সিলেটের আখালিয়ায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে সোমবার ভোরে দুই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
কোরআন আবমাননার অভিযোগে আখালিয়ায় রোববার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। ওই সময় কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।
স্থানীয়রা জানায়, আখালিয়ার ধানুহাটার পাড় এলাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোরআন পোড়ানোর অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ উত্তাল হয়ে ওঠে আখালিয়া। উত্তেজিত জনতা কলেজের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত গিয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষে আটকে রাখে। ওই সময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিসুর রহমান কামরান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন, তবে এতে জনতা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ টিম সিআরটি এবং জালালাবাদ ও কোতোয়ালি থানার অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব-৯ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ওই সময় উত্তেজিত লোকজনের একাংশ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পুলিশ ও উপস্থিত জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এতে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা।
ভোরের আগে ধীরে ধীরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে পুলিশ। ওই সময় দুই শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, রোববার বিকেলে সিলেটের জালালাবাদ থানার ফতেহপুর মাদ্রাসার এক শিক্ষক এক কার্টুন ও এক বস্তা কোরআন দিয়ে যান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষকের কাছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘রোববার রাত ১০টার দিকে দুই শিক্ষক বস্তার ৪৫টি কোরআন শরিফ কেরোসিন দিয়ে পোড়াতে শুরু করেন। ওই সময় স্থানীয় লোকজন দেখে ফেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও দুজনকে মারধর শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ ওই এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ও জনতার হাত থেকে দুই শিক্ষককে উদ্ধার করে।
‘বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছুঁড়লে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। আহত পুলিশ সদস্যদেররা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
সকালে আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘কোরআন পোড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্তরা বলছে, তাদের ভুল হয়ে গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদেরকে যে ব্যক্তি কোরআন শরিফ দিয়ে গেছেন, তাকে গ্রেপ্তার করলে বিষয়টি জানা যাবে।’
কোরআন শরিফ দিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত কাওয়ালি অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র আন্দোলনের তিনজন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পণ্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠান।
রোববার বিকেলে মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমীতে দু’দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও আয়োজকরা জানান, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে কাওয়ালি সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রোববার বেলা ২টার দিকে শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠান শুরুও হয়। হঠাৎ জুবায়ের আহমেদ নাফিজ, মুন্না কাজীসহ বেশকিছু লোক অনুষ্ঠানস্থলে এসে আয়োজকদের ওপর হামলা করে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী নেয়ামত উল্লাহ ও আশিকুল তামিম আশিক আহত হন। সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। বিষয়টি সমাধানের জন্যে দুপক্ষের লোকজন নিয়ে বসেও কোনো ফল আসেনি। পরে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ইখতিয়ার আহমাদ সাবিদ নামে আরেকজন আয়োজককে ইট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আয়োজকদের একজন আব্দুর রহিম বলেন, ‘যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে সম্পৃক্ত রয়েছে, তাদের নিয়েই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কয়েকজন নিজেদের ছাত্র আন্দোলনের কর্মী দাবি করে অনুষ্ঠানে আমাদের ওপর হামলা করে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী রয়েছে। আমরা এদের বিচার দাবি করছি।’
তবে হামলাকারী জুবায়ের আহমেদ নাফিজ দাবি করেছেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন। তাকে না জানিয়ে কাওয়ইল গানের আয়োজন করায় বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা হয়েছে।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি এইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘অনুষ্ঠানস্থলে আসার আগেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে আসার পর আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আহতরা অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা নেয়া হবে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ময়নুল হাসান বলেছেন, থানায় মামলা রেকর্ড করলেই এজাহারে নাম থাকা আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রয়োজন নেই। পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।
ঢাকায় সম্প্রতি পুলিশ হত্যা, থানায় অগ্নিসংযোগ, আগ্নেয়াস্ত্র লুটসহ বিভিন্ন ঘটনায় মামলা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার ডিএমপি সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন কমিশনার ময়নুল হাসান।
অপরাধমূলক ঘটনার মেয়াদ কখনও শেষ হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘থানায় পুলিশ হত্যা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা হবে।’
গণ হারে দায়ের হওয়া মামলা এবং এফআইআরে সাংবাদিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এফআইআরে কারও নাম থাকার অর্থ এই নয় যে অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তারের প্রয়োজন আছে।
‘আমরা কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে সম্মিলিত তদন্ত চালিয়ে যাব। সে অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের ভিত্তিতে সব মামলার সুরাহা করা হবে।’
তিনি জানান, সাম্প্রতিক অস্থিরতার সময় পুলিশের ১৭৭টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সেবার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। সেসব পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সব থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ডিএমপি কমিশনার জানান, ট্রাফিক পুলিশ এখন গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছে। ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া ছিনতাই রোধে প্রচেষ্টা জোরদার করছে পুলিশ। ইতোমধ্যে টহল ও চেকপয়েন্টগুলো চালু হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার গণবিক্ষোভ ও অবরোধের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করে পুলিশের মনোবল বাড়ানোর চলমান প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার সমস্যা সমাধানে পুলিশ কাজ করছে উল্লেখ করে ময়নুল হাসান বলেন, হকারদের রাস্তা ও ফুটপাত থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে। পুলিশ ধীরে ধীরে তাদের স্বাভাবিক দায়িত্বে ফিরছে।
অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের ধরতে চলমান অভিযানের উল্লেখ করে তিনি আগামী দিনগুলোতে এই প্রচেষ্টা আরও জোরদারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
সভায় ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আদাবর থানায় দায়ের করা গার্মেন্টস কর্মী রুবেল হত্যা মামলায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
ফরহাদ হোসেনকে রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আদাবর থানার পরিদর্শক আব্দুল মালেক সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে শনিবার রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে রুবেলসহ কয়েক শ’ ছাত্র-জনতা আদাবর থানার রিংরোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, কৃষক লীগ, মৎসজীবী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হন। পাশের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ২২ আগস্ট আদাবর থানায় রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ছাড়া এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়ক ও সাবেক এমপি ফেরদৌস এবং সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা সেতুর নিচে চুবানো ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেতু থেকে ফেলে দেয়ার হুমকির ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে রোববার মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সৌরভ প্রিয় পাল।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একমাত্র আসামি করে মামলার আবেদন করা হয়।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বা সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১৮ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত।’ একইসঙ্গে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধে চেষ্টার অভিযোগ তুলে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুটি চুবানি দিয়ে সেতুর ওপর তোলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তৎকালীন সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা এসব মন্তব্যের মাধ্যমে বিষোদগার করে বেগম খালেদা জিয়া ও দেশের একমাত্র নোবেল লরিয়েট ড. ইউনূসকে হত্যার সুপ্ত ইচ্ছা ব্যক্ত ও মানহানি করেছিলেন। তিনি খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে এবং হত্যার ষড়যন্ত্র করে, হত্যার জন্য প্ররোচনা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন তথা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগের সন্ত্রাসীদের প্ররোচিত করেছিলেন।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মুগদাপাড়া এলাকার কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শ্রীমঙ্গলের রাধানগর এলাকার প্যারাগন রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নামে মুগদা থানায় মামলা রয়েছে।
রিসোর্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজুল ইসলাম শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তাদের রিসোর্টে ওঠেন। তার সঙ্গে আরও ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন। সবাই মিলে এক দিনের জন্য চার-পাঁচটি রুম বুকিং করেন।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজুল ইসলাম ছাত্রদের বিপরীত অবস্থানে গিয়ে সরাসরি নেতৃত্ব দেন। মুগদা থানার তিনি এজাহারনামীয় আসামি।
‘আমাদের কাছে খবর ছিল, তিনি আজ (শনিবার) রাতে মৌলভীবাজারের সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। যেহেতু তার বিরুদ্ধে মামলা আছে, শুধু তাকেই আমরা গ্রেপ্তার করছি। তার পরিবারের লোকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হচ্ছে।’
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো খুদেবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বার্তায় বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ফরহাদ হোসেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে তিনি এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
ফরহাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:ঢাকার আশুলিয়া থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে শনিবার ভোরে রাজধানী ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ।
শনিবার তাকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবু তাহের মিয়া সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী মো. রবিউল সানি বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার ৪ নং এজাহারনামীয় আসামি হলেন সাফি।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসির সাবেক সচিব ড. ফেরদৌস জামান, সাবেক সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
মন্তব্য