বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারে বিনিয়োগের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সামাজিক ন্যায়বিচারকে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। একমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্যালেস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট-২০২৩’ এর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসহ সব আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রে সামাজিক ন্যায়বিচারকে স্থান দেয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছে এই শীর্ষ সম্মেলন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে পাঁচটি পরামর্শ তুরে ধরেছেন।
প্রথম পরামর্শে তিনি বলেন, এই জোটকে একটি মান-নির্ধারক বা দরকষাকষির ফোরামের পরিবর্তে পরামর্শমূলক বা অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলাটা বাঞ্ছনীয় হবে।
দ্বিতীয়ত, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ন্যায়বিচারকে এক আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক অন্য মহলের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে জোটকে সতর্ক থাকতে হবে।
তৃতীয়ত, জোটকে নিয়মতান্ত্রিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার আওতায় সামাজিক ন্যায়বিচারকে একটি সংরক্ষণবাদী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে বরং এর ব্যাপক প্রসারে ভূমিকা রাখার বিষয়ে প্রচার চালাতে হবে।
চতুর্থত, শোভনকর্ম ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার জন্য এ জোটের বিষয়ে আইএলও’র নিজস্ব অংশীজনদের থেকে ব্যাপক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে, আমাদের তরুণ সমাজকে সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জোটকে মনোযোগী হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘বর্তমান শতাব্দীর বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্বের জন্য আমাদের একটি নতুন সামাজিক চুক্তি তৈরি করতে হবে। এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হবে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।’
তিনি বলেন, ‘শ্রম অধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ আইএলও’র দশটি মৌলিক সনদের মধ্যে আটটিতে অনুস্বাক্ষর করেছে। পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ক দুটি নতুন মৌলিক আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষরের বিষয়টিও আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছি।
‘পরিতাপের বিষয়, শ্রম অধিকার নিয়ে সোচ্চার কয়েকটি উন্নত দেশ এখন পর্যন্ত নিজেরা অধিকাংশ মৌলিক আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষর করেনি। যেমন, একটি বড় শিল্পোন্নত দেশ মাত্র দুটি মৌলিক সনদ অনুস্বাক্ষর করেছে।’
শিশুশ্রমের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণে বাংলাদেশ সম্প্রতি আইএলও সনদ ১৩৮ অনুস্বাক্ষর করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা জানান, তার সরকার আটটি ঝুঁকিপূর্ণ খাতকে শিশু শ্রমমুক্ত ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত এক লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলছে। আমি একটি সুস্থ ও নিরাপদ আগামী প্রজন্মের স্বার্থে দেশকে শিশুশ্রমের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইএলও’র সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দুবার বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধন করেছে। অধিকন্তু, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এ সংশোধন আনা হয়েছে। এ বছর নাগাদ শ্রম আইন, ২০০৬-এ আরও সংশোধনী আনার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
‘শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ও সাতটি শ্রম আদালতের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আরও ছয়টি শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়া সামাজিক অংশীদারদের অংশগ্রহণে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জোরদার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশের কারখানাগুলোর জন্য একটি শিল্প পুলিশ ইউনিট গঠন করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ও কাজের পরিবেশের মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং রপ্তানিমুখী কারখানাগুলোতে সে অনুযায়ী প্রতিকার করা হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে। এই অর্জনকে এগিয়ে নিতে আমরা একটি ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড পলিসি’ প্রণয়ন করেছি। আশা করি আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পণ্যের ন্যায্য মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব এ ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করবেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক, নিয়োগকর্তা এবং সরকারের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদ (টিসিসি) দেশের সামগ্রিক শ্রম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা টিসিসি গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন শিল্প খাতে সম্মিলিত দর কষাকষির মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে একটি নীতি কাঠামো প্রণয়নের পরিকল্পনা করেছি।’
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে শ্রমিকদের জন্য অনলাইন ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনসহ তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন। বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনের হার ২০১৩ সালে ৬০ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। গার্মেন্টস সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা গত নয় বছরে বেড়েছে নয়গুণ। এছাড়া শ্রমিক ও নিয়োগকর্তাদের ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও নন-ইপিজেড এলাকার জন্য দুটি পৃথক টোল-ফ্রি হেল্প-লাইন চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান সরকার রূপকল্প-২০৪১ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করেছে। সে লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
‘আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য তরুণ প্রজন্মকে প্রস্তুত করতে সমুদ্র গবেষণা, অ্যারোনটিক্স, বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি এবং সীমান্ত প্রযুক্তির বিষয়ে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট স্থাপন করছি।’
মানবিক গতিশীলতা এবং সামগ্রিক কর্মপরিবেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ শুরু করেছি। আমার একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ ও উন্নত সোনার বাংলায় পরিণত করা। আমি বাংলাদেশের মেহনঈ মানুষের জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করেছি।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশের ১৮৭ জন সদস্য কর্মস্থলে এখনও অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
গত ১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগাযোগ না করে অনুপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সদরদপ্তর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুদেবার্তায় জানায়, অনুপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন এক ডিআইজি, সাত অতিরিক্ত ডিআইজি, দুই পুলিশ সুপার (এসপি), এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পাঁচ সহকারী পুলিশ সুপার, পাঁচ পুলিশ পরিদর্শক, ১৪ উপপরিদর্শক (এসআই) ও সার্জেন্ট, ৯ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), সাত নায়েক এবং ১৩৬ কনস্টেবল।
বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ১৮৭ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে ছুটিতে অতিবাসে আছেন ৯৬। এ ছাড়া কর্মস্থলে গরহাজির ৪৯ জন, স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনজন এবং অন্যান্য কারণে ৩৯ জন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
বাপ্পী হোসেনের বয়স ১৯ বছর। এই তরুণ রাজধানীর রায়েরবাজার এলাকায় গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। সে সময় ছররা গুলিতে আহত হন তিনি। সারা শরীর তো বটেই, তার দুই চোখে বিঁধে যায় পাঁচটি গুলি, যার মধ্যে বাম চোখে তিনটি আর ডান চোখে দুটি।
বাপ্পীর সারা শরীরে এখনও রয়ে গেছে ১৯টি গুলি। চিকিৎসা চলছে রাজধানীর শ্যামলীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের স্পেশালাইজড ডেডিকেটেড কেয়ার ইউনিটে। বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই চোখ থেকে গুলির স্প্লিন্টারগুলো বের করা হলেও দৃষ্টিশক্তি ফেরেনি বাপ্পীর।
মা মরিয়ম বেগম জানান, বাপ্পী আর কোনোদিন দেখতে পাবে না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। অথচ বাপ্পীর মনে এখনও আশা- একদিন আগের মতোই দেখতে পাবে সে।
বরিশাল বিএম কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ২৬ বছর বয়সী রহমতউল্লাহ সরকার সাবির। মাস্টার্স শেষ করে পড়ছিলেন বরিশালের একটি ল’ কলেজে।
সাবিরের ভাই নজরুল ইসলাম ইউএনবিকে জানালেন, ৪ আগস্ট বিকেলে বিএম কলেজের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। সে সময় সাবিরের বাম চোখে তিনটি ছররা বুলেট আর ডান চোখে একটি রাবার বুলেট লাগে। বাম চোখে এখনও একটি বুলেট রয়ে গেছে। সেটা বের করতে হলে চোখই ফেলে দিতে হবে। ডান চোখে তেমন সমস্যা না থাকলেও এখন বাম চোখে কিছুই দেখছে না সাবির।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এমনই সম্পূর্ণ বা আংশিক অন্ধত্বকে বরণ করতে হয়েছে অর্ধ সহস্রাধিক মানুষকে।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের তথ্যকেন্দ্র থেকে জানা যায়, ১৭ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৬১১ জন চোখে বুলেট নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত ২৮ জনের, যারা পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেছেন।
এক চোখ আহত অবস্থায় এসেছেন ৫১০ জন। তাদের মধ্যে ১৭৭ জনের দু’বার সার্জারি করতে হয়েছে। বর্তমানে স্পেশালাইজড ডেডিকেটেড কেয়ার ইউনিটে ভর্তি আছেন ৪৬ জন, যারা সবাই ছররা বুলেটে আহত।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘রাবার বুলেট দিয়ে আহত কাউকে আমরা এখনও পাইনি। যারা এসেছেন তাদের চোখে বিদ্ধ সব গুলিই মেটালিক প্লেটের। এই পিলেটগুলোকে ছররা গুলি বলা হচ্ছে।
‘এগুলো যখন ছোড়া হয় তখন বুলেটের মধ্যে একটা হিট জেনারেশন হয়। এটি চোখে ঢুকলে রেটিনা তো ছিঁড়ে যায়-ই, অন্য স্ট্রাকচারগুলোও ডিসঅর্গানাইজড হয়ে যায়। এখান থেকে ব্যাক করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের রেটিনা ছিঁড়ে গেছে, নার্ভে কোনো ক্ষতি হয়েছে, অথবা ভেতরে কোনো হেমারেজ আছে তাদের দ্বিতীয়বারের মতো অপারেশন করতে হয়েছে। অনেক বেশি ড্যামেজ না হয়ে থাকলে আস্তে আস্তে ভালো হতেও পারে। আর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভালো হয় না।’
এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটির প্রভাব অন্য চোখেও পড়ে কি না জানতে চাইলে সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘এটা হতে পারে। আমাদের এখানে একজন রোগী আছে যার এক চোখে পিলেটের আঘাতের কারণে অন্য চোখেও ইফেক্ট পড়েছে। এটা যদিও খুব রেয়ার।’
ছাত্র আন্দোলনে ছররা গুলি কেড়ে নিয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষের চোখের আলো। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, আগ্নেয়াস্ত্রে যে বুলেট ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো প্রাণঘাতী নয়। সেগুলো এমন বুলেট যা অনেক ছোট ছোট ছররা গুলি ছুড়ে দেয়।
মূলত ‘বার্ডশট’ হিসেবে এই পরিচিত এই বুলেট শিকারের কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি। নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে এই বুলেট আঘাত করে না; বরং অনেক বিস্তৃত পরিসরে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়।
এর আকার অনুযায়ী প্রতিটি রাউন্ডে ৩০০ থেকে ৬০০টি পিলেট থাকে। কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু বা ব্যক্তির পাশাপাশি তাদের চারদিকে থাকা অন্যদেরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এবং গুরুতর আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভে ছোড়া গুলিতে পথচারীরাও ব্যাপক পরিমাণে আহত হয়েছেন।
ছররা গুলির আঘাতে মৃত্যুর পরিবর্তে অন্ধত্ব, আহত বা পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বিক্ষোভ বা জমায়েত নিয়ন্ত্রণে ‘মানবিক’ ও ‘গ্রহণযোগ্য’ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, বার্ডশট মানুষের ওপর আইন প্রয়োগের জন্য ব্যবহার একেবারেই অনুপযুক্ত এবং এটি কখনোই বিক্ষোভ প্রতিহত করতে ব্যবহার করা উচিত নয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতশাসিত কাশ্মীরে পিলেট-ফায়ারিং শটগান ব্যবহার নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
২০১৬ সালে সেখানে এক গণঅভ্যুত্থানের সময় ১১০০ জনেরও বেশি মানুষকে ছররা গুলিতে আংশিক বা পুরোপুরি অন্ধত্ব বরণ করতে হয়েছিল।
নিষেধাজ্ঞার এই আহ্বানে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘পিলেট-ফায়ারিং শটগানের আঘাতে আহত ব্যক্তিরা গুরুতর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।
চোখে আঘাত পাওয়া স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের বেশ কয়েকজন যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তারা কাজ করতে পারবেন কি না এ নিয়ে ভয়ে আছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই বার বার অস্ত্রোপচার করেও দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাননি।’
বিশ্বে অনেক দেশেই ‘পশু-পাখি শিকারের গোলাবারুদ’ মানুষের ওপর প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এজেন্ডায় পুলিশিং সংস্কারের বিষয়টি শীর্ষে থাকায়, জমায়েত বা বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ‘বার্ডশট’ বা পিলেট গানের ব্যবহারের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের মনোযোগ পাওয়ার দাবি রাখে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দিয়ে মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা সারাদেশে প্রয়োগ করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধির, ১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার দাবিতে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করে তৎকালীন সরকার।
এরপর ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখনও সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে কোন স্ট্যাটাসে আছেন অন্তর্বর্তী সরকার সেটি জানে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা কোন স্ট্যাটাসে সেখানে অবস্থান করছেন সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত দিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চায়নি ঢাকা।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশটিতে কোন স্ট্যাটাসে আছেন এবং আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়েছি কি না?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। আমি অফিশিয়ালি তাদের কোনো কিছু বলিনি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ ৪৫ দিন পর শেষ হওয়ার কথা। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি কোন প্রক্রিয়ায় সেখানে অবস্থান করবেন জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সবকিছুই আইন দিয়ে চলে না। ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছে, তিনি সেখানে থাকছেন। আমাদের এটা সেভাবে দেখতে হবে।’
সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনসহ যা কিছু হচ্ছে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে ভারতের মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এস জয়শঙ্কর এসব কথা বলেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়শঙ্কর বলেন, ‘সবসময় সবকিছু নিজের অনুকূলে থাকে না। কোথাও না কোথাও থেকে কিছু কথা আসতে থাকে। কেউ না কেউ কিছু একটা বলে ফেলে বা করে ফেলে। এটা হয়, স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যা হয়েছে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাব। তারা তাদের অবস্থান বুঝে নিক, সম্পর্কের মহত্ব বুঝুক। তাহলে প্রতিবেশীদের মধ্যকার সম্পর্কের মান ও মাত্রা অন্যরকম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী উভয়েই উভয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়। আমাদের অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আগে যেসব রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও অভ্যন্তরীণভাবে যা হওয়ার হবে। সেটা নিয়ে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
‘তবে দুই দেশের সম্পর্ক আমাদের দিক থেকে স্থিতিশীল রাখতে চাই, সামনে এগিয়ে নিতে চাই। আমাদের পারস্পরিক ভালো সহযোগিতা রয়েছে, আমাদের ভালো বাণিজ্য রয়েছে। জনগণের সঙ্গে জনগণের ভালো সহযোগিতা রয়েছে। আমরা সেই পথ ধরেই এগিয়ে যেতে চাই।’
ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, 'ভারতের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়, আমাদের কূটনীতি ও অন্যান্য আলোচনা সেটাকে কেন্দ্র করেই হয়। সেসঙ্গে এটা আমাদেরও দায়িত্ব যে পৃথিবীতে শান্তি বজায় থাকুক। এটা আমাদের জন্যও প্রয়োজন।'
আরও পড়ুন:দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরবিক্রম জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা সমমূল্যের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান তিনি।
ফারুক-ই-আজম বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত ছাড়াও বন্যাকবলিত অঞ্চলের বসতবাড়ি, অবকাঠামো এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ইতোমধ্যে পুনর্বাসন কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশকে ঋণ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। তিনি বলেছেন, ‘জরুরি সংস্কার, বন্যা মোকাবিলা, উন্নত বায়ুর মান এবং স্বাস্থ্যের জন্য চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার নতুন অর্থায়ন করতে পারে।’
মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি নতুন এই সহায়তার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডায় সহায়তা করার জন্য চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে ঋণ বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
‘ব্যাংকটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রয়োজনে সহায়তা করবে। আমরা আপনাকে যত তাড়াতাড়ি এবং যত বেশি সম্ভব সমর্থন করতে চাই।’
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ‘নতুন প্রতিশ্রুতি ছাড়াও বাংলাদেশের সব উন্নয়ন সহযোগীকে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থাটি বিদ্যমান প্রোগ্রামগুলোতে আরও প্রায় এক বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত দেবে কি না তা পুনর্বিবেচনা করবে।’
সেক বলেন, ‘বিদ্যমান প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা হলে চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহজ শর্তে যে ঋণ ও অনুদান দেবে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি চিফ বলেন, ‘সংস্কারগুলো সম্পন্ন হওয়া বাংলাদেশ এবং প্রতি বছর শ্রমবাজারে যোগ দেয়া ২০ লাখ মানুষসহ তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি হেডকে বলেন, ‘বাংলাদেশের সংস্কারে অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের শিথিলতা প্রয়োজন এবং ১৫ বছরের চরম অপশাসনের পর নতুন যাত্রায় সহায়তা করতে হবে।
‘এই ভগ্নদশা থেকে আমাদের নতুন কাঠামো তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের দিকে নজর দিতে হবে। আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের অংশ হোন।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ স্বৈরশাসনের সময় দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশ থেকে চুরি করা কোটি কোটি ডলারের সম্পদ পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘চুরি যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার প্রযুক্তি আপনাদের আছে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশেরও বিশ্বব্যাংকের দক্ষতার প্রয়োজন হবে।’
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি চিফ চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পেরে খুশি।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকটি বাংলাদেশকে ডেটা স্বচ্ছতা, ডেটা সম্পূর্ণতা, কর সংগ্রহে ডিজিটালাইজেশন এবং আর্থিক খাতের সংস্কারেও সহায়তা করতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করা এবং বড় ধরনের সংস্কার করার এই সুযোগ হারাতে পারে না। এই সুযোগ একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসবে না।’
আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘ঢাকার দেয়ালে তরুণদের আঁকা দেয়ালচিত্র ও ম্যুরাল দেখে আমি মুগ্ধ। আমার ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে এমন দৃশ্য কোথাও দেখিনি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য