চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অনিয়মে বহিষ্কারের আইনটি যেন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। চবি শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কৃত হলেও ক্যাম্পাসেই দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায় তাদের।
বহিষ্কৃত হয়েও তারা থাকছেন হলে, করছেন নিয়মিত ক্লাস, দিচ্ছেন পরীক্ষা। আবার রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাদের নিয়মিত অংশ নিতে দেখা যায়।
চবি ক্যাম্পাসে এক সাংবাদিককে মারধর করে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন শাখা ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা। অথচ বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিতে দেখা যায় তাদের।
ওই দুই নেতা হলেন শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত হোসেন রায়হান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারের মেয়াদের মধ্যে বহিষ্কৃত কেউ ক্যাম্পাসে কিংবা হলে অবস্থান করতে পারবেন না। এ ছাড়া কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমেও অংশ নিতে পারবেন না।
এ নিয়ে গত ১৪ আগস্ট প্রক্টরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ, তবে চিঠি দিয়েও মেলেনি প্রতিকার।
আক্ষেপ করে ভুক্তভোগী এ সাংবাদিক বলেন, ‘বহিষ্কার হওয়ার পরও দোষীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে অংশগ্রহণ ও হলে অবস্থানসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বহিষ্কারাদেশ শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।
‘বহিষ্কৃতরা আমাকে দেখে উপহাসমূলক আচরণ এবং আমার দিকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে তাকিয়ে থাকে। তাদের এমন আচরণে আমি খুবই শঙ্কিত। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় আমি অনিরাপদ বোধ করছি।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালেদ মাসুদ ও আরাফাত হোসেনসহ শাখা ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা-কর্মীরা পুরো ক্যাম্পাসে বাইক শোডাউন দিচ্ছেন। ওই সময় খালেদ মাসুদের বাইকের পেছনে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাদাফ খানকে দেখা যায়। আলাদা বাইকে আরাফাত রায়হানসহ সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা সাদাফ খান বলেন, ‘সে (খালেদ মাসুদ) ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের বিষয়টা প্রশাসন দেখবে, আমরা তো প্রশাসন নই। সে আমাদের ছোট ভাই, ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে থাকতেই পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী যাদের বহিষ্কার করা হবে, তারা কেউ ক্যাম্পাসে থাকতে পারবে না। এটা নিশ্চিতের দায়িত্ব প্রক্টরিয়াল বডির।’
চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসনের বহিষ্কার কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শুধুই লোক দেখানো। বহিষ্কৃত কিংবা শাস্তিপ্রাপ্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে হলে অবস্থান করছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিচ্ছে। প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গেও বৈঠক করছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। প্রশাসনের এরূপ নির্লিপ্ততার নিন্দা জানাই।’
এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি তাদের দেখলে ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রদের শাসনগাছা বাস টার্মিনালের চালক ও হেলপারদের বিরুদ্ধে ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে৷ এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় শাসনগাছা বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ১৫ ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের কারো মাথা ফাটা, কারো শরীরে কোপের চিহ্ন দেখা গেছে।
আহতরা হলেন- পরিসংখ্যান দ্বিতীয়বর্ষের শাকিল, রসায়ন তৃতীয়বর্ষের হাসান ও আরাফাত, বাংলা বিভাগের চতুর্থবর্ষের হাবিব, অর্থনীতি বিভাগের প্রথমবর্ষের ইমরান, ইসলামের ইতিহাস তৃতীয়বর্ষের কাহহার, গণিত চতুর্থবর্ষের রতন, রাষ্টবিজ্ঞান চতুর্থবর্ষের জামশেদ, ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয়বর্ষের আরমান, অর্থনীতি চতুর্থ বর্ষের নিলয়, রাষ্টবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের সাকিব এবং রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সানি।
আহত আব্দুল কাহহার জানান, সোমবার বিকেলে রাস্তা পারাপারের সময় তাকে বাস চাপা দেয়। এতে তিনি আহত হয়ে চালককে সাবধানে গাড়ি চালাতে বলেন। এ সময় সঙ্গে থাকা অপর ছাত্ররা তর্কে জড়িয়ে পড়েন বাসচালক ও হেলপাররা। এ সময় ওই দুই ছাত্রকে বাস স্ট্যান্ডে আটকে রাখে চালক ও হেলপাররা।
পরে আটকে থাকা ছাত্ররা সহপাঠীদের জানালে সহপাঠীরা তাদের উদ্ধার করতে যান। এদিকে বাস চালক ও হেলপাররা ছাত্রদের প্রতিহত করতে রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও ইটপাটকেল নিয়ে অবস্থান নেয়। ছাত্ররা বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে আহত ছাত্রদের আনতে গেলে অতর্কিত হামলা করে বাসের চালক ও হেলপাররা।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, আহত ৯ ছাত্র কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে বর্তমানে সেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন হাসপাতালে ভর্তি। পাশেরর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ৫ জন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ উপাধক্ষ্য মৃণাল কান্তি গোস্বামী বলেন, ‘আমাদের ১৫ ছাত্রের চিকিৎসা চলছে। একজনের মাথায় ১২টি সেলায় লেগেছে। কেউ হাতে, কেউ বা পায়ে মারাত্মক ব্যাথা পেয়েছে।’
কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, ঘটনা শুনে তিনি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
টেকসই করপোরেট নিশ্চিত করার স্বার্থে জবাবদিহিতার অনুশীলন এবং অন্তযোগাযোগ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার বিকেল ৩টায় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের (সিইউবি) অডিটোরিয়ামে ‘টেকসই করপোরেট ও জবাবদিহিতা অনুশীলন’বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এ মতামত দেন। সেমিনারটি সিইউবি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েলিংটন ও সিইউবির বিশিষ্ট শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইউবির বোর্ড অফ ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। সভাপতিত্ব করেন সিইউবির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. গিয়াস ইউ আহসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত সেমিনারে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আজকের এত সুন্দর এই আয়োজনের জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই ডিএসই-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েলিংটনের সিনিয়র লেকচারার ড. আইনুল ইসলাম ও ড. ইয়িনকা মোসেসসহ উপস্থিত সম্মানিত অতিথিদের।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের এই অংশগ্রহণ এবং মূল্যবান বক্তব্য উপস্থিত লেকচারার ও শিক্ষার্থীদের অবশ্যই টেকসই করপোরেট ও জবাবদিহিতা অনুশীলনের জন্য দারুণ ভূমিকা রাখবে। গ্লোবালাইজেশনের এ যুগে এমন আয়োজন সত্যি একে অন্যের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়ানোর পাশাপাশি আন্তসম্পর্কগুলোও বৃদ্ধি করবে। এমন সেমিনারের ফলে আপনাদের দক্ষতা এবং জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এ খাতে টেকসই উন্নয়নও করানো সম্ভব হবে।’
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ডিএসই-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড.এ টি এম তারিকুজ্জামান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েলিংটনের সিনিয়র লেকচারার ড. আইনুল ইসলাম ও ড. ইয়িনকা মোসেস, অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক মামুন, পিএইচডি, প্রধান পরামর্শক, বোর্ড অফ ট্রাস্টি; এম নাসির উদ্দিন, পিএইচডি, অধ্যাপক/গবেষণা পরিচালক, এনআইসিইউ ফেলোশিপ, টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটি।
সেমিনারে বক্তারা করপোরেট টেকসই এবং জবাবদিহিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। যেখানে ক্যাপিটাল মার্কেট, করপোরেট গভর্ন্যান্স, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং পরিবেশগত দায়বদ্ধতা সম্পর্কিত বিষয়গুলোর তথ্য ও উপদেশ তাদের বক্তব্যে উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, ‘টেকসই করপোরেট কালচারের সঙ্গে টেকসই উন্নয়নও সম্পৃক্ত। আর উন্নয়ন মানে একটি দেশের জিডিপিতে অবদান রাখা এবং সেই দেশ উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়া। একেকটি প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট, মডার্ন, এডুকেটেড, ভিশনারি, প্রো-অ্যাকটিভ- এককথায় সুযোগ্য কর্মীবাহিনী দিয়ে সাজাতে ও তাদের ধরে রাখতে হলে কোম্পানিকেই সবার আগে উদ্যোগী হতে হবে। ফলে টেকসই করপোরেট চর্চা লাগবে।’
তারা আরও বলেন, ‘করপোরেট কালচার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ও প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে। এটি কোনো আইন পাস বা অফিস অর্ডার ইম্পোজ করার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় না। করপোরেট কালচারের অন্যতম বিষয় হলো প্রফেশনালিজম। বিজনেস গ্রোথ তো প্রতিষ্ঠান অবশ্যই চায়, কিন্তু সাসটেইনেবল গ্রোথ, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে কাজ করতে হবে। যার ফলে অবশ্যই টেকসই করপোরেট চর্চাটা লাগবে।’
সেমিনারে উঠে আসা মূল বিষয়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য টেকসই করপোরেট এবং জবাবদিহিতা কেবল সাধারণ শব্দ নয়, বরং একটি সমৃদ্ধ জাতির অপরিহার্য উপাদান। টেকসই অনুশীলন গ্রহণ করে এবং নৈতিক মান বজায় রেখে যে কোনো প্রতিষ্ঠান সবার জন্য আরও সমৃদ্ধ এবং ন্যায়পরায়ণ ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে বলে উপস্থিত বক্তারা মন্তব্য করেন।
এর আগে সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয় এবং পরে তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। সেমিনারে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের (সিইউবি) সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া নিয়মিত চালু না রাখার অভিযোগ উঠেছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালকের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের কথা না ভেবে নিজের সুবিধা মতো ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
কুবির আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখার বিধান না থাকলেও সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার দুপুরের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত পরিচালক মান্নু ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখেন। এতে বাধ্য হয়ে খাবারের জন্য বাইরের হোটেলগুলোর দিকে ঝুঁকতে হয় শিক্ষার্থীদের।
যার ফলে অতিরিক্ত সময় এবং অর্থ ব্যয় হয় বলে জানান তারা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেক সময় উচ্চ মূল্যে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ আছে বাইরের হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও পচা, বাসি ও মানহীন খাবার পরিবেশন, পোড়া তেলে পচা মাছ ভাজা, নিম্নমানের চাল, পোকা খাওয়া সবজি ও বাসি তরকারিসহ খাবারের প্লেটে পোকা-মাকড় পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক মান্নুর বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারহান বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়ার নানান সমস্যার বিষয়ে আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি অথচ এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা নিতে দেখা যায় না। আমরা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের উপর নির্ভর করতে হয়। এভাবে যদি তাদের খেয়াল খুশি মতো ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখে দিনশেষে আমাদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে শনিবারেও খোলা রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি।’
নিয়মিত ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খায় এমন আরেক শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘কখনো খাবারে চুল, পোকা, বাসি খাবারও পরিবেশন করছে এ ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবেশ কখনো শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশের অংশ হতে পারে না। যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।’
বন্ধ রাখার বিষয় জানতে চাইলে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদার বলেন, ‘এটা নতুন কী? এটা অনেক আগে থেকে এভাবে পরিচালনা করে আসছি। শনিবারে ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের খাবারের চাহিদা অনেক কম থাকে। দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখলে লোকসান হয়। তাই আমি শনিবারের বন্ধ রাখি। এ বিষয়ে প্রশাসন অবগত আছে।’
শনিবারে ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের চাপ কম থাকলেও পাঁচ আবাসিক হলের শিক্ষার্থীর একটা অংশ এ ক্যাফেটেরিয়ার উপর নির্ভর করে থাকে। এমতাবস্থায় ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখাটা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না শিক্ষার্থীরা।
বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অবগত আছে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত আছি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমি মান্নুকে বলে দিব যেন শনিবারে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখে।’
এ কথা বলার পরও এ শনিবার আসলেও আগের চিত্র দেখা গেছে, বরাবরের মতই তালা ঝুলছে কুবির ক্যাফেটারিয়া।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে (জবি) সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে সবাইকে নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
উপাচার্যের সভাকক্ষে শনিবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নানাক্ষেত্রেই সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমি বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত আছি। আমার দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যেতে চাই। তাই সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সদ্য প্রয়াত উপাচার্যের অকাল মৃত্যুর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কাজ পিছিয়ে আছে। সেগুলো দ্রুত সময়ে শেষ করে কাজে গতিশীলতা আনার জন্য শনিবারেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় সাংবাদিকদের ভূমিকা থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষ সাংবাদিক তৈরি করতে আমি সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। যাতে তারা আরও বেশি দক্ষ হয়ে আমাদের সহযোগিতা করতে পারে।’
উপাচার্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আস সাইফ এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে প্রশাসনের সঙ্গে সাংবাদিকরা একযোগে কাজ করে যাবে বলে জানান।
এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মুজাহিদ বিল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইউছুব ওসমান, দপ্তর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান, অর্থ সম্পাদক রিদুয়ান ইসলামসহ সংগঠনটির অন্য নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে গাছ, বই ও কলম উপহার দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখার উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ষষ্ঠ ও প্রথম নারী উপাচার্য।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুভূত হওয়া ৫ দশমিক ৬ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের দেয়ালের ফাটল বড় করেছে।
খসে পড়েছে ছাদের বিভিন্ন আস্তরণ, ভেঙে পড়েছে রিডিং রুমের দরজার উপরে থাকা কাঁচের জানালা। ভেঙে পড়া এই কাঁচের উপর দিয়ে রিডিং রুম থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থীর হাত-পা ছিলে গেছে।
ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে একজন শিক্ষার্থী তিন তলা থেকে নিচে লাফ দিয়েছেন। তবে তিনি আহত হননি।
এদিকে এত কিছুর পরও এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিতে হলে আসেননি হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান। এটা আরও বেশি ক্ষুব্ধ করে তুলেছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো জগন্নাথ হলের অক্টোবর ট্রাজেডি চান না। অবিলম্বে হল সংস্কার বা নতুন হল নির্মাণের দাবি তাদের। একইসঙ্গে তারা শিক্ষার্থীবান্ধব প্রাধ্যক্ষ এবং হাউজ টিউটর চান।
এর আগে ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর প্রাচীন জগন্নাথ হলের একটি আবাসিক ভবনের ছাদ ধসে সংঘটিত হয় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান ৩৯ জন ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি। এরপর থেকেই প্রতি বছর দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এটি জগন্নাথ হল ট্রাজেডি নামেও পরিচিত।
আহমেদ উল্লাহ সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নতুন করে আর জগন্নাথ হলের মতো মুহসীন হল ট্রাজেডি দেখতে চাই না। প্রশাসনের ঘুম ভাঙ্গবে কবে? কোটি কোটি টাকা অপব্যয় করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বেষ্টিত মল চত্বরকে নষ্ট করা হচ্ছে। অথচ মুহসীন হলের শিক্ষার্থীদের জীবন কখন নাই হয়ে যায় তা বলা মুশকিল। এটা নিয়ে আশ্বাসের পর আশ্বাসই দেয়া হয়েছে। কোনো প্রকার দৃশ্যমান কাজ হয়নি। অথচ শিক্ষকদের, কর্মচারীদের জন্য ভবন তৈরী হলে তা ৬ মাস, ১ বছর, ২ বছরেই দৃশ্যমান হয়।’
তিনি বলেন, ‘এটা প্রকাশ্যে বৈষম্য, অবহেলা। অবিলম্বে বিল পাশ করে মুহসীনসহ সকল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিপরীতে নতুন ভবন তৈরী করা হোক। না হয় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হোক। কারণ লেখাপড়ার চেয়ে জীবনের দাম অনেক বেশি।’
ফেসবুক আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, হুট করে মুহসীন হল ট্রাজেডিতে একজনকেও হারিয়ে শোক পালন করতে চাই না। সকলে নিরাপদে থাকুক এটা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতেই হবে। এটা আমাদের মৌলিক অধিকার। বাজেট স্বল্পতার অজুহাতে এ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না করা হোক। না হলে কিন্তু ঘাতক প্রশাসনের ঘুম হারাম করে দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তবে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমানের দাবি তিনি হলে এসেছেন। কিছু শিক্ষার্থী তাকে নাও দেখতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এবং হলের হাউজ টিউটররা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে রাত-দিন পরিশ্রম করছি। কোনো ঘটনা ঘটলেই এগুলোর সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করি। আজকে ঘটনা ঘটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়াররা আমার হল পরিদর্শন করেছেন। আমরা তৎপর না হলে কি এতো দ্রুত কেউ রেসপন্স করে?’
হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘আমার হলের যে পলেস্তারা খসে পড়ার ছবি শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট করছে এগুলো অনেক আগের। এগুলো ঠিক করার জন্য কয়েকমাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করেছি। খুব দ্রুত এগুলোর ঠিক করা হবে। আর শিক্ষার্থীদের তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার কারণেই রিডিং রুমের দরজার উপর থাকা কাঁচের জানালা ভেঙে পড়েছে। খুব দ্রুত এগুলোর সংস্কার করা হবে। আমরাও চাই না কোন শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকিতে থাকুক।’
তবে প্রাধ্যক্ষকের হলে আসার দাবির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, উনি মিথ্যা কথা বলছে। উনি আসেনি সেটা হান্ড্রেড পারসেন্ট সত্য। হলের একজন নিরাপত্তাকর্মীও জানিয়েছেন তিনি এখন পর্যন্ত হলের প্রাধ্যক্ষকে দেখেননি।
ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) তিনটি আবাসিক হলের দেয়ালে ভয়ংকর ফাটল দেখা দিয়েছে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শনিবার সকালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, বাংলাদেশের রামগঞ্জের আট কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
ওই সময় কুবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল এবং নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের দেয়ালে ফাটক দেখা দেয়। এ ছাড়াও মেয়েদের শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমেও হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলার দক্ষিণ পাশের ব্লকের ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডরের মেঝের দুটি টাইলস উঠে গেছে। একই তলায় নতুন ও পুরাতন ব্লকের সংযোগস্থলের করিডরে ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ২০৪ ও ২০৫ নম্বর কক্ষের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচতলাব্যাপী ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া ২০৯ নম্বর কক্ষেও ফাটল দেখা যায়।
এ ছাড়া নজরুল হলের দোতলার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে নতুন ফাটল দেখা গেছে। ফয়জুন্নেছা হলের পাঁচতলার ৫১১ নম্বর কক্ষে, ৫০৩ নম্বর কক্ষের ফাটল এবং চারতলার ৪০৩ নম্বর সামনের করিডরে ফাটল দেখা গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫১৯ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় আমরা নিচে নামতে পারিনি। কম্পন থামলে দক্ষিণ ব্লকে পাশাপাশি দুটি টাইলস উপরের দিকে হালকা উঠে থাকতে দেখা যায়।’
কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র এহসান বলেন, ‘প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। ঝাঁকুনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা সবাই দৌড়ে বাইরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি দেয়ালে ছোট-বড় কিছু ফাটল তৈরি হয়েছে।’
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক ছাত্রী সুমাইয়া চৌধুরী আনিকা বলেন, ‘প্রথমে ছোটোখাটো কম্পন ভেবেছিলাম। ফয়জুন্নেছার পাশে কনস্ট্রাকশনের কাজের জন্য বড় বড় মালবাহী গাড়ি যাওয়াতে মাঝে মাঝে বিল্ডিং হালকা কেঁপে উঠে। পরে বুঝেছি ভূমিকম্প।’
হল প্রভোস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
যোগাযোগের পর বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন।
তিনি জানান, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলবেন বিষয়টি দেখার জন্য।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আবদুল লতিফ বলেন, ‘আমি বিষয়টা জানতাম না, আপনার থেকে শুনেছি। যদি স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হয় তবে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
‘যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হয়, তবে তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এই বিষয়ে আমরা নিজেরা খোঁজ নিয়ে এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির ২০২৪ সালের কার্যকরি পরিষদের নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। ফলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় বিনা নির্বাচনেই জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না পেয়ে নীল দলের পুরো প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ইকবাল রউফ মামুন বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় ছিল। আমাদের কাছে ১৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। সবই নীল দলের প্রার্থীদের। আর কোনো প্যানেল বা স্বতন্ত্র হিসেবে কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি। যেহেতু নীল দলের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না, আমরা তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেছি।’
জয়ী হওয়ার ফলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় দায়িত্ব পালন করবেন পুষ্টি ও খাদ্য-বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। এ ছাড়া সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকবেন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মিজানুর রহমান।
সদস্য হিসেবে থাকবেন অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির, অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক ড. নেসার হোসাইন, অধ্যাপক ড. সীমা জামান, অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ এবং অধ্যাপক ড. সিকদার মনোয়ার মোর্শেদ। এই নেতারা আগামী এক বছর শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব পালন করবেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘সাদা দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি পেশাজীবী সংগঠন। নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনে বিশ্বাসী বলে দলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফোরামের নির্বাচনে সবসময় অংশ নিয়ে আসছে। কিন্তু এবার বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিবেশ অনুকূল বলে আমরা মনে করি না।’
লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে আসন্ন শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার চেয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে পরিচালিত আন্দোলনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমরা চাই না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শিক্ষক সমিতি নির্বাচিত হোক যেটি ভোটাধিকার হরণকারী অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতকে শক্তিশালী করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য