু চুরির এ ঘটনা ঘটে।
নবজাতক মো. আযান স্থানীয় শরীফের ছেলে। এ বিষয়ে চুরি হওয়া শিশুর মামা মোক্তার সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সকালে মা শ্রাবণী বেগম তার দুই মাসের ছেলে আযানকে বসতঘরে খাটে ঘুমিয়ে রেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। এ সময় ঘরের ভেতরে অন্য কেউ ছিলেন না, বাড়ির অন্যরাও নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় শিশুকে চুরির ঘটনাটি ঘটে। শ্রাবনী বেগম ঘরে এসে দেখে আযান আর ঘরে নেই। পরে খোঁজাখুঁজি করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিশুর মামা মোক্তার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে কারো কোনো বিরোধ নেই। তবে কেউ আমার ভাগ্নেকে চুরি করে থাকতে পারে। আমরা আমাদের ভাগনেকে ফিরে চাই।’
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে শিশুকে খুঁজে বের করা হবে যত দ্রুত সম্ভব।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে ফুয়াদ আল খতিবের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চায় পরিবার। শনিবার বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পর হল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে সহপাঠিরা।
ফুয়াদ আল খতিবের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামে। তিনি চাপাদহ এতিমখানা দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট আমিনুল ইসলামের ছেলে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন ফুয়াদ। তিনি থাকতেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর সিঙ্গেল কক্ষে। তার মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছে।
ফুয়াদ আল খতিবের এমন আকস্মিক মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ মা-বাবাসহ পুরো পরিবার। তারা ফুয়াদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চান।
ফুয়াদের চাচা গাইবান্ধা শহরের আদর্শ দ্বি-মুখী আলিম মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট রুহুল আমিন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এরকম একটি আকস্মিক মৃত্যুরে খবরে আমরা হতবিহ্বল অবস্থার মধ্যে আছি। গতকালই (শনিবার) ছেলেটা বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। এরপর আমরা ওর মৃত্যুর খবর পাই।’
তিনি জানান, ফুয়াদ শুক্রবার অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা দেয়ার জন্য বাড়িতে এসেছিলেন। পরীক্ষা দিয়ে পরদিন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
ধোপাডাঙ্গা গ্রামে ফুয়াদের এক বন্ধুর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিংয়ের বরাত দিয়ে রুহুল আমিন বলেন, ‘ফুয়াদ ওর বন্ধুকে শনিবার রাত ১২টার দিকে ম্যাসেজের মাধ্যমে জানায় যে ওর প্রাইমারির নিয়োগ পরীক্ষা ভাল হয়েছে। ওই ম্যাসেজ আমি দেখেছি। ফুয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে চ্যাটিং করছিল।’
এক প্রশ্নের জবাবে চাচা রুহুল আমিন বলেন, ‘ফুয়াদ অত্যন্ত নরম ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। বাড়িতে আসার পর ওর মাঝে কোনো অস্বাভাবিকতা আমরা দেখিনি। আত্মহত্যা করতে পারে- এমন ঘটনা আছে বলে আমাদের মনে হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শুনেছি ওর (ফুয়াদ) মুখ দিয়ে নাকি লালা-রক্ত পড়েছে। শরীর কালো হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি আমরা বুঝতে পারছি না। শুনেছি তদন্ত হচ্ছে। আমরা ওর মৃত্যুর প্রকৃত কারণটা জানতে চাই।’
শনিবার বাড়ি থেকে ফিরে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে মশারি টানিয়ে সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে পড়েন ফুয়াদ। আগের দিন জার্নি করে ফেরায় সকালে তার রুমে তাকে কেউ ডাকতে যায়নি। রোববার দুপুর পর্যন্ত ঘুম থেকে না উঠলে পাশের কক্ষের এক বন্ধু ডাকাডাকি করেন। সাড়া না পেয়ে তিনি ফুয়াদের শরীর ধরে নাড়া দেন। এ সময় তিনি দেখতে পান যে ফুয়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ছে এবং পুরো শরীর কালো হয়ে গেছে। পরে কয়েক বন্ধু মিলে বিকেল ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় ফুয়াদকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান যে ফুয়াদ কয়েক ঘণ্টা আগেই মারা গেছেন।
বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দিয়ে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় নির্বাচনি তফসিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
‘ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে রোববার এই রিট দায়ের করা হয়।
সংগঠনটির চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আছেন ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।
রিটে আইন সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ সচিব, মান্ত্রপরিষদ সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিবাদী করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী।
তবে রিট দায়েরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, আজকে আমি কোনো রিট দায়ের করিনি। এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
রিটের একটি কপি নিউজবাংলার হাতে এসেছে, যেখানে আইনজীবী হিসেবে ইউনুছ আলীর নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে।
রিটের বিষয়ে ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত বলেন, ‘গত নির্বাচনে আমরা দেখেছি ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ আসনে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসন, পুলিশ ও নিজেদের সশস্ত্র লোকদের ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র দখল ও অন্যদের ভোট প্রদানে বাধার সৃষ্টি করেছেন।
‘সংসদ বহাল রেখে জালিয়াতিমুক্ত নির্বাচন অসম্ভব। প্রহসনমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছি।’
চলতি বছরের ৮ মে উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসির নিবন্ধন পেয়েছে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
ইসিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের নিবন্ধন নম্বর ৪৬। দলটির নির্বাচনী প্রতীক হচ্ছে আপেল।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরীকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
রোববার মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘এই ওসি তাদের (বিএনপি-জামায়াত) কাছ থেকে টাকা খেয়ে কোম্পানীগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর যড়যন্ত্র করছেন। এই ওসি পুলিশের খরচ আছে বলে আমার কাছ থেকে এক লাখ টাকা খেয়েছেন। তিনি যে আদালতেই যান আমি প্রমাণ দিতে পারবো। আর তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন। আমরা ছেড়ে দেব না। আমরাও সব জানি।’
ওসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তুমি কী? তোমাকেও চিনি, তোমার এসপিকেও চিনি। এসব বন্ধ করো। এসব বন্ধ করো বলে দিচ্ছি। নাহলে নিষ্কৃতি পাবে না। আর ভালো না লাগলে কোম্পানীগঞ্জ ছেড়ে চলে যাও।’
এ সময় কাদের মির্জা বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু লোক বিএনপি-জামায়াত থেকে টাকা খেয়ে তাদের ধরছে না। এই কোম্পানীগঞ্জের ওসি আমার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। এটার প্রমাণ আছে। এটা আমার নেত্রীকে আমি বলবো।
‘মানুষ ঘরে গরু রাখতে পারে না। এটার সাথে পুলিশ কি জড়িত না? পুলিশের কারণে মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। পুলিশের কারণে সালিশের নামে বাণিজ্য চলছে। দুই পক্ষ থেকে টাকা নিয়ে আর কথা বলে না। মুখ বন্ধ করে রাখে। পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় বিএনপি ডাকাতি, মানুষ হত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও করছে।’
বিএনপি-জামায়াতকে কোম্পানীগঞ্জের ওসি ও নোয়াখালীর এসপি উস্কানি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন কাদের মির্জা। তিনি বলেন, ‘ওসি ও এসপি বিএনপি-জামায়াতকে উস্কানি দিয়ে কোম্পানীগঞ্জে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। এটার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবো। এরপর যদি সংশোধন না হয় তাহলে আমরা নারী-পুরুষ সবাইকে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জে ঝাড়ু মিছিল করবো।’
চুরি ও ডাকাতির সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গরু চুরি এগুলো এদের (পুলিশ) কাজ। এরা এগুলার সাথে জড়িত। পুলিশ ধরাও পড়েছে। ধরা পরে নাই? চর এলাহীতে রিকশা চুরি করার সময় ধরা পড়ছে। রিকশা চুরি করার সময় বলরাম নামে একটা হিন্দু ছেলেকে হত্যা করেছে। এটার জন্য পুলিশ দায়ী।
‘কোম্পানীগঞ্জে হরতাল-অবরোধের দিন তারা মাঠে থাকে না। এখানে কয়েকটা থাকে আমাদেরকে পাহারা দেয়ার জন্য। আর কোথাও পুলিশ নাই। আমরা কি এসব সময় অতিক্রম করি নাই? যেসব জায়গায় জামায়াত-বিএনপির লোকজন আছে তাদের পাহারায় সেখানে পুলিশ থাকে দিন-রাত।’
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘এই যে এখানে সরকারি জায়গা সব পুলিশ দখল করে খাচ্ছে। তারা সরকারি বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পায়; তবু সরকারি জায়গায় দোকান দিয়ে ভাড়া নেয়ার দরকার আছে নাকি? আমাদের রিকশা স্ট্যান্ড নাই, সিএনজি স্ট্যান্ড নাই। তারা এখানে ঘর বানিয়ে ভাড়া খাচ্ছে। আপনারা সোচ্চার থাকেন, ভয় পাবেন না।’
এ সময় তার ব্যবস্থাপনায় নির্মিত একটি বহুতল মার্কেট দেখিয়ে বলেন, ‘এটাও তাদের দখলে ছিল। আমি সরকার থেকে অ্যাকোয়ার করে এটা নিয়েছি। তখন ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। তারা এগুলো দখল করে এসপিকে টাকা দেয়। এসপি নোয়াখালীর কিছু সাংবাদিক লাগিয়ে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, “আপনারা বলেন- আমার এখানে কোনো ‘হেলমেট বাহিনী’ আছে? আপনাদের চোখে পরছেনি? উপস্থিত নেতাকর্মীরা এ সময় সমস্বরে বলেন, ‘না’।
“এগুলো নাকি আমার অনুগত। আমি নাকি তাদেরকে লালনপালন করি। এটা ওসি বলেন, এটা এসপি বলেন। তারা রিপোর্ট দেন। সব তথ্য আমার কাছে আছে। পুলিশের কোনো কাজ নাই, এখানে এসে বসে থাকে। আমাদের নেতাকর্মীদের পাহারা দেয়ার জন্য।”
কাদের মির্জার অভিযোগের বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘ওনার অভিযোগগুলো সত্য নয়। কোম্পানীগঞ্জে পরিস্থিতি তো এখন শান্ত, কোনো সমস্যা তো নেই। এখানে অনর্থক অশান্ত ও অস্থির হওয়ার মতো কিছু তো দেখি না। আমরা আমাদের রুটিন ওয়ার্ক করতেছি। এর বাইরে অতিরিক্ত কিছু করার মানে হয় না। এখানে যেটা রুটিন ওয়ার্ক সেটা করলেই এনাফ এবং ভোট সু্ষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হবে।’
মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হককে পুলিশের তত্ত্বাবধানে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রোববার দুপুরে মিন্টোরেডে নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান তিনি। এর আগে শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হারুন বলেন, আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া রমনা থানায় তার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করেছি।
তিনি বলেন, আদম তমিজী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে বিভিন্ন ধরনের অসংলগ্ন কথা বলেছেন। তিনি যে দেশে খেয়ে পড়ে মানুষ হয়েছেন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে দেশে আছে সেই দেশেরই পাসপোর্টটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে পুড়িয়ে ফেলেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আদম তমিজী ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছেন তাকে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধার করার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন সেনাকে বলছেন সরকার তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাকে উদ্ধার করার জন্য। আরও বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, সেটিও আপনারা দেখেছেন।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আসলে এসব কথা শুনে আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, আসলেই তিনি কী মানসিক ভারসাম্যহীন। তা না হলে একটি লোক এভাবে কথা বলে কেন? তিনি অনেকগুলো বিয়ে করেছেন, পারিবারিক অনেক সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন কারণেই মনে হয়েছে তিনি ভারসাম্যহীন। যার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভারসাম্যহীন এটা তো আমরা বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, তাই তিনি যদি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে থাকেন তার জন্য আদম তমিজীকে ডাক্তারের কাছে পাঠিয়েছি। সেখানে ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি যদি মানসিকভাবে ঠিক থাকেন তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, যদি ডাক্তাররা বলেন, পুরোপুরি ভারসাম্যহীন কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যদি করে থাকেন তাহলে এর পেছনে কেউ আছেন কি না, সেটা তদন্ত করে বের করবো।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলের বৈধতা বিষয়ে আনা রিটের ওপর আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য রেখেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বাসসকে জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছে আদালত।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১০ ডিসেম্বর দিন ধার্য রাখা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
গত ২৯ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। এ বিষয়ে রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় তফসিল স্থগিতের নির্দেশনাও চাওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) রিটে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়েছে।
আবেদনে জাতীয় সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় গত ১৫ নভেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
গত ২৮ নভেম্বর ইউনুছ আলী আকন্দ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠান।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে বলে নোটিশে দাবি করা হয়। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট আবেদনের কথা বলা হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে এ রিট করেন ইউনুছ আলী আকন্দ।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ৩০ নভেম্বর।
আরও পড়ুন:তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মৃত্যুতে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে অর্ধবেলা বিচারকাজ থেকে বিরত থেকেছে সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রোববার সকালে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আপিল বিভাগ বিচারকাজ বন্ধ রাখে।
সকালে বিচারকাজ শুরু হলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আপিল বিভাগে উপস্থিত হয়ে বিচারকাজ বন্ধ রাখার আবেদন করেন।
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে যার অবদান অনস্বীকার্য, গণতন্ত্রের জন্য যার অবদান রয়েছে, এমনকি তিনি সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার প্রতি আমাদের সম্মান জানানো উচিত।’
পরে আদালত অর্ধবেলা বিচারকাজ বন্ধ রাখে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মৃত্যু হয় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে সুপ্রিম কোর্টে তার জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়-৫ নবীনগর আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের নগদ টাকার পরিমান স্ত্রীর নগদ টাকার চেয়ে ১০০ গুণেরও কম। তবে ব্যাংকে জামানতের পরিমানে স্ত্রীর চেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। শেষ পাঁচ বছরে সাঈদের আয়ের পরিমান কমলেও, বেড়েছে মামলার সংখ্যা।
নির্বাচনের হলফনামায় সাঈদ ও তার স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পেশ করা বিবরণ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সাঈদের সম্পদর বিবরণী বিশ্লেষণ করে জানা যায়, বর্তমানে তার নগদ টাকার পরিমান ১৭ হাজার ৭৮০ টাকা, স্ত্রীর নগদ অর্থ ২০ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮৩৯ টাকা। নিজের নামে ৬০ ভরি, স্ত্রীর রয়েছে ৫০ ভরি। এ ছাড়া সাঈদের প্রাইজ বন্ড পরিমান আছে বিগত পাঁচ বছরের মতোই।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা সম্পদ বিবরনী থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে মমিনুল হক সাঈদের নগদ টাকা ছিলো ১২ লক্ষ ৬৩ হাজার ১৯৭ টাকা, স্ত্রীর নগদ কিছুই ছিলোনা। সেসময় নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার খাত শূন্য ছিল তার। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংক জমার পরিমান ৪০ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯২ টাকা।
২০১৮ সালে সাঈদের হলফানামায় উল্লেখ থাকা তার ও স্ত্রীর কৃষি-অকৃষি জমি, দালান বা বাড়ি বর্তমান হলফনামায় উল্লেখ নেই।
রাজধানীতে ২০১৯ সালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) চালানো ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের সময় আলোচনায় আসেন মমিনুল হক সাঈদের নাম। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা।
২০১৫ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা চালু করেছিলেন সাঈদ। র্যাবের ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের সময় গোপনে দেশ ছাড়েন তিনি।
এরপর থেকেই তিনি ‘ক্যাসিনো সাঈদ’ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে অভিযান থেমে গেলে দেশে ফিরেন সাঈদ।
মমিনুল হক সাঈদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামে। এবার এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি আর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ফয়জুর রহমান বাদল
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহগীর আলম বলেন, ‘সব প্রার্থীই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা জমা দিয়েছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, তবে কারও ব্যাপারে কোনো আপত্তি আসলে তা আবার যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য