× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Jamaat will not get permission for Saeedees funeral in Dhaka
google_news print-icon

ঢাকায় সাঈদীর গায়েবি জানাজার অনুমতি পাবে না জামায়াত

ঢাকায়-সাঈদীর-গায়েবি-জানাজার-অনুমতি-পাবে-না-জামায়াত
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। ছবি: নিউজবাংলা
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সোমবার রাতে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হাসপাতালে মারা যান। তার মরদেহ নিয়ে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশের ওপর আক্রমণসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। জামাত শিবির কর্মীরা কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে।’

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। তাই তাদের উদ্যোগে গায়েবি জানাজার আয়োজনের অনুমতি দেয়া হবে না।

মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টু রোডে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু এবং পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সোমবার রাতে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হাসপাতালে মারা যান। তার মরদেহ নিয়ে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশের ওপর আক্রমণসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। জামাত শিবির কর্মীরা কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে।’

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘ফজরের নামাজের পর জামাত-শিবির নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল এলাকা দখল করে নেয়। ফেসবুকে লাইভ দিয়ে সবাইকে সেখানে ডেকে আনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরে যেতে বললে তারা তোয়াক্কা করেনি। পরে বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সীমিত শক্তি প্রয়োগ করে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সোমবার রাতের হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বুধবার তাদেরকে গায়েবি জানাজার অনুমতি দেয়া হবে না।

এর আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম ইমন সোমবার রাত ২টা ৩৫ মিনিটে জানান, সাঈদীর কফিন পিরোজপুর যাচ্ছে। ১৬ তারিখ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমে জানাজা হবে।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, সারা রাত সাঈদীর মরদেহ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির ও তার স্বজনরা নাটক করেছে এবং তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তার দুই ছেলেকে জানায়। পরে তার দুই ছেলে মরদেহ পিরোজপুর নেওয়ার জন্য কারাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে।

তিনি বলেন, এর মধ্যে জেল কর্তৃপক্ষ পক্ষ মরদেহের ময়নাতদন্ত করার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে। সেই অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আসা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট এসে মরদেহের সুরতহাল সম্পূর্ণ করেন। যখন ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হবে সেই মুহূর্তে তার ছেলেরা জোর দাবি জানায়, তারা ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যেতে চায়। এ বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের অনেক সময় ক্ষেপণ হয়। পরে রাত একটা কি দেড়টার দিকে তারা জেল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পায়।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এর পর মরদেহের গোসল শেষে পরিবার প্রস্তুতি নেয় মরদেহ পিরোজপুর নিয়ে যাওয়ার। তখন বিএসএমএমইউ ও শাহবাগে আগে থেকে অবস্থান নেয়া কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী দাবি তোলে জানাজা পড়ে মরদেহ নিতে চায়। তখন আমরা তাদের বলি আপনারা এখানে জানাজা পড়তে পারেন। আমরা তাদের বলি মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস আমাদের ব্যস্ততা আছে, আপনারা এখন জানাজা পড়ে মরদেহ নিয়ে যেতে পারেন। রাত সোয়া ২টার দিকে তারা জানাজার পরিবর্তে মোনাজাত করে আধা ঘণ্টা। তারা বলে আমরা জানাজা পড়ব না মোনাজাত করেছি, পরে আমরা গায়েবানা জানাজা পড়ব। এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা মোনাজাত করে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কিন্তু যখন মরদেহ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়, তখন হাজার হাজার জামায়াত-শিবির লাশবাহী গাড়ির সামনে শোয়ে পড়ে। তারা কোনো মতে এই মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দেবে না। এসময় লাশবাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা পুলিশ অফিসার ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে জামায়াত-শিবির। সঙ্গে তারা গাড়ি ভাঙচুরও শুরু করে। এই হামলায় ডিসি রমনাসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র অফিসার আহত হন। তারা পুলিশের ৪-৫ টি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং দুইটি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা ধৈর্য সহকারে এই তান্ডব সহ্য করি যে তারা একটা মরদেহ নিয়ে যেতে চাচ্ছে নিয়ে যাক। তার পরও আমরা কোনো শক্তি প্রয়োগ করিনি।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ফজরের নামাজের পরে তাদের আবারও অনুমতি দেয়া হলো জানাজা পড়ার। কিন্তু ফজরের নামাজের পরে তারা আমাদের অফিসারদের বের করে বিএসএমএমইউ দখলে নিয়ে নিলো। তারা মরদেহ পিরোজপুর নিতে দেবে না। এর মধ্যে তারা ফেসবুকে প্রচার করতে শুরু করলো সারা দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের শাহবাগে আসার জন্য। তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশংকায় তাদের ওপরে আমরা অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করি। আমরা টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে বিএসএমএমইউ মুক্ত করে সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এইটা সীমিত শক্তি প্রয়োগ করে করা হয়েছে, কারণ হাসপাতালে রোগীদের স্বাস্থ্যের বিষয় বিবেচনা করে প্রথম থেকে শক্তি প্রয়োগে আমরা বিরত ছিলাম কিন্তু তাদের তাণ্ডবে বাধ্য হয়ে আমরা সীমিত শক্তি প্রয়োগ করি। ইতমধ্যে পিরোজপুর মরদেহ চলে গেছে, দাফন কাজ সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

পরিস্থিতি যে এমন ভয়াবহ হবে পুলিশ তা আগে কেন জানতে পারেনি, এইটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা কি না- জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমারা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম জামায়াত- শিবিরের নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। সাঈদীর দুই ছেলে প্রথম থেকে আমাদের আশ্বস্ত করেছিল আমাদের বাবার মরদেহ আমরা নিয়ে যাব কোন ধরনের সমস্যা হবে না আমরা যেভাবে বলবো এখানে সেভাবেই হবে। আমরা তাদের উপর বিশ্বাস করে প্রথম থেকে কোন প্রকার শক্তি প্রয়োগ করি নাই।

তিনি বলেন, যেহেতু তারা তাদের নেতার মরদহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কেউবা মৃত্যুর সংবাদ শুনে আবার অনেকে মরদেহ দেখার জন্য এসেছেন তাই মানবিক কারণে আমরা প্রথম থেকে কোনো ধরনের অ্যাকশন নেইনি। কিন্তু জামায়াত-শিবির যে তাদের চরিত্রটা পাল্টাই নাই এটা তারা আবারও প্রমাণ করল। বিগত ২০১২-১৩ সালে তারা যেভাবে পুলিশকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, হেলমেট দিয়ে পিটিয়ে পুলিশের মাথা থেতলিয়ে দেওয়ার মত চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ তারা আবারও করল।

এর আগে গুজব ছড়ানো হয়েছে সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে। তেমনি ভূমিকম্প নিয়ে সারা দেশে গুজব ছড়ানো হয়েছে এ ক্ষেত্রে ডিএমপির সাইবার সেল সক্রিয় আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সাইবার ইউনিট সক্রিয় আছে। তারা যে বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছিল সেই তত্ত্ব আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছিলাম। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের জোর হওয়ার বিষয়ে যেসব প্রচারণা ফেসবুকে ছড়িয়েছিলো সেইসব তথ্যও আমরা পাচ্ছিলাম। সেই প্রেক্ষাপটে ভোররাতে আমাদের হালকা শক্তি প্রয়োগ করে তাদের ছাত্র ভঙ্গ করতে হয়েছে। কারণ সাইবার ওয়ার্ল্ডে তারা যেভাবে তৎপর ছিল আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে যে তারা সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের জোর করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

জামায়াত-শিবির গায়েবানা জানাজা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই গায়েবানা জানাজা কেন্দ্র করে ডিএমপির কোন প্রস্তুতি আছে কি না আর গোয়েন্দা তথ্য আছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তারা রাতে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তারপর গায়েবানা জানাজার করতে দেয়ার অনুমতি দেয়া হবে না। আমরা এই অনুমতি তাদের দেব না।

আরও পড়ুন:
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না: ডিএমপি কমিশনার
শুক্রবার সমাবেশের অনুমতি পাচ্ছে না জামায়াত
সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপি কার্যালয়ে জামায়াত

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Cheating in Primary Recruitment Exam Detention 87 Expulsion 93

প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষায় নানা কৌশলে প্রতারণা: আটক ৮৭, বহিষ্কার ৯৩

প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষায় নানা কৌশলে প্রতারণা: আটক ৮৭, বহিষ্কার ৯৩ ফাইল ছবি
শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে গাইবান্ধা জেলায়। এ ছাড়া দিনাজপুরে ১৮, লালমনিরহাটে ১৩, কুড়িগ্রামে ১২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ ও ঝালকাঠিতে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর মিলেছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারসহ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দেশের ছয় জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে মোট ৮৭ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। ওই ৮৭ জনসহ মোট ৯৩ জনকে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে গাইবান্ধা জেলায়। এ ছাড়া দিনাজপুরে ১৮, লালমনিরহাটে ১৩, কুড়িগ্রামে ১২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ ও ঝালকাঠিতে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর মিলেছে।

গাইবান্ধায় ৩৭ জনের নামে মামলা

গাইবান্ধায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে জালিয়াতির অভিযোগে আটক পরীক্ষার্থীসহ ৩৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা চলাকালে জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র ও স্থান থেকে তাদের আটক করে র‍্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের সদস্যরা।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩২ জন এই নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী এবং পাঁচজন বহিরাগত বলে জানান র‍্যাব-১৩ রংপুর বিভাগের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম ধাপের গাইবান্ধার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নকলমুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহার করে অসদুপায়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় ৩৭ জনকে আটক করে এবং কেন্দ্র থেকেই ৩৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১৩ রংপুর বিভাগের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে থেকে ৩২ জন পরীক্ষার্থী ও এই চক্রের হোতা মারুফ, মুন্না, সোহেল, নজরুল ও সোহাগসহ মোট ৩৭ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ২২টি মাস্টার কার্ড, ১৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস, ১৬টি মোবাইল, স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আটককৃত পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং মোবাইলের মাধ্যমে সুকৌশলে পরীক্ষা দিয়ে আসছিলেন। চক্রের এই পাঁচ হোতা বিভিন্ন পরীক্ষার্থীকে ১৪ থেকে ১৮ লাখ টাকায় চাকরি দেয়ার শর্তে অংশগ্রহণ করায়। এর মধ্যে এই চক্রের সোহেল নামে এক সদস্য ডিভাইস সংগ্রহ ও বিতরণ করতেন, নজরুল পরীক্ষার্থী সংগ্রহ করতেন এবং মারুফ ও মুন্না বেইরে থেকে প্রশ্নপত্র সমাধান করে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করতেন।

‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। পাশাপাশি আটককৃতদের নামে মামলা করে গাইবান্ধা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ৭০০টি শূন্য পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থী ৩০ হাজার ৮৮ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ২২ হাজার ৮১৩ জন পরীক্ষার্থী জেলার সদর, পলাশবাড়ি ও ফুলছড়িসহ তিন উপজেলার মোট ৪৭টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার লিখিত (বহু নির্বাচনি) প্রথম ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেন।

দিনাজপুরে আটক ১৮ পরীক্ষার্থী

দিনাজপুরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর তাদের বহিষ্কার করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ নিয়োগ পরীক্ষার ৮টি কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানান দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি ফরিদ হোসেন।

আটককৃতরা হলেন- বিরল উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মো. আজহারুল ইসলামের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মো. কামরুজ্জামান, একই উপজেলার রানীপুর গ্রামের আবুল কাদেরের স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী রাহেনা খাতুন; বীরগঞ্জ উপজেলার এলেঙ্গা গ্রামের প্রদীপ রায়ের স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী শেফালী রায়, একই উপজেলার পশ্চিম কালাপুকুর গ্রামের তাশদিকুল আলমের ছেলে ৩০ বছর বয়সী মো. মনিরুজ্জামান, কগিরপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে ৩১ বছর বয়সী জামিল বাদশা ও বনগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ২৮ বছর বয়সী মো. রাকিব; দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপর গ্রামের বেলাল হোসেনের স্ত্রী ২৮ বছর বয়সী মুসলিমা খাতুন, একই উপজেলার দাইনুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ২৮ বছর বয়সী শরিফুল আলম, ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল সালামের মেয়ে ২৮ বছর বয়সী উম্মে সালমা ও খানপুর গ্রামের সুলতান মাহমুদের মেয়ে ২৯ বছর বয়সী নাসরিন জাহান; চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের ২৭ বছর বয়সী কবিতা রানী রায়, একই উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের যতিশ চন্দ্র রায়ের ছেলে ৩৪ বছর বয়সী সবজ চন্দ্র রায়; হাকিমপুর উপজেলার মাধবপাড়ার গোলাম বিকরিয়ার স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী জাকিয়া ফেরদৌস; বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দায়োরপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মহিদুল ইসলাম; নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের আবু তালেব সরকারের মেয়ে ৩১ বছর বয়সী তানিয়া মোশতাবী; বোচাগঞ্জ উপজেলার শহিদপাড়ার আব্দুল গফুর মোল্যার ছেলে ২৯ বছর বয়সী সায়েম মোল্যা তন্ময়; ফরিদপুর জেলার নগরবান্দা থানার দফা গ্রামের ফারুক মাতব্বরের মেয়ে ২০ বছর বয়সী উর্মিলা আক্তার এবং ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বকুয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে ২৭ বছর বয়সী সুজন আলী।

ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে কর্মকর্তারা ১৮ জনকে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে আটক করেন। পরে তাদেরকে পুলিশে কাছে সোপর্দ করেন তারা।

‘আটককৃত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

লালমনিরহাটে বহিষ্কার ১৬, ১৩ জনের নামে মামলা

লালমনিরহাটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় একই অভিযোগে ১৬ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে অপরাধ বিবেচনা করে ১৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় যাদের নামে পরে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি তিনজনকে কেন্দ্র থেকে সরাসরি বহিষ্কার করা হয়।

লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘জেলায় মোট ১৬ হাজার ৩২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজার ৪২৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে জালিয়াতি করার কারণে ১৬ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে অপরাধ বিবেচনায় ১৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

ওই ১৩ জন পরীক্ষার্থীকে আসামি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মামলা করেছে বলে জানান তিনি।

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘আটককৃতদের মধ্যে ১০ জন নারী ও তিনজন পুরুষ রয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটক আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

কুড়িগ্রামে বহিষ্কার ১৫, পুলিশে দেয়া হয়েছে ১২ জনকে

কুড়িগ্রামে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ধরা পড়ে মোট ১৫ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জনকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নবেজ উদ্দিন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার এ কুড়িগ্রামের ৪৫টি কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ২৬ হাজার ৮০৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ২০ হাজার ৭১ জন। অনুপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৭৩৪ জন।

ঠাকুরগাঁওয়ে আটক ৭ পরীক্ষার্থী

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যাবহার ও অবৈধভাবে ওএমআর শিট নিয়ে প্রবেশের অভিযোগে মোট সাত পরীক্ষার্থী আটক হয়েছেন। এদের মধ্যে চার যুবক ডিভাইস ব্যবহার করার অভিযোগে এবং তিন নারী পরীক্ষার্থী ওএমআর শিট নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগে আটক হন। ধরা পড়ার পর ওই সাতজনকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করে পুলিশে দেয়া হয়।

আটককৃত চার যুবক হলেন- রাণীশংকৈল উপজেলার বাজে বকশা গ্রামের পঞ্চানন চন্দ্রের ছেলে টংকনাথ বর্মণ; তিনি পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আটক হন। একই উপজেলার আলশিয়া গ্রামের মো. হুমায়ুনের ছেলে সোহানুর রহমান; তিনি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক হন। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আলোকসিপি গ্রামের হাসান আলীর ছেলে আনোয়ার খালিদ সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক হন। পীরগঞ্জ উপজেলার পাটুয়া পাড়া গ্রামের আজিম উদ্দীনের ছেলে ওমর ফারুক। তিনি কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আটক হন।

তিন নারী পরীক্ষার্থী হলেন- পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের সামিরুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. আর্জিনা; তিনি আর কে স্টেট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক হন। এ ছাড়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারি গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী হাসনা হেনা এবং সদর উপজেলার রুহিয়া মধুপুর গ্রামের আজহারুলের স্ত্রী রোড ডিগ্রি কলেজ থেকে আটক হন।

এসব তথ্য নিশ্চিৎ করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চারজন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার ও অবৈধভাবে ওএমআর শিট নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ ও ব্যবহার করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করে। এ বিষয়ে আইনগত পক্রিয়া চলমান রয়েছে।

ঝালকাঠিতে প্রক্সি দিতে এসে ধরা যুবক

অন্যের হয়ে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে ঝালকাঠিতে আটক হয়েছেন এক পরীক্ষার্থী। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের জেলা পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে অবৈধ ইলেকট্রনিক ডিভাইসহ তাকে আটক করা হয়।

আটককৃত ওই যুবকের নাম অভি চন্দ্র দাস। ২২ বছর বয়সী অভির বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নে। সেখানকার গোবিন্দ ধবল গ্রামের অরুণ চন্দ্র দাসের ছেলে তিনি।

রাজাপুর উপজেলায় গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাসকাঠি গ্রামের গণি হাওলাদারের ছেলে ইব্রাহীম নামের মুল পরীক্ষার্থীর পক্ষে প্রক্সি দিতে আসেন তিনি। শুক্রবার ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ডিভাইসে যান্ত্রিক ত্রুটি কল্যাণে তিনি ধরা পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষার ৩০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর অভির কানে বসানো ইলেট্রনিক ডিভাইসটিতে টিট টিট আওয়াজ দিতে থাকে। বিষয়টি হল পরিদর্শকের নজরে এলে তিনি অভিকে আসন থেকে উঠিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শক মো. আব্দুল করিমের কাছে নিয়ে যান। সেখানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাসান মোহাম্মদ সোয়াইব এবং কেন্দ্রের সুপারইন্টেনডেন্ট অধ্যক্ষ জিন্নাত রেহানা ফেসদৌসী ওই পরীক্ষার্থীর কাগজপত্র যাচাই করে তার প্রক্সির বিষয়টি নিশ্চিত হন।

এ ঘটনায় প্রকৃত পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং দুপরে অভিকে সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রীয়া চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িতদের তথ্য বের করা হবে।’

নিউজবাংলার গাইবান্ধা, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও ও ঝালকাঠি প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার: দিনাজপুরে ১৮ পরীক্ষার্থী আটক
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: প্রথম গ্রুপের পরীক্ষা সম্পন্ন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Another proxy was putting the device in his ear

কানে ডিভাইস লাগিয়ে দিচ্ছিলেন প্রক্সি

কানে ডিভাইস লাগিয়ে দিচ্ছিলেন প্রক্সি
শুক্রবার ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে ডিভাইসে যান্ত্রিক ত্রুটি কল্যাণে ধরা পড়েন প্রক্সিদাতা অভি চন্দ্র দাস।

অন্যের হয়ে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে ঝালকাঠিতে আটক হয়েছেন এক পরীক্ষার্থী। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের জেলা পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে অবৈধ ইলেকট্রনিক ডিভাইসহ তাকে আটক করা হয়।

আটককৃত ওই যুবকের নাম অভি চন্দ্র দাস। ২২ বছর বয়সী অভির বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নে। সেখানকার গোবিন্দ ধবল গ্রামের অরুণ চন্দ্র দাসের ছেলে তিনি।

রাজাপুর উপজেলায় গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাসকাঠি গ্রামের গণি হাওলাদারের ছেলে ইব্রাহীম নামের মুল পরীক্ষার্থীর পক্ষে প্রক্সি দিতে আসেন তিনি। শুক্রবার ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ডিভাইসে যান্ত্রিক ত্রুটি কল্যাণে তিনি ধরা পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষার ৩০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর অভির কানে বসানো ইলেট্রনিক ডিভাইসটিতে টিট টিট আওয়াজ দিতে থাকে। বিষয়টি হল পরিদর্শকের নজরে এলে তিনি অভিকে আসন থেকে উঠিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শক মো. আব্দুল করিমের কাছে নিয়ে যান। সেখানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাসান মোহাম্মদ সোয়াইব এবং কেন্দ্রের সুপারইন্টেনডেন্ট অধ্যক্ষ জিন্নাত রেহানা ফেসদৌসী ওই পরীক্ষার্থীর কাগজপত্র যাচাই করে তার প্রক্সির বিষয়টি নিশ্চিত হন।

এ ঘটনার পর দুপরে তাকে সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রীয়া চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িতদের তথ্য বের করা হবে।’

আরও পড়ুন:
ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার: দিনাজপুরে ১৮ পরীক্ষার্থী আটক
গাইবান্ধায় প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায়: আটক ৩৫
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: প্রথম গ্রুপের পরীক্ষা সম্পন্ন
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর অপেক্ষা
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: তিন বিভাগের পরীক্ষা আজ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
6 vehicles fire in two offices of Awami League in Sirajganj due to strike blockade

অবরোধে সিরাজগঞ্জে ৬ গাড়ি, আ. লীগের দুই কার্যালয়ে আগুন

অবরোধে সিরাজগঞ্জে ৬ গাড়ি, আ. লীগের দুই কার্যালয়ে আগুন কোলাজ: নিউজবাংলা
দুর্বৃত্তের আগুনে ৭ হাজার ৫০টি মুরগির বাচ্চা, গম বোঝাই ট্রাক এবং আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। তবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।

সরকারের পদত্যাগ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪১ দিনে হরতাল ও অবরোধ চলাকালে সিরাজগঞ্জে ৬টি পণ্যবাহী ট্রাক, দুটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

দুর্বৃত্তের আগুনে ৭ হাজার ৫০টি মুরগির বাচ্চা, গম বোঝাই ট্রাক এবং আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। তবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।

শুক্রবার সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত ৩১ অক্টোবর জেলার রায়গঞ্জের চান্দাইকোনায় দাঁড়িয়ে থাকা গম বোঝাই একটি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া ৫ নভেম্বর শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশে পণ্যবাহী ট্রাক, ২০ নভেম্বর কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী এলাকায় আরও একটি গম বোঝাই ট্রাক, ২৯ নভেম্বর নলকা এলাকায় সবজি বোঝাই পিকআপ ও ৩ ডিসেম্বর উল্লাপাড়ার নবগ্রাম এলাকায় করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিসের পার্সেলবাহী একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর রাতে চৌহালীর এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের পর ৫ নভেম্বর ভোরে শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়ের বাদলবাড়ীতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দেয়া হয়। সবশেষ গত ৬ ডিসেম্বর রাতে শাহজাদপুরের টেটিয়ারকান্দা এলাকায় মুরগির বাচ্চাবাহী একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়।

৬টি পণ্যবাহী ট্রাক ও দুটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুনের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে মুরগির গাড়ি, গম বোঝাই ট্রাক ও কুরিয়ার সার্ভিসের পরিবহনে।

ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপাররা বলেন, ‘হরতাল ও অবরোধের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি বের করি। যদিও মালিক নিষেধ করে, তার পরও বাহির হয়েছিলাম। বাড়িতে বউ বাচ্চা আছে, সংসার চালাতে হয়। ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট ভরে না। শুধু পেটের দায়ে আমরা গাড়ি বের করার কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীরা আমাদের গাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ট্রাকে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। ট্রাকের ক্ষতির পাশাপাশি আমাদেরও মারপিট করছে তারা। গাড়িতে আগুন দেয়ায় মালিকদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এ সকল অন্যায়ের হাত থেকে কবে মুক্তি পাব আমরা!’

ট্রাকে কীভাবে আগুন দেয়া হয়েছে- জানতে চাইলে চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘কুড়িগ্রাম থেকে সবজি বোঝাই করে মিনি ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে নলকা এলাকায় পৌঁছালে বেশ কয়েকজন গাড়ির গতিরোধ করে। পরে আমি গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। এ সময় আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

‘খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু তারা আসার আগেই আগুনে ট্রাকটির কেবিন পুড়ে যায়। আগুনে পিকআপে থাকা সবজি নষ্ট হয়েছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি।’

মুরগির গাড়িতে আগুন দেয়ার বিষয়ে চালক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘ওইদিন রাতে গাজীপুর থেকে মুরগির বাচ্চাবাহী পিকআপ ভ্যানটি নিয়ে পাবনার দিকে যাওয়ার সময় উপজেলার দুর্গাদহ গ্যাস ফিলিং স্টেশন এলাকায় পৌঁছলে গাড়ি থামিয়ে আমাকে মারপিট করা হয়। এরপর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। এতে পিকআপ ভ্যানে থাকা সাত হাজার ৫০টি মুরগির বাচ্চা পুড়ে মারা গেছে। পরে আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি।’

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুর মান্নান বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। গত ৪১ দিনে এ জেলায় ৬টি পণ্যবাহী গাড়ি ও দুটি আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ট্রাকে থাকা বিভিন্ন পণ্য। আগুন নির্বাপন করতে জেলার ৯টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জনবল কাজ করেছে।’

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিক। যারা চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর সঙ্গে জড়িতদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীতেও আইন-শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Money and rice are lost by showing the implementation of the project on paper

প্রকল্প কাগজে-কলমে, বাস্তবায়ন দেখিয়ে টাকা ও চাল লোপাট

প্রকল্প কাগজে-কলমে, বাস্তবায়ন দেখিয়ে টাকা ও চাল লোপাট কাগজে-কলমে কাবিখা (বাঁয়ে) ও কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও কাজের অস্তিত্ব মেলেনি সরেজমিনে। কোলাজ: নিউজবাংলা
সরেজমিনে গিয়ে মহাদেবপুরে কাবিখার ‘নাটশাল বটতলীর পাকা রাস্তা হতে আনোয়ারের মিল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ এবং ‘মহাদেবপুর কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ হতে ব্র্যাক অফিস হয়ে নজরুল বাবুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। কিন্তু এ বছরের জুন মাসে কাগজে-কলমে প্রকল্প দুটি শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।

গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দরিদ্র জনগণের আয় বৃদ্ধি, দেশের সর্বত্র খাদ্য সরবরাহের ভারসাম্য আনতে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা দেশে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। কিন্তু এর ব্যতিক্রম নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা।

প্রকল্পের টাকা দরিদ্র শ্রমিকদের পকেটে যাওয়ার বদলে ঢুকেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের পকেটে। প্রকল্প বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, প্রকল্পের নামে এক কোদাল মাটি পর্যন্ত খোঁড়া হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বরাদ্দকৃত অর্থ ও খাদ্যশস্য হাপিশ করেছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে মহাদেবপুরে কাবিখার ‘নাটশাল বটতলীর পাকা রাস্তা হতে আনোয়ারের মিল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ এবং ‘মহাদেবপুর কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ হতে ব্র্যাক অফিস হয়ে নজরুল বাবুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। কিন্তু এ বছরের জুন মাসে কাগজে-কলমে প্রকল্প দুটি শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।

গত পাঁচযুগ থেকে মহাদেবপুর উপজেলার নাটশাল গ্রামে বসবাস করছেন ৬০ বছর বয়সী নরেশ পাল। অথচ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় তাদের গ্রামে বাস্তবায়িত ‘নাটশাল বটতলীর পাকা রাস্তা হতে আনোয়ারের মিল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ প্রকল্পের বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।

জানতে চাইলে নরেশ পাল বলেন, ‘গত ১৫ বছর আগে একবার এই রাস্তায় মাটি কাটার কাজ হয়েছে। এরপর আর সংস্কার তো দূরের কথা, এক কোদাল মাটি পর্যন্ত খোঁড়া হয়নি।’

প্রকল্প কাগজে-কলমে, বাস্তবায়ন দেখিয়ে টাকা ও চাল লোপাট
নওগাঁর মহাদেবপুরে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ৫ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও নাটশাল বটতলী-আনোয়ারের মিল সড়কে এক কোঁদাল মাটি পর্যন্ত খোঁড়া হয়নি। ছবি: নিউজবাংলা

শুধু নরেশ পাল একা নয়, এমন কোনো প্রকল্পের কাজ হতে দেখেননি বলে নিশ্চিত করেছেন ওই গ্রামের মকলেছার, খলিল, আজিজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামসহ অনেকেই।

এ ছাড়া একই অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের অধীনে ‘মহাদেবপুর কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ হতে ব্র্যাক অফিস হয়ে নজরুল বাবুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বলে মহাদেবপুর সদর ইউপি কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে। তবে এ প্রকল্পের কাজেরও কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।

ওই এলাকার মনিমালা, আব্দুল জব্বার, অনিতাসহ ১০-১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত কয়েক বছরে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি। এটি এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

প্রকল্প কাগজে-কলমে, বাস্তবায়ন দেখিয়ে টাকা ও চাল লোপাট
কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কলেজ পাড়া পাইকড়ের গাছ-নজরুল বাবুর বাড়ি সড়টির এখনও বেহাল দশা। ছবি: নিউজবাংলা

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজ না করেই নামসর্বস্ব শ্রমিকের তালিকা তৈরি করে ভূয়া মাস্টার রোলের মাধ্যমে বরাদ্দের অর্থ ও খাদ্যশস্য পরিশোধ দেখিয়েছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে অস্তিত্বহীন প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাত করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

স্থানীয় সুশাসন বিশ্লেষকদের মতে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে আরও কঠোর হতে হবে। দুর্নীতিবাজদের লাগাম টেনে ধরতে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করে শাস্তি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি মহাদেবপুর সদর ইউপি কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় উপজেলার নাটশাল গ্রামে ‘নাটশাল বটতলীর পাকা রাস্তা হতে আনোয়ারের মিল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ এবং উপজেলা সদরের কলেজ পাড়া এলাকায় ‘মহাদেবপুর কলেজ রোড পাইকড়ের গাছ হতে ব্র্যাক অফিস হয়ে নজরুল বাবুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ নামে পৃথক দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এর একটিতে পাঁচ টন চাল ও অপরটিতে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মহাদেবপুর সদর ইউপি সদস্য শিহাব রায়হান ও জান্নাতুল ফেরদৌসী। কাগজে-কলমে ‘প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে’ উল্লেখ করে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ও অর্থ উত্তোলন করেছেন পিআইসির সভাপতি ও সম্পাদক।

প্রকল্প কাগজে-কলমে, বাস্তবায়ন দেখিয়ে টাকা ও চাল লোপাট
মহাদেবপুরে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের কাবিখা ও কাবিটার বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পের তালিকা।

কাজ না করেই বরাদ্দের অর্থ ও খাদ্যশস্য আত্মসাতের বিষয়ে মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও মহাদেবপুর সদর ইউপি সদস্য শিহাব রায়হান। প্রতিবেদককে তিনি সামনাসামনি ‘দেখা করতে’ বলেন।

অন্যদিকে প্রকল্পের বিষয়ে তেমন কিছুই জানাতে পারেননি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুলতান হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেখতে হবে প্রকল্পের কী অবস্থা।’

তার যোগসাজশে অস্তিত্বহীন ওই দুটি প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ ও খাদ্যশস্য আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান এ সরকারি কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহাগের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনিও এ প্রতিবেদককে ‘অফিসে এসে দেখা করতে’ বলেন।

আরও পড়ুন:
জোনভুক্ত হয়েও সরকারি সুবিধা পান না গাইবান্ধার জেলেরা
সরিয়ে দেয়া হলো ‘ঘুষখোর’ সেই ভূমি কর্মকর্তাকে
সরকারি খরচে পোষায় না ভূমি কর্মকর্তার
মাদ্রাসায় ‘লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য’, প্রতিবাদ করায় বরখাস্তের অভিযোগ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Use of electronic devices 18 candidates detained in Dinajpur

ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার: দিনাজপুরে ১৮ পরীক্ষার্থী আটক

ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার: দিনাজপুরে ১৮ পরীক্ষার্থী আটক ফাইল ছবি
আটককৃত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছেন।

সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগে দিনাজপুরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা সদরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়।

দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি ফরিদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন- বিরল উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মো. আজহারুল ইসলামের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মো. কামরুজ্জামান, একই উপজেলার রানীপুর গ্রামের আবুল কাদেরের স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী রাহেনা খাতুন; বীরগঞ্জ উপজেলার এলেঙ্গা গ্রামের প্রদীপ রায়ের স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী শেফালী রায়, একই উপজেলার পশ্চিম কালাপুকুর গ্রামের তাশদিকুল আলমের ছেলে ৩০ বছর বয়সী মো. মনিরুজ্জামান, কগিরপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে ৩১ বছর বয়সী জামিল বাদশা ও বনগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ২৮ বছর বয়সী মো. রাকিব; দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপর গ্রামের বেলাল হোসেনের স্ত্রী ২৮ বছর বয়সী মুসলিমা খাতুন, একই উপজেলার দাইনুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ২৮ বছর বয়সী শরিফুল আলম, ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল সালামের মেয়ে ২৮ বছর বয়সী উম্মে সালমা ও খানপুর গ্রামের সুলতান মাহমুদের মেয়ে ২৯ বছর বয়সী নাসরিন জাহান; চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের ২৭ বছর বয়সী কবিতা রানী রায়, একই উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের যতিশ চন্দ্র রায়ের ছেলে ৩৪ বছর বয়সী সবজ চন্দ্র রায়; হাকিমপুর উপজেলার মাধবপাড়ার গোলাম বিকরিয়ার স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী জাকিয়া ফেরদৌস; বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দায়োরপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মহিদুল ইসলাম; নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের আবু তালেব সরকারের মেয়ে ৩১ বছর বয়সী তানিয়া মোশতাবী; বোচাগঞ্জ উপজেলার শহিদপাড়ার আব্দুল গফুর মোল্যার ছেলে ২৯ বছর বয়সী সায়েম মোল্যা তন্ময়; ফরিদপুর জেলার নগরবান্দা থানার দফা গ্রামের ফারুক মাতব্বরের মেয়ে ২০ বছর বয়সী উর্মিলা আক্তার এবং ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বকুয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে ২৭ বছর বয়সী সুজন আলী।

ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে কর্মকর্তারা ১৮ জনকে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে আটক করেন। পরে তাদেরকে পুলিশে কাছে সোপর্দ করেন তারা। আটককৃত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:
গাইবান্ধায় প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায়: আটক ৩৫
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: প্রথম গ্রুপের পরীক্ষা সম্পন্ন
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর অপেক্ষা
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: তিন বিভাগের পরীক্ষা আজ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Gaibandha fails initial recruitment test 35 arrested

গাইবান্ধায় প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায়: আটক ৩৫

গাইবান্ধায় প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায়: আটক ৩৫ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের লোগো। ছবি: সংগৃহীত
র‍্যাব-১৩ গাইবান্ধার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (এএসপি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে।’

গাইবান্ধায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইলের মাধ্যমে অসদুপায় পরীক্ষা দেয়ায় পরিক্ষার্থীসহ এতে জড়িত ৩৫ জনকে আটক করেছে র‍্যাব।

পরীক্ষা চলাকালীন জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র ও স্থান থেকে শুক্রবার সকালে তাদেরকে আটক করে র‍্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের সদস্যরা।

র‍্যাব-১৩ গাইবান্ধার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (এএসপি) মোস্তাফিজুর রহমান শুক্রবার দুপুরে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের কাছ থেকে ২২টি মাস্টার কার্ড, ১৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস, ১৬টি মোবাইল ফোন এবং ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিকেল তিনটায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:
কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটককে ছুরিকাঘাত, আটক ৪ ছিনতাইকারী
তারা ছুটির দিনের ছিনতাইকারী
ফতুল্লায় বিএনপির মশাল মিছিল, আগুন,ভাঙচুর,ককটেল বিস্ফোরণ: আটক
সুড়ঙ্গে ঢুকে শ্রমিকদের কাছে উদ্ধারকারীরা
সুড়ঙ্গে আটকা শ্রমিকদের থেকে ৫ মিটার দূরে উদ্ধারকারীরা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Robbery at gold shop in Noakhali kills bazaar watchman

নোয়াখালীতে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি, বাজার পাহারাদারকে হত্যা

নোয়াখালীতে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি, বাজার পাহারাদারকে হত্যা নোয়াখালীতে শুক্রবার দুইটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ছবি: নিউজবাংলা
মা-মনি জুয়েলার্সের মালিক মিন্টু চন্দ্র নাথ বলেন, ‘তারা আমার দোকানের স্বর্ণের লকার গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কেটে ২৫০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫০ ভরি রুপা ও নগদ আড়াই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।’

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় দুইটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

ওই সময় ডাকাত দল শহীদ উল্লাহ নামে এক বাজার পাহারাদারকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে শুক্রবার ভোরে মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্সে এ ডাকাতি ও হত্যার ঘটনা ঘটে।

প্রাণ হারানো শহীদ ধানশালিক ইউনিয়নের চর গুল্লাখালী গ্রামের আবদুল হকের ছেলে।

মা-মনি জুয়েলার্সের মালিক মিন্টু চন্দ্র নাথ বলেন, ‘শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত পিকআপ ভ্যান নিয়ে চাপরাশিরহাট বাজারে ডাকাতি করতে আসে। তারা আমার দোকানের স্বর্ণের লকার গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কেটে ২৫০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫০ ভরি রুপা ও নগদ আড়াই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।’

নূর জুয়েলার্সের মালিক নূর আলম জানান, একই সময়ে নূর জুয়েলার্স থেকে সাত ভরি স্বর্ণ ও আড়াইশ ভরি রুপা লুট করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘটনা টের পেয়ে ডাকাতদের প্রতিহত করতে চেষ্টা করে বাজারের পাহারাদার শহীদ উল্লাহ। ডাকাত দল তাকে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

কবিরহাট থানার ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল বাজার পাহারাদার শহীদের মাথায় আঘাত করে। পরে অতিরক্তি রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।’

আরও পড়ুন:
রেকর্ড বৃদ্ধির পর অবশেষে স্বর্ণের দাম কমল
পঞ্চগড়ে প্রায় সাড়ে তিন শ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার বিজিবির
শাহজালালে যাত্রীর পেটে ‘সোনার ডিম’, উদ্ধার ৭ কেজি
উড়োজাহাজের সিটের নিচে সাড়ে ৪ কেজি স্বর্ণ
স্বর্ণের দাম আরেক দফা বেড়ে ভরি ১০৯৮৭৫

মন্তব্য

p
উপরে