রাজধানীর দুটি এলাকা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া নারীসহ দুজনকে মৃত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক।
পল্টনের শান্তিনগর থেকে মো. খালিকুজ্জামান ও কদমতলীর পলাশপুর থেকে নাজমুন নাহার সাথীকে শনিবার রাতে নিজ নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
অচেতন অবস্থায় দুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে খালিকুজ্জামানকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে এবং নাজমুন নাহার সাথীকে রাত একটার দিকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
প্রাণ হারানো খালিকুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদর জেলায়। তিনি পল্টনের শান্তিনগরে থাকতেন।
নাজমুন নাহারের বাড়ি বরিশাল জেলায়। কদমতলীর পলাশপুর এলাকায় একটি বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
খালেকুজ্জামানের খালাতো ভাই তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমার ভাই বেকার ছিলেন, কিছু করতেন না। আমার মা অসুস্থ হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। এ নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। রাতে বাসার সকলের চক্ষু আড়াল করে তার নিজ রুমে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেন।’
নাজমুন নাহারের ভাই আবদুল লতিফ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে তাদের বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আমার বোন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে, তবে তার দুই পায়ের হাটু ভাঁজ করা অবস্থায় বিছানায় লাগানো ছিল।’
তিনি আরও জানান, তার ভগ্নিপতির রাজধানীর শনির আখড়ায় ফার্মেসি আছে। সাথীর একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক সংগঠনগুলো অনুমতি ছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সোমবার আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপি বলেছে তারা ঢাকায় অনুমতি ছাড়াই সভা সমাবেশ করবে। যদি অনুমতি না নেয় তাহলে ডিএমপি কী ধরনের ভূমিকা নেবে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আজকেও বিরোধী দলের একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। তারা আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। আমরা যেভাবে অনুমতি দিয়েছি, সেই অনুমতি মেনে নিয়েই তারা কাজ করছে।
‘কোনো সংগঠন যদি অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু করতে চায়, ডিএমপির অধ্যাদেশে যেই নিয়মকানুন রয়েছে, সেই নিয়মকানুন ভঙ্গ যদি করতে চায় এবং করে, নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিএনপি এর আগে অবরোধ করেছে। সামনে যদি আবারও অবরোধে যায় তাহলে কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, ‘আমরা বলেছি ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
পুলিশের সাময়িক বরখাস্তকৃত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকেন্দ্রিক ঘটনায় যার যতটুকু অপরাধ ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মিট দ্য প্রেস আয়োজন করে ডিএমপি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। বাহিনীর যে নিয়মকানুন আছে, সেই নিয়মকানুনের মধ্যে চলে এবং চলবে। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটির রেজাল্টের ওপর ভিত্তি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপরাধ থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, ‘যতটুকু অপরাধ করবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমিও একই কথা বলতে চাই, যতটুকু অপরাধ করবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দেয়া হবে।”
রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার যে ডিপার্টমেন্ট আছে সেটিও সরকারি বিধি-বিধান মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে। আমি মনে করি জড়িত দুজন সরকারি ডিপার্টমেন্ট ও দুজনই ক্যাডার কর্মকর্তা। সেখানে দুজনের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ রয়েছে। যার যার দায়িত্ব সেই সেই পালন করবে আমি মনে করি।’
সাধারণ মানুষকে তল্লাশির নামে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়া, মামলা ছাড়া ধরে এনে টাকা-পয়সা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ডিএমপির কোনো সদস্য অপরাধে জড়ালে কী উদ্যোগ নেবেন জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘অপরাধী পুলিশ হোক আর পুলিশের বাবা হোক, সে অপরাধী। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রেক্ষাপট
এডিসি হারুন গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নারী পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদার সঙ্গে শাহবাগ মোড়ের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে যান। ওই সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান।
ওই সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সেখানে যোগ দেন এ দুই ছাত্রলীগ নেতাও। একপর্যায়ে এডিসি হারুন পুলিশ এনে তাদের শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। পরে ওই দুইজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এডিসি হারুনের নেতৃত্বে মারধর করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে।
ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে ডিএমপি। এডিসি হারুনকে করা হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত,তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা পুরো ঘটনার দায় দিয়েছেন তার স্বামী মামুনকে। তিনি বলেছেন, তার স্বামীই প্রথমে হামলা চালান।
আরও পড়ুন:গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থায় বাধাদানকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে পুলিশ মোটেও চিন্তিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সোমবার বেলা ১১টার দিকে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন নবনিযুক্ত কমিশনার।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে পুলিশে আতঙ্ক রয়েছে বলে কিছু সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এমন বাস্তবতায় ডিএমপি কমিশনারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভিসা নীতি নিয়ে পুলিশের মধ্যে কোনো অস্থিরতা আছে কি না।
জবাবে ডিএমপির প্রধান বলেন, ‘একটি দেশের ভিসা নীতি কী হবে, সেটা নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই।’
কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান হাবিবুর রহমান। তার প্রতি আস্থা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানান ধন্যবাদ।
ডিএমপির দায়িত্বের বিষয়ে কমিশনার বলেন, ‘ঢাকার দুই কোটি ২৪ লাখ লোকের নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। ঢাকা সবচেয়ে বড় মেগা শহর। এই শহরের নিরাপত্তা বড় চ্যালেঞ্জ। তারপরও যোগ্যতার সাথে এই শহরের সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ট্র্যাডিশনাল ক্রাইম থেকে ঢাকা বদলে গেছে। অপরাধের নতুন সংস্করণ হিসেবে সাইবার ক্রাইম বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ঢাকার এখনকার চিত্র ভিন্ন। যানজটের নগরী ঢাকার রাস্তার পরিমাণ অনেক কম।
‘কাজেই যানজট বড় সমস্যা। এ ছাড়া মাদক, সাইবার ক্রাইম ও নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্ত্রের ঝনঝনানি নিয়ন্ত্রণ রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’
ডিএমপির সক্ষমতা নিয়ে কমিশনার বলেন, ‘ডিএমপি অত্যন্ত দক্ষ। এমনকি বিদেশের সাথে তুলনা করলেও আমরা আমাদের পুলিশিংয়ে অনেক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছি। এই মেগা শহরকে নিরাপদ শহর গড়ে তোলার জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। এ জন্য বিট ও কমিউনিটি পুলিশিং ঠিক রেখে বেটার ঢাকা গড়ে তোলার চেষ্টা করব। যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ প্রস্তুত থাকবে।’
বিভিন্ন অপরাধে পুলিশের জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ হোক, পুলিশের বাবা হোক, অপরাধী অপরাধীই। তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি, নেব।’
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৩ অক্টোবর। এ উপলক্ষে চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা এবং ট্রেলার ও পোস্টার উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে এ উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এত খুশি যে, ১৩ই অক্টোবর এই ছবি সমগ্র বাংলাদেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এই ছবি শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, এটি বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক। ‘মুজিব-দ্য মেকিং অব আ নেশন’, ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে বাংলাদেশের ইতিহাস, অভ্যুদয়ের ইতিহাস আছে। কারণ এই বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক, চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, বায়োপিক লাইন ডিরেক্টর সতীশ শর্মা অনুষ্ঠানে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন ও শিল্পীদের নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে পোস্টার উন্মোচনে অংশ নেন।
চলচ্চিত্র অঙ্গণের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দেশের বাইরে থেকে এ উপলক্ষে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং বঙ্গবন্ধুর চরিত্রাভিনেতা আরিফিন শুভর পাঠানো ভিডিও বার্তা ও সিনেমাটির ট্রেলার দর্শকদের ছুঁয়ে যায়।
ড. হাছান বলেন, ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি জাতির জন্য একটি দলিল। এটি শুধু সিনেমা নয়, এই ছবিটি জাতির ইতিহাসের একটি দলিল। বঙ্গবন্ধু কীভাবে একটি জাতির রূপকার হলেন, সেটিই এই ছবিতে চিত্রায়িত হয়েছে।
মন্ত্রী হাছান এ সময় বায়োপিকের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং ছবির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গওহর রিজভী সাহেব, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এই ছবির নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাজ্জাদ জহিরসহ বাংলাদেশ থেকে আরও অনেকেই যুক্ত ছিলেন। সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। শিল্পীরা প্রত্যেকেই অসাধারণ অভিনয় করেছেন। যাকে যে চরিত্র দেয়া হয়েছে ভালো অভিনয় করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী জানান, ‘বেশ আগেই আমরা বায়োপিকের সেন্সর সার্টিফিকেট দিয়েছিলাম। খুব সহসা এটি ভারতে সেন্সর সার্টিফিকেটও পেতে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা প্রথমে বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাই, কারণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রূপকার, এই জাতির রূপকার, সে জন্য বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাই। পরে এটি ভারতবর্ষসহ পুরো পৃথিবীতে মুক্তি দেয়া হবে। আমি সবাইকে এই ছবি হলে গিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাই।’
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি (Iwama Kiminori)।
রোববার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দপ্তরে তাদের বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘গত ৫২ বছরে বাংলাদেশের পথচলায় জাপান অর্থনৈতিকভাবে, অবকাঠামোগতভাবে আমাদের যেভাবে সহায়তা করেছে, সে নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। দেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতে যেন আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারি, সে ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। আমি তাকে জানিয়েছি- আগামী নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা যে, কখনও কারও জন্য সমীচীন নয়, সেটি আমি তাকে বলেছি।
‘একইসঙ্গে দেশে যাতে কোনো রাজনৈতিক ভায়োলেন্স না হয়, যেটি ২০১৩-১৪-১৫ সালে হয়েছে এবং সময়ে সময়ে বিএনপি করে এবং এখনও করার চেষ্টা করছে, উস্কানি দিচ্ছে- এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন জনগণ এবং অনেক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, সুন্দর ও সর্বমহলে কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, সেটি আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বলেছি।’
‘সহিংসতা বরদাশত নয়’
এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দেশে কেউ সহিংসতা করুক সেটি কখনও বরদাশত করব না। যে কেউ রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করতে পারে, সরকারের পদত্যাগও চাইতে পারে। কিন্তু তাই বলে দিনক্ষণ ঠিক করে ‘সরকারকে টেনে নামিয়ে ফেলবে’ বলা সমীচীন নয়, সেটি রাজনীতির ভাষা নয়।”
তিনি বলেন, ‘যে ভাষায় বিএনপি কথা বলছে, সেই ভাষা ইঙ্গিত দেয় যে, তারা দেশে সহিংসতা, নাশকতা করতে চায়। সেটি করতে কাউকে দেয়া হবে না। আমি আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে বলছি- আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। রাজপথে কীভাবে, কাকে মোকাবিলা করতে হয়, সেটি আমরা জানি।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা ও বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের যৌথসভা শেষে রোববার তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার বিষয়ে সংবেদনশীল। তিনি (শেখ হাসিনা) খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন। তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
ভয়েস অফ আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার বিষয়ে প্রচলিত আইনে সরকারের কিছু করার নেই। আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নির্দেশ মেনে তাকে চিকিৎসা করাতে হবে।’
এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চলতি অক্টোবর মাসে রাজধানী ঢাকায় তিনটি এবং ঢাকার বাইরে দুটিসহ মোট পাঁচটি সমাবেশ করবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের জানান, পাঁচটির মধ্যে একটি জনসমাবেশ এবং বাকি চারটি হবে সুধী সমাবেশ। ৩ অক্টোবর সাভারের আমিনবাজারের মহাসমাবেশটি হবে এ মাসের একমাত্র জনসমাবেশ ।
আর বাকি ৪টি সুধী সমাবেশ হবে- ৭ অক্টোবর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন, ১০ অক্টোবর পদ্মাসেতুর রেলসেতুর উদ্বোধন, মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ উদ্বোধন এবং ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অবৈধ দল হলে কেন খালেদা জিয়ার মুক্তি কিংবা বিদেশে পাঠানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে কথার সীমারেখা মানা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আ স ম আব্দুর রবও একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে আ স ম আব্দুর রব উদাহরণ হতে পারে না। হাজী সেলিমও কিন্তু আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। আওয়ামী লীগ শূন্যে ভেসে হাওয়ায় উড়ে কিংবা বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতায় বসেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনীতিতে কঠিন এক চ্যালেঞ্জে আছি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই যৌথ সভার আয়োজন। বিএনপিকে প্রতিপক্ষ নয়, শত্রুপক্ষ মনে করতে হবে।’
রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আলটিমেটামেও বিএনপি ব্যর্থ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ১৫ বছরে অনেকবার বিএনপির হাঁকডাক শোনা হয়েছে। বিএনপি বিভিন্ন সময় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসন নিয়ে তিরস্কার করে সমালোচনা করেছিল, যা ছিল বিএনপির অহংকার, দম্ভ। যারা আওয়ামী লীগের পতন দেখছে তাদের নিজেদের পতন হয় কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।’
রাজনীতিবিদদের বেফাঁস কথা বলা থেকে দূরে থাকা উচিত বলেও পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার ফেস্টুন করে প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এক এগারোর মতো অস্বাভাবিক সরকার তৈরি করার সুগভীর ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি, তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছে শেখ হাসিনাকে হটানো।
আগামী ৪ অক্টোবর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা নিয়ে এসেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের দেয়া সংবর্ধনার প্রস্তাব এ সময় তিনি ফিরিয়ে দেন।
‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগান সঙ্গী করে ২০২০ সালের আজকের দিনটিতে যাত্রা শুরু নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর। নতুন দিনের সাংবাদিকতার আদর্শ ধারণ করে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যে প্রদীপ্ত একদল তথ্যযোদ্ধার মেধা ও শ্রমে আজ তিন বছর পেরিয়ে চতুর্থ বর্ষে পা দিল নিউজ পোর্টালটি।
তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও চতুর্থ বর্ষে পদার্পণের ক্ষণটি কেক কেটে উদযাপন হয়েছে নিউজবাংলা প্রাঙ্গণে। রোববার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর উপস্থিতিতে ঘরোয়া আয়োজনে দিনটি পালন করা হয়।
এসময় নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বলেন, ‘নিউজবাংলা হলো আমাদের বিজয় রথের সারথী। দুই বাংলা, অর্থাৎ দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা, দুই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে সারথীর ভূমিকা পালন করে চলেছে নিউজবাংলা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নিউজবাংলার সংবাদকর্মীরা প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদমাধ্যমে পরিণত করেছেন। দৈনিক বাংলার সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের শক্তি আরও বাড়িয়ে নিউজবাংলা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে, আমি সবসময় এই কামনা করি।’
এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মান ধরে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া নিউজবাংলার সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে প্রতি মুহূর্তের খবর সবার আগে সংগ্রহ করে তা সরবরাহ করা জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদেরও ধন্যবাদ জানান সম্পাদক।
শুধু তিন বা চার বছর পূর্তি নয়, নিউজবাংলা শত-সহস্র বছর ধরে পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করে যাবে; দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবগত করা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে; দেশের শাসন বিভাগ ও জনগণের মধ্যে সমন্বয় করে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত থাকবে- এমনটা প্রত্যাশা করেন তিনি।
এরপর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলার নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান, বার্তা সম্পাদক কামরুল হাসান খান, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান, সিনিয়র আইটি অফিসার সাইদুল ইসলাম মিঠু, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জাকারিয়া হোসেন জয় এবং প্রতিষ্ঠানটির রিপোর্টার, সাব-এডিটরসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মহাখালীতে বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা এক যুবককে মৃত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক।
মহাখালীর খ্রিষ্টানপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে রোববার বেলা ১১টার দিকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়। স্বজনরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে দুপুরে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
প্রাণ হারানো ২৬ বছর বয়সী কবির হোসেনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর কালিকাপুরে। তিনি তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
কবিরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার স্ত্রী শাহিনুর আক্তার বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামী তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকি। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আমার ঝগড়া-বিবাদ চলছিল।
‘আজ (রোববার) সকালে সে ঝগড়া করে মহাখালীর খ্রিষ্টানপাড়ায় তার বড় ভাই মানিকের বাসায় যায়। সেখানে গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে ঝুলে থাকে।’
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, যুবকের মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য