দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার বাসিন্দা বাবলু ইসলাম। রক্তশূন্যতার কারণে কয়েকদিন আগে শ্যালক শরিফকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু বিপাকে পড়েন স্যালাইন নিয়ে। রক্তের পাশাপাশি চিকিৎসক তাকে স্যালাইন দিতে বলেছেন। হাসপাতালে স্যালাইন না থাকায় বাইরের ফার্মেসি থেকে স্যালাইন কিনতে বলেছেন চিকিৎসক। কিন্তু বাইরের ফার্মেসিতেও স্যালাইন নেই। এমতাবস্থায় চরম বেকায়দায় পড়েন বাবলু। পরে বাধ্য হয়ে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার এক ফার্মেসি থেকে তিন প্যাকেট স্যালাইন এনে শ্যালককে দেন তিনি।
এই সমস্যার সম্মুখীন শুধুমাত্র বাবলু ইসলামই হননি। দিনাজপুরের হাজারো রোগী ও তাদের স্বজনদের সমস্যা বর্তমানে এটি। দিনাজপুর সদর হাসপাতাল ও এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছে হাজারো রোগী।
গড়ে দিনাজপুরের হাসপাতালগুলোতে কয়েকশ’ নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ তীব্র গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া ও কলেরা রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। আর এই সব রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা স্যালাইন। খাবার ওষুধের বিকল্প পাওয়া গেলেও স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে কোনোকিছু পাওয়া না যাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন রোগীর স্বজনরা।
বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা রয়েছে বেশি দুশ্চিন্তায়। সরকারি হাসপাতালে কিছু স্যালাইন সরবরাহ করা হলেও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে একেবারেই স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দাম দিয়ে গোপনে বা অন্য জেলা থেকে স্যালাইন এনে রোগীকে সরবরাহ করতে বাধ্য হচ্ছেন স্বজনরা।
দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৫০০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি থাকছে ৮ শতাধিক রোগী। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩২ জন ও ডেঙ্গু ওয়ার্ডে বর্তমানে ৩৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। অপরদিকে দিনাজপুর সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২১০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
বাবলু ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমার অসুস্থ শ্যালককে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। হাসপাতাল থেকে স্যালাইন না দেয়ার কারণে বাইরে কিনতে গেছিলাম। দিনাজপুরের কোনো ফার্মেসিতে স্যালাইন পাইনি। পরে এক মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে রংপুরের বদরগঞ্জের এক ফার্মেসি থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে ৩ প্যাকেট স্যালাইন কিনে আমার রোগীকে দিয়েছি।’
যেখানে স্যালাইনের গায়ের দাম ৯৫ টাকা, সেখানে আমার ২৫০ টাকা করে প্রতি প্যাকেট স্যালাইন কিনতে হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার সুদিরহাট ডাঙ্গাপাড়ার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তিনদিন থেকে আমি ফার্মেসিগুলোতে নরমাল স্যালাইন খুঁজছি। কিন্তু কোনো ফার্মেসিতে স্যালাইন পাচ্ছি না। খুব কষ্টে এক ফার্মেসির মালিককে অনুরোধ করার পর ১ প্যাকেট স্যালাইন পাইছি। দাম একটু বেশি রাখছে।”
পার্বতীপুর উপজেলার আমবাড়ী হলুদপাড়ার মোকাররম হোসেন বলেন, ‘নরমাল স্যালাইনের দরকার, কিন্তু নাকি সাপ্লাই নাই। হাসপাতালের সামনের সব দোকানে খুঁজলাম। কোনো দোকানে স্যালাইন পাইলাম না। রোগীকে বাঁচাতে স্যালাইনের দরকার, তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
মুমতাহা ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী মোক্তার আলী বলেন, ‘গড়ে প্রতিদিন ১০০টির বেশি স্যালাইন আমার প্রয়োজন। কিন্তু কোনো ওষুধ কোম্পানি আমাকে এক প্যাকেট স্যালাইনও সরবরাহ করছে না। এটার কারণ একমাত্র ওষুধ কোম্পানি ও সরকার জানে। আমার মনে হয়, এটা ওষুধ কোম্পানিগুলোর একটা বড় ধরণের সিন্ডিকেট।’
দিনাজপুর ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী হাফিজ বলেন, ‘দুই মাস ধরে আমাদের কাছে স্যালাইনের সরবরাহ নেই। রোগীরা আমাদের কাছে এসে প্রশ্ন করছে। কিন্তু বাজারে যদি স্যালাইন নাই থাকে, তাহলে চিকিৎসকরা কেন স্যালাইন লিখছে। আমরা চরম বেকায়দায় রয়েছি।’
মেডিক্যাল ফার্মার স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ফার্মেসিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থিত। গত দুই মাস ধরে এনএস স্যালাইন সংকট রয়েছে। আমার দোকানে প্রতিদিন ১০০টির বেশি স্যালাইন বিক্রি হয়। কিন্তু আমাদের কাছে স্যালাইন নাই। ফলে ক্রেতারা স্যালাইন না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তারা আমাদেরকে স্যালাইন দিতে পারছে না।’
দিনাজপুরের ফার্মেসিগুলোতে স্যালাইনের সরবরাহ নাই- এমন প্রশ্নে দিনাজপুরের ড্রাগ সুপার নার্গিস আক্তার বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। এছাড়া বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে- এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি।’
তবে অভিযোগ আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি স্যালাইনের সংকট হয়, তাহলে ওষুধ কোম্পানির ডিপোগুলো পরিদর্শন করব। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এ ব্যাপারের দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. বোরহান-উল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, ‘এনএস বা সাধারণ স্যালাইন বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে অনেককে ক্যানোলার মাধ্যমে সাধারণ স্যালাইন দিতে হয়। আর যে সকল রোগী খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না সে সকল রোগীকেও এই সাধারণ স্যালাইন দিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সাধারণ স্যালাইনের সরবরাহ রয়েছে। আমরা যে কোনো ধরণের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু বাইরের ফার্মেসিগুলোতে স্যালাইনের সংকট রয়েছে। এটা ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন পলিসি হিসেবে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট হতে পারে।’
এ ব্যাপারে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘গরমে ও বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে ডায়রিয়া রোগী বাড়ে। বর্তমানে আমরা ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু বর্তমানে তা আমাদের কন্ট্রোলে আছে। আমার পরামর্শ হলো- কেউ অসুস্থ হলে তাকে যেন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন।
আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মশাবাহিত রোগটিতে বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন চারজন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মারা গেছেন একজন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪৪ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৫৭০ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। আর মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৭৩ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৩০৩ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপের দংশনে আহত হয়েছেন মিলন আলী নামে এক কৃষক। পরে অন্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় মিলন আলী সাপটিও হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। আহত মিলন আলী ওই এলাকার তোবজুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলন আলী বলেন, ‘সাপের ধরন চিহ্নিত করতে ও সঠিক চিকিৎসার জন্য সাপটি ধরে আমার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তাই সে সাপটি ব্যাগে করে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সাপটি দেখে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মামুন কবির জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একটি সাপের বাচ্চাসহ হাসপাতালে আসেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনিশঙ্কামুক্ত। তারপরও আমরা ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
মাদারীপুরের শিবচরে একই দিনে তিনজনকে সাপে দংশন করেছে। তাদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে শিবচর উপজেলার চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান বাড়ির পাশে বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিলেন। এ সময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বজনদের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তারা অস্বীকার করেন। এজন্য স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখাঁর খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাড়িতে পালা থেকে গরুর জন্য খড় বের করার সময় একটি সাপ তাকে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা সুলতানা বলেন, সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদেরকে এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওষুধপত্র, স্যালাইনসহ হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করা উচিত। শিগগিরই এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হবে।
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করা উচিত।
জেনেভা সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ফাইলেরিয়া নির্মূল এবং বিশ্বে প্রথম কালাজ্বর নির্মূল করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ৭৭তম সাধারণ সভায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মহাপরিচালক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে একটি যথাযথ রোল মডেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যাবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসাবে এই তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই সময়ের মধ্যে ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৮০ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমন রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করা হবে না।
রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে ৩ মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি, আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি আমি রোগীদেরও মন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু প্রমুখ।
নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সাথে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। আমি মনে করি সে স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো। আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে ৪১তম বিসিএস স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে ১০৩ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৭১ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১৫৩ জন যোগদান করেন।
মন্তব্য