দিন পেরুলেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত আদায়ের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মিনার গোর-এ শহীদ বড় ময়দান কর্তৃপক্ষ। শেষ মুহুর্তে মাঠের শুকনো জায়গা ভেজানোর কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। আর শ্রমিকেরা ঠিক করছেন নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে মুসল্লিদের দাঁড়ানোর কাতারের দাগ। জামাতে অংশ নিতে আশেপাশের জেলা থেকে আসা মুসল্লিদের জন্য প্রথমবারের মতো দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি মাঠে মাটি ভরাট, ধোয়ামোছা, পানি ছেটানোসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কারমূলক কার্যক্রম চলছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওয়াচ টাওয়ার নিমার্ণ করা হয়েছে। সুপেয় পানি ও অজুখানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীদের বরাতে সূত্র জানায়, ঈদগাহ মিনার জুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদ্যসরা ছাড়াও দায়িত্ব পালনে মাঠে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঈদগাঁহে প্রবেশের জন্য মোট ১৯টি গেট তৈরি করা হয়েছে। এসব গেটে মেটাল ডিরেক্টর দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে মোট ১১০টি মাইক ও বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসার পাঁচ শতাধিক মুকাব্বির নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়াও মুসল্লিদের অজুর সুবিধার্থে ২৫০টি অজুখানা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শহরের বালুবাড়ি পানি ট্যাংকি এলাকার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘লেখাপড়ার জন্য আমি ঢাকায় থাকি। ঈদ করার জন্য দিনাজপুর এসেছি। আমাদের জেলায় এত বড় ঈদগাহ মিনার আর এত বড় ঈদ জামাত হয়, এটা আমাদের জন্য অবশ্যই গর্বের বিষয়। গোর-এ শহীদ মাঠ নিয়ে অন্যরা যখন আমাদের সামনে প্রশংসা করে তখন অনেক ভালো লাগে। বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ পড়তে আসেন, অনেকের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। আশা করি আগামীতে দেশের বাইরে থেকেও এ মাঠে অনেকে নামাজ পড়তে আসবেন।’
দিনাজপুর নিউটাউন এলাকার তারিক আজমীর বলেন, ‘এখানে একসঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। আশেপাশের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। বাইরে থাকা আসা মুসল্লিদের জন্য দুটি স্পেশাল শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা অনেক ভালো উদ্যোগ। এতে বাইরে থেকে আসা মুসল্লিরা সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। একসঙ্গে যত বেশি মানুষ নামাজ আদায় করবে, তত বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।’
মঙ্গলবার বিকেলে ঈদগাহ মাঠ সরেজমিন পরিদর্শনে যান গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি।
ইকবালুর রহিম বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতরে এ মাঠে একসঙ্গে ৬ লক্ষাধিক মানুষ নামাজ আদায় করেছিল। ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে আগত মুসল্লিদের জন্য দুটি স্পেশাল ট্রেন থাকছে যা এবারই প্রথম। বিশাল এই জামাতে দিনাজপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসল্লিরা যেন নামাজে অংশ নিতে পারেন এজন্য প্রচার ও নিরাপত্তার বিষয়ে বরাবরের মতো জোর দেয়া হয়েছে।’
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামশুল হক কাশেমী ঈদুল আজহার নামাজে ইমামতি করবেন বলে জানান তিনি।
এসময় জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদসহ পুলিশ প্রশাসনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঈদ স্পেশাল দুটি ট্রেনের সময়সূচি
দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে গোর-এ শহীদ বড়ময়দানগামী দু’টি স্পেশাল ট্রেন থাকছে এবার। একটি ট্রেন ঠাকুরগাঁও থেকে ছেড়ে সেতাবগঞ্জ হয়ে দিনাজপুর এবং আরেকটি পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে চিরিরবন্দর থেকে দিনাজপুর পৌঁছাবে।
ঠাকুরগাঁও থেকে আসা ট্রেনটি ঈদের দিন ভোর ৫টায় ছাড়বে। ট্রেনটি ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ, পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ, মঙ্গলপুর ও কাঞ্চন ট্রেন স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে সকাল সোয়া ৭টায় দিনাজপুর ষ্টেশনে পৌঁছাবে।
অপর ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে মন্মথপুর, চিরিরবন্দর, কাউগাঁওয় যাত্রাবিরতি দিয়ে সকাল পৌনে ৮টায় দিনাজপুর ষ্টেশনে পৌঁছাবে।
নামাজের পর সোয়া ৯টায় পার্বতীপুরমুখি ও সাড়ে ৯টায় ঠাকুরগাঁওমুখি ট্রেনটি দিনাজপুর স্টেশন ত্যাগ করবে।
আরও পড়ুন:ঢাকার আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় আগুন লেগেছে। দুপুর ১২টার দিকে পলমল গার্মেন্টস নামে ওই কারখানায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা লিমা খানম বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ছয় ইউনিট কাজ করছে।
তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
ইসলামী ব্যাংকসহ ব্যাংকিং সেক্টরে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
সোমবার সকালে ইসলামী ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার সামনে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে গ্রাহক ও চাকুরী প্রত্যাশীরা। সেসময় ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে ওই শাখার গ্রাহকসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচীতে গ্রাহক আল মাহমুদ, হাদি মহম্মদ, জিয়াউল ইসলাম খান, কাজী রফিকুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুস সবুরসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
সেসময় বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এস আলম কর্তৃক অবৈধভাবে হাজার হাজার কর্মী ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তাই দ্রুত অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেওয়া কর্মীদের ছাটাই করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার দাবী জানান বক্তারা।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, অনিয়ম, জনবল ঘাটতি ও দালাল চক্রের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে।
স্বনামধন্য এ হাসপাতালটি শুধু ভেড়ামারা নয়, পাশ্ববর্তী দৌলতপুর, মিরপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল। অথচ চিকিৎসকের অপ্রতুলতা আর দুর্নীতির কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। এ হাসপাতালের ডা. পলাশচন্দ্র দেবনাথের অবৈধভাবে বিদেশযাত্রা, হাসপাতালের ফটকের সামনে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্টাফ কতৃক রোগী ও তার স্বজনদের টানাহেচড়া, প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম ও দালালচক্রের দৌরাত্ম সবেমিলে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্তমান অবস্থা চরম বিপর্যস্তগ্রস্থ। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সমস্যা আরো তীব্র হবে বলে জানান রোগী ও তার স্বজনরা।
ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুমোদিত ২৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো-সার্জারি) ও ৩ জন মেডিকেল অফিসার রয়েছেন। ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদশুন্য রয়েছে জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথিসিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌন)।
এছাড়াও আইএমও, এনসথেটষ্ট, এম.ও (এ.এমসি) এর পদ খালি রয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে একজন করে মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও সবগুলোই পদশুন্য । শুধুমাত্র সাতবাড়ীয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিয়োগকৃত মেডিকেল অফিসারকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংযুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফলে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রায় অচল।
হাসপাতালে ১জন মিডওয়াইফ, ১জন জুনিয়র নার্স, ১জন একাউন্টেন্ট, ১জন ক্যাশিয়ার, ৩জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ১জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিন, ১জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) , ২জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১২জন স্বাস্থ্য সহকারী, একজন কম্পাউন্ডার, অফিস সহায়ক, তিনজন ওয়ার্ড বয়, দুইজন আয়া, দুইজন কুক, একজন মালি, একজন নিরাপত্তার প্রহরী, তিনজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুইজন অফিস সহায়ক এর পথ শূন্য রয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে বরাদ্দকৃত সিটের বাইরে রোগী ভর্তি হয়ে থাকেন।
সেকারণে রোগীদের ফ্লোরে অথবা বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। গাইনী ও এনেসথিসিয়া ডাক্তার না থাকায় অপরেশন বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় ৪ শতাধিক রোগী সেবা নিয়ে থাকেন।
তাছাড়াও হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ ও প্রসূতি সেবাও ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের অদক্ষ অপারেটার ও এক্স-রে মেশিন বিকল, প্রয়োজনীয় ল্যাব টেস্টও করা সম্ভব হচ্ছে না।এতে রোগীরা বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল বা বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে ছুটে চলেছেন। ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালে সনোগ্রাফি করা বন্ধ রয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. পলাশ চন্দ্র দেবনাথ (কোড নং-১৩১৯০০) ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নেন। কিন্তু ছুটি শেষে আর অফিসে যোগ দেননি। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে চলে গেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রোগীরা জানান, ‘সরকারি বেতন গ্রহণ করে ডাক্তার যদি অবৈধভাবে বিদেশে চলে যান, তাহলে আমাদের চিকিৎসা সেবা কে দেবে।’ ডা. দেবনাথের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ইতোমধ্যেই হাসপাতালের চিকিৎসা সংকটকে প্রকট করেছে।
হাসপাতালের ভেতরে দালালচক্র সক্রিয় থেকে রোগীদের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সরকারি বরাদ্দের খাবারও রোগীরা প্রায়ই সঠিক ভাবে পান না। ফলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে হাসপাতালটি।
হাসপাতালের ফটকের সামনে রয়েছে তিনটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অভিযোগ রয়েছে, যেকোনো টেস্টের সময় এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা রোগীদের হাত ধরে টানাটানি করে নিজেদের সেন্টারে নিতে চেষ্টা করে। এতে রোগীরা বিব্রত ও ভোগান্তিতে পড়েন।
সম্প্রতি জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নির্দেশে হাসপাতালের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারী বদলি হয়েছেন। এতে স্বাস্থ্য সহকারী, দফতরি, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন দৌলতপুর, মিরপুর ও ঈশ্বরদী অঞ্চলের মানুষও। কিন্তু চিকিৎসকের অভাব, পরীক্ষার সীমাবদ্ধতা আর অনিয়মের কারণে তাদের অবস্থাও নাভিশ্বাস। শেষ পর্যন্ত অনেককে বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাসপাতালে যেতে হয়, যা সময়, অর্থ ও বিড়ম্বনা উভয়ই বাড়িয়ে দেয়।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডা. পলাশ চন্দ্র দেবনাথ অনুপস্থিত থাকায় ঊর্ধ্বতন কার্যালয়ে একাধিককার আবেদন করা হয়েছে।’ ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে চিকিৎসক সংকট একটি জাতীয় সমস্যা। হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়েও যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।’
মেহেরপুরে শিশু,কিশোর ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামুলক প্রচার কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় টায়পয়েড টিকাদান ক্যাম্পিনন২০২৫ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের জন্য ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমবার ১১ টার সময় মেহেরপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশন সভাক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ডক্টর মহম্মদ আব্দুল সালাম।
গণযেগাযোগ অধিদফতর ও জেলা তথ্য অফিসের যৌথ আয়োজনে ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ অধিদফতরের উপ পরিচালক তারেক মহম্মদ, সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু সাইদ,জেলা তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক একেএম সিরাজুম মনির।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগীতায় দিনব্যাপী কর্মশালায় জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
টিকাদানের মাধ্যমে টাইফয়েড প্রতিরোধে করনীয় বিষয়ক আলোচনা করা হয়।
দীর্ঘ দুই দশক পর গণমাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সাক্ষাৎকারে তিনি দেশে ফেরাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও বিবিসি বাংলার সিনিয়র সাংবাদিক কাদির কল্লোলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান দ্রতই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।
কেন আপনি এখনো দেশে ফেরেননি– সাক্ষাৎকারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু সংগত কারণে হয়তো ফেরাটা হয়ে উঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশাআল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসব।’
সেটা কবে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দ্রুতই মনে হয়। দ্রুতই ইনশাআল্লাহ।’
নির্বাচনের আগে আপনি দেশে আসবেন এমন সম্ভাবনা বলা যায়? জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে স্বাভাবিক, নির্বাচনের সাথে রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক কর্মীর একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক। কাজেই যেখানে একটি প্রত্যাশিত, জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? আমি তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত যে প্রত্যাশিত নির্বাচন জনগণ চাইছে। সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে জনগণের সাথে জনগণের মাঝেই থাকব ইনশাআল্লাহ।’
দেশে আসার বিষয়ে নিরাপত্তার শঙ্কার কথা বলছেন কেউ কেউ। আপনি কি কোনো ধরনের শঙ্কা বোধ করেছেন এর মধ্যে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা তো আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তো শুনেছি। সরকারেরও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকেও তো অনেক সময় অনেক শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে, বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে।’
সাক্ষাৎকারের শুরুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সময় তো স্বাভাবিকভাবে ব্যস্তই যাচ্ছে। ফিজিক্যালি হয়তো আমি এই দেশে আছি, বাট মন-মানসিকতা সবকিছু মিলিয়ে তো আমি গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশেই রয়ে গিয়েছি।’
গণমাধ্যমের সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা না বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, ‘ব্যাপারটা বোধ হয় এরকম না, ব্যাপারটা বোধ হয় একটু ভিন্ন। আসলে আমি কথা ঠিকই বলেছি। আমি দীর্ঘ ১৭ বছর এখানে আছি এই দেশে, প্রবাস জীবনে, তবে আমার উপরে যখন দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে তারপর থেকে আমি গ্রামে-গঞ্জে আমার নেতাকর্মীসহ তাদের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষ যখন যেভাবে অংশগ্রহণ করেছে, আমি সকলের সাথে কথা বলেছি।’
‘আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোর্ট থেকে রীতিমতো একটা আদেশ দিয়ে আমার কথা বলার অধিকারকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি যদি গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাইতাম, হয়তো গণমাধ্যমের ইচ্ছা ছিল ছাপানোর, গণমাধ্যম সেটি ছাপাতে পারত না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি একবার প্রেস ক্লাবে কথা বলেছিলাম। পরের দিন দেখলাম যে তখনকার প্রেস ক্লাবের যারা সদস্য ছিলেন বা কমিটি ছিল, তারা একটি মিটিং ডেকে একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা তখন আমাকে আইনের দৃষ্টিতে ফেরারি বলা হয়েছিল যে, সেরকম কোনো ব্যক্তিকে তারা প্রেস ক্লাবে কথা বলতে দেবে না। এভাবে তারা চেষ্টা করেছিল আমার কথা বন্ধ করে রাখতে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলেছি, সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায় আমি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি, আমি ইনশাআল্লাহ পৌঁছেছি মানুষের কাছে। কাজেই গণমাধ্যমে যে কথা বলিনি তা না। আমি কথা বলেছি হয়তো আপনারা তখন কথা নিতে পারেননি অথবা শুনতে পারেননি। ইচ্ছা থাকলেও ছাপাতে পারেননি, হয়তো প্রচার করতে পারেননি। কিন্তু আমি বলেছি, আমি থেমে থাকিনি।’
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ লেক এখন রঙ্গিন আলোয় সেজে উঠেছে এক নতুন রূপে। একসময় যে লেকটি ছিল কচুরীপানায় ভরা, নোংরা-আবর্জনায় ভরপুর এবং অব্যবস্থাপনার কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায়, সেই লেকই আজ পরিণত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক বিনোদনকেন্দ্রে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে লেকটির সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কারের মাধ্যমে বদলে গেছে পুরো চেহারা। দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে লেকপাড়, সৃষ্টি হয়েছে আনন্দমুখর পরিবেশ।
রবিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে লেকের সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম ও প্যাডেল বোট উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাগুফতা হক। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায়, কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু তাহের হেলালসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনের পরপরই লেকপাড়ে ভিড় জমতে শুরু করে স্থানীয় জনগণের। নানা বয়সী নারী-পুরুষ, শিশু ও তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতিতে লেকপাড়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
লেকের চারপাশে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ফুটওয়াক নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে হাঁটতে পারেন ও চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে শতাধিক রঙিন টুল, যা সন্ধ্যার পর লেকপাড়ের আলোয় ঝলমল করে উঠে এক মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করে। লেকপাড়ের সড়ক সংস্কার করে তা হাঁটাচলার উপযোগী করা হয়েছে। এছাড়া দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য লেকে নামানো হয়েছে চারটি দৃষ্টিনন্দন প্যাডেল বোট, যা বিশেষ করে শিশু-কিশোর ও পরিবারের সদস্যদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
রবিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লেকের প্যাডেল বোটে চড়তে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীরা। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি বোটেই রাখা হয়েছে লাইফ জ্যাকেট, যাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি না থাকে। বোটে চড়ে অনেকেই পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, কেউ কেউ আবার লেকপাড়ের বসার টুলে বসে উপভোগ করছেন লেকের মনোরম দৃশ্য। বিকেলের নরম রোদে আর রাতের আলোকসজ্জায় লেকটি যেন এক আনন্দময় বিনোদন পার্কে রূপ নিয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লাবিবা জানায়, আমাদের এখানে ঘোরার মতো কোনো ভালো জায়গা ছিল না। আগে বিকেলে বাড়িতে বসেই সময় কাটাতে হতো। এখন এই লেকে বোটে চড়ে খুব আনন্দ পাচ্ছি। বসার জন্যও খুব সুন্দর ব্যবস্থা করা হয়েছে, বন্ধুরা সবাই মিলে প্রায়ই আসার পরিকল্পনা করছি।
স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘কোটালীপাড়া কল্যাণ সংঘ’-এর সভাপতি সোহেল শেখ বলেন, একসময় লেকটি ছিল নর্দমার দুর্গন্ধ আর মশার উপদ্রবের জায়গা। হাসপাতালে আসা রোগী ও পথচারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হতেন। অব্যবস্থাপনা আর অবহেলায় জায়গাটি ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে লেকটির পুরো চেহারাই এখন বদলে গেছে। এখন এটি কোটালীপাড়াবাসীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনোদনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যেখানে মানুষ নিশ্চিন্তে বিকেল কাটাতে পারছেন।
কোটালীপাড়া সরকারি আদর্শ কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সমেন মজুমদার বলেন, প্যাডেল বোট একটি পরিবেশবান্ধব ও শান্তিপূর্ণ বিনোদনের মাধ্যম। এতে জলজ জীবনের কোনো ক্ষতি হয় না, আবার মানুষও শান্তিপূর্ণভাবে লেকের ভেতরে ঘুরে বেড়াতে পারেন। এটি পরিবার ও বন্ধুদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে। আমাদের এলাকায় এমন উদ্যোগ দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়োজন ছিল, যা অবশেষে বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
কবি ও সাহিত্যিক মিন্টু রায় বলেন, কোটালীপাড়ার দক্ষিণ সীমান্তের মাচারতারা গ্রামে একটি শিশু পার্ক থাকলেও দূরত্ব ও যাতায়াত সমস্যার কারণে সেখানে নিয়মিত যাওয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই উপজেলা পরিষদের এই লেক এখন হয়ে উঠছে মানুষের নিকটস্থ একটি বিনোদনের ঠিকানা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রবীণ নাগরিক—সবাই এখানে এসে সময় কাটাবে ও আনন্দ খুঁজে নিবে একসাথে।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক বলেন, লেকটিকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে আশাকরছি এটি কোটালীপাড়াবাসীর জন্য একটি বিনোদন স্পট হিসেবে পরিচিতি পাবে। লেকের চারিপাশে রঙ্গিন লাইট বসানো হবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় লেকের চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। লেকের পাড়ে ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানগুলোর কারণে পানির বোতল, কাগজের প্যাকেটসহ নানা আবর্জনা লেকে ফেলে যাতে পানি দূষিত না হতে পারে, এবং কোন ধরনের বিশৃংখলা না হয় সেজন্য সার্বক্ষনিক নজরদারীতে রাখা হবে পুরো এলাকা। আপাতত এক ব্যক্তিকে বোড চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি লেকের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করাসহ রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে নামমাত্র শুভেচ্ছামুল্যে নিয়ে লেকটিতে প্যাডেল বোট পরিচালনা করছেন।
উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ কেবল লেকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনেনি, বরং এটি স্থানীয় জনগণের মাঝে বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। শহরের ব্যস্ততা আর গ্রামের নিস্তব্ধতার মাঝামাঝি এই লেক এখন মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হচ্ছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সচেতনতার মাধ্যমে এই লেক দীর্ঘদিন ধরে বিনোদন ও সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকবে।
নড়াইল সদর উপজেলায় নিখোঁজের দুদিন পর কচুরিপানার মধ্যে থেকে আমিনুর বিশ্বাস আলিফ (১৫) নামে এক ইজিভ্যানচালক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মিনারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের দেবভোগ গ্রামে একটি পুকুরে কচুরিপানার নিচে লুকানো অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম।
নিহত আমিনুর বিশ্বাস আলিফ নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের ছোট মিতনা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম কিনায়েত বিশ্বাস। পেশায় তিনি ছিলেন একজন ইজিভ্যান চালক।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে নিজস্ব ইজিভ্যান নিয়ে বের হয় আমিনুর। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পাননি।
পরে রোববার সকালে আমিনুরের মা রোজিনা বেগম নড়াইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পরপরই পুলিশ তদন্তে নামে এবং চাচড়া গ্রামের বাহারুল ইসলামের ছেলে মিনারুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
নিহত কিশোরের বাবা-মা জানান, আমাদের একমাত্র ছেলে আলিফ জীবিকার তাগিদে ইজিভ্যান চালাতো। তাকে এমনভাবে হত্যা করা হবে, তা ভাবতেও পারিনি। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।
নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিনারুল স্বীকার করেছে ইজিভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে স্পিডের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আমিনুরকে অচেতন করে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ দেবভোগ গ্রামের একটি পুকুরের কচুড়িপানার মধ্যে ফেলে রাখা হয়। দুপুরে পুলিশ মিনারুলকে সঙ্গে নিয়ে তার দেখানো স্থানে অভিযান চালিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। তবে নিহত আমিনুরের চালিত ইজিভ্যানটি এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহত আমিনুরের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।
মন্তব্য