সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। এখানকার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। আর তাদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু হচ্ছে পানিতে সাঁতার কাটতে নেমে।
সবশেষ সোমবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ‘সাদাপাথর’ থেকে জয় নামে এক পর্যটকের মরদেগ উদ্ধার করা হয়। এর দুই আগে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে রমিজ উদ্দিন নামে আরেক পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সবশেষ দুর্ঘটনার ব্যাপারে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার মগবাজার থেকে সোমবার দুপুরে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরে বেড়াতে আসেন চার বন্ধু। তাদের মধ্যে জয় গাইন (২৫) নামে একজন পানিতে ডুবে মারা যান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, জয় সাদাপাথরে গোসল করতে নেমেছিলেন। এ সময় পানির তীব্র স্রোতে তিনি আর স্থির থাকতে পারেননি। মুহূর্তেই পানিতে তলিয়ে যান। প্রায় ১৫ মিনিট পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। এরপর তাকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে জাফলংয়ের নদী থেকে রমিজ উদ্দিন নামে ওই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন দুপুরে তিনি জাফলংয়ের ডাউকি নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় গোসল করতে নেমেছিলেন। কিন্তু স্রোতের টানে তলিয়ে যান। প্রায় ৪ ঘণ্টা সন্ধান চালিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বরাবরই পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। সেগুলোর মধ্যে আগ্রহের শীর্ষে থাকে জাফলং, সাদাপাথর, বিছানাকান্দি ও লালাখাল। প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রই পানিকেন্দ্রিক। আর এসব স্পটে বেড়াতে এসে প্রায়শ পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছেন পর্যটকরা। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি ও স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যায়। আর এ সময়টাতে ভিড় বাড়ে পর্যটকেরও। একইসঙ্গে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি।
জাফলংয়ের পিয়াইন নদে ৬ জুলাই বাবার সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয় ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আল ওয়াজ আরশ। ৮ জুলাই সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী স্থানে তার মরদেহ ভেসে ওঠে।
এর আগে ১ জুলাই কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্রে আবদুস সালাম নামে এক তরুণ গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন। তার মরদেহ ভেসে ওঠে নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর।
বার বার এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য সংশ্লিষ্টরা পর্যটকদের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেছেন। অপরদিকে পর্যটকদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায়ই পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়ছে।
পর্যটন পুলিশ, থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র জাফলং। মেঘালয় পাঁহাড়ঘেষা জাফলংয়ের নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে অনেক স্থান মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত দুই দশকে জাফলংয়ে বেড়াতে এসে মারা গেছেন ৬০ জন পর্যটক।
অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ধলাই নদের সাদা পাথর পর্যটকদের কাছে পরিচিতিই পেয়েছে ৫-৬ বছর আগে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এখন প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসেন সাদা পাথরে। তবে এই ৫/৬ বছরেই এখানে মারা গেছেন ১২ পর্যটক।
এ ছাড়া গোয়াইঘাট এলাকার পাথুরে নদীর আরেক পর্যটন কেন্দ্র বিছনাকান্দিতে এই সময়ে মারা গেছেন চারজন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষায় নদীর তীব্র স্রোত, চোরাবালি, নৌকাডুবি ও সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছেন পর্যটকরা।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় গাইডলাইন না থাকা এবং তাদের সচেতনতায় তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সিলেট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, ‘কয়েকটি সাইনবোর্ড টানানো ছাড়া সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় আর কোনো উদ্যোগ নেই। পর্যটন কেন্দ্রে টুরিস্ট পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবক নেই। ফলে পর্যটকরা ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরা করেন। কেউ তাদের বাধা দেন না। তারাও বিপদের আশঙ্কার বিষয়টি সম্পর্কে আগেভাগে জানতে পারেন না।’
জানা গেছে, সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণে একক কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নসহ নানা দিক দেখাশোনা করে। তাদের পক্ষে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে পর্যটন উন্নয়ন কমিটি। এর সভাপতি জেলা প্রশাসক। এই কমিটিতে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটককের নিরপত্তার দিকটি মূলত পর্যটন পুলিশ দেখভাল করে। তবে তাদেরও রয়েছে লোকবল সংকট।
জাফলংয়ের ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি রতন শেখ বলেন, ‘ছুটির সময়ে এখানে পর্যটকের এতো ভিড় হয় যে ট্যুরিস্ট পুলিশের অল্প লোকবল দিয়ে তা সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবু আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করি।
‘ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সাইনবোর্ড টানানো আছে। মাইকিং করেও সতর্ক করা হয়। তবে অনেকে তা শুনতে চান না। পর্যটকদের অসচেতনতা ও নির্দেশনা না মানার কারণেই প্রাণহানির ঘটনাগুলো ঘটছে।’
জাফলং ও বিছানাকান্দি পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এই দুই স্থানে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার পর্যটন কেন্দ্রে সতর্কতামূলক বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। তবে বন্যার পানিতে সেগুলো ভেসে গেছে।’
তিনি বলেন, মৌখিকভাবেও পর্যটকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু ভ্রমণে আসা মানুষের মধ্যে এসব নিষেধাজ্ঞা শোনার প্রবণতা কম থাকে।’
প্রবল স্রোতের পানিতে না নামা এবং পানিতে নামলে লাইফ জ্যাকেট পরার দিকে নজর রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
সাদা পাথরে পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে হ্যান্ডমাইক নিয়ে দুজন স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক পর্যটন কেন্দ্রে থাকেন। তারা পর্যটকদের স্রোতের পানিতে না নামার আহ্বান জানান। নৌকার ঘাটে সাইনবোর্ড দিয়ে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পানিতে না নামতে নির্দেশনা দেয়া আছে। এরপরও পর্যটকরা এগুলো শুনতে চান না।’
পর্যটকদের সতর্ক করার জন্য ঘাটে মাইক লাগানো এবং নৌকার টিকিটের পেছনে আরও কিছু নির্দেশনা দিয়ে প্রচার চালানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নাশকতার মামলায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমানকে (৫৩) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আতাউর চলতি বছরের গত ২৯ অক্টোবর করা নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান সোমবার রাত ১১টার দিকে জামায়াত নেতাকে আদালতের মাধ্যমে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আতাউর স্থানীয় শোভাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক। তিনি উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটি গ্রামের বাসিন্দা।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আজমিরুজ্জামান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার সকালে উপজেলার ছাপড়হাটি গ্রাম থেকে আতাউরকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন বিকেলে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ময়মনসিংহে বিএনপির ৮৬ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তিনজকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারবকৃতরা হলেন- ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক ৩০ বছর বয়সী খাইরুল আলম শাকিল, মহানগর ছাত্রদল নেতা ২৪ ৩০ বছর বয়সী আকরাম হোসেন, উত্তর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ৩০ ৩০ বছর বয়সী শুভ চন্দ্র দেবনাথ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরীর শম্ভুগঞ্জের রঘুরামপুর বরাইকান্দি এলাকায় বিএনপি-ছাত্রদলের একদল কর্মী অবস্থান নিয়ে নাশকতার চেষ্টা শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে নাশকতাকারীরা গাড়িতে ভাঙচুর ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় পেট্রোল বোমাসহ ছাত্রদলের ওই তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
উপজেলার কাঠালডাঙ্গী সীমান্তে সোমবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো বাংলাদেশির নাম জহিরুল ইসলাম (২৫), যিনি হরিপুর উপজেলার গেরুয়াডাঙ্গী গ্রামের বাসেদ আলীর ছেলে।
কাঠালডাঙ্গী সীমান্ত চৌকির (বিওপি) বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার এন্তাজুল হক বলেন, ‘ভারত সীমান্তের ভেতরে এক বাংলাদেশিকে গুলি করে বিএসএফ। পরে তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তার লাশ এখনও বিএসএফের কাছে আছে।’
ঠিক কী কারণে বিএসএফ গুলি চালিয়েছে, তা নিশ্চিত হতে পারেননি বিজিবির এ কর্মকর্তা।
সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার
এদিকে হরিপুর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার ভোররাতে একজন ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ নাগর নদীর উপশাখা শিরানী নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি।’
তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম মকলেছ (২৫), যিনি হরিপুর উপজেলার গেরুয়াডাঙ্গী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
মকলেছ কার গুলিতে নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি ওসি। তার ভাষ্য, এ যুবক বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রদের শাসনগাছা বাস টার্মিনালের চালক ও হেলপারদের বিরুদ্ধে ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে৷ এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় শাসনগাছা বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ১৫ ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের কারো মাথা ফাটা, কারো শরীরে কোপের চিহ্ন দেখা গেছে।
আহতরা হলেন- পরিসংখ্যান দ্বিতীয়বর্ষের শাকিল, রসায়ন তৃতীয়বর্ষের হাসান ও আরাফাত, বাংলা বিভাগের চতুর্থবর্ষের হাবিব, অর্থনীতি বিভাগের প্রথমবর্ষের ইমরান, ইসলামের ইতিহাস তৃতীয়বর্ষের কাহহার, গণিত চতুর্থবর্ষের রতন, রাষ্টবিজ্ঞান চতুর্থবর্ষের জামশেদ, ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয়বর্ষের আরমান, অর্থনীতি চতুর্থ বর্ষের নিলয়, রাষ্টবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের সাকিব এবং রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সানি।
আহত আব্দুল কাহহার জানান, সোমবার বিকেলে রাস্তা পারাপারের সময় তাকে বাস চাপা দেয়। এতে তিনি আহত হয়ে চালককে সাবধানে গাড়ি চালাতে বলেন। এ সময় সঙ্গে থাকা অপর ছাত্ররা তর্কে জড়িয়ে পড়েন বাসচালক ও হেলপাররা। এ সময় ওই দুই ছাত্রকে বাস স্ট্যান্ডে আটকে রাখে চালক ও হেলপাররা।
পরে আটকে থাকা ছাত্ররা সহপাঠীদের জানালে সহপাঠীরা তাদের উদ্ধার করতে যান। এদিকে বাস চালক ও হেলপাররা ছাত্রদের প্রতিহত করতে রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও ইটপাটকেল নিয়ে অবস্থান নেয়। ছাত্ররা বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে আহত ছাত্রদের আনতে গেলে অতর্কিত হামলা করে বাসের চালক ও হেলপাররা।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, আহত ৯ ছাত্র কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে বর্তমানে সেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন হাসপাতালে ভর্তি। পাশেরর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ৫ জন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ উপাধক্ষ্য মৃণাল কান্তি গোস্বামী বলেন, ‘আমাদের ১৫ ছাত্রের চিকিৎসা চলছে। একজনের মাথায় ১২টি সেলায় লেগেছে। কেউ হাতে, কেউ বা পায়ে মারাত্মক ব্যাথা পেয়েছে।’
কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, ঘটনা শুনে তিনি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অফিসার্স ক্লাবের টেনিস কোর্টে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
কয়েক মাস আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নতুন টেনিস ক্লাব নির্মাণ ও উদ্বোধনের পর, অফিসার্স ক্লাবের টেনিস কোর্টে খেলা খুব বেশি হতো না। বিস্ফোরণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ককটেল বিস্ফোরণের পর ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই শহরের শান্তিমোড় এলাকায় আরেও দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘অফিসার্স ক্লাবের টেনিস কোর্টে সন্ধ্যার দিকে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আমরা কাজ করছি।’
নৌকার সমাবেশে বন্দুক প্রদর্শন করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের আলোচিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরকে শোকজ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
ঝালকাঠি-১ আসনে নির্বাচন কমিশনের গঠন করা অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ পল্লবেশ কুমার কুন্ডু সোমবার সন্ধ্যায় এ আদেশ দেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট পাঠানো হবে না, সে বিষয়ে আগামী বুধবারের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শাহজাহান ওমরকে শোকজ করার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নেছার উদ্দিন।
এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন নেছার উদ্দিন।
নৌকার সমাবেশে উপস্থিত অনেকে জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে কাঁঠালিয়া উপজেলার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিপুলসংখ্যক লোকজন নিয়ে এক পাশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, অন্যপাশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বসিয়ে সমাবেশ করেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর। সমাবেশে বিএনপির একাংশের সভাপতি আবদুল জলিল মিয়াজী একটি বন্দুক নিয়ে শাহজাহান ওমরের পাশে বসা ছিলেন।
নির্বাচনি সমাবেশে বন্দুক নিয়ে অবস্থানের কারণে ভোটারদের মনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হওয়ায় সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চান বিএনপি নেতা আবদুল জলিল মিয়াজীর কাছে। জবাবে বন্দুকটি শাহজাহান ওমরের লাইসেন্স করা বলে জানিয়েছেন বিএনপির এ নেতা।
সমাবেশে শাহজাহান ওমরের সঙ্গে কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল জলিল মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন কবির হাওলাদারসহ অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে এতে উপস্থিত ছিলেন কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল বসার বাদশা, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন।
সমাবেশে আগ্নেয়াস্ত্র কেন নিয়েছেন, সে বিষয়ে জানতে রাত আটটার দিকে শাহজাহান ওমরের ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি কখনও কল কেটে দেন, আবার কখনও রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা, পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতার অভিযোগে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার দিনভর পৃথক অভিযানে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সন্ধ্যায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পচিালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ‘গত ২৮ অক্টোবর ও পরবর্তী সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত পরিবহন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নাশকতা ঘটানো হয়। সিসিটিভি ফুটেজ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাজধানীর জুরাইন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার মামলায় যাত্রাবাড়ী থানার ৫০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন গ্রেপ্তার হন। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান হতে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সর্বমোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৮ অক্টোবর হামলা ও নাশকতাসহ পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও নাশকতার সঙ্গে জড়িত সর্বমোট ৮২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মন্তব্য