চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফ্যাক্ট চেকিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার ও ডিজিটাল প্লাটফর্মে গুজব ছড়ানোর ঝুঁকিরোধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এ প্রশিক্ষণ কার্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ এবং সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিসিডি)। কর্মসূচির তত্বাবধান করছে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করা ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইন্টারনিউজ।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক জুয়েল দাশ।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গণেশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘বর্তমানে প্রিন্ট ও অনলাইন মিলে অসংখ্য সংবাদমাধ্যম রয়েছে দেশে, এটা একদিকে ভালো। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেক সংবাদমাধ্যম পেশাদারিত্ব বজায় রাখছে না, যা ইচ্ছে তা লিখে যাচ্ছে। আবার অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রন্তিকর তথ্য ছড়ায়, সেই দিক থেকে আমি মনে করি সাংবাদিকতায় ফ্যাক্ট চেকিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এটার উন্নতি হওয়া উচিত।
‘সার্বিকভাবে যদি বলি, ফ্যাক্ট চেকিংয়ের টুলসগুলো গবেষণার ক্ষেত্রেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসময় ধন্যবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার মো. ওবায়দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে ও ইন্টারনিউজের সহযোগিতায় বাংলাদেশে এটি বাস্তবায়ন করছে সিসিডি। পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য নির্বাচিত করায় আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।
‘প্রতিদিন গণমাধ্যমে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের সংবাদ প্রকাশ হয়। এসব সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের ওপরই এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। আমি আশা করি, যারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করে ও ভবিষ্যতে কাজ করবে, তারা এই প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে পেশাদার সাংবাদিকতা করবে।’
তিনি বলেন, ‘সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলার অধিকার আমাদের আছে। সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে লিখে বাহবা পাওয়া দেশের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের সাংবাদিকতা যারা করেন তারা দেশ ও জাতির শত্রু।’
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মাফজল আহমেদ। অংশগ্রহণকারীদের তিনি কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি সংবাদের বাস্তবতা যাচাই করে পরিবেশনের দিকনির্দেশনা দেন।
অতিথিদের বক্তব্যের পর শুরু হয় মূল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক জুয়েল দাশ ফ্যাক্ট চেকিংয়ের বিষয়ে বিশদ ধারণা দেন শিক্ষার্থীদের।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার ও ডিজিটাল প্লাটফর্মে গুজব ছড়ানোর ঝুঁকি রোধে ফ্যাক্ট চেকিংয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিকর তথ্যের উৎস যাচাইয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল সরঞ্জামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ফ্যাক্ট চেকিংয়ে এসব ডিজিটাল সরঞ্জামের ব্যবহার নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণ-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে পৃথক মূল্যায়নের মাধ্যমে ফ্যাক্ট চেকিংয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণার পরবর্তনও যাচাই করা হয়।
এসময় বিভাগের সাবেক সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক দিলরুবা আক্তার, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক প্রশান্ত কুমার শীল, প্রভাষক আকিব উল ওয়াদুদ অলম, তাসলিমা আক্তার ইরিন, টিপু সুলতান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে রবিবার, যা চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সকাল ৯টায় শুরু হয়ে মোট পাঁচ শিফটে ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরের দিন সোমবার প্রথম চার শিফটে ‘ডি’ ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তৃতীয় দিন মঙ্গলবার প্রথম দুই শিফটে ‘ই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম শিফটে ছাত্রীদের এবং দ্বিতীয় শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন তৃতীয় শিফট থেকে পঞ্চম শিফট পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিটের ছাত্রীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও বুধবার পাঁচ শিফটে ‘এ’ ইউনিটের ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর বৃহস্পতিবার ছয় শিফটে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম তিন শিফটে ছাত্রীদের এবং পরবর্তী তিন শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন সোমবার প্রথম শিফটে ‘সি১’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরের তিন শিফটে ‘বি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে প্রথম দুই শিফটে ছাত্রী এবং তৃতীয় শিফটে ছাত্রদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখতে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে রোভার স্কাউট সদস্য, সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ১৫০ জন পোশাকধারী সশস্ত্র ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ ফোর্স এবং অতিরিক্ত ৬০ জন আনসার সদস্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন।
ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বিভিন্ন ভবনে ১২০ জন বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্য শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক (ডেইরি গেট), জয় বাংলা ফটক (প্রান্তিক গেট) ও বিশমাইল ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) চালু রাখা হয়েছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে রাতে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:সরকারবিরোধী চ্যাটিংয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ১০ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদের মধ্যে চারজনের বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ বাতিল করা হয়েছে। দুইজনকে তিন বছর এবং একজনকে পাঁচ বছরের জন্য সনদ প্রদান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি কুয়েটের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সোমবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
যারা বহিষ্কৃত হলেন
আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, রায়হান আহমেদ, সাদ আহমেদ, সাজেদুল কবির, আদনান রাফি, রিজুয়ান ইসলাম রিজভী, ফায়াদুজ্জামান ফাহিম, মেহেদী হাসান মিঠু, সাফাত মোর্শেদ ও ফখরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে রায়হান, সাদ, সাজেদুল ও রাফির বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ বাতিল করা হয়েছে।
এ ছাড়া মোস্তাক আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য এবং শুভেন্দু দাস ও ফারিয়ার জামিল নিহালকে তিন বছরের জন্য সনদ প্রদান না করার পাশাপাশি কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসাপত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যা ঘটেছিল
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ড. এম এ রশিদ হলের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মোবাইল অ্যাপে সরকারবিরোধী চ্যাটিংয়ের অভিযোগে তুলে নিয়ে যান। পরে গেস্ট রুমে নিয়ে রাতভর তাকে মারধর করা হয়। ভোরে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
নির্যাতনের কারণে জাহিদুর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পরে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাহিদুর নির্যাতনের বিচার চেয়ে কুয়েট উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ও কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান দাবি করেছেন, তারা কেউই জাহিদুরকে মারধর করেননি।
তার ভাষ্য, ‘জাহিদুর হিযবুত তাহরীরের সদস্য, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কুয়েট কর্তৃপক্ষই তাকে পুলিশে দিয়েছিল। এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে সোমবার দুপুরে সরস্বতী পূজা পরিদর্শনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের বলব ধৈর্য ধরতে। তাদের শিক্ষাজীবন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি সরকার আন্তরিক ও দায়িত্বশীল।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে সব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনভোগান্তি সৃষ্টি না করে আমাদের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আশা করি সবার জন্য ইতিবাচক কিছু আসবে।’
তিনি আরও বলেন, সাত কলেজের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে জটিল আকার ধারণ করেছে। অতীতে শিক্ষা সংক্রান্ত একটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে হাজারো শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
নাহিদ ইসলাম জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট রয়েছে। প্রতিটি কলেজের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে এবং ইতিবাচক সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা পরিদর্শন করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও।
পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে মাঠে নামার চেষ্টা করেছে। এমনকি তারা রিকশাওয়ালা সেজেও আন্দোলনে নামতে চেয়েছে। শুরু থেকেই উসকানিমূলক পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা সফল হয়নি। মানুষ চায় না আওয়ামী লীগ তাদের নাম ও আদর্শ ব্যবহার করে গণহত্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি করার পর আবারও ফিরে আসুক। এটি দেশের জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
আসিফ মাহমুদ জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট রয়েছে। আওয়ামী লীগ আগেও বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছে, তবে তারা সফল হয়নি। এবারও তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।
জগন্নাথ হলে ৭৪ মণ্ডপে সরস্বতী পূজা
প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে আয়োজিত হয়েছে সরস্বতী পূজা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩টি বিভাগের উদ্যোগে ৭৩টি মণ্ডপ এবং হলের কর্মচারীদের উদ্যোগে আরও একটি মণ্ডপসহ মোট ৭৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ আয়োজনই ঢাকার মধ্যে সর্ববৃহৎ। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা হলের উপাসনালয় সংলগ্ন পুকুরে স্থাপন করেছে সবচেয়ে বড় প্রতিমা, যা প্রতি বছর পুণ্যার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।
জগন্নাথ হল ছাড়াও ছাত্রীদের পাঁচটি হলে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়।
সব মণ্ডপে সকাল ৯টা থেকে পূজা শুরু হয়। বেলা ১১টায় অঞ্জলি দেওয়া হয়, যা চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসে রবিবার সফলভাবে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ টুর্নামেন্টে সিইউবির বিভিন্ন বিভাগের প্রতিযোগী দলগুলো অংশগ্রহণ করে। ব্যতিক্রমী ক্রিকেটিং দক্ষতা ও দলগত কাজ খেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলে।
গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজনে ব্ল্যাকআউটস এবং সিইউবি অলস্টারদের মধ্যে দুর্দান্ত ম্যাচ হয়।
সিইউবি ব্ল্যাকআউটস দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জন করে। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাফিন।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাত, এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গিয়াস উ আহসান।
সিইউবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত ইভেন্টটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ‘সম্মানজনক’ পৃথকীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঢাবি উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে সোমবার ঢাবি উপাচার্যের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ইতোমধ্যে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ধৈর্যধারণ, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।’
সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সম্মানজনক পৃথকীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
এ ছাড়া অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এক বছর এগিয়ে এনে এ বছর থেকেই, অর্থাৎ ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি না নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সভায় জোর সুপারিশ করা হয়।’
এ ছাড়া ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আসন সংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলেও জানান উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে, যাতে তাদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য সভায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান উপাচার্য।
ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপাচার্য কোনো উত্তর না দিয়ে স্থান ছাড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:চার ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগসহ ছয় দাবি জানিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বিকেল চারটার মধ্যে অধ্যাপক মামুনকে অব্যাহতি না দেওয়া হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন ইডেন কলেজের এক ছাত্রী।
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের যে সংঘাত, সেই সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে। প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাসহ ঢাকা কলেজে শিক্ষার্থীদের ওপর নিউ মার্কেট পুলিশের ‘হামলার’ ঘটনায় নিউ মার্কেট জোনের এসি, থানার ওসি এবং জড়িতদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. সংঘর্ষ চলাকালীন ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী ‘কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য’ এবং ‘অশালীন অঙ্গভঙ্গি’ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. ঢাকা কলেজের সঙ্গে সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সমন্বয়ে ঢাকা কলেজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য খুলে দিতে হবে।
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের মধ্যকার এই সংকট নিয়ে আমরা বারবার রাস্তায় নেমেছি। আমরা বারবার বলেছি, আমাদেরকে একটা সমাধান দেন। কিন্তু কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি।
‘এই সংকটের যতদিন না একটি সৃজনশীল সমাধান হয়, ততদিন শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষার্থীর মুখোমুখি অবস্থান চলতে থাকবে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।’
এর আগে রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা কলেজের সংঘর্ষ শেষে মধ্যরাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সাত কলেজের সাত পয়েন্টে ব্লক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যদিও আজ সেটি তারা পালন করেননি।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের ছাত্র আসিফ মোহাম্মদ সজিব উদ্দীন বলেন, ‘জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে আমরা গতকালকের ঘোষিত ব্লকেড কর্মসূচিটি উইথড্র করেছি। এখন আমরা চার ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি।
‘এই চার ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমদকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচি দিব।’
গতকালের সংঘর্ষে কতজন আহত হয়েছে জানতে চাইলে সজিব উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের দৃশ্যমান ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আর নরমালি পঞ্চাশের অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’
সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সজিব উদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল নীলক্ষেতে যখন দুই পক্ষের ধাওয়া এবং পাল্টা ধাওয়া চলছে, তখন আমি পুলিশের এক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাকে ফোন দিই যেন তারা দুই পক্ষকে সাউন্ড গ্রেনেন্ড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিন্তু পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রটোকল দিয়ে আমাদের দিকেই শুধু সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে।
‘এরপর আমাদের বোনেরা যখন ইডেন কলেজ থেকে বের হয়, তখন নীলক্ষেতে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের বোনদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। আমরা জড়িতদের শাস্তি চাই।’
আরও পড়ুন:অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, তিনি গভীরভাবে মর্মাহত।
এক বিবৃতিতে তিনি ধৈর্য ধারণ এবং সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এমতাবস্থায় আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকা একান্তভাবে জরুরি।
‘কোনোভাবেই তৃতীয় পক্ষ যাতে সুযোগ নিতে না পারে, সে ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘আজ ২৭ জানুয়ারি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষগণের সঙ্গে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
‘যে সকল বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে। এ সংক্রান্ত অপরাপর বিষয় সরকার গঠিত কমিটির নজরে এনে তা সমাধানের ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য