বাংলাদেশ পুলিশে নারী পুলিশ সদস্য সংকট নতুন কিছু নয়। তবে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর মতো সংস্থার জেলা ইউনিটগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতে নারী পুলিশের সংখ্যা শূন্য। যেসব ইউনিটে আছে সেখানেও সংখ্যাটা নামমাত্র। এতে করে নারী সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে।
পিবিআই-এর দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারী পুলিশ না থাকায় নারী আসামি গ্রেপ্তার, নারী ভিকটিমকে মেডিক্যাল করানো থেকে শুরু করে নারী ও শিশু সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নারী আসামি কিংবা ভিকটিম সংক্রান্ত তদন্তেও বিপাকে পড়তে হয় কর্মকর্তাদের।
এছাড়া আদালত থেকে নারী নির্যাতনের সিআর মামলার একটা বড় অংশ তদন্তের ভার দেয়া হয় পিবিআইকে। নারী পুলিশ স্বল্পতায় এই মামলাগুলোর তদন্তে ধীরগতি নেমে আসে, ভোগান্তিতে পড়তে হয় পিবিআই কর্মকর্তাদের।
পুলিশের বিশেষায়িত এই তদন্ত সংস্থায় মোট কর্মরত আছেন ২০৭০ জন পুলিশ সদস্য। তাদের মধ্যে নারী সদস্য মাত্র ৭৯ জন। ৪৩ জন বিভিন্ন জেলা ইউনিটে কর্মরত। বাকি ৩৬ জন পিবিআই হেডকোয়ার্টার, মেট্রোপলিটনগুলো এবং পিবিআই-এর স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) বিভাগে কর্মরত।
পিবিআইয়ে জেলা ও মেট্রোপলিটন মিলে মোট ইউনিট রয়েছে ৪৭টি। এর বাইরে হেডকোয়ার্টার ও স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) ইউনিট রয়েছে।
জেলা ইউনিটের সংখ্যা ৪২টি। এর মধ্যে ২৭টিতে নারী পুলিশ সদস্য রয়েছে। বাকি ১৫টি পুরোপুরি নারী পুলিশ সদস্যহীন।
আবার ২৭টি ইউনিটে নারী পুলিশ থাকলেও তাদের সংখ্যা সীমিত। ১৩ ইউনিটে ১ জন, ১১ ইউনিটে ২ জন এবং ৩ ইউনিটে ৩ জন করে নারী পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে যে ১৫ জেলায় নারী পুলিশ না থাকা অবস্থায় সেখানে নারী ভিকটিম কিংবা নারী আসামি সংক্রান্ত কার্যক্রম কীভাবে পরিচালনা করা হয়?
প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এই প্রতিবেদক বেশ কয়েকটি জেলা ইউনিটের পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পিবিআইয়ের ঢাকা জেলায় কোনো নারী সদস্য নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই ইউনিটের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারী পুলিশ না থাকায় আমাদের বিপদে পড়তে হয়। তখন বিভিন্ন জায়গায় রিকুইজিশন দিয়ে আমাদের নারী পুলিশ সদস্য নিয়ে আসতে হয়।
‘আবার যাদের কাছে রিকুইজিশন দেয়া হয় তাদের ওখানেও নারী পুলিশ বেশি থাকে না। তাছাড়া এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় এসে কাজ করতেও ওই নারী পুলিশরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। ফলে তদন্ত ব্যাহত হয়। কাজ থেমে না থাকলেও তদন্ত কার্যক্রমের গতি কমে যায়।’
একই ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের অফিসে কোনো নারী পুলিশ নেই। নারী সেবা প্রার্থী, মামলার নারী বাদীর কথা শোনা, নারী ভিক্টিম উদ্ধার, মেডিক্যাল করানো, নারী আসামি গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদ কিংবা নারী আসামিকে রিমান্ডে পেলে তখন নারী পুলিশ সঙ্গে রাখতে হয়। এটা আইনেই বলা আছে।
‘এছাড়া নারী ভিকটিমের অভিযোগ শোনার জন্যও নারী পুলিশের প্রয়োজন। এক কথায় নারী সংক্রান্ত সব বিষয়েই নারী পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি অপরিহার্য। আমাদের ইউনিটে তা না থাকায় এসব ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত ঝামেলায় পড়তে হয়।’
পিবিআই নওগাঁ জেলার পরিদর্শক (অ্যাডমিন) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নারী সংক্রান্ত কোনো বিষয় থাকলে তদন্ত করতে গিয়ে আমরা মুশকিলে পড়ে যাই। অনেক সময় জেলা পুলিশে রিকুইজিশন দিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয় নারী পুলিশ সদস্য কখন আসবেন। এর মধ্যে আসামি পালিয়েও যেতে পারে। এমন বাস্তবতায় নিজেদের ইউনিটে নারী পুলিশ থাকাটা খুবই জরুরি।’
নারী আসামি গ্রেপ্তার করতে হলে নারী পুলিশ থাকতেই হবে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারী ও শিশু মামলা যেহেতু তাদের কাছে নিয়মিত আসছে তাই অবশ্যই নারী পুলিশ লাগবে। ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যদি পুরুষ হন, সেক্ষেত্রে ভিকটিমের জন্য সেটা বিব্রতকর হয়।
‘শুধু পিবিআই নয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে নারী পুলিশ সংখ্যা বাড়াতে হবে। এছাড়া যেসব নারী পুলিশ আছেন তাদেরও দক্ষ করে তুলতে হবে। কারণ তারাও দক্ষ নন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারী আসামি গ্রেপ্তার করতে হলে নারী পুলিশ থাকতেই হবে। এটা বাধ্যতামূলক। ধর্ষণ মামলাগুলো পুরুষ পুলিশ সদস্য তদন্ত করছেন এটাও তো বিব্রতকর।
‘যেহেতু পিবিআই এর মূল লক্ষ্য সেবা নিশ্চিত করা, তাই আইনে নারী পুলিশ থাকা বাধ্যতামূলক না হলেও, সেবা নিশ্চিত করতে এই সংকটের সমাধান করা উচিত। এই বাধা অতিক্রম করতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ দৃশ্যমান কী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটাও সবার সামনে ক্লিয়ার করা উচিত।’
স্পর্শকাতর মামলাগুলোতে আলামত নিয়ে যদি পুরুষ পুলিশ সদস্য কাজ করেন সেক্ষেত্রে নারী ভিকটিমরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। এ অবস্থায় তারা অভিযোগ দিতে নিরুৎসাহিত হবেন বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।
তিনি বলেন, ‘নারী সেবাদাতাকে বাদ দিয়ে নারী উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব? নারীরা ধর্ষণের শিকার, সাইবার ক্রাইমের ভিকটিম কিংবা যে কোনো সমস্যা হলেও অভিযোগ করতে আসতে চান না। কারণ দায়িত্বশীলরা প্রয়োজন অনুযায়ী নারী পুলিশ তৈরি করতে পারেননি। শুধু কনস্টেবল নয়, নারী অফিসারও বাড়াতে হবে।’
সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক মনে করেন সব ইউনিটেই পর্যাপ্ত নারী পুলিশের প্রয়োজন রয়েছে এবং এই সংখ্যা বাড়ানো উচিত।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারী পুলিশ সব ইউনিটেই থাকা উচিত। এটা ঠিক যে আমাদের নারী পুলিশ সদস্যের স্বল্পতা রয়েছে। এ কারণে হয়তো পিবিআইকে চাহিদা অনুযায়ী নারী পুলিশ দেয়া যায় না। নারী আসামিকে গ্রেপ্তার, মেডিক্যাল করানো, জিজ্ঞাসাবাদসহ নারী ও শিশু সংক্রান্ত সব কাজে অবশ্যই নারী পুলিশ থাকতে হবে।’
পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যখন প্রয়োজন হয় তখন থানা বা জেলা থেকে সহায়তা নিয়ে থাকি। আমরা নারী জনবল বাড়ানোর জন্য কাজ করছি। পর্যাপ্ত নারী পুলিশ পেলে সব ইউনিটেই বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।’
চেক ডিজঅনার মামলায় ক্রিকেটার ও মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাকিব আল হাসানের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার এ আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার রিপন মিয়া বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে শাহিবুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চেক ডিজঅনার মামলায় সাকিব আল হাসানসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর তিনজন হলেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের এমডি গাজী শাহাগীর হোসাইন এবং প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইমদাদুল হক ও মালাইকা বেগম।
আদালত ১৫ ডিসেম্বর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ১৯ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনি পরে এ মামলায় জামিন নেন।
আজ গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। বাদীপক্ষ সাকিবের সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, সাকিবের মালিকানাধীন অ্যাগ্রো ফার্ম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে ঋণ গ্রহণ করে। তার বিপরীতে দুটি চেক ইস্যু করে সাকিবের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। এরপর চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। দুই চেকে টাকার পরিমাণ প্রায় চার কোটি ১৫ লাখ।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ওবায়দুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সোমবার সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
এ ছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা আরও দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত।
আজ তাকে কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক পলকের জামিন আবেদন নাকচ করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার আরও দুই মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন ওবায়দুল ইসলাম। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পলককে গ্রেফতার করে ডিবি। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনকেন্দ্রিক একাধিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। একাধিক মামলায় তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাশিমপুরে রবিবার নিজ বসতঘর থেকে এক দম্পতি ও তাদের সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, রবিবার সকালে কাশিমপুরের গোবিন্দবাড়ী এলাকার একটি বাসা থেকে নাজমুলের মরদেহ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার স্ত্রী খাদিজা ও শিশু কন্যা নাদিয়ার লাশ বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, নাজমুল নিজে ফাঁসিতে ঝোলার আগে স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের জেরে এর আগে নাজমুল ব্লেড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা রক্তাক্ত করে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্যময় ও নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এক গণবিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি রবিবার এমন তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, ‘মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এবং ঈদ পরবর্তী তিন দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। আবদুল্লাহপুর থেকে ধউর/আশুলিয়া সড়ক একমুখীকরণ করা হবে। বিআরটি লেন দিয়ে শুধু আউটগোয়িংয়ের যান চলাচলের ব্যবস্থা থাকবে।
‘এ ছাড়াও আগামী ২৫ মার্চ থেকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটিতে শুধু ঢাকা মহানগর থেকে বের হওয়ার জন্য (একমুখী) সব ধরনের যানবাহন চলাচল করবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচলের বিষয়ে বলা হয়, ‘এই সড়কে আশুলিয়া-ধউর-কামারপাড়া-আব্দুল্লাহপুর হয়ে ঢাকা প্রবেশ করবে এমন যানবাহনগুলো আশুলিয়া-ধউর-পঞ্চবটি হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে গাবতলী/অন্য এলাকায় প্রবেশ করবে।
‘এ ছাড়াও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের এয়ারপোর্ট টু গাজীপুর আসা ও যাওয়ার লেন দুটিতে শুধু ঢাকা থেকে বের হওয়ার জন্য (একমুখী ডাইভারসন) সব ধরনের যানবাহন ঢাকা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তার দিকে চলাচল করবে। বিআরটির ঢাকায় প্রবেশের লেনটি দিয়ে কোনো যানবাহন ঢাকা অভিমুখে (ইনকামিং) আসতে পারবে না। মহাসড়কের অন্যান্য লেনের গাড়ি আগের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে। বিআরটির ঢাকা অভিমুখী যানবাহনগুলো অন্যান্য যানবাহনের সাথে নরমাল রাস্তায় বা লেনে ঢাকায় আগমন করবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এ ছাড়া ঈদযাত্রায় যানবাহনের চলাচল সুগম করার জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্যান্য যানবাহনকে যেসব সড়ক পরিহার করতে হবে, সেগুলো হলো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক (এয়ারপোর্ট টু আব্দুল্লাপুর), ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (যাত্রাবাড়ী টু সাইনবোর্ড), পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট সড়ক), ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক (মিরপুর রোড: শ্যামলী টু গাবতলী), ঢাকা-কেরানীগঞ্জ সড়ক (ফুলবাড়িয়া টু তাঁতীবাজার টু বাবুবাজার ব্রিজ), ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক (যাত্রাবাড়ী টু বুড়িগঙ্গা ব্রিজ), মোহাম্মদপুর বসিলা ক্রসিং হতে বসিলা ব্রিজ সড়ক, আবদুল্লাপুর টু ধউর ব্রিজ সড়ক।’
গত ৯ মার্চ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলের এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:সীমান্তবর্তী নাফ নদে অভিযানে গিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৩ জন সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বিজিবি ।
বাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার রাতে দেওয়া পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, গত দুই দিন ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদীতে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজবনির্ভর এ অপপ্রচারে বিজিবির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত এই তথ্যটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
‘প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ২২ মার্চ ভোররাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া ঘাটের নিকট দিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধ উপায়ে সাগরপথে বাংলাদেশে আসার সময় প্রবল স্রোতের কারণে নৌকাটি উল্টে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পার্শ্ববর্তী স্থানে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এবং অন্ধকার রাতের কারণে একজন বিজিবি সদস্য সম্ভাব্য পা পিছলে পড়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়।’
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া নৌকাসহ ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। সম্পূর্ণ দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং বর্তমানে নিখোঁজ একজন বিজিবি সদস্যসহ অন্যান্য রোহিঙ্গাদের উদ্ধার ও সার্চ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
ঠাকুরগাঁওয়ে এক স্কুলছাত্রীকে কুপ্রস্তাব, বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখানো এবং হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত বিচারের আবেদন করেছেন ছাত্রীর বাবা।
অভিযুক্ত শিক্ষক জেলার হরিপুর উপজেলার কাঁঠালডাঙ্গী রুহুল আমিন মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন।
গত ২৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর ওই শিক্ষার্থীর বাবার স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদনে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক...আমার নাবালিকা মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সাথে অসামাজিক ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করছে। আমার দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে আমার মেয়েকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থে হাত রেখে শপথ করায় ওই শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলে সে যেন কাউকে না জানায়, যদি সম্পর্ক স্থাপন না করে, তাহলে পরীক্ষায় কম নাম্বার দিয়ে ফেল করাবে, ক্লাসে মারপিট করবে এবং এর পরেও যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে কৌশলে আমার মেয়ের সাথে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবে। এমনকি মৃত্যুরও হুমকি দেয় ওই শিক্ষক।’
ওই আবেদনে তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতে পরবর্তীতে আমার মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। সবসময় মানসিক দুশ্চিন্তায় ভোগে। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছে জানালে প্রধান শিক্ষক বলেন, এর আগেও এ রকম আরও কয়েকটি ঘটনা ওই অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটিয়েছে। সেগুলো স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগের দাপট ও টাকার বিনিময়ে সেগুলো ধামাচাপা দিয়েছে। তার একটি কিশোর গ্যাং আছে, যারা তাকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করে।’
স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘ওই স্কুলের অফিস সহায়ক...এ অপকর্মগুলো ঘটানোর সহযোগিতা করে থাকে। এবারও বিষয়টি স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমি অতি দরিদ্র বলে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’
এ আবেদনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক বিচার ও শাস্তির দাবি জানান এ অভিভাবক।
পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা আবেদন আমলে নিয়ে সহকারী কমিশনার খাদিজাতুল কুবরা ফারিহা স্বাক্ষরিত ৭৮ নম্বর স্মারকে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাগজ পাঠানো হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কাগজ পাওয়ার পর হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হরিপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
গত ১১ মার্চ হরিপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রাইহানুল ইসলাম মিঞা স্বাক্ষরিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক কাগজে ১৭ মার্চ ওই বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটি ও অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
কিন্তু এর আগের দিন ১৬ মার্চ অভিযোগকারী ওই শিক্ষার্থীর বাবা স্বাক্ষরিত এক আবেদনে তিনি বলেন, শুনানির জন্য ধার্য দিনে পারিবারিক অসুবিধার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। একই আবেদনে অভিযুক্ত শিক্ষক একমত হয়ে স্বাক্ষর করেন।
এদিকে গুরুতর অভিযোগের পরও নির্ধারিত দিনে শুনানি না হওয়ায় এবং শুনানির জন্য অভিযোগকারীর সময়ক্ষেপণে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ দেখা দেয়।
স্থানীয় এক ব্যক্তির ভাষ্য, ‘অভিযোগকারীকে নানা রকমভাবে প্রভাব দেখানো হচ্ছে। চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য। কিন্তু আমরা তদন্ত চাই।
‘অভিযোগের তদন্তের ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চাই। ঘটনার পর থেকে ওই অভিভাবককে যে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, তা তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।’
নাম না প্রকাশের শর্তে ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও ঢাকায় একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। ওই শিক্ষক যদি এহেন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকে, তাকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো পবিত্র জায়গায় যাতে এসব কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে ব্যবস্থা করা হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও নারীঘটিত অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল। সে স্থানীয় প্রভাব এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয় এবং এই অভিযোগকারীদেরও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে ভয়ভীতি এবং আর্থিক মাধ্যমে সুরাহা করার চেষ্টা করে।
‘এভাবে অপরাধী বারবার পার পেয়ে যাওয়ার কারণে একই কর্মকাণ্ড বারবার ঘটানোর সুযোগ পেয়ে যায়।’
অভিযোগ করার পর তদন্তের দিন-তারিখ কেন পেছানোর আবেদন করলেন জানতে চাইলে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আগামী রবিবার স্থানীয়ভাবে বসার কথা আছে। সেখানে নাকি ওই শিক্ষককে জরিমানা ও বরখাস্ত করা হবে। তাই আমি সময় চেয়ে আবেদন করেছি।’
কারা এমন সিদ্ধান্ত নেবে জানতে চাইলে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্য শিক্ষকদের কথা বলেন।
এ বিষয়ে কাঁঠালডাঙ্গী রুহুল আমিন মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমিও অভিযুক্ত শিক্ষকের তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি দাবি করছি। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। বাদী ও বিবাদী যেকোনো মাধ্যমে যদি মীমাংসাও করে ফেলে, তার পরেও অভিযোগের সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে একটি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
‘তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয়, সে দাবিও জানাচ্ছি। আর যেখানে একটি তদন্ত হচ্ছে, সেখানে আমাদের আলাদাভাবে বসার প্রশ্নই আসে না। কোনো কারণে চাপে পড়ে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন কি না অভিযোগকারী, সেটিও তদন্তের বিষয়।’
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোজাফ্ফর আলী বলেন, ‘যখন ঘটনার সময় বলা হচ্ছে তখন আমি ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে ছিলাম না। এখন তদন্ত চলছে।
‘আমরা তদন্তে সহযোগিতা করছি, এতটুকুই। এখন বাদী, বিবাদী যদি নিজেরাই মীমাংসা করে ফেলে, আমাদের কী করার আছে?’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে কোনো কথা বলতে চাননি।
পরে সাক্ষাৎকার দেবেন জানালেও তাকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
অপর অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বলেন, ‘বিষয়টি তো মিটমাট হয়ে গেছে।’
কীভাবে মিটমাট হলো জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন।
হরিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রাইহানুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের তদন্ত চলমান। একটি নির্দিষ্ট দিনে শুনানির কথা থাকলেও অভিযোগকারীর আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তী সময়ে শুনানির দিন জানিয়ে দেওয়া হবে।’
হরিপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর বাবার লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাকে চিঠি দেওয়া হয়। আমি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। অভিযোগ ও সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শেষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফে শুক্রবার মধ্যরাতে ঢেউয়ের কবলে পড়ে রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী, পুরুষ, শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
নৌকা ডুবে বিজিবির এক সদস্যসহ নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকার সমুদ্রে গতকাল রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ বিজিবির সদস্য একজন সিপাহী। তিনি শাহপরীর দ্বীপে কর্মরত ছিলেন।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে জীবত উদ্ধার করা হয়েছে। সাগরে বিজিবির উদ্ধার অভিযান চলছে।’
নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
এ বিষয়ে শাহপরীর দ্বীপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি অনুপ্রবেশের খবরে বিজিবি অভিযানে গেলে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে বিজিবির এক সদস্যসহ বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ থাকার খবর পেয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’
স্থানীয় নৌকার মালিক মো. আমিন বলেন, ‘মাঝরাতে সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা ধরতে যাওয়ার কথা বলে ওই বিজিবির সদস্য আমার নৌকাটি নিয়ে যায়। পরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি কূলে নিয়ে আসার পথে সাগরে ঢেউয়ের স্রোতে ডুবে যায়। এতে ২৫ জনের মতো রোহিঙ্গা জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবির এক সিপাহী নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধারে সাগরে তল্লাশি চলছে।’
শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া নৌ ঘাটের পাহারাদার আবদুল মান্নান বলেন, ‘শুক্রবার মধ্যরাতে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা কূল ঘেঁষে যাওয়ার সময় টহলরত বিজিবির সদস্যরা দেখতে পায়। তখন ঘাট থেকে একটি নৌকা নিয়ে তাদের আটকে দেয়। তারপর কীভাবে রোহিঙ্গাবাহী ট্রলার ডুবে যায়, সেটা জানি না। তবে এ ঘটনায় ২৫ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
‘এ ঘটনায় বিজিবির এক সদস্যসহ ৪০ জনের মতো রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের খুঁজতে ঘাটের একাধিক নৌকায় সাগরে তল্লাশি চালাচ্ছে জেলেরা।’
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা পশ্চিমপাড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ডুবে যায়। সেখানে অর্ধশতাধিক শিশুসহ নারী, পুরুষ ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন বিজিবির সদস্যও নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর পাচ্ছি।’
নৌকাডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া জেলে ঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বলেন, ‘গভীর রাতে শাহপরীরদ্বীপ পশ্চিমপাড়া বরাবর রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অনুপ্রবেশ সময় ডুবে যাওয়ার ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় অন্য নৌকায় উদ্ধার করতে যাওয়া বিজিবির এক সদস্যও নিখোঁজ থাকার খবর জেলেরা অবহিত করেন।
‘এ ছাড়া বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকেও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জেনেছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য