বিয়ে পড়ানোর কথা বলে এক কাজী অপহরণের ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুর শহরে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ওসি তানভীরুল ইসলাম।
অপহরণের শিকার কাজী মোজাফ্ফর হোসেন জেলার বিরল উপজেলার কামপুর এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। তিনি বিরল উপজেলার ৮ নম্বর ধর্মপুর ইউনিয়নের কাজী।
অপহরণের দায়ে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দিনাজপুর শহরের মিশন রোড এলাকার এরশাদ আলীর ছেলে ১৬ বছরের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, একই এলাকার আব্দুর রশিদ খানের ছেলে ২৬ বছর বয়সী ইউসুফ আলী, মোহাম্মদ আলীর ছেলে জোবায়ের জোয়েল, আব্দুল কাদেরের ছেলে ২৬ বছর বয়সী তাইজুল ইসলাম ওরফে আজিজুল এবং মৃত আব্দুল বাহেদের ছেলে ৬০ বছর বয়সী আব্দুল কাদের।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে দাপ্তরিক কাজে মোটরসাইকেলে চড়ে দিনাজপুর কাচারীতে আসেন মোজাফ্ফর হোসেন। বোনের বিয়ে পড়ানোর কথা বলে দুপুরে একটি অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে তার মোবাইলে কল আসে। পরে আসামিরা তাকে কৌশলে কাচারী থেকে মিশন রোড এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে অপহরণ করে আটক করে রাখে।
তিনি জানান, অপহরণকারীরা কাজীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয় এবং দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এসময় ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষরও করিয়ে নেন। পরে কাজীর ছেলে গোলাপ হোসেন বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার পাঠালে শনিবার রাতে তাকে প্রাণনাশের হুমকি ও মারধর করে ছেড়ে দেয়া হয়।
ওসি আরও জানান, শনিবার রাতেই গোলাপ হোসেন বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দেন। থানায় অভিযোগ দায়েরের পর অভিযানে নামে পুলিশ। পরে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা।
এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং তিন ঘণ্টা ধরে এ অবস্থা চলে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন মহাসড়কে চলাচলকারী লোকজন।
সকাল ৯টার পর তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাননি। এ কারণে বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘টিঅ্যান্ডজেড কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে মহাসড়কে নেমে এলে যানজট লেগে যায়। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।’
কুমিল্লা নগরে চিকিৎসকের ভুলে এক প্রসূতির মূত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
নগরের ঝাউতলার এইচআর হসপিটালে শুক্রবার রাত আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ইসরাত জাহান এরিন (২০) কুমিল্লা সদর উপজেলার শিমপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। বছরখানেক আগে শিমপুরের পাশের ভুবনঘর গ্রামের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ইসমিত পাশা দিদারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
স্বামী দিদার অভিযোগ করেন, চিকিৎসক মারজান সুলতানা নিঝুম অস্ত্রোপচারে সময় এরিনের নাড়ি কেটে ফেলেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
তিনি আর্তনাদ করে বলেন, ‘একজন চিকিৎসকের ভুলে আমার স্ত্রী মারা গেল। সদ্য জন্ম নেয়া ছেলেটিও মাকে হারাল।’
এরিনের মামা হাসনাত জানান, এরিন সন্তানসম্ভবা ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে নগরের ঝাউতলার এইচআর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতেই তার ভাগনির অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক নিঝুম।
তিনি জানান, শুক্রবার দুপুরে এরিনের অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসক পালস খুঁজে না পেলে তাকে আইসিউতে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে এরিনের স্বজনরা পার্শ্ববর্তী মুন হাসপাতালে নিয়ে যান তাকে। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করানোর পর এরিনের পেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। ততক্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় এরিনের।
হাসনাতের অভিযোগ, চিকিৎসক একটি নাড়ি কেটে ফেলায় তার ভাগনির মৃত্যু হয়েছে।
এরিনের বাবা মোবারক হোসাইন বলেন, ‘তারা আমার মেয়ের নাড়ি কেটে ফেলেছে। আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সময় পার করেছে। নার্সরা অনেক দুর্ব্যবহার করেছে।
‘তাদের ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করছি আমি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
চিকিৎসক মারজান সুলতানা নিঝুমকে কল করে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঘটনা শোনামাত্রই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জেলার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার শনিবার সকালে জানান, তিনি ঘটনা শুনে তদন্ত দল গঠন করেছেন। তদন্তে দোষী সাব্যস্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী দল’ আখ্যা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, দলটিকে বাংলাদেশে কোনো বিক্ষোভের অনুমতি দেয়া হবে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে শনিবার দুপুর ১২টা আট মিনিটে ইংরেজিতে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান।
স্ট্যাটাসে শফিকুল লিখেন, ‘বর্তমান কাঠামোতে আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী দলকে বাংলাদেশে বিক্ষোভের অনুমোদন দেয়া হবে না।
‘নির্বিচার হত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আদেশে যে কেউ সমাবেশ, জমায়েত ও মিছিল আয়োজনের চেষ্টা করলে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর পূর্ণশক্তির মুখোমুখি হতে হবে।’
স্ট্যাটাসে তিনি আরও লিখেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সহিংসতা কিংবা দেশের আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো চেষ্টা বরদাশত করবে না।’
ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মী ও ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুস সালাম হত্যা মামলার আসামি তিনি। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকার সাভারে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে সাবেক এমপিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাবের বরাত দিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জামায়াতের কর্মী হত্যা ছাড়াও ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকের নামে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির কার্যালয় ও জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের দুটি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলের নামে-বেনামে বিগত সময়ে ক্রয়কৃত সম্পদের দলিলপত্র অনুসন্ধান করে অনুলিপি দিতে জেলা রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ তথ্য বৃহস্পতিবার রাতে নিশ্চিত করেন দিনাজপুর জেলা রেজিস্ট্রার মো. সাজেদুল হক।
তিনি বলেন, গত ৬ নভেম্বর বিকেলে ডাকযোগে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশপত্র দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় থেকে পেয়েছেন।
দিনাজপুর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানা, দুই মেয়ে ইশরাক মারজিয়া ও রাইসা মুমতাহিনা এবং এক ছেলে রাফিদুর রহিমের নামে-বেনামে দিনাজপুর সদর ও জেলার অন্য উপজেলাগুলোতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কোনো জমি, অবকাঠামো, মিল, কারখানা বা অন্য কোনো মূল্যবান সম্পদ কেনা হয়ে থাকলে ওই দলিলের অনুলিপি অনুসন্ধান করে তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিস্ফোরক মামলার আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে আওয়ামী লীগের এক নেতার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল আলমের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বেলাল হোসেন সৌখিন নামের বিএনপির ওই নেতা। এ ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায়।
মোবাইল ফোনে বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাবেক ওই উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে সৌখিন এই চাঁদা দাবি করেন। এ বিষয়ে দুই নেতার কথোপকথনের এক মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
চাঁদা দাবি করা বেলাল হোসেন সৌখিন বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক। আর সামছুল আলম খান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
জানা যায়, সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গোবরচাঁপা হাট নামক স্থানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া অবিস্ফোরিত ছয়টি ককটেল উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের ৪০ নেতাকর্মীর নামে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর এই মামলার বাদী হলেন বেলাল হোসেন সৌখিন।
এই মামলায় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বাবর আলীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
জানতে চাইলে সামছুল আলম খান বলেন, ‘বিএনপি নেতা সৌখিন আমার কাছে ফোন করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করার কারণে গোবরচাঁপা হাটে ঘটে যাওয়া ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় আমাকে ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এতেই প্রমাণ এটি এক সাজানো মিথ্যা মামলা। আমি এর তীব্র প্রতিবাদসহ সঠিক বিচার দাবি করছি।’
বেলাল হোসেন সৌখিন এ বিষয়ে বলেন, “ঘটনাটি অনেক আগের। উপজেলা পরিষদ বাতিল হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মানিককে এল লাখ টাকা দেয়ার খবর পাই। সেই জন্যই আমিও তাকে ফোন করে বলেছি মানিককে দিলে আমাকেও দুই লাখ টাকা দিতে হবে। আর ‘চেয়ারম্যানের মরণ মোর হাতে ছিল’ এমন ডায়ালগটার প্রশংসা করলে তিনি হাসতে থাকেন।”
এদিকে বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বদলগাছী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আওরঙ্গজেব চৌধুরী মানিক। মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘দলের নেতাদের সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায়, সেই ব্যবস্থা নেবো।’
স্থানীয় বিএনপির আরেক নেতা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘এই মামলা তাদের কাছে এখন চাঁদা আদায়ের রসিদ হয়ে গেছে।’
জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদি চৌধুরী টিপু মোবাইল ফোনে বলেন, ‘ওই কল রেকর্ডের ঘটনা এখনকার না, মামলার অনেক আগের। বিষয়টি গতকাল আমি জেনেছি। তবে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যে বা যারা এ ধরনের কাজ করবে, তার বা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সম্প্রতি হওয়া বিস্ফোরক মামলার তদন্ত সঠিকভাবেই করা হবে জানান থানার ওসি শাহজাহান আলী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কথোপকথনের অডিও ক্লিপটি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাদের কথোপকথন পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
সৌখিন: হ্যালো, ভাই আমি চ্যাংলার সৌখিন।
সামছুল আলম: হ্যা ভাই, ভালো ভাই?
সৌখিন: চিনতে পারছেন?
সামছুল আলম: হ্যাঁ ভাই চিনতে পারছি, ‘ক’।
সৌখিন: আপনি ওই ম্যানক্যাক (মানিককে) বলে ওই ইয়ে দিছেন। দুই লাখ টাকা বলে দিছেন ম্যানক্যাক?
সামছুল আলম: কোনো ট্যাকাপয়সা আছে ভাই? এলা গুজব, কুটি থ্যাকা শুনলি ক।
সৌখিন: আমি শুনলাম ম্যানক্যাক আপনে দু্ই লাখ টাকা দিছেন।
সামছুল আলম: না না না ভাই।
সৌখিন: তে ম্যানক্যা আপনাক বাঁচাতে পারবে?
সামছুল আলম: বাঁচা-মরা এখন আল্লাহ্’র হাতে ভাই। আল্লাহ্ এখন ভাগ্যে কী লিখে রেখেছে!
সৌখিন: আল্লাহ্’র হাতে ঠিক আছে। কিন্তু আল্লাহ্ যে আমার হাতে লিখে রেখেছে আপনার…, এটার কী হবে কন।
সামছুল আলম: তাই, না?
সৌখিন: হ্যাঁ, তে আপনি ম্যানক্যার সাথে যোগাযোগ করবেন, আর আমি … ফ্যালাবো? ভাগ মিলতেছে না।
সামছুল আলম: না ভাই, না না না।
সৌখিন: আপনি আমার এই নম্বরে বিকাশ, নগদ সব আছে। আপনি এক লাখ তাহলে এখানে পাঠায়ে দেন।
সামছুল আলমের হা হা হা করে হাসি।
সৌখিন: তাহলে আপনে মনে করেন ম্যানক্যাক টাকা দিবেন মানে? ম্যানক্যা দলের কে? ওই সাওয়ার ব্যাটা দলের কে?
সামছুল আলম: না ভাই না, এগুলো মিথ্যে কথা ভাই।
সৌখিন: তাহলে এলা গুজ উঠে কেন? আপনে তাহলে ম্যানক্যাকে ফোন করেন। পাশে থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়- সে কোন জায়গায় আছে খোঁজ নাও। সঙ্গে সঙ্গে তার সুরে জানতে চান- আপনি কোথায় আছেন? না হলে আপনি কই আছেন কন তো?
সামছুল আলম: না ভাই, এলা মিথ্যে কথা।
বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হলে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণা’ এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে হওয়া মামলাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের আমলে ২০১৮ সালে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়। পরে এ বিষয়ে কঠোর সমালোচনা হলে ২০২৩ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল, তবুও এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয়।
সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে এ আইন নিয়ে আপত্তি ওঠে। আজ আইনটি বাতিলের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাইবার আইনে হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ (মুক্তমত প্রকাশ) সম্পর্কিত মামলাগুলো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনিও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন।
এদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর অধীনে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট পাঁচ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান।
বর্তমানে ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত এক হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান। এর মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অধীনে ২৭৯টি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৭৮৬টি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে ২৭৫টি মামলা চলমান।
এসব মামলার মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তকারী সংস্থার কাছে তদন্তাধীন এবং ৮৭৯টি মামলা দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য