রাজধানীর ধানমণ্ডিতে একটি ভবনের ছাদে নিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার পর ওই ছাত্রী নিজেই থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। মামলা করেছেন তার বাবা।
ঘটনা নিশ্চিত করেছেন ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ধানমণ্ডির একটি ভবনের ছাদে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী নিজে থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। আমরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাঠিয়েছি।
ওসি বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর দাবি অনুযায়ী, সোমবারই তাদের পরিচয়। এরপর মেয়েটিকে ছেলেটি একটি ভবনের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে। তথ্য পাওয়ার পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে তাদের পূর্ব পরিচয় ছিল। তারা সাধারণভাবেই ঢুকেছে।
ওই শিক্ষার্থীর বাসা ঢাকারই একটি এলাকায় জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি বাসা থেকে রাগ করে বের হয়েছেন। মেয়েটি পড়ালেখা করেন। ছেলের বিষয় এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাইনি। মেয়েটি হাসপাতাল থেকে আসার পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
ওসি জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন।
কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র নাইমুর রহমান সীমান্তের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজিতে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় মৃত্যু হয় তার।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন বলে জানান তার সহপাঠীরা। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুমাইয়া ফারাহ খান বলেন, ‘আজ ভোর ৫টায় সীমান্ত শ্যামলীতে কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। সে খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। আমরা যতটুকু জেনেছি গত দুই দিন আগে পেটে ব্যথা নিয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়।
‘গতকাল ওর একটা সাজার্রি করার কথা ছিল। ওর বাবা কিছুদিন আগে মারা গেছে। মা এবং বোন আছে। বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ওদের পরিবার ঢাকাতেই থাকে। তবে ওকে দাফনের জন্য কিশোরগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
সীমান্তের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) যে ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
এ তালিকায় চিহ্নিত অনেক হামলাকারীর নাম না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী।
বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১২৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই তালিকায় রয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান ও ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নসহ আরও অনেকে।
তালিকায় নাম নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবি জুবায়ের বলেন, ‘তানভীর হাসান সৈকত, ইউনুসসহ স্পষ্ট ফুটেজ থাকা অনেক সন্ত্রাসীর নামই লিস্টে নাই। কাদের ইশারায় এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রশাসনকে তা স্পষ্ট জানাতে হবে। অপূর্ণাঙ্গ এই লিস্ট আমরা মানি না।’
সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা ১২৮ জনের লিস্ট কারা তৈরি করছে, এইটা আমরা জানতে চাই। চোখের সামনে আমাদের যারা জসীম উদ্দীন হলের মাঠে ফেলে আমাকে আর হামজা ভাইকে পিটিয়ে মাথা ফাটানো মেহেদী হাসান শান্তের নাম নাই। আমার বোনদের যারা ভিসি চত্বরে পেটাল, তাদের নাম আসে নাই।’
তিনি লিখেন, ‘সবচেয়ে মজার ব্যাপার হইলো একটা সিঙ্গেল নারীকেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহিষ্কার করে নাই। অথচ নির্যাতনের মাত্রা হিসাব করলে এরা পুরুষ ছাত্রলীগের থেকেও ভয়ংকর ছিল। নারী ছাত্রলীগার সন্ত্রাসীদের কারা শেল্টার দিচ্ছে?’
স্মৃতি আফরোজ সুমি লিখেন, ‘বহিষ্কৃতদের তালিকা করার তদন্তের দায়িত্ব কি কোনো লীগারকে দেওয়া হয়েছিলো? লিস্ট দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। না হলে স্পষ্ট ফুটেজ, প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রতি হল থেকে ১০ থেকে ১৫ জনের নাম বাদ পড়ে কীভাবে?’
সুমাইয়া ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘১৫ জুলাই ছাত্রলীগের সবচেয়ে অমানবিক কাজ ছিল ঢাকা মেডিক্যালে হামলা। সেই হামলায় বেশির ভাগ হামলাকারী ছিল জগন্নাথ হলের। অথচ জগন্নাথ হল থেকে মাত্র দুজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রিভু মন্ডল, রাজিব বিশ্বাসের মতো শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও বাদ পড়ে গেল!’
এদিকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন এবি জুবায়ের।
১২৮ জনের তালিকায় দুইজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই ছিলেন না, এমন নামও এসেছে।
তাদের কীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এসবসহ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
সহকর্মীদের এমআরটি পুলিশের মারধরের অভিযোগে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন মেট্রোরেলের কর্মীরা।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার সকাল সাতটায় তারা কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। আড়াই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ৯টায় ফের একক যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
সকালে সরেজমিনে মিরপুর-১০ ও সচিবালয় স্টেশনে কোনো মেট্রোরেল কর্মী দেখা যায়নি। কেবল কয়েকজন আনসার সদস্য ছিলেন সেখানে।
এমআরটি পুলিশ সদস্যরা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মীকে মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনার প্রতিবাদে এ কর্মবিরতি ডাকেন মেট্রোরেলের কর্মীরা। পরে এমআরটি পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগের পর কাজে ফিরেছেন তারা।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
‘এরইমধ্যে এমআরটি পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কর্মবিরতি যারা করছেন, তাদের সঙ্গে আমার একটু আগেই কথা হয়েছে। তারা কাজে ফিরবেন।’
গতকাল রাতে ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’ ব্যানারে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আনুমানিক বিকেল সোয়া ৫টায় দুজন নারী কোনো পরিচয়পত্র না দেখিয়ে সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেট ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান।
‘তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান, এর কারণ তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএর সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন এবং কর্মরত আরেকজন টিএমওয়ের শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করেন।
‘উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীরা বিষয়টি অনুধাবন করে এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে পুলিশের কাছ থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে।’
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাড্ডা থানা এলাকায় রফিকুল নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
শাজাহান খানকে সোমবার কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
পরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করা হয়। অন্যদিকে সাবেক মন্ত্রীর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজাহারুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন বিসমিল্লাহ আবাসিক হোটেলের সামনের রাস্তায় আন্দোলন করছিলেন ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম (৩৭)। ওই সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতে আহত হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ২৭ আগস্ট মৃত্যু হয় তার।
এ ঘটনায় রফিকুলের মামা মুহাম্মদ লুৎফর রহমান বাড্ডা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে তাকে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। রিমান্ডেও নেওয়া হয় একাধিক মামলায়।
আরও পড়ুন:‘ধর্ষণকে’ নারী নির্যাতন কিংবা নিপীড়ন বলার পরামর্শ দেওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।
ডিএমপি সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি কমিশনারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রসঙ্গে আলোচনাকালে ধর্ষণকে বৃহত্তর পরিসরে নির্যাতন হিসেবে অভিহিত করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ মনঃক্ষুণ্ণ হলে আমি দুঃখপ্রকাশ করছি।’
এর আগে শনিবার এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমি দুটি শব্দ খুব অপছন্দ করি। এর মধ্যে একটি হলো ধর্ষণ।
‘আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটা ব্যবহার করবেন না। আপনারা নারী নির্যাতন বা নিপীড়ন বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।’
ডিএমপি কমিশনার ওই বক্তব্যের মাধ্যমে বাস্তবে ধর্ষণকারীর পক্ষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তার ভাষ্য, ডিএমপি কমিশনার ধর্ষণকারীকে সুরক্ষার উপায় বের করার অপচষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন, যা অগ্রহণযোগ্য। তার এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত। একই সঙ্গে এটি প্রত্যাহার করা উচিত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “যে প্রতিষ্ঠানের ওপর সবচেয়ে বেশি নিশ্চিত করা বা নারীর অধিকার হরণের প্রতিরোধ করার দায়িত্ব, সেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তথা পুলিশ, বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন বলেন ‘ধর্ষণ’ শব্দটা ব্যবহার না করার জন্য, গণমাধ্যম আপনাদেরকে যখন অনুরোধ করে, তখন আমাদের অবাক হতে হয়। তাদের এই অবস্থানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে হয়।”
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার আমলাদের অপসারণের দাবিতে রাজধানীর খামারবাড়ীতে রবিবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে এ বিক্ষোভ শুরু হয়, যা এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও চলে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (শেকৃবি) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীরা অংশ নেন বিক্ষোভে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন।
শেকৃবির শিক্ষার্থী রাহাত হোসেন বলেন, ‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে আমলারা খামারবাড়ীতে বসে ফ্যাসিস্ট হাসিনার জন্য কাজ করতেন। তারা এখনও বহাল তবিয়তে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন, যা আমাদের দেশের জন্য কল্যাণকর না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষি খাতকে অকার্যকর করার জন্য তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ জন্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলের আমলাদের অপসারণের জন্য দাবিতে আন্দোলন করছি। তাদের অপসারণ না করার পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
রাহাত বলেন, ‘কেবল কৃষি খাতই না, সব খাতেই যেসব আমলা হাসিনার আমলে বিশেষ সুবিধা নিয়েছেন, তাদেরকেও অপসারণের দাবি জানিয়েছি।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনায় আমলা তথা সচিবরা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছেন। বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে বরাবরই বিশ্বস্ত সচিব ও কর্মকর্তাদের পদায়ন করতেন তিনি। কিন্তু সেই আমলারা বহাল তবিয়তে থেকে এখনও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ও শেকৃবির শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সচিবালয়ে যাব। আর বাকিরা এখানে অবস্থান করবেন। যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আন্দোলন চলমান থাকবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য