চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সদস্য ও দৈনিক প্রথম আলোর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মোশাররফ শাহ ও সম্প্রতি একাধিক সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চবিসাস ও চিটাগং ইউনিভার্সিটি এক্স জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (সিইউজেএন)।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) নেতৃবৃন্দ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
সাংবাদিকদের ওপর বারবার হামলার পেছনে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বক্তারা। এসময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোরের ডেপুটি এডিটর তপন চক্রবর্তী চবি উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কেন তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব মানুষ। উনি কখনও এ ধরনের ঘটনা মেনে নেবেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারেন, আমরা প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। একদিনের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’
চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীরা সবসময় হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। মোশাররফের ওপর হামলা একেবারেই পরিকল্পিত। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় নামকাওয়াস্তে শাস্তি হয়েছে। আপনি (উপাচার্য) যদি শাস্তি দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে আমরা বুঝে নেব, আপনি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন।’
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘আজকে সাংবাদিকদের মানববন্ধনে দাঁড়াতে হয়েছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা রাষ্ট্র- সবার জন্য বিব্রতকর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কাজ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মোশাররফ শাহের ওপর যে হামলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই প্রত্যাশা করি।’
সিইউজেএন-এর সভাপতি ও দৈনিক আমাদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘এ ক্যাম্পাসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ব্যবহার করে ছাত্রলীগ নৈরাজ্য চালাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও জয় বাংলা স্লোগানকে ব্যবহার করে নিয়োগ থেকে শুরু করে সকল অনিয়মে এদের হাত রয়েছে। শিবির থেকে ছাত্রলীগ- কারও চরিত্র পরিবর্তন হয়নি। আজকে যারা ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন নৈরাজ্য চালাচ্ছে, খবর নিয়ে দেখেন, এরা আগে কোন দলের অনুসারী ছিল।’
সিইউজেএন-এর সাধারণ সম্পাদক, চবিসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সবুর শুভ বলেন, ‘গত দুই বছরে চবিতে সাংবাদিকদের ওপর বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মানবিক আচরণ পেয়েছে।’
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ম. শামছুল ইসলাম বলেন, আজকে আমাদের সহকর্মী মোশাররফ ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। যা কখনোই আমরা আশা করিনি। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লোক দেখানো ব্যবস্থা নেয়। অথচ যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাদের বিভাগে শাস্তির নোটিশ যায় না। তারা অনায়াসে পরীক্ষায় অংশ নেন। আজকে বহিষ্কৃত, অছাত্ররা হলে অবস্থান করছে। এতে করে আপনাদের ব্যর্থতা সুস্পষ্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা যদি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চান, তাহলে হতে পারেন। আপনার এ চেয়ার কিছুদিন পরে থাকবে না। কিন্তু আজকে যারা ক্যাম্পাস সাংবাদিক, তারা আরও বড় বড় সাংবাদিক হবে। তারা আপনাদের ছাড়বে না।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক খন্দকার আলী আর রাজি বলেন, ‘মারজান আক্তার, দোস্ত মোহাম্মদ, মোশাররফ শাহ- একে একে আমাদের বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। প্রশাসন ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করতে পারেনি।’
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডেইলি স্টারের ব্যুরো প্রধান শিমুল নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের দলীয়করণ এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, উনারাও কথা বলতে এবং ব্যবস্থা নিতে সাহস পান না। খুব বেশিদিন নেই যখন আপনাদের ওপরও তারা এমন হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না। কারণ আপনারা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য এ উচ্ছৃঙ্খলতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। একদিন তারা আপনাদেরও মাথা ভেঙে দেবে। সেদিনও আমরা লিখব।’
সিউজেএনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সমকালের বিভাগীয় সম্পাদক সারোয়ার সুমন বলেন, ‘এ ক্যাম্পাসে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। এখানে আমরাও সাংবাদিকতা করেছি।’
উপাচার্যের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি ছাত্রলীগের মাথা না হয়ে সকল শিক্ষার্থীর মাথা হন। এমন শাস্তির ব্যবস্থা করুন যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলার সাহস না পায়।’
সমাপনী বক্তব্যে চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘যারা মোশাররফ শাহের রক্ত ঝরিয়েছে, তারা দেশের সকল সাংবাদিকদের রক্ত ঝরিয়েছে। সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে। আজকে সাংবাদিকরাই যদি নিরাপদ না হন, তাহলে এখানে শিক্ষার্থীরা কতটুকু নিরাপদ? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই- প্রতিটি ঘটনায় শুধুমাত্র আশ্বস্ত করেছেন, অথচ পরবর্তীতে বিচারের নামে প্রহসন করেছেন।’
চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শাহাব উদ্দিন নিপু, সিইউজেএন-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমান, চবিসাসের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবাব আব্দুর রহিম ও সদস্য মারজান আক্তার।
আরও পড়ুন:সেলফি পরিবহনের বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের ৪০ ব্যাচের সাবেক এক ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিবহনটির ২০টি বাস আটক করেছেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থানা বাসস্ট্যান্ডের সামনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে জাবির ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুপুর ১২টা থেকে বাস আটক শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম রুবেল পারভেজ। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায়।
রুবেল মানিকগঞ্জের ঝিটকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এমটিও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী ফারজানা, মেয়ে ফারিহা আর মাকে নিয়ে ধামরাইয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রুবেলের মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে তার বন্ধু ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেলফি পরিবহনের বাস আটক করতে শুরু করেন।
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী পারভেজকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে সেলফি পরিবহনের বাস। এই পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মহাসড়কে চলাচল করে। প্রতিনিয়ত তারা মানুষের তাজা প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।
‘আমরা এই মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে চাই। পরিবহন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে বাসগুলো ছাড়া হবে না।’
নিহত রুবেলের বন্ধু তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এসএসসি পাসের পরই ওর বাবা মারা যায়। কলেজ জীবন থেকেই ধামরাইয়ে ভাড়া বাসায় থাকত। ধামরাই সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ছেলেটা সারা জীবন সংগ্রাম করেছে।
‘এখন বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও নিজের পরিবারের জন্য সে কিছু করার সুযোগ পেল না। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রনি হোসাইন বলেন, ‘পুলিশ নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে। মালিকপক্ষ যেন নিহত রুবেলের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয় এবং সেলফি পরিবহনের লাইসেন্স বাতিল করে, সে বিষয়ে আমরা হাইওয়ে থানা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হাইওয়ে থানার পরিদর্শক আবু হাসান বলেন, ‘সেলফি পরিবহনের বাসটি রেখে এর চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:২৭ বছর পেরিয়ে আটাশে পা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘আটাশে চবিসাস, প্রাণখোলা উচ্ছ্বাস’ স্লোগানে ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।
পদযাত্রা ও বেলুন উড়িয়ে সকাল ১১টার দিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও প্রবন্ধ উপস্থাপন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ পরিবেশন করা তাদের কর্তব্য। সাংবাদিকদের চিন্তাভাবনা করে প্রতিটি বাক্য তৈরি করে জনসম্মুখে আনা উচিত।
‘এই বিশ্ববিদ্যালয় আপনাদেরই। বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেগেটিভ নিউজ করলেই খুব বেশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তা না। আপনাদের চিন্তা করতে হবে আপনারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করছে। আপনাদের সংবাদগুলো দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়।’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি কাউকে অপছন্দ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় আপনাদের। তাই ইতিবাচক লেখাগুলোও তুলে ধরতে হবে। আমাদের খারাপ কাজ কতটুকু হয়েছে জানি না, কিন্তু ভালো কাজের নিদর্শনও কম না।’
উপাচার্য বলেন, ‘আপনারাই পারেন জাতির কাছে সত্য তুলে ধরতে। বাঙালি হারতে জানে না। বাঙালি জীবন দিবে তবুও মাথা নত করবে না। আমাদের শিক্ষার্থীদের মানবিক হতে হবে যা কিছু সত্য ও সুন্দর তার সঙ্গে থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন:বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন খুকৃবির (খুকৃবি) ৩০ জন শিক্ষক। এর মধ্যে রয়েছেন ২৩ জন বিভাগীয় প্রধান, চারজন হল প্রাধ্যক্ষ এবং তিনজন আইকিউএসি সেলের প্রধান।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে শিক্ষক সমিতির কাছে তারা নিজেদের পদত্যাগের বিষয়টি অবহিত করেন। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগপত্রগুলো জমা দিতে যান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি থেকে সবার পদত্যাগপত্র নিয়ে আসা হয়েছিল। এতগুলো পদত্যাগপত্র নিতে ঝামেলা হওয়ায় একটি ফরোয়াডিং লেটার দিয়ে পদত্যাগপত্রগুলো পাঠাতে বলা হয়েছে।’
মঙ্গলবার সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষকরা। এ নিয়ে শিক্ষকদের দ্বিতীয় দফা আন্দোলন শুরু হয়। এর আগে গত অক্টোবরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা দ্রুত পাওয়ার দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন করেছিলেন তারা। এবার শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
শিক্ষকদের দাবি, খুকৃবির চলমান সঙ্কট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পাঠানো হয়। ওই নির্দেশনা মেনে নিয়েছিলেন শিক্ষকরা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ওই নির্দেশনা হুবহু না মেনে নিজেদের মত করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ৩৮ জন শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে গেছে।
খুকৃবির শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিদ্যুৎ মাতুব্বর বলেন, ‘৩২ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না মানায় বিভিন্ন পদের ৩০ জনই শিক্ষক সমিতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ওই পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে- এমন অভিযোগে ৭৩ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্তের প্রেক্ষিতে ওই নির্দেশনা দেয়া হয়। গত জুন মাসে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নিয়োগের ব্যাপারটি পুনরায় তদন্ত করার জন্য আবেদন করেন শিক্ষকরা। আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৬ নভেম্বর পুনরায় তদন্তের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ওই নির্দেশনা পরিপালন করে অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য বলা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার মধ্যে ছিল- খুকৃবির প্রথম ও সাবেক উপাচার্য মো. শহীদুর রহমান খানের ছেলে-মেয়েসহ ৬ স্বজনের নিয়োগ বাতিল করা। এর মধ্যে একজন শিক্ষক এবং ৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন।
নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের জন্য আগের যে নির্দেশনা ছিল তার মধ্যে শুধু সাবেক উপাচার্যের মেয়ে ছাড়া সবার ক্ষেত্রে তা স্থগিত করা হয়। তবে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত বাতিল হলেও ২৪ শিক্ষকের পদোন্নতি স্থগিত ও এক শিক্ষকের পদোন্নতি বাতিল, একজন শিক্ষকের পদাবনতি করা হয়। আর অন্য ৪৬ জন শিক্ষক ও ৩ কর্মচারীর নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়।
যে ২৪ জন শিক্ষকের পদোন্নতি স্থগিত রাখা হয়, তার মধ্যে রয়েছেন ২০ জন প্রভাষক ও ৪ জন সহকারী অধ্যাপক। ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্টিকেলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কমপক্ষে একটি আর্টিকেল প্রথম লেখক হিসেবে প্রকাশ না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ওই ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা পুরোপুরি পরিপালন করার দাবি করছেন শিক্ষকরা।
খুকৃবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা পরিপালনের জন্য তা সিন্ডিকেটের ১৪তম সভায় তোলা হয়। গত ১৮ নভেম্বর ওই সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় যাদের চাকরি বাতিলের কথা বলা হয়েছিল তারা উচ্চ আদালতে মামলা করেছেন। এ কারণে ওই ব্যাপারটি নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। নির্দেশনার অন্য দুটি সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট সভা নিজেদের মতো করে নিয়ে মন্ত্রণালয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম হলো, কোনো কিছু পাস করতে হলে তা সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার মধ্যে চারটি ধারা ও চারটি উপধারা ছিল। যে নির্দেশনায় চাকরি বাতিলের কথা বলা হয়েছিল, মামলা থাকায় সেখানে সিন্ডিকেট সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। দুটি নির্দেশনা বাদে অন্য সবগুলো নির্দেশনা হুবহু পরিপালন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আশিকুল আলমের পদাবনতির ব্যাপারটিতে তদন্তের জন্য নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কারণে তিনি সব শিক্ষকদের বুঝিয়ে পদত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছেন।’
খুকৃবির প্রথম উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মো. শহীদুর রহমান খান বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। তার চার বছর মেয়াদে অনুমোদন পাওয়া ৪৪৭ পদের মধ্যে ছেলে-মেয়ে, শ্যালক, ভাতিজাসহ ৪২৬ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগ বাড়াতে চার বছরে পাঁচ অনুষদের ৪৩ বিভাগ চালু করা হয়।
নিয়োগে অনিয়ম দেখে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন সিন্ডিকেটের পাঁচ সদস্য। চিঠিতে তারা লিখেছিলেন, ‘খুকৃবিতে নিয়োগের শুরু থেকেই অস্বচ্ছতা ও আত্মীয়করণ দেখা যাচ্ছে। বিষয়টির যথাযথ তদন্ত করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অদক্ষ জনবল ও আত্মীয়করণের হাত থেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।’
নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ২০২০ সালের নভেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটি করে ইউজিসি। এক বছরের বেশি সময় পর তদন্ত কমিটি ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৩ আগস্ট উপাচার্যের ছেলে-মেয়েসহ ৯ স্বজন ও ৭৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। এর আগে অনিয়ম হওয়ায় কয়েক দফা নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি।
আরও পড়ুন:ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দায়িত্বরত দুই আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চবির ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটে দায়িত্ব পালন করা ওই দুজনকে বহিষ্কার করা হয়।
অভিযুক্তরা হলেন মো. আশিকুর রহমান ও মো. আনিসুর রহমান।
বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা কমান্ড্যান্ট এএইচএম সাইফুল্লাহ হাবিব।
এ বিষয়ে ছাত্রীরা অভিযোগপত্রে লেখেন, আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের ২০২১-২২ সেশনের ছাত্রী। সম্প্রতি আমাদের কয়েকজন ছাত্রী ফরেস্ট্রিতে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মী দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছি।
অভিযোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তারা (অভিযুক্ত দুই আনসান সদস্য) অপ্রস্তুত অবস্থায় মেয়েদের ছবি তোলেন, ইচ্ছাকৃত মেয়েদের ওয়াশরুমে বসে থাকেন, ফরেস্ট্রির রাস্তায় মেয়েদের দিকে বাজেভাবে তাকান, মেয়েদের দেখলে শিস দেন, গান গায় এবং ডিউটি বাদ দিয়ে একাডেমিক ভবনে ঘোরাফেরা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ বলেন, ‘ছাত্রীরা অভিযোগ দিয়েছে কিছুদিন আগের একটা অনুষ্ঠানে ছাত্রীদের অনুমতি ছাড়া তারা (অভিযুক্ত দুই আনসান সদস্য) ছবি তুলেছেন৷
‘এ ছাড়া তাদের একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে লেডিস ওয়াশরুমের আশেপাশে দেখেছে৷ এটা নিয়ে আজ ছাত্ররা দুই আনসার সদস্যকে আটকিয়ে রেখে আমাদের খবর দেয়। ছাত্রীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে দুই আনসার সদস্যকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করে জেলা কমান্ড্যান্ট বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির চট্টগ্রাম জেলা কমান্ড্যান্ট এএইচএম সাইফুল্লাহ হাবিব বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের চবি থেকে প্রত্যাহারপূর্বক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট দিলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পঞ্চম কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ূন কবির। তিনি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মঙ্গলবার এ নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫-এর ১২ (১) ধারা অনুসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরীকে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হলো।
আরও বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫-এর ধারা ১২-এর উপধারা ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ অনুসারে তিনি ট্রেজারারের দায়িত্ব পালন করবেন। ট্রেজারার পদে তার নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে ৪ (চার) বছর হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর জারিকৃত ২৬৭ নম্বর প্রজ্ঞাপন অনুসারে ট্রেজারার পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ অর্থ সম্মানী হিসেবে পাবেন।
এ ছাড়াও বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন এবং সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যেকোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিকম (অনার্স) এবং এমকম মার্কেটিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি জাপানের ইয়োকোহামা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ভোক্তা আচরণে মার্কেটিংয়ে এমবিএ এবং পিএইচডি করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের ২৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ তার মেয়াদ শেষ করেন।
আরও পড়ুন:বিশ্বের বৃহত্তম ইকমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে চাকরি পেয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের যাদব সূত্রধর।
চাকরি পাওয়ার বিষয়টি তিনি মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন।
যাদব সূত্রধর কুবির ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেটে অবস্থিত অ্যামাজনের হেড কোয়ার্টারে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
চাকরির পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাহারিসি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ডিস্টেন্স এডুকেশনে প্রফেশনাল মাস্টার্স প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত। এর আগে তিনি বাংলাদেশের একটি কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ছিলেন।
অ্যামাজনে চাকরির বিষয়ে জানতে চাইলে যাদব সূত্রধর বলেন, ‘সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অ্যামাজনে নিয়োগ পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। অ্যামাজনের নির্বাচন প্রক্রিয়া কঠিন ছিল, তবে সফল হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক ও পেশাগত অভিজ্ঞতা অ্যামাজনে চাকরি পেতে সহায়তা করেছে। আজকের এ পর্যায়ে আসতে পেরে আমার মেন্টর, সহযোগী এবং শিক্ষামূলক পৃষ্ঠভূমির প্রতি অসীম কৃতজ্ঞ।’
শিক্ষার্থীর সাফল্যে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এ রকম সাফল্য প্রতিটি শিক্ষকের নিকট সবচেয়ে বড় পাওয়া। শিক্ষকদের সঠিক পাঠদান ও গাইডলাইনে এ অর্জন সম্ভব। সারা বিশ্বে মেধার দক্ষতা দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরছে আমাদের শিক্ষার্থীরা।’
আরও পড়ুন:সাংবাদিকতায় বৈশ্বিক ও দেশীয় প্রবণতা ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোকে মোকাবিলা করার উপায় নিয়ে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশে (এআইইউবি) একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার ‘দ্য ট্রেন্ডস অব কনটেম্পরারি জার্নালিজম: লোকাল গ্লোবাল ইন্টারঅ্যাকশন’ শীর্ষক শিরোনামের এ সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া ও ম্যাস কমিউনিকেশন বিভাগ।
সেমিনারের মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন ডিবিসি টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ ও সিইও মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এআইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন- এআইইউবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম এবং মিডিয়া ও ম্যাস কমিউনিকেশন বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ মাসুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আফরোজা সোমা।
গণমাধ্যমের ওপর প্রযুক্তির প্রভাবের গুরুত্ব তুলে ধরে এআইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এ পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি করতে হবে। এজন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের সঙ্গে নতুন নতুন প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
সেমিনারের বক্তা কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী মিডিয়ার রূপান্তর এবং সাংবাদিকদের নতুন দক্ষতা বিকাশ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ধীরে ধীরে দর্শক এবং পাঠকের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া, নিউজ মিডিয়া, মাল্টিমিডিয়া স্টোরি টেলিং এবং ডিজিটাল স্টোরি টেলিং এখন জায়গা করে নিচ্ছে।
ডিবিসি টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ ও সিইও মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম বাংলাদেশের সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন শিল্পে প্রযুক্তি কীভাবে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে- সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে মাল্টিটাস্কিং শেখার ওপর বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, ‘এখন আর আগের মতো শুধু রিপোর্টিং, এডিটিং বা শুধু ক্যামেরার কাজ জানাটা যথেষ্ট নয়। আজকের যুগের সাংবাদিকদেরকে এগুলো সবই একসঙ্গে জানতে হবে। নইলে, অনলাইনের এই যুগে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য