বাংলাদেশ
Sadarghat crowded with people at home
ঈদযাত্রায় লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রিও অনেকটা শেষের পথে। কোনো কোনো রুটে ২৯ জুন পর্যন্ত কেবিনের অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে গেছে। তবে ঢাকা-বরিশাল রুটে অগ্রিম টিকিট বিক্রির হার কিছুটা কম। যাত্রী টানতে গত ঈদের মতো এবারও ভাড়ায় কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন মালিকরা।
ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শুরুর প্রথম দিনই রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট নৌ-টার্মিনালে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। পদ্মা সেতু হওয়ার পর স্বাভাবিক সময়ে যাত্রীতে ভাটা পড়লেও ঈদকে ঘিরে সড়ক ও রেলের পাশাপাশি ফের প্রাণ ফিরেছে নৌপথে। দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের নৌপথে বাড়ি পৌঁছে দিতে বাড়ানো হয়েছে দৈনিক চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যাও। অনেকটা স্বস্তি নিয়েই যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরছেন বলে জানান লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার সারাদিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুরো টার্মিনাল ও পল্টন এলাকাজুড়ে যাত্রীদের ভিড়। যাত্রীবোঝাই করে দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। বুধবার যাত্রীর চাপ আরও বাড়তে পারে বলে জানান লঞ্চ স্টাফরা। নাড়ির টানে বাড়ির পথে বের হয়ে এই ভীড়ের মুখোমুখি হলেও যাত্রীরা বলছেন এই যাত্রা নির্বিঘ্নের।
এদিকে বিভিন্ন পেশার মানুষের ঈদের ছুটি আগে শুরু হলেও সরকারি চাকরিজীবীদের শেষ কর্মদিবস ছিল সোমবার। কর্মদিবস শেষ করে মোট পাঁচ দিনের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে।
লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা জানান, মঙ্গলবার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরছেন। নিয়মিত চলাচলকারী লঞ্চগুলোর কেবিনের অগ্রিম টিকিট প্রায় শতভাগ বিক্রি আগেই শেষ হয়েছে। তবে সব রুটেই কমবেশি লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানোয় এখনও কেবিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা। যদিও কেবিনের তুলনায় ডেকের যাত্রীর চাপই বেশি বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের নৌপথ ৪১টি। তবে নাব্য সংকট ও যাত্রী স্বল্পতার কারণে বড় আয়তনের ও বিলাসবহুল লঞ্চ চলাচল না করায় অন্তত ১৫টি নৌপথ এর মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি ২৬টি নৌপথে প্রায় ৭০টি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করে। ঈদকে ঘিরে লঞ্চের সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ১৮০টি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০টি লঞ্চ প্রতিদিন সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে সদরঘাটে আসছে ৯০টি।
ঈদের আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রিও অনেকটা শেষের পথে। কোনো কোনো রুটে ২৯ জুন পর্যন্ত কেবিনের অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে গেছে। তবে ঢাকা-বরিশাল রুটে অগ্রিম টিকিট বিক্রির হার কিছুটা কম। যাত্রী টানতে গত ঈদের মতো এবারও ভাড়ায় কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন মালিকরা।
ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী সুন্দরবন-১৫-এর পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রতিদিনই যাত্রীর চাপ বাড়ছে। অগ্রিম টিকিট বুকিং করা হয়েছে ২৮ তারিখ পর্যন্ত। ২৬-২৭ তারিখের কোনো কেবিন আমাদের ফাঁকা নেই।’
পটুয়াখালীগামী যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘাটে এসেই লঞ্চ পেয়েছি। নিয়মিত ভাড়াই দিয়েছি। আশা করছি, ভালোভাবেই বাড়ি পৌঁছাতে পারব। যাত্রাপথে ঝড়-বৃষ্টি না হলেই ভালো।’
লঞ্চে উঠে ব্যাগ টানছিলেন মিরপুর থেকে আসা গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘আমি বরগুনা যাব। যাওয়ার কথা ছিল ২৮ তারিখ, ওই দিনের জন্য কেবিন বুকিং করা ছিল। কিন্তু ইমার্জেন্সি হওয়ায় আজ যেতে হচ্ছে। ঘাটে এসে কেবিন পাবো কিনা চিন্তায় ছিলাম, তবে কেবিন পেয়েছি, ভাড়াও স্বাভাবিক।’
ভোলাগামী যাত্রী রাসেল শিকদার বলেন, ‘ঘাটে আগের মতো ভিড় নেই। এসে ডেকেই বসেছি, ডেকেও চাপ কম। ভাড়াও অতিরিক্ত নয়।’
সার্বিক বিষয়ে লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘কিছু রুটে অগ্রিম টিকিট অনেকটাই বিক্রি হয়েছে। বরিশালসহ কয়েকটি রুটে যাত্রী অনেক কম। আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কিছুটা কম নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘লঞ্চ সংকট নেই। প্রয়োজনে আমরা যেকোনো রুটে স্পেশাল সার্ভিস দিতে পারব। যাত্রীরা লঞ্চে উঠে ডেক ও কেবিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।’
সদরঘাট নৌ-থানার ওসি মো. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি। পুলিশ, নৌ-পুলিশের পাশাপাশি লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় র্যাবের একটি টিম আলাদাভাবে কাজ করছে। আনসার সদস্যরাও কাজ করছে। যাত্রীরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি।’
সদরঘাটে বিআইডব্লিউওটির নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা দপ্তরের যুগ্ম পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘আগের তুলনায় যাত্রীর চাপ বাড়ছে। সোমবার থেকে পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে। আরও বাড়বে বলে আশা করি। আমাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে যাতে কোনো লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে না ছাড়ে।’
এদিন ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় ঢাকা সদরঘাটে অভাবনীয় সাফল্য দেখতে পারছেন। এ অবস্থা আগে ছিল না। আগে উপচে পড়া ভিড় ছিল। লঞ্চের ছাদে মানুষ ভিড় করত। এখন সেই অবস্থা নেই। স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাহস ও দেশপ্রেম দিয়ে তৈরি করেছেন। এর ফলে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের দুয়ার খুলে গেছে।’
আরও পড়ুন:মহাসড়কে যানবাহনের চাপ, তবে যানজট নেই
চট্টগ্রাম ও সিলেটের পথে বৃষ্টি আর বাড়তি ভাড়ার ভোগান্তি
পদ্মা সেতু হওয়ায় লঞ্চের ছাদে ভিড় নেই: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়
ঈদযাত্রায় ভোগান্তি আনল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
- ট্যাগ:
- ঈদযাত্রা
ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি: ডিএনসিসি প্রশাসক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ…
অটোরিকশার ওয়ার্কশপ-চার্জিং স্টেশনে শিগগিরই অভিযান
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ…
মহানবীকে (সা.) কটূক্তির অভিযোগে তেজগাঁওয়ে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর…
ঢাবিকে শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
সাধারণ মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি সরবরাহ করা হবে…
ছাত্রলীগের মিছিল নিয়ে ডিএমপির বার্তা, গ্রেপ্তার ৬
রাজধানীতে পরিচালিত পৃথক অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী…
যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে ডিএসসিসি’র বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড…
ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট। ছবি: নিউজবাংলা
মন্তব্য