সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্তির দাবিতে বিএনপি ঘোষিত এক দফা দাবির বিপরীতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এক দফার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সংবিধানসম্মতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে এবং তিনি ছাড়া (শেখ হাসিনা) কোনো নির্বাচন হবে না।’
বুধবার রাজধানীর বায়তুল মুকাররমের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদেরও এক দফা- শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই হবে, শেখ হাসিনাই নেতৃত্ব দেবেন।’
বিএনপির এক দফা নয়াপল্টনের কাদাপানিতে আটকে গেছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে তাদের এক দফার জবাবে আমাদেরও এক দফা। আর সেটি হলো সংবিধানসম্মত নির্বাচন। সংবিধানের আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো বাধা দেবো না। কাউকে আক্রমণ করতে যাবো না। বিদেশি বন্ধুরা এসেছেন। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করেন। আমাদেরও লক্ষ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দিতে আসবে আমরা তাদের প্রতিহত করবো।’
বিএনপি অনেক ষড়যন্ত্র করেছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘তারা আগেও কাঁথা-বালিশ নিয়ে অনেক লোক আনার চেষ্টা করেছে। তারা ডিসেম্বরের স্বপ্ন দেখে গরুর হাটে গিয়েছিল। এখন আরেক স্বপ্ন দেখছে শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই স্বপ্ন নয়াপল্টনের বৃষ্টির কাদাপানিতে আটকে গেছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে নির্বাচন পর্যন্ত। মাঠ ছাড়বেন না। যখনই ডাক দেবো, শেখ হাসিনার নির্দেশে মাঠে চলে আসবেন। কোনো অপশক্তির সঙ্গে আপস করবেন না।
‘বাংলাদেশে আমাদের মায়ের কোল যারা খালি করেছে, যারা আমার দেশের অগণিত মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে, যাদের হাতে রক্তের দাগ, তাদের সঙ্গে আপস নয়। যাদের হাতে ১৫ আগস্টের রক্ত তাদের সঙ্গে আপস করতে পারি না। একাত্তরের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, জয় বাংলা স্লোগান, ৭ মার্চের চেতনা প্রশ্নে আমরা আপস করতে পারি না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ যাকে ভালোবাসে, জনগণ যে নেত্রীর সততাকে পছন্দ করে, যে নেত্রীর উন্নয়নকে পছন্দ করে, যিনি রাত জেগে মানুষের কথা ভাবেন- এমন নেত্রীকে আমরা হারাতে চাই না।
‘বিএনপি জানে নির্বাচন হলে তারা হেরে যাবে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। আজ সেজন্য তারা শেখ হাসিনাকে হিংসা করে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল, একদিনে একশ’ সেতু উদ্বোধন তারা চায়নি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প তাদের পছন্দ হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারা দেশের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন যাদের পছন্দ হয় না তারা শেখ হাসিনাকে পছন্দ করবে না।
‘শেখ হাসিনার অপরাধ যে তিনি দেশের উন্নয়ন করেছে, জাতিকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। ৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাদের কাছে আজ এসবই শেখ হাসিনার অপরাধ।’
সমাবেশে বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী অনেক দয়া দেখিয়েছেন। ২১ আগস্ট তাকে হত্যার জন্য হামলা করার পরও কোকোর মৃত্যুর পর তার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দয়ালু কন্যা শেখ হাসিনা। কিন্তু দরজা বন্ধ। বাইরের গেট বন্ধ। শেখ হাসিনাকে তারা ঢুকতে দেয়নি।
দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই অপশক্তি, গণতন্ত্রের এই শত্রুদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আপস করতে পারে না। আওয়ামী লীগ যখন খেলতে নামবে তখন কোনো অপশক্তি সামনে দাঁড়াবে পারবে না।
‘শোকের মাসে কর্মসূচির পাশাপাশি গণসংযোগ চালাবেন। তবে শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানার ছবি ছাড়া আর কারও কোনো ছবি দিয়ে প্রচার চালাবেন না।’
কাদের বলেন, ‘ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন অনুপ্রেরণা। বিশ্বব্যাংকের সভাপতি তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার অসামান্য নেতৃত্বের প্রশংসা করে। বাংলাদেশের কিছু মানুষ এটা সহ্য করতে পারে না। শেখ হাসিনার প্রশংসায় তাদের গা জ্বালা করে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা মানে উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। ৪৮ বছরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো এমন সৎ নেতৃত্ব, সৎ প্রধানমন্ত্রী, সাহসী নেতৃত্ব, দক্ষ প্রশাসক আমরা পাইনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে তারাই হারাতে চায়, যারা জানে ভোট করলে তার সঙ্গে পেরে উঠবে না। এজন্যই তার ওপর এত ক্ষোভ।’
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শীর্ষ এই নেতা আয়োজকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি এমন মঞ্চ দেখতে চাইনি। শৃঙ্খলা থাকতে হবে। এতো নেতা কেন? একটা মিটিংয়ে এতো বক্তা কেন বক্তব্য দেবেন? এই মিটিংয়ে এরা করবেন, ওই মিটিংয়ে ওরা দেবেন- এভাবে করবেন। সব নেতাকে বক্তব্য দিতে হবে আর সামনের নেতাকর্মী ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে চলে যাবে এটা হয় না।’
আরও পড়ুন:আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
মন্তব্য