নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আগুন নেভাতে যাওয়ার পথে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দুর্ঘটনায় চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় কমপক্ষে আটজন আহত হয়েছেন।
চাষাঢ়ার সান্তানা মার্কেটের সামনে সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুইজনের মধ্যে একজন পথচারী ও অন্যজন ফায়ার সার্ভিসের গাড়িচালক ৪৫ বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলম।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে ফকির অ্যাপারেলসে আগুনের খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি দ্রুত ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িটি শহরের চাষাঢ়ার সান্তানা মার্কেটের সামনে এলে গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম স্ট্রোক করেন। এতে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা আনন্দ পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস, একটি প্রাইভেট কার, তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দেয়।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই আনন্দ বাসের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে এক পথচারী নিহত হন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার আট যাত্রী আহত হন।
আহত লোকজনকে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যান আশপাশের লোকজন। পরবর্তী সময় তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিসুর রহমান বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির চালক স্ট্রোক করলে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এতে সাহাবুদ্দিন শিবলু নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন ও আহত হয়েছে আটজন।’
ফায়ার সার্ভিস ঢাকা সদর দপ্তরের উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, আগুনের খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি নিয়ে বিসিকের দিকে যাচ্ছিলেন চালক জাহাঙ্গীর আলম। পথে চাষাঢ়ায় তিনি স্ট্রোক করলে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। গাড়িটি অন্য গাড়িগুলোকে ধাক্কা দেয়ার আগেই জাহাঙ্গীর আলম স্ট্রোক করে মারা যান।
আরও পড়ুন:রাতের খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়া গাইবান্ধা শহরের ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১৬ ছাত্রের মধ্যে জমজ দুইভাই সহ চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, বমি ও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে রেফার করে গাইবান্ধার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) এএসএম রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, ‘রংপুরে রেফার করা চার ছাত্রের ১০৪ ডিগ্রির ওপরে জ্বর এবং অতিরিক্ত পায়খানার সঙ্গে বমি, যা অস্বাভাবিক। কেননা ১০৪ ডিগ্রির বেশি জ্বর হলে শ্বাসকষ্টের সঙ্গে অতিরিক্ত খিঁচুনি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। যা আমাদের হাসপাতালে নেই। ফলে তাদেরকে রংপুর মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার রাতে খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় গাইবান্ধা শহরের ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১৬ ছাত্রকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) এএসএম রুহুল আমিন বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে গাইবান্ধার ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৬ জন ছাত্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাদের সবাইকে ভর্তি নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসা চলছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের ফুড পয়জনিং হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের ঘিওরে দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ওই দুই নারী বাদী হয়ে ঘিওর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর অভিযান চালিয়ে সাত ব্যক্তি গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সাতজন হলেন ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের হৃদয় খান, সোহেল রানা, রনি মিয়া, ফয়সাল ব্যাপারী, তামিম হোসেন, সাদিক হোসেন ও শাহ্ আলম।
মামলার বিবরণে উল্লেখ আছে, সোমবার সন্ধ্যায় দৌলতপুরে একটি এলাকায় অটোরিকশায় করে ঘিওর বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন দুই নারী। অটোরিকশাটি বরংগাইল-দৌলতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের তেরশ্রী এলাকায় পৌঁছালে রিকশাচালক তাদের নামিয়ে দেন। এর পর হেঁটে রওনা দেন ওই দুই নারী। তখন কিছুদূর যাওয়ার পর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যুবক তাদের পেছনে হাঁটতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে ওই দুই নারীর মোবাইল নাম্বর চান। তারা মোবাইল নাম্বর দিতে অস্বীকার করলে যুবকেরা পাশের একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে তাদের ধর্ষণ করেন। সেই সঙ্গে তাদের মোবাইল, স্বর্ণালংকার ও টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান।
ঘিওর থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান জানান, থানায় মামলার পর অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষার গণিতের প্রশ্ন ফাঁস করে বিক্রি করার দায়ে ইমাম হোসেন টুটুল নামের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।
ইমাম হোসেন টুটুল টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের ১১ নম্বর দক্ষিণ বর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এ বিষয়ে অবিভাবক রিনা বেগম ও কুমকুম বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২৩ নভেম্বর দুপুরে চারুকারু পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুল তার মোবাইল নম্বর কাগজে লিখে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে অভিভাবকদের ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেন। আমরা কয়েকজন অভিভাবক ওই নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করি। তখন ৫ শ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে গণিতের প্রশ্ন পাওয়া যাবে বলে টুটুল স্যার আমাদের প্রস্তাব দেন। কয়েকজন টাকা দিয়ে পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় (২৫ নভেম্বর) গণিতের প্রশ্ন নেন ওই শিক্ষকের কাছ থেকে। কিন্তু শিক্ষকের এ ধরনের কাজে ক্ষুব্ধ হয়ে আমরা কয়েকজন মিলে এ সংক্রান্ত কয়েকটি কল রেকর্ড টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠিয়ে দেই।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ বলেন, ‘আমরা ২৫ নভেম্বর রাতেই টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-মামুন ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাই। পরে ওই রাতেই ইউএনও এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে ওই তিন শ্রেণির গণিত প্রশ্ন পরিবর্তন করা হয় বলে আমরা জানতে পারি।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গত ২৬ নভেম্বর নতুন প্রশ্নে ৩ নম্বর ক্লাস্টারের ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ওই ক্লাস্টারভূক্ত ২৬টি বিদ্যালয়ে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছিল।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার পর ইউএনও এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে প্রশ্ন বিক্রির সত্যতা মিলেছে। তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ধারা ২০১৮-এর ৩ (বি) ধারায় অভিযুক্ত করে শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলকে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক ইমাম হোসেন টুটুলের মোবাইল নম্বরে বারবার কল করা হলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিন শ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মাগুড়া ইউনিয়নের রমজান পাড়া এলাকায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সীমান্তের কাছে এই স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান মঙ্গলবার রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
ওই সময় তিনি বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন তারা।
এর পর বিশেষ টহলে একটি টিম সীমান্ত পিলারের কাছে গেলে একটি ধান ক্ষেতে একজন ব্যক্তিকে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করতে দেখেন। তাকে কাছে ডেকে নাম জিজ্ঞেস করতেই ওই ব্যক্তি একটি কালো ব্যাগ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ওই ব্যাগ থেকে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত স্বর্ণগুলো পঞ্চগড় জুয়েলারি সমিতিতে নিয়ে পরীক্ষা করা হলে তারা জানান সেখানে মোট তিন শ ৫১ ভরি চার আনা স্বর্ণ পাওয়া গেছে।
বিজিবি অধিনায়ক আরও জানান, আসামিকে আটক করতে সক্ষম হননি তারা। এ বিষয়ে আটোয়ারী থানায় জিডি করা হবে।
আরও পড়ুন:অবশেষে সাগরের তলদেশ দিয়ে ডিজেল পরিবহন শুরু হয়েছে। সেখানে স্থাপিত পাইপলাইন দিয়েই ডিজেল পরিবহন করা হচ্ছে।
গভীর সমুদ্রের জাহাজ থেকে পাইপলাইনে মহেশখালী পৌঁছাবে জ্বালানি তেল। মঙ্গলবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে গভীর সাগরে অপেক্ষমাণ একটি বড় জাহাজ থেকে ডিজেল পাম্প করা শুরু হয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান জানান, মঙ্গলবার থেকে পাইপলাইন দিয়ে ডিজেল পরিবহন শুরু করা হয়েছে। এতে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড সূত্র জানায়, এ জাহাজটি থেকে প্রায় ৬০ হাজার টন ডিজেল খালাস করা হবে। দুদিনের মধ্যেই ডিজেলবাহী এই মাদার ভেসেল থেকে তেল পুরোপুরি খালাস করা যাবে বলে তিনি আশা করেন।
এর আগে গত জুলাইয়ে একটি তেলবাহী জাহাজ থেকে প্রথমবারের মতো এসপিএম দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয় হলেও পাইপলাইনে ত্রুটি ধরা পড়ায় সেটি ভেস্তে যায়। ত্রুটি সারিয়ে প্রায় ৪ মাস পর আবার জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করা হয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারির কর্মকর্তারা জানান, সাগরে ভাসমান এই মুরিং থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে মঙ্গলবার দুপুর থেকে ডিজেল পরিবহন শুরু হয়েছে। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপকূল থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার গভীর সাগরে স্থাপন করা হয়েছে এসপিএম।
মূলত পরিশোধিত ডিজেল এবং ক্রুড অয়েল পরিবহন করা হবে এই পাইপলাইন দিয়ে।
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান বলেন, ইস্টার্ন রিফাইনারিতে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল পৌঁছাতে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত লাগতে পারে।
দেশের জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য এই পাইপলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি প্রায় ১১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের (দুটি পাইপলাইন)। এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে বিপিসি, বাংলাদেশ সরকার ও চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক।
প্রকল্পের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু প্রতিবছর প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে কর্মকর্তারা জানান।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাই দুবাইয়ের দুবাইগামী একটি ফ্লাইট সাড়ে ৩৩ ঘণ্টা আটকে ছিল। দীর্ঘ সময় পর এটি দুবাইয়ের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেছে। চূড়ান্ত উড্ডয়নের আগে অন্তত তিনবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বিমানটি। এতে দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়ে বিমানটির ১৭০ যাত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সোমবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে ‘এফজেড ৫৬৪ এ’ ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সময় মতো উড্ডয়ন করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে কয়েকবার চেষ্টা করেও উড্ডয়নে ব্যর্থ হয় ফ্লাইটটি। পরে ত্রুটি সারানোর পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিমানটি চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়।
সোমবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটের ওই ফ্লাইটে ১৭০ জন যাত্রী দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দীর্ঘ বিলম্ব হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন তারা। এর মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি পুরোপুরি না সারিয়েই কয়েকবার বিমানে উঠানামা ও দীর্ঘসময় না খাইয়ে রাখার অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
যাত্রীদের একজন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাসিন্দা নজরুল ইসলাম শিমুল বলেন, ‘বিমানটি শুরুতে উড্ডয়নে ব্যর্থ হলে সাড়ে ১১টায় আমাদের বিমানে তুলেও একই ত্রুটির কারণে উড্ডয়ন করতে পারেনি। আমাদের সারা দিন কোনো খাবার না দিয়ে আবারও উড্ডয়নের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।’
পরে যাত্রীদের প্রতিবাদের মুখে এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে হোটেল ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান তিনি।
বিমান বন্দর সূত্রে জানা যায়, ইঞ্জিনে কিছু সমস্যার কারণে গতিবৃদ্ধি (স্পিডিং) না হওয়ায় উড্ডয়নে ব্যর্থ হয় বিমানটি। সোমবার দিনভর চেষ্টা করেও একইভাবে ব্যর্থ হয়ে গভীর রাতে খাবার দেয়ার পর নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় যাত্রীদের। পরদিন দুপুর ১২টার দিকে যাত্রীদের ফের বিমানবন্দরে নিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় রাখা হয়। এতে অধিকাংশ যাত্রী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ফ্লাই দুবাইয়ের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ জানান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফ্লাই দুবাইকে সতর্ক করে চিঠি দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সবশেষ এয়ারলাইন্সটির নিজস্ব প্রকৌশলী চট্টগ্রামে এসে যান্ত্রিক ত্রুটি সারান। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে সক্ষম হয় বিমানটি।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ বলেন, ‘ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে নির্ধারিত সময়ে বিমানটি উড্ডয়নে ব্যর্থ হয়। পরে ওইদিন আরও দুবার চেষ্টা করেও উড্ডয়নে সফল হয়নি৷ যাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমারা দ্রুত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা জানিয়েছি তাদের। মঙ্গলবার সাড়ে ছয়টার দিকে ত্রুটি মেরামতের পর বিমানটি চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানের ১৭০ যাত্রীর মধ্যে ১০০ জন টিকিটের রিফান্ড (অর্থ ফিরিয়ে) নিয়েছে। বাকি ৭০ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি চট্টগ্রাম থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেছে।’
রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা যখন প্রথমবার সংসদ নির্বাচন করেন, তখন তার হাতে নগদ টাকা ছিল ১৫ হাজার। তবে এখন তার নগদ টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৫ টাকা। গত দেড় দশকে ফজলে হোসেন বাদশার অর্থ-সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ; হয়েছে নতুন বাড়ি-গাড়ি।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। তবে এ ব্যাপারে ফজলে হোসেন বাদশার দাবি, তার অর্থ বৃদ্ধিতে অস্বাভাবিক কিছু নেই।
২০০৮ সালের নির্বাচনে হলফনামায় দেখা গেছে, ওই সময় ফজলে হোসেন বাদশার সব মিলিয়ে এক কোটি ১২ লাখ ৭ হাজার ৬৪০ টাকার সম্পদ ছিল। সে সময় তার নগদ অর্থ ছিল মাত্র ১৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে ছিল ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬০টাকা। তার স্ত্রীর বিয়েতে উপহার পাওয়া ৫০ ভরি সোনা ছিল। এর বাইরে আসবাবপত্র, গাড়ি মিলে মোট ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সম্পদ ছিল। বাদশার স্ত্রীর নামে ছিল ৫ কাঠা জমি। এ ছাড়াও তার পরিবারের সাবার মিলে একটি সেমিপাকা মার্কেট ও ১৬ কাঠা জমি ছিল। ছিল একটি দোতলা বাড়িও।
২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলনামার তথ্যে দেখা যায় তার সম্পদ ও অর্থ অনেকটাই বেড়ে গেছে। ওই হলফনামায় দেখা যায়, শুধুমাত্র নগদ অর্থ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২০ হাজার ৫৯১টাকা। এছাড়াও ব্যাংক ও নগদ অর্থ মিলে দাঁড়ায় ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫১৫ টাকা। এ ছাড়া ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩০ টাকা দামের গাড়ি, বাড়ির আবসাবপত্র বেড়ে দাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। সে সময় তার রাজধানীর উত্তরায় ৫ কাঠা জমিও হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচনকালে তার অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। ওই বছরের হলফনামায় দেখা যায়, বাদশার হয়েছে নতুন মার্কেট। গুড়িপাড়ায় হয়েছে ৫ কাঠা জমি। হড়গ্রামে নির্মিত হয়েছে খন্দকার মার্কেট কমপ্লেক্স। নগদ ও ব্যাংক মিলে সে সময় অর্থ দাঁড়ায় ৪১ লাখ ১৬ হজার ৪৮৬ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর নগদ টাকা ও সেভিংস মিলে দাঁড়ায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দুটি গাড়ির দাম দেখোনো হয় ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে তার সম্পদের যে বিবরণ দাখিল করেছেন, সেখানে তার নগদ ও ব্যাংকে টাকার পরিমাণ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এবারের হলফনামা থেকে দেখা যায়, তার মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৫ টাকা। এর মধ্যে তার নগদ টাকা রয়েছে ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর বাইরে একটি ৭০ লাখ টাকার জিপ গাড়ি রয়েছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমাদের পারিবারিক আয় বেড়েছে। এটা নিশ্চয় আমাদের গাড়ি-বাড়ি দেখে বুঝতে পেরেছেন। এটি আমাদের পারিবারিক আয়। এটি একক নয়। এর বাইরে গাড়ি আমাদের ব্যাংক লোন থেকে নেয়া হয়েছে। এটি সব এমপিই নেন, আমিও নিয়েছি।’
তার এই আয়কে স্বাভাবিক বলেই দাবি করেন ফজলে হোসেন বাদশা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য