খরস্রোতা ধলাই নদীর উৎপত্তি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায়। ভাটিতে এটি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে দীর্ঘ ৫৭ কিলোমিটার পথ প্রবাহিত হয়ে মনু নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। খরস্রোতা নদী বলে বৃষ্টি আর ঢলের পানিতে নদী ভরে প্রতি বছরই প্রতিরক্ষা বাঁধে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি করে।
ধলাই নদীর স্রোতে কমলগঞ্জ পৌরসভাসহ ছয়টি ইউনিয়ন এলাকার ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের মাটি ধসে ৩১টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢল নামলে যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এসব এলাকার বাসিন্দারা প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামতে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।
শনিবার কমলগঞ্জ পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়নের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার আলেপুর, দক্ষিণ ও উত্তর কুমড়াকাপন, রামপাশা, গোপালনগর ও করিমপুর গ্রাম এলাকার বাঁধ ধসে সরু হয়ে গেছে। ইসলামপুর ইউনিয়নের মখাবিল, কুরমা চেকপোস্ট সংলগ্ন হইরোবিল শ্রীপুর ও শ্রীপুর কোনাগাঁও এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধ ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
তিন দিন আগে রাতের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে। এতে কমলগঞ্জ পৌরসভা ও আদমপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ে। এসব গ্রামের আড়াই শ’ পরিবার একদিনের জন্য পানিবন্দি ছিলেন।
আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও, হকতিয়ারখলা, দক্ষিণ তিলকপুর ও ঘোড়ামারা গ্রাম এলাকার ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে সরু হয়ে গেছে। মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা, হীরামতি, শিমুলতলা, শুকুর উল্যারগাঁও ও ধলাইরপার এলাকার বাঁধ ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে।
কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের জামিরাকোণা, রামপুর, নারায়ণপুর ও চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের প্রতিরক্ষা বাঁধ অনেকটাই ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
মুন্সীবাজার ইউনিয়নের কুশালপুর, উবাহাটা, বাদে করিমপুর, সুরানন্দপুর ও বাসুদেবপুর গ্রামের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধেরও একই অবস্থা। এর মাঝে সুরানন্দপুর গ্রামের নওশাদ মিয়ার বাড়ির সামনে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে নতুন করে মেরামত কাজ হলেও প্রায় ২০০ ফুট এলাকার মাটি ধসে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর, লক্ষ্মীপুর ও জশমতপুর এলাকার ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।
এসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের মেরামত কাজ ও ধলাই নদীতে খনন কাজ করলেও কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরাও এই অনিয়মের কথা বলেন।
ইসলামপুর ইউপির চেয়ারম্যান সুলেমান মিয়া, আদমপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন, মাধবপুর ইউপির চেয়ারম্যান আসিদ আলী, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ, মুন্সীবাজার ইউপির চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ তরফদার, রহিমপুর ইউপির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল সুনির্দিষ্টভাবে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে ৩১টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেন। তারা জানান, বিষয়টি উপজেলা পরিষদে বলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলীকেও তা অবহিত করা হয়েছে।
তারা বলেন, ‘আগামীতে আরও ভারী বৃষ্টিপাত হলে এবং ধলাই নদীতে উজানের পাহাড়ি ঢলের পানি নামলে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ভেঙে পানি প্রবেশ করে ফসলি জমি ও বাড়িঘর নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পর্যবেক্ষক সাকিব হোসেন স্বীকার করেন যে কমলগঞ্জ ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের হিসাবে ৩১টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ ইকবালের নেতৃত্বে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ সার্বিকভাবে নজরদারিসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের চেষ্টা চলছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও কমলগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রইছ আল রেজুওয়ান প্রতিরক্ষা বাঁধের অনেক স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতের চেষ্টা করা হবে।’
আরও পড়ুন:বঙ্গোপসাগরের নাফ নদী মোহনা থেকে আবারও দুটি ট্রলারসহ ছয়জনকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রড-সিমেন্টসহ মালামাল নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাএয়া হয়। এর আগে সম্প্রতি সময়ে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বুধবার বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার টেকনাফ থেকে দুটি ট্রলার রড-সিমেন্টসহ মালামাল নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে আরাকান আর্মির সদস্যরা সাগর মোহনা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারের ছয়জন স্টাফ ছিল, যারা সবাই সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা। ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলারের মধ্যে আমার একটি রয়েছে। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলাোবাহিনীদকে অবহিত করা হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মালামাল ভর্তি দুটি ট্রলারসহ ছয়জনকে মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে এবং কারা ধরে নিয়ে গেছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।’
তবে এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে কেউ অবহিত করেননি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও পাঁজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ২২১ জন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের, একজন ঢাকা বিভাগের ও একজন চট্টগ্রাম বিভাগের।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন মোট ৩৭২ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ২১ জন।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাঁশবাহী গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে আরোহী দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন।
বুধবার সন্ধা ৭টার দিকে উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের হাজীগঞ্জ এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের জোরদিঘী ফজরগঞ্জ এলাকার প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেনের ছেলে জুয়েল রানা ও রফিকুল ইসলামের ছেলে শাহাদত।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জোরদিঘী বাজার এলাকা থেকে সাগরদিঘী বাজারের উদ্দেশে ঘুরতে বের হন দুই বন্ধু। পথে বাঁশবাহী একটি মহিষের গাড়ি ওভারটেক করতে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়।
সাগরদিঘী ইউপির সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, মোটরসাইকেল নিয়ে দুই বন্ধু ঘুরতে গিয়ে রাস্তায় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আট যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহিদুল হকসহ তিন আসামির প্রথম দফার রিমান্ড শেষে বুধবার বিকেলে আদালতে আনা হয়।
কুমিল্লা সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা তিন আসামির ফের দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে রিমান্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয়।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অপর দুই আসামি হলেন সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদার এবং কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিম। এর আগে গত ১১ নভেম্বর একই আদালতে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি ও মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু।
এদিকে প্রথম দফার রিমান্ড শেষে বুধবার আদালতে আনা হয় সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদার ও আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিমকে। এমন খবরে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে যায়।
আইনানুগ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে দেরি হওয়া এবং আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয় তিন আসামিকে। এ সময় উত্তেজিত জনতা সাবেক আইজিপিসহ তিনজনকে ভর্ৎসনাসর্না করেন। উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়।
আদালতে দীর্ঘ ৪০ মিনিট ধরে শুনানি চলে। শুনানিতে বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এ সময় আসামিরাও তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
এজলাসের বাইরে ব্যাপক উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। এ সময় তিনটি গাড়িতে করে সেনা সদস্যরা আদালতে উপস্থিত হন। রিমান্ড শুনানি শেষে আসামিদের বিশেষ নিরাপত্তায় আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুনানি শেষে কুমিল্লা বারের পিপি ও মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু বলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রোল বোমা মেরে ৮ যাত্রীকে হত্যার সঙ্গে সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, বেনজির আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী জড়িত। তারা সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের সঙ্গে পরিকল্পনা করে এমন ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে আইকন পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়। এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা আদালতে একই ঘটনায় পাল্টা মামলা করেন নাশকতাকবলিত বাসটির তত্ত্বাবধায়ক পরিচয়দানকারী আবুল খায়ের।
বর্তমান মামলাটিতে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অন্তত ১৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।
বুধবার দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ৬ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী আইভীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান। অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা দরকার।
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান আলী আহাম্মদ চুনকার মেয়ে আইভী ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো নাসিকের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর টানা তৃতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
শেরপুরের নকলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় চারজন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ আরও তিনজন আহত হন।
ময়মনসিংহ-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কে নকলা উপজেলার পাইস্কা বাইপাস এলাকায় বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার লাউদানা এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তায়েবা (১০), শেরপুর সদর উপজেলার পালাশিয়া এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে তাজেন মিয়া (১৫), ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা এলাকার সুলতান মিয়ার স্ত্রী সুবিনা বেগম (২০) ও ফুলপুর উপজেলার সাহাপুর এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে আলাল উদ্দিন (৩৫)।
আহত ব্যক্তিরা হলেন নিহত তায়েবার বড় বোন তোয়া (১৬), ছোট ভাই আদনান ছাবিদ (৩) ও মা উম্মে সালমা (৪০)। তাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার লাউদানা এলাকার উম্মে সালমা তার দুই মেয়ে ও শিশুপুত্রকে নিয়ে দুই দিন আগে শেরপুরের এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যান। বুধবার ময়মনসিংহের উদ্দেশে অটোরিকশায় করে রওনা হন তারা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নকলার গড়েরগাঁও থেকে পাইস্কা বাইপাস হয়ে ময়মনসিংহ-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কে দ্রুতবেগে আসা ময়মনসিংহ-শেরপুরগামী পিকআপটি ধাক্কা দেয় অটোরিকশাকে। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তায়েবা ও তাজেন মিয়ার।
ওই সময় অটোরিকশার চালকসহ সবাই আহত হলে স্থানীয়রা প্রথমে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাদের। সেখানে আহত লোকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। নেয়ার পথেই সুবিনা বেগম ও আলাল উদ্দিন মারা যান।
বাকিদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবর রহমান বলেন, ‘আজ দুপুরে নকলার পাইস্কা বাইপাসে সিএনজি-পিকআপের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যায়। আরও পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে আরও দুজন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
‘পিকআপের চালক পলাতক রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সিএনজি ও পিকআপটি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:উপদেষ্টা হিসেবে বিতর্কিত কাউকে যেন নিয়োগ দেয়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধনের পর কালিবাড়ির নিজ বাসভবনে বুধবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ একটা কাজ খুব সফলভাবে করেছে। তা হলো আমাদের জাতিকে বিভক্ত করেছে। এই বিভক্তি দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। রাজনীতিক মতামত ভিন্ন থাকবে, কিন্তু ঐক্য থাকবে মৌলিক কিছু বিষয়ে।
‘যেমন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে, বাংলাদেশর মানুষের অধকারের বিষয়ে। এই বিষয়গুলোতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই ঐক্য রাখার ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলনকে শেষ পর্যায়ে বেগবান করার জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৬৩টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করেছি। বাম, ডান, মধ্যপন্থি সব দল সেদিক থেকে বলব, গণঅভ্যুত্থানে অনেকটা কাজ হয়েছে এবং চূড়ান্ত অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হয়েছে।
‘এখন যেটা আমি মনে করি এবং এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না; আমাদের সহনশীল হতে হবে। ১৭ বছরের একটা জঞ্জাল, একটা গার্বেজ তৈরি করা হয়েছে। এটা সত্যি কথা বলতে ১৭ দিনেও সম্ভব না, ১৭ মাসেও সম্ভব না। তাদের সময় দিতে হবে।’
সরকারের করণীয় নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাদের প্রধান যে দায়িত্ব আমরা বারবার করে বলছি, তাদের সব সংস্কার তাদের হাত দেয়ার আমরা মনে করি খুব বেশি প্রয়োজন নাই। নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট আসবে, সে পার্লামেন্ট সে কাজগুলো করবে। এই সরকারের দায়িত্ব হবে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সকলে যেন ভোট দিতে পারে, সকলে যেন অংশগ্রহণ করতে পারে।
‘আর ভোটের যে সিস্টেম আওয়ামী লীগ করে গেছিল, সেগুলো নির্মূল করে। নিরপেক্ষ লোকজনকে নির্বাচন কমিশনে বসানো। বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা, অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে নিরপেক্ষ করা, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য এগুলোই হচ্ছে প্রধান কাজ।’
নতুন উপদেষ্টা নিয়োগে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ও রাজনীতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হয় কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এত বড় একটি দেশ পরিচালনা করার জন্য কাকে উপদেষ্টা নিয়োগ দেবে, এটি নির্ভর করে প্রধান উপদেষ্টার ওপর। এখানে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। তারা চাইলে করতেই পারে। আমি বলব তারা যেন সতর্ক থাকেন।
‘যাদের উপদেষ্টা হিসেবে নেবেন, তারা যেন বিতর্কিত না হয়। আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ সরকারকে সফল করার দায়িত্ব আমাদেরও। কারণ আন্দোলন আমরাও করেছি। সুতরাং আমাদের সহনশীল হতে হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য