রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাভারের রাজাসন আইচা নোয়াদ্দা এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে একটি শাখা সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
আইচা নোয়াদ্দা এলাকার বাসিন্দা মাদ্রাসার শিক্ষক হাবিবুর রহমান ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন বলে বুধবার নিউজবাংলাকে জানান তার ভাই মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, মঙ্গলবার একটি জমি রেজিস্ট্রি করার কথা ছিল তাদের। সে জন্য হাবিবুর রহমান দুপুরে নবীনগর সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে ৯ লাখ টাকা তুলে বাসে করে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। পরে সাভার বাস স্ট্যান্ডে নেমে অটোরিকশায় করে বাসার দিকে রওনা হন তিনি।
মাহবুবুর বলেন, ‘অটোরিকশাটিতে আমার ভাই ছাড়াও আরও দুইজন যাত্রী ছিলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে শাখা সড়কে পেছন থেকে একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কার এসে অটোরিকশাটির পথরোধ করে। এ সময় প্রাইভেট কার থেকে দুজন ব্যক্তি বের হয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমার ভাইকে অটোরিকশা থেকে নামতে বলেন।
‘আমার ভাই নামতেই তাকে জোর করে প্রাইভেট কারের ভেতরে উঠিয়ে নেন তারা। এরপর ভাইয়ার চোখ বেঁধে তার কাছে থাকা ৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে প্রাইভেট কারে থাকা চার দুর্বৃত্ত আমার ভাইকে মারধর করেন। তাদের মধ্যে একজন আমার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলতে চায় ও আরেকজন হাত-পা ভেঙে ফেলতে বলেন। পরে ভাইয়াকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের বলিয়ারপুর এলাকায় ফেলে রেখে যায় ছিনতাইকারীরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভাইকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ থাকলেও আমাদের পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন।
‘মঙ্গলবার রাতে সাভার মডেল থানায় মামলা করেছি আমরা। পুলিশ আমাদের আশ্বস্ত করেছে ছিনতাইকারীদের আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে তারা।’
সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘আমরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা সবকিছু পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করছি। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
আরও পড়ুন:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে সন্ত্রাসীরা যাতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে না পারে, সেদিকে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নবনিযুক্ত কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা জানান।
কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ডিএমপি কমিশনার।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়ে থাকে। আসছে নির্বাচনে যাতে কেউ বা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে না পারে। ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের যথেষ্ট সাহস ও শক্তি রয়েছে। এটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।’
রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে যা যা করা প্রয়োজন ডিএমপি সবকিছুই করবে বলে জানান তিনি।
কিছুদিন আগে তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এমন পরিস্থিতিতে নতুন কমিশনার হিসেবে হাবিবুর রহমান কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন যে জামিন একটি বিচারিক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় একজন অপরাধী আদালত থেকে বিচার পেতে পারে, কিন্তু পুলিশের তখনই কিছু করার থাকে, যখন কোনো ব্যক্তি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে বা অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ করে বা অপরাধ সংঘটন করে থাকে।
‘সে ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই, একজন অপরাধী সে ছোট হোক বা বড় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর আমরা। যারা জামিনে বেরিয়ে আসছে তাদেরকেও কঠোর মনিটরিংয়ে রাখার জন্য পুলিশের সব ইউনিটে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
সাইবার অপরাধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ছাপিয়ে আজ আমাদের নতুন সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে সাইবার ক্রাইম। সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ডিএমপি বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে; বিভিন্ন কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে।’
ডিএমপির জনবল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জনবল রয়েছে ৩৪ হাজার। সেটি যদি রাজধানীর দুই কোটি ২৪ লক্ষ জনগণের জন্য ভাগ করি তাহলে আমাদের জনবল খুব কম।’
ঢাকাতে যেকোনো উপায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান নবনিযুক্ত এ কমিশনার।
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক সংগঠনগুলো অনুমতি ছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সোমবার আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপি বলেছে তারা ঢাকায় অনুমতি ছাড়াই সভা সমাবেশ করবে। যদি অনুমতি না নেয় তাহলে ডিএমপি কী ধরনের ভূমিকা নেবে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আজকেও বিরোধী দলের একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। তারা আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। আমরা যেভাবে অনুমতি দিয়েছি, সেই অনুমতি মেনে নিয়েই তারা কাজ করছে।
‘কোনো সংগঠন যদি অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু করতে চায়, ডিএমপির অধ্যাদেশে যেই নিয়মকানুন রয়েছে, সেই নিয়মকানুন ভঙ্গ যদি করতে চায় এবং করে, নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিএনপি এর আগে অবরোধ করেছে। সামনে যদি আবারও অবরোধে যায় তাহলে কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, ‘আমরা বলেছি ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
মুন্সীগঞ্জে আলাদা ঘটনায় একদিনে দুই অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সিরাজদিখান ও লৌহজং উপজেলা থেকে সোমবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসকান্দি এলাকার এনআরবি নামক একটি ইট ভাটার পাশে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা।
প্রাণ হারানো মোহাম্মদ নেকবর হোসেন উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের চরগুলগুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
বালুচর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওয়াসিম আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রোববার বিকেলে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন নেকবর। স্বজনরা রাতে বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি।
এদিকে সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জ লৌহজং উপজেলার দক্ষিণ হলুদিয়া এলাকায় একটি পুকুরে মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা।
প্রাণ হারানো মো. মোস্তফাও রোববার রাতে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরেননি বলে জানায় পুলিশ।
সিরাজদিখান থানার ওসি মো. মুজাহিদুল ইসলাম ও লৌহজং থানার ওসি খোন্দকার ইমাম জানান, পুলিশ ধারণা করছে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশের সাময়িক বরখাস্তকৃত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকেন্দ্রিক ঘটনায় যার যতটুকু অপরাধ ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মিট দ্য প্রেস আয়োজন করে ডিএমপি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। বাহিনীর যে নিয়মকানুন আছে, সেই নিয়মকানুনের মধ্যে চলে এবং চলবে। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটির রেজাল্টের ওপর ভিত্তি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপরাধ থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, ‘যতটুকু অপরাধ করবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমিও একই কথা বলতে চাই, যতটুকু অপরাধ করবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে।”
রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার যে ডিপার্টমেন্ট আছে সেটিও সরকারি বিধি-বিধান মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে। আমি মনে করি জড়িত দুজন সরকারি ডিপার্টমেন্ট ও দুজনই ক্যাডার কর্মকর্তা। সেখানে দুজনের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ রয়েছে। যার যার দায়িত্ব সেই সেই পালন করবে আমি মনে করি।’
সাধারণ মানুষকে তল্লাশির নামে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়া, মামলা ছাড়া ধরে এনে টাকা-পয়সা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ডিএমপির কোনো সদস্য অপরাধে জড়ালে কী উদ্যোগ নেবেন জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অপরাধী পুলিশ হোক আর পুলিশের বাবা হোক, সে অপরাধী। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রেক্ষাপট
এডিসি হারুন গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নারী পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদার সঙ্গে শাহবাগ মোড়ের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে যান। ওই সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান।
ওই সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সেখানে যোগ দেন এ দুই ছাত্রলীগ নেতাও। একপর্যায়ে এডিসি হারুন পুলিশ এনে তাদের শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। পরে ওই দুইজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এডিসি হারুনের নেতৃত্বে মারধর করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে।
ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে ডিএমপি। এডিসি হারুনকে করা হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত,তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা পুরো ঘটনার দায় দিয়েছেন তার স্বামী মামুনকে। তিনি বলেছেন, তার স্বামীই প্রথমে হামলা চালান।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমে বাড়ি থেকে চুরি হওয়ার পাঁচ দিন পর দুই মাসের শিশু আযানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেশীর বাড়ির পেছন থেকে সোমবার সকাল ৬টার দিকে ডোবার মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশু আযান মুন্সীগঞ্জ মিরকাদিম পৌরসভার গোপালনগর এলাকায় মো. শরীফ মিয়ার ছেলে।
আযানের মামা মো. মোক্তার জানান, সোমবার সকাল ৬টার দিকে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় শিশুটির কিছু অংশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে সেখান থেকে শিশুটির মরদেহ টেনে তোলেন তারা এবং পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুর মরদেহটি হেফাজতে নেয়।
এদিকে শিশু আযানের মামা ও স্বজনরা অভিযোগ করেন, পাশের বাড়ির ফারুক এবং তার পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। সকাল থেকে ঘরে তালা দিয়ে পলাতক রয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনার জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে দুই মাসের শিশু আযানকে ঘরে রেখে টয়লেটে যান তার মা শ্রাবণী বেগম। সে সুযোগে কে বা কারা ঘর থেকে চুরি করে আযানকে। পরে অনেক খোঁজখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে শিশু আযানের মামা মোক্তার হোসেন মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে স্বামীর কর্মস্থল মাদ্রায় অবস্থান নিয়েছেন এক গৃহবধু।
রোববার দুপুরে উপজেলার ডিক্রিরচর ফাজিল মাদ্রাসায় অবস্থান নেন ওই গৃহবধু। মাদ্রাসা অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় ওই প্রভাষক এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে।
স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই গৃহবধু। বিচারের দাবিতে এখন বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
ভূক্তভোগী দাবি করা ওই নারীর অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডিক্রিরচর ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে অনার্স পড়াকালিন ওই নারীর পরিচয় হয়। পরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুবাদে প্রায় সাত বছর আগে শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে কাবিননামা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে ওই শিক্ষক তার (ভুক্তভোগী) খোঁজখবর নেয়া বন্ধ করে দেন। পরে তার (শিক্ষক) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানান প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান। স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন ওই গৃহবধু। অভিযোগ পেয়ে প্রভাষকের বেতন বন্ধ করে তাকে পুনরায় ভুক্তভোগী নারীকে কাবিন করে বিয়ে করার জন্য নির্দেশনা দেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করেননি ওই প্রভাষক। এখন বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগী।
তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় থেকে ওই প্রভাষক অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভূক্তভোগী দাবি করা ওই নারী বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে মোস্তাফিজ আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। আমি তার স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি চাই। এর আগেও বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছে মোস্তাফিজ।’
একাধিক বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করে প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওর যা মন চায় করুক। আমি কাউকে ভয় পাই না।’
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. ফজুলর রহমান বলেন, ‘আমরা ওই শিক্ষককের বেতন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তবে বিষয়টি উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে বসে সমাধানের জন্য সভাপতি নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এনামুল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা কয়েকবার বসেছিলাম। কিন্তু এখনও কোনো সমাধানে পৌঁছতে পারিনি।’
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম বলেন, ‘এতবড় অপরাধ করে শিক্ষক কী করে পার পাওয়ার চিন্তা করেন? এটা সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পিংকি সাহা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ওই মাদ্রাসার সভাপতির সঙ্গে আমি কথা বলব।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জে দেড় কোটি টাকার মালামালসহ একটি বাল্কহেড ডাকাতি করে পালানোর সময় ছয় ডাকাতকে আটক করেছে স্থানীয় জেলেরা। আটকদের কাছ থেকে তিনটি রামদা এবং লুট করা নগদ তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের বঘুরচর এলাকায় রোববার ওই ডাকাতদের আটক করা হয়। এসময় আরও তিন ডাকাত কৌশলে পালিয়ে গেছে।
আটক ছয়জন হলেন- আব্দুল কাদির, সুজন, সাদ্দাম হোসেন ওরফে সবুজ, নান্নু মিয়া, শাহীন হাওলাদার ও রুবেল মোল্লা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলে আলী মিয়া জানান, ভোরে মাছ ধরার সময় তাদের জালের ওপর দিয়ে একটি বাল্কহেড দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছিল। এসময় কয়েকজন জেলে তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তারা না থেমে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জাল ছেড়ার ক্ষতিপূরণ আদায় করার জন্য কয়েকজন জেলে তাদের ট্রলার নিয়ে বাল্কহেডটিকে পেছন থেকে ধাওয়া করে। জেলেদের ধাওয়া খেয়ে দিক পরিবর্তন করে চালক বাল্কহেডটি হোসেন্দী বড় ব্রিজ এলাকার দিকে নিয়ে যেতে থাকে। সেখানে পানির গভীরতা কম থাকায় বাল্কহেডটি মাটিতে আটকে গেলে কয়েকজন জেলে বাল্কহেডের উপরে উঠে দেখতে পান ভেতরের কেবিন চেম্বারে তিনজন লোককে হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।
এ সময় তারা আশপাশের লোকজনকে খবর দিলে তারা ছয় ডাকাতকে আটক করে তিন বাল্কহেড শ্রমিককে উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে নৌ পুলিশ সদস্যরা এসে ৬ ডাকাত ও বাল্কহেড তাদের হেফাজতে নেয়।
বাল্কহেড মালিক হযরত আলী ফকির বলেন, ‘মালগুলো বরগুনার জেলার কয়েকজন ব্যবসায়ীর। তার দায়িত্ব মালগুলো নির্ধারিত স্থান থেকে সংগ্রহ করে তার বাল্কহেডের মাধ্যমে বরগুনাতে মালিকদের কাছে পৌঁছে দেয়া। নারায়ণগঞ্জ থেকে দেড় কোটি টাকার (তেল, আটা ও চিনি) মালামাল বাল্কহেডে লোড করা হয়েছিল আরও প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার মালামাল নেয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেয়ায় তারা মাল নিতে পারছিলেন না। সেজন্য গত দুইদিন যাবত মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের তেতৈতলা পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বাল্কহেড নোঙ্গর করে তারা টাকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।’
তিনি জানান, রোববার সকালে তারা খবর পান বাল্কহেডের স্টাফদের জিম্মি করে ডাকাত চক্র সেটি ছিনতাই করে নেয়ার পথে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে। মালামাল অক্ষত রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রাশেদুল হক বলেন, ‘ডাকাত দল মালভর্তি একটি বাল্কহেডে নিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জেলেরা তাদের আটক করে। খবর পাওয়ার পর আমরা সেখানে ছুটে যাই। বাল্কহেড বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে নৌ পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি, তবে গজারিয়া নৌ পুলিশ থেকে একটি ডাকাতির তথ্য পেয়েছি। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনেছি সেখানে দেড় কোটি টাকার মতো মালামাল ছিল তবে তারা কোন চালানের কপি দেখাতে পারেননি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য