মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িত মেডিকো কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. জোবাইদুর রহমান জনি। ২০০৫ সাল থেকে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তিনি। প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসিমের অন্যতম সহযোগী এই জনি।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রেসে মেশিনম্যানের দায়িত্বে থাকা আব্দুস সালামের খালাত ভাই জসিম। প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁসের পর জসিম সেগুলো সারাদেশে বিক্রি করতেন। আর এই সিন্ডিকেট তৈরিতে অন্যতম সহযোগী মেডিকো কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পরিচালক জোবাইদুর রহমান জনি। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে মেডিকো কোচিং সেন্টারের শাখা খুলে ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রির সিন্ডিকেট তৈরি করে দেন।
সিআইডির সূত্র দাবি করেছে, মেডিকো কোচিং সেন্টারের মালিকের সঙ্গে আরও কিছু কোচিং সেন্টারের মালিক মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং বিক্রিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৭ চিকিৎসকসহ চক্রের ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। সংস্থাটির মুখপাত্র আজাদ রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার হওয়াদের একজন হলেন জনি। ২০০৫ সাল থেকে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত তিনি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের পাশাপাশি মেডিক্যাল ভর্তি যোগ্যতার অবৈধ কাগজ তৈরি করে ‘চান্স পাইয়ে দেয়া’র তথ্য পাওয়া গেছে। মাস্টারমাইন্ড জসীমের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী তিনি। তার বিরুদ্ধে দেশে বাড়ি-গাড়ি করার পাশাপাশি বিদেশেও কোটি কোটি টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ পর্যন্ত কয়েক হাজার পরীক্ষার্থীর কাছে ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রির তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
সিআইডির এই অভিযানে চক্রের আরেক সদস্য আক্তারুজ্জামান তুষারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জসিমের ঘনিষ্ঠ সহচর তুষার ই-হক কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত। তিনিও ২০০৫ সাল থেকে এই চক্রের সদস্য। এর আগে ২০১২ সালে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ছাড়া পেয়ে একই কাজে জড়িত হওয়ায় ২০১৫ সালে র্যাবের হাতে ধরা পড়েছিলেন এই তুষার।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ভুয়া কাগজ তৈরি করে এ পর্যন্ত কতজনকে মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে সে ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রের বাকি সদস্যদের সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন তুষার।
মেডিক্যালের প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের প্রধান জসিম উদ্দিন ভুঁইয়ার বাড়ি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানার জয়মন্টব ইউনিয়নের খানবানিয়ারা গ্রামে।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, জসিম প্রশ্নফাঁসে জড়ান তার খালাতো ভাই সালামের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রেসে মেশিনম্যান হিসেবে কাজ করতেন সালাম। তার সঙ্গেই প্রেসে যাতায়াত। এক সময় দুই ভাই মিলে গড়ে তোলেন মেডিক্যালের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সিন্ডিকেট।
২০১১, ২০১৫ ও ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জসিম। জামিনে ছাড়া পেয়ে একই অপরাধে জড়ান তিনি। একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন জসিম। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জসিমের সম্পদ ফুলে ফেঁপে ওঠে প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়ানোর পর থেকে। ঢাকার একাধিক এলাকায় বাড়ি, গার্মেন্টস, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, বিদেশে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থী পাঠানোর কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার।
সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, ‘সাতজন চিকিৎসকসহ প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে ব্রিফ করবেন সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।’
আরও পড়ুন:শিক্ষাক্রমে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা সংশোধন করা হবে জানিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, এ নিয়ে যেকোনো ধরনের অপপ্রচার করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি রোববার এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
এনসিটিবির সচিব নাজমা আখতার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাক প্রাথমিক হতে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের মানসম্পন্ন শিক্ষা উন্নয়ন ও প্রসারে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা লক্ষ করছি স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী সম্প্রতি নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে বা আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থি কাজকে শিক্ষাক্রমের কাজ বলে প্রচার করা হচ্ছে।
‘নবীর ছবি আঁকতে বলা হয়েছে লিখে মিথ্যাচার করছে। হিন্দি গানের সাথে স্কুলের পোশাক পরা কিছু ছেলেমেয়ে ও ব্যক্তির অশ্লীল নাচ আপলোড করে বলা হচ্ছে শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা, যা সর্বৈব মিথ্যা। কিছু লোক ব্যাঙের লাফ বা হাঁসের ডাক দিচ্ছে, এমন ভিডিও আপলোড করে বলা হচ্ছে এটা নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ, যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। নতুন শিক্ষাক্রমে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করে বলা হয়, ‘আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে বিকশিত করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা যারা করছেন, তাদের এরূপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।
‘শিক্ষাক্রমের কোনো ত্রটিবিচ্যুতি থাকলে তা আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই তা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিমার্জন করব, কিন্তু অপপ্রচার করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমতাবস্থায় সর্বসাধারণকে মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য এনসিটিবি অনুরোধ জানাচ্ছে এবং এরূপ মিথ্যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড, শেয়ার বা কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনী পরিচালিত লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের মার্কেটিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের হেলাল উদ্দিন।
মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে কলেজে যোগ দেন তিনি। ওই সময় তাকে কলেজের অধ্যক্ষ ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
হেলাল উদ্দিন শাহপরীর দ্বীপের হাজি বশির আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পাস করেন। ২০১৩ সালে কক্সবাজার কমার্স কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও ২০১৯ সালে এমবিএ সম্পন্ন করেন।
শাহপরীর দ্বীপের ডাংগরপাড়ার প্রয়াত আবদুল মোতালেবের ছেলে হেলাল উদ্দিন।
শিক্ষক হিসেবে যোগদানের বিষয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস যেমন ভালোবাসায় পূর্ণ, তেমনি বিশ্বাসকে সংহত রাখতে আমি কখনোই আপস করিনি। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সোনার বাংলা গড়ার এই অভিযাত্রায় যুক্ত হওয়ার তীব্র ইচ্ছে আমার এবং আমার পরিবারের।’
হেলালের কৃতিত্বে উচ্ছ্বসিত টেকনাফের অনেক বাসিন্দা। তিনি যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছেন, সেখানকার শিক্ষক ফযেজ উল্লাহ বলেন, ‘কলেজের শিক্ষক হওয়া মধুর প্রাপ্তি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সে পেশাদারত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলবে, এ কামনা করি আমরা সবাই।
‘লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে তার এই অগ্রযাত্রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।’
আরও পড়ুন:দেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লক্ষ্যে ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
লটারির এ অনুষ্ঠানটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ফেসবুক পেজ এবং টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
মাউশি থেকে জানা যায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৬৫৮টি সরকারি ও ৩ হাজার ১৮৮টি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন শুরু হয় গত ২৪ অক্টোবর। এই প্রক্রিয়া চলমান ছিল ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
এ প্রক্রিয়ায় দেশব্যাপী ৩ হাজার ৮৪৬টি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লক্ষ্যে মোট ১০ লাখ ৬০ হাজার নয়টি শূন্য আসনের চাহিদা পাওয়া যায়। শূন্য আসনের বিপরীতে ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯২টি আবেদন জমা পড়ে। আবেদনগুলো থেকে ভর্তির লক্ষ্যে শ্রেণিভিত্তিক বণ্টন কার্যক্রমে ডিজিটাল লটারি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৪৬ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ২৫৮ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি গতবারের চেয়ে কমেছে।
গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিলো ২১ হাজার ৮৫৫জন। এ বছর শতভাগ পাশ করেছে ৩৭ টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। শতভাগ ফেল করেছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৪টি।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, এবার রাজশাহী বোর্ডে মোট পাস করেছে এক লাখ ৮হাজার ৫৮০জন। পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা। ছাত্রীদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার ৭৩ দশমিক ৫৫ ভাগ। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রীর সংখ্যা ৫ হাজার ৮১৩ জন। আর জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৪৪৫ জন।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আওতায় বিভাগের আট জেলায় এবার পরীক্ষার্থী ছিলো ১ লাখ ৪০ হাজার ১১৫ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দেয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯০জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৩ হাজার ২২৩ জন আর ছাত্রী ৬৫ হাজার ১৬৭জন। বিভাগের আট জেলার ৭৪৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী ২০০টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
পাসের হারে এগিয়ে রাজশাহী জেলা, জিপিএ-৫ এ বগুড়া সেরা
পাসের হার বিবেচনায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সেরা হয়েছে রাজশাহী জেলা। তবে জিপিএ -৫ এ রাজশাহী বিভাগের মধ্যে সবার উপরে আছে বগুড়া জেলা।
রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম এসব
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষনে দেখা যায, রাজশাহী জেলাতে পাস করেছে ২৩ হাজার ৮৫ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৬২৫ জন, পাসের হার ৮৩ দশমিক ৩৯। চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাস করেছে ৭ হাজার ৩৫৯ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪৩১ জন, পাসের হার ৭১ দশমিক ৫৬।
নাটোরে পাস করেছে ৯ হাজার ২৯ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫৮৪ জন, পাসের হার ৭৮ দশমিক ০৯। নওগাঁয় পাস করেছে ৯ হাজার ৮৬০ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩৯৮ জন, পাসের হার ৭৬ দশমিক ৪৭। পাবনায় পাস করেছে ১৪ হাজার ২৪৩ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১হাজার ৩৭ জন, পাসের হার ৭৬ দশমিক ৩৩।
সিরাজগঞ্জে পাস করেছে ১৮ হাজার ২৫৪ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ হাজার ২১৪ জন, পাসের হার ৭৪ দশমিক ৭৪। বগুড়া জেলায় পাস করেছে ২১ হাজার ৮৭৪ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৮৬ জন, পাসের হার ৮৩ দশমিক ২৩, জয়পুরহাট জেলায় পাস করেছে ৪ হাজার ৮৭৬ জন, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২৮৩ জন, পাসের হার ৭৩ দশমিক ৮৫।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় সাদিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
রোববার দুপুরে উপজেলা সদর ইউনিয়নের সতারো রশি গ্রামে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। সাদিয়া আক্তার উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের আলী হোসেনের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, সাদিয়া সদরপুর সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরিক্ষা অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে জেনে নিজের ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেয় সাদিয়া। পরে প্রতিবেশীরা তাকে সদরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে সদরপুর থানা ওসি মামুন আল রশিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। এবার বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া এবার জিপিএ-৫ কম পেয়েছেন ৩ হাজার ১৮২ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৮৮১ জন। এবার পেয়েছে ১ হাজার ৬৯৯ জন।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুন চন্দ্র পাল বোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ইংরেজিতে খারাপ করা ও গ্রামাঞ্চলের কলেজগুলো ভালো ফলাফল করতে না পারায় এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে। এ ছাড়া গত তিন বছর সীমিত পরিসরে পরীক্ষা হওয়ায় পাসের হার বেশি ছিলো। এবার সম্পূর্ণ সিলেবাস ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হওয়ায় ফলাফলে কিছুটা প্রভাব পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। সিলেট ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীই মানবিকে পড়ে। অথচ অন্তত ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগে পড়লে শিক্ষার মান অনেক বাড়তো। পাসের হার এবং জিপিএ-৫ বাড়তো। বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী বাড়াতে শিক্ষা বিভাগের সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৮৩ হাজার ১২৩ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৫৯ হাজার ৫৩৬ জন। পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৩ হাজার ৯১৬ ছেলে ও ৩৫ হাজার ৬২০ মেয়ে। এর মধ্যে ৮১৯ ছেলে ও ৮৮০ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
এবার সিলেটে শতভাগ পাস করেছে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে শূন্য পাস নেই কোন প্রতিষ্ঠানেই।
গত বছর এইচএসসিতে সিলেট বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬৬ হাজার ৪৯১ জন। পাস করেছিল ৫৪ হাজার ১৪২ জন। পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এর আগের বছর ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
দিনাজপুরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছর অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার (এইচএসসি) ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে রোববার। এই বোর্ডে ৬৭১টি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১৬টি কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৬ জন। ফলাফলে ১৬টি কলেজের সকলেই অকৃতকার্য হয়েছে।
রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর সাজ্জাদ আলী এ তথ্য জানান।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে অনুযায়ী, এই শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৬৭১টি কলেজের মোট ১ লাখ ১২ হাজার ২৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৮২ হাজার ৫৭৯ জন। এই বোর্ডে পাশের হার ৭৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
তবে, ৬৭১টি কলেজের মধ্যে ১৬টি কলেজের কেউই পাশ করতে পারেনি। এইচএসসি পরীক্ষায় ১৬টি কলেজের মোট ৪৬ জন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন।
কলেজগুলো হলো কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহানগঞ্জ আদর্শ কলেজ (১১ জন), একই জেলার উলিপুর উপজেলার বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল ও কলেজ (৪ জন), রৌমারি উপজেলার দাঁতভাঙ্গা মডেল কলেজ (১ জন), নাগেশ্বরী উপজেলার সমাজকল্যাণ মহিলা কলেজ (১ জন) ও ভুরুঙ্গামারি উপজেলার মেইডাম কলেজ (১ জন), লালমনিহাট জেলার আদিতমারি উপজেলার বেহলাবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ (৫ জন), একই জেলার আদিতমারি উপজেলার কুমরিরহাট এসসি স্কুল এন্ড কলেজ (২ জন), কালিগঞ্জ উপজেলার দুহুলি এসসি হাই স্কুল ও কলেজ (১ জন), দক্ষিণ ঘানাসিয়াম স্কুল ও কলেজ (১ জন), দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার বেপারিতলা আদর্শ কলেজ (৫ জন) ও ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর লক্ষিপুর হাই স্কুল ও কলেজ (১ জন), ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মোড়লহাট জনতা স্কুল ও কলেজে (৫ জন), সদর উপজেলার কদমরাসুল হাট স্কুল এন্ড কলেজ (৪ জন) ও পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ আদর্শ কলেজ (১ জন), গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ফকিরহাট মহিলা কলেজ (২ জন), নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গলমুন্ডা আদর্শ কলেজ (১ জন)।
১৬টি কলেজের ফলাফল শূন্যের বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর সাজ্জাদ আলী বলেন, ‘অকৃতকার্য হওয়া কলেজগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য