নাটোরের লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সুইটি রানীর অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় আবারও পেছানো হয়েছে। ১ জুন তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে কমিটি। ১৩ জুন প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০ জুন নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার আরেক দফা পিছিয়ে ২৬ জুন প্রতিবেদন জমার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত ডা. সুইটি রানী তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে তৎপরতা শুরু করেছেন।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের জন্য মেডিক্যাল রিপোর্ট আনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন সন্তান সম্ভবা শতাধিক নারী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মেডিক্যাল রিপোর্ট আনতে ওই কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সুইটি রানীর কাছে যান তারা। সুইটি তাদেরকে পাঠিয়ে দেন ‘হেলথ কেয়ার’ নামে শহরের চকরামপুর এলাকার একটি ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারে। সেখানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই আল্ট্রাসনোগ্রাফির পাশাপাশি এক গাদা পরীক্ষা করিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে গরিব অসহায়দের চার লক্ষাধিক টাকা।
গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মকর্তা। ১ জুন থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে কমিটি। তারই অংশ হিসেবে লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালুর উপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে ৫ ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এরপর তদন্ত কমিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সুইটি রানীরও বক্তব্য নেয়।
সদর উপজেলার গাজিপুর বিল এলাকার জরিনা খাতুন জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের আবেদনের প্রয়োজনে মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য কিছুদিন আগে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সুইটি রানীর দ্বারস্থ হন তিনি। পরে সুইটি রানী তাকে পাঠিয়ে দেন ‘হেলথ কেয়ার’ নামে শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফির পাশাপাশি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই একগাদা পরীক্ষা করে তার কাছ নেয়া হয় ১৬শ’ টাকা।
একই অভিযোগ করেন পাশের আটঘরিয়া গ্রামের গৃহবধু শাহিদা। তিনি জানান, বনপাড়ার জাহেদা হাসপাতাল থেকে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাফি করান। সেই রিপোর্ট নিয়ে সুইটি রানীর কাছে গেলে তিনি জানিয়ে দেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার আগের কাগজপত্রে চলবে না। পরে তার নির্দেশনা অনুযায়ী হেলথ কেয়ারে নানা পরীক্ষার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয় ২৫শ টাকা।
পুরো ইউনিয়নে সাথী, পাপিয়া, জেসমিন, আঁখি, লাইলি, আলেয়াসহ ১৩২ জন নারীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছে দাবি করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছেন রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. পরিতোষ কুমার রায় জানান, একজন নারী সন্তানসম্ভাবা কিনা তা জানার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে এতো পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। শুধু মূত্র পরীক্ষার মাধ্যমেই বিষয়টি জানা যায়। আরেকটু নিশ্চিত হওয়ার জন্য বড়জোর আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা যেতে পারে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষা করারও বিধান নেই।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এতোগুলো পরীক্ষা কেন করানো হলো- সেই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি হেলথ কেয়ার ডায়াগইস্টক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. ইসমাইল হুসাইনের কাছে। তবে ডা. সুইটির সঙ্গে সখ্য থাকার বিষয়টি তিনি অকপটেই স্বীকার করেন।
ডা. ইসমাইল বলেন, ‘রোগীরা এসে যে যে পরীক্ষা করতে বলেছেন আমরা শুধু সেই পরীক্ষাগুলোই করেছি। সুইটি রানী স্বাস্থ্য সেক্টরে একজন সরকারি কর্মকর্তা। সে হিসেবে ওনার সঙ্গে আমাদের একটা সুসম্পর্ক আছে। প্রয়োজন মনে করলে অনেক সময় পরিচিত জনকে আমাদের এখানে চিকিৎসার জন্য পাঠান তিনি।’
নিজের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন ডা. সুইটি। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমি কাউকে হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠাইনি।’
উল্টো মিডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার আগে দুইবার ভাবতে হবে। আপনারা আমাকে নিয়ে অনুসন্ধান করে ভারী অন্যায় কাজ করছেন।’
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর খোলাবইড়য়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালু বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দেয়া মেডিক্যাল রিপোর্টের ভিত্তিতেই মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডের আবেদন করা যায়। গরিব পরিবারের গর্ভবতী নারীদের কাছ থেকে এভাবে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সুইটি রানী ন্যক্কারজনক কাজ করেছেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
‘ঘটনাটির সমাধান চেয়ে ইতোমধ্যে আমার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি পরিষদের মাসিক সভায় আলোচনা করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’
জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোসা. মাহফুজা খানম জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের প্রয়োজনে মেডিক্যাল রিপোর্ট করাতে শতাধিক নারী সুইটি রানীর কাছে যান। এ সময় সুইটি তাদের পাঠিয়ে দেন হেলথ কেয়ার নামে শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই আল্ট্রাসনোগ্রাফিসহ অপ্রয়োজনীয় একাধিক পরীক্ষা করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।
ভুক্তভোগীরা এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপসনের সহকারী পরিচালক আব্দুর রউফ মল্লিককে আহ্বায়ক এবং সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান খানকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কমিটিকে ১৩ জুন প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অসুস্থতার কথা বলে দু’দফা সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন।
কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রউফ মল্লিক জানান, ১৩ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে না পারায় তা বাড়িয়ে প্রথমে ২০ জুন ও পরে ২৬ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তারিখের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
তদন্তে কোনোরূপ প্রভাব বিস্তারের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৭ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর রোববার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৩৫১ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৩৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বৃহস্পতিবার এক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৬ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৫৪৭ জন রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯০ হাজার ৪৪০ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একদিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দেশে এসব মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩২ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ নভেম্বর বুধবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮৯ হাজার ৬০৩ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৯০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬০ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৪৩০ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮৮ হাজার ৭১৫ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগে অভিযান চালিয়ে নারী-পুরুষ মিলে ২১ দালালকে আটক করে যৌথ বাহিনী। পরে তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করা হয়।
ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন জাহানের নেতৃত্বে সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, নতুন ভবন প্যাথলজি বিভাগসহ হাসপাতালের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব দালালকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সুমন (সাজা তিন মাস), সাইদুর রহমান (সাজা এক মাস), শিশির আহমেদ (জরিমানা এক হাজার টাকা), কাউসার (সাজা এক মাস), আরিফ (রাজা তিন মাস), নজরুল ইসলাম (সাজা এক মাস), সাগর (সাজা ১৬ দিন), রিমন (সাজা তিন মাস), জয়দেব বর্মণ (জরিমানা এক হাজার টাকা), মাহমুদা বেগম (সাজা তিনদিন), মুনতাহার বেগম (জরিমানা এক হাজার টাকা), মমতাজ বেগম (সাজা সাতদিন) শেফালী আক্তার (সাজা তিন দিন), মোর্শেদা বেগম (জরিমানা এক হাজার টাকা), শাহিনুর বেগম (সাজা এক মাস), শাহনাজ বেগম (জরিমানা এক হাজার টাকা), শিউলি বেগম (জরিমানা এক হাজার টাকা), শিউলি বেগম (জরিমানা এক হাজার টাকা), মর্জিনা বেগম (জরিমানা এক হাজার টাকা), সাইফুল (সাজা সাত দিন) ও রাজিব (সাজা সাত দিন)।
অভিযানকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন জাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মেডিক্যালে দালাল চক্রের বিষয়ে অভিযোগ ছিল। আজ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ওই ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করা হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দালাল চক্র নির্মূলে নিয়মিত অভিযান চলবে। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়। আমরা চাই দালালমুক্ত ঢাকা মেডিক্যাল। এখানে চিকিৎসা নিতে এসে কোনো রোগী বা তাদের স্বজন যেন প্রতারণার শিকার না হোন তা নিশ্চিত করা হবে।’
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অনেক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৩ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এবং ৩০ জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
পুরান ঢাকায় অবস্থিত শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুপক্ষে অনেকে আহত হন।
আহতদের মধ্যে ৩৩ জন দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ঢামেকে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- হাসিনুর রহমান, রাজিব, অনুপম দাস শাহেদুল, নোমান, শাহিদুল হুমায়ুন, ইসলাম, ফারুক, রানা, আরাফাত, সুমন, মারুফ, রুমান, মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, মিনহাজ হোসেন নাফি, গুলিবিদ্ধ আব্দুর রহমান তুহিন, মোহাম্মদ রোহান।
চিকিৎসা নিতে আসা আহতদের মধ্যে ১৭ জন টিকিট কেটে জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। অন্যরা বিনা টিকিটে গণ হারে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘সংঘর্ষে আহত হয়ে এ পর্যন্ত ৩৩ জন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে এসেছেন। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে সংঘর্ষে আহত হয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩০ জন। তারা সবাই কবি নজরুল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
তাদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। তারা হলেন- নাইম, সিয়াম, মোল্লা সোহাগ, রাজিম, শরিফুল, জাহিদ, মোস্তফা, রাতুল, শফিকুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, সজিব বেপারী, ফয়সাল, সাগর, ইমন ও সিয়াম।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ড. মাহমুদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের হাসপাতালে আহত প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী এসেছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। কয়েকজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয়েছে। তাদের সেখানে ভর্তি হতে হবে। এখানে জরুরি বিভাগে ভর্তি আহতদের পর্যবেক্ষণে রেখে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে চলতি বছরে একদিনে রেকর্ড ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৭৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম রোববার এক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, ডেঙ্গু জ্বরে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮৭ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৯২ জন ডেঙ্গু রোগী।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা উত্তর সিটি এলাকায় পাঁচজন, দক্ষিণ সিটি এলাকায় চারজন এবং খুলনা বিভাগে দুজন মারা গেছেন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চলতি নভেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত ১৪৪ জন মারা গেছেন। এর আগে আগস্টে ৩০ জন, সেপ্টেম্বরে ৮৭ জন ও অক্টোবরে ১৩৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
সব মিলে ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের এ পর্যন্ত ৪৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ নভেম্বর রোববার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮৬ হাজার ৭৯১ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য