যানবাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরুকে চিঠি দিয়েছেন চট্টগ্রামের পরিবহন নেতারা।
শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর সার্কিট হাউসে যানবাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পুনর্বিবেচনা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সরাসরি সচিবের হাতে চিঠি তুলে দেন পরিবহন নেতারা।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মনজুরুল আলম চৌধুরী ও চট্টগ্রাম বন্দর ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক ও কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জহুর আহমদ পরিবহন নেতাদের পক্ষে সচিবের কাছে চিঠি হস্তান্তর করেন।
এসময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরু বলেন, ‘দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। এই মুহূর্তে ঢাকা শহরে লক্কর-ঝক্কর গাড়ি পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ। তবে চট্টগ্রাম এদিক থেকে অনেক ভাল পর্যায়ে আছে।’
এসময় জেলা প্রশাসন, বিআরটিএ এবং সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পরিবহন নেতাদের মধ্যে ছিলেন মোরশেদুল আলম কাদরী, আহসানুল্লাহ চৌধুরী হাসান, আবদুর রহমান, আজিম খান, মোশারাফ, ফারুক খান, মো. শওকত, আবুল বসর, মো. জাফর, মো. মনসুর রহমান, মো. শাহজাহান, হাসান, জাবের, মো. ইসহাক, মনছুর আলমসহ আরও অনেকে।
সম্প্রতি দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা, সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পরিবেশ দূষণ হ্রাস এবং সড়কে শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী মোটরযানের আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করে দেয় সরকার। যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাসের ২০ বছর এবং পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের ২৫ বছর অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। পরিবহন নেতারা শুরু থেকেই এই দুই শ্রেণির যানবাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ৩০ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
গাজীপুরের দমদমাতে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘মা’ খ্যাত আক্তার নেসার মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় নিজ বাসায় রোববার সকাল ৫টা ২০ মিনিটে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তার ছেলে গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ।
তার স্বামী প্রয়াত ইসমাইল হোসেন বাগমার ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি চার ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রোববার বাদ জোহর জয়দেবপুর রাজবাড়ী মাঠে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ আসর শ্রীপুর উপজেলার দমদমা গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ ছাড়া গাজীপুর জেলা, সদর উপজেলা, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সমাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
আষাঢ়-শ্রাবণে যে বৃষ্টির অপেক্ষা করেছে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ তার মিললো আশ্বিনে এসে। প্রতি বছর আষাঢ় কিংবা শ্রাবণ মাসে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। কিন্তু এ বছর গত কয়েক মাস ধরেই প্রত্যাশিত বৃষ্টি হয়নি রাজশাহীতে। অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা মিলেছে।
রোববার বিকেলের ঝুম বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। মাঝারি মাত্রার এই বর্ষণে শহরের বেশিরভাগ ড্রেন উপচে পানি চলে আসে রাস্তায়। শহরের নিচু এলাকাগুলোতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। অবশ্য সন্ধ্যার পর বেশিরভাগ এলাকার জলাবদ্ধতা কমে আসে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজিব খান জানান, রোববার রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সকালে হয়েছে ৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার। বাকিটা হয়েছে বিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে। চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
সন্ধ্যার পর বৃষ্টি কমে গেলেও আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, রাজশাহীতে সোমবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির পানিতে রোববার বিকেলে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বিশেষ করে যেসব এলাকায় ছোট ড্রেন রয়েছে সেগুলো উপচে পানি ছড়িয়ে পড়ে প্রধান প্রধান সড়কে। নগরীর সাহেব বাজার, বর্ণালী মোড়, লক্ষ্মীপুর, উপশহর, ছোট বনগ্রাম, দড়িখড়বোনা, রেলগেট এলাকার সড়কে হাঁটুসমান পানি জমে যায়।
এছাড়া নগরীজুড়ে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা দেখা যায়। বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতায় দেখা দেয় জনদুর্ভোগ।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ এলাকায় বিষ পানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন একজন।
উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলো ১৫ বছরের কিশোরী সাকিবা বেগম, ১৩ বছরের কিশোর তামবির হোসেন ও পাঁচ বছরের শিশু সাহেদ মিয়া।
তিন শিশুর মা ৩৫ বছর বয়সী যমুনা বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যমুনা বেগম ফেনারবাঁক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী। যমুনা বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেঁচে থাকলেও তিন সন্তানই মারা গেছে।’
যমুনা বেগমের একাধিক স্বজন জানান, স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে বিষ পান করেন যমুনা। মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিন সন্তানকে খাইয়ে দেন তিনি। পরবর্তী সময়ে মা ও সন্তানসহ সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাদের জামালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে তাদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিন ছেলে-মেয়েকে মৃত বলে জানান। তাদের মা যমুনা বেগম গুরুতর অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গিয়ে যা জানতে পারলাম, তা খুবই মর্মান্তিক। মূলত পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে।’
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে তিনটি উপজেলার শতাধিক বাড়ির টিন উড়ে গেছে। এতে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
প্রবল বৃষ্টির মধ্যে রোববার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে আশ্রয়ণের ঘরসহ এ বাড়িগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে বিরামপুরের দিওড় এলাকার বাঁশবাড়িয়া আশ্রয়ণের বাড়িসহ ২৮টি বাড়ি, নবাবগঞ্জের বিনোদনগর ও গোলাপগঞ্জ এলাকার শতাধিক বাড়ি এবং হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার পাঁচটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, টিন এবং নগদ অর্থ সহায়তার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও স্থানীয় দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য এমপি শিবলী সাদিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
সরেজমিনে বিরামপুর উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে জানা যায়, দুপুরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ করে ঘূর্ণিঝড়ে সেখানকার চারটি আশ্রয়ণের ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। কিছু ঘরের সামনের বারান্দার অংশগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে অবস্থানরত ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত টিনগুলো কুড়িয়ে জমা করছেন।
ওই আশ্রয়ণের ঘরে থাকা মমতা বেগম বলেন, ‘বিরামপুর এলাকায় কয়েক দিন থেকেই লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে ঘরের মধ্যে বসে আছি। হঠাৎ করে প্রবল বেগে ঝড় শুরু হয়।
‘ঝড়ে আমার ঘরের ওপরের টিনগুলো উড়ে যায়। বারান্দার টিনগুলো উড়ে পাশের ঘরে উপড়ে পড়ে যায়। একপর্যায়ে আমি ঘরে থাকা চকির নিচে শুয়ে পড়ি।’
সাইদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আজ সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। পরিবারের কয়েকজন একসাথে ঘরের ভেতর ছিলাম। হঠাৎ বাইরে ঝড় শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ঘরের চালগুলো উড়ে যায়। টিনগুলো এলোমেলোভাবে উড়তে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমনিতেই অসহায়। আমাদের আর কিছু থাকল না। কী খাব, কোথায় ঘুমাব, এটা আমরা জানি না। শুনতেছি আমাদের নাকি সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত পাইনি।’
বিরামপুরের ইউএনও নুজহাত তাসনীম বলেন, ‘দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে বিরামপুর উপজেলার আশ্রয়ণের চারটি বাড়িসহ বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও কিছু এলাকার গাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসকের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো পরিদর্শন করে শুকনো খাবার, এক ব্যান্ডেল টিন এবং নগদ অর্থ দেয়া হবে।’
সংসদ সদস্য (এমপি) শিবলী সাদিক বলেন,‘আমার সংসদীয় আসনের তিনটি উপজেলায় হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে অনেক বাড়িঘর, গাছপালা এবং ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
‘পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও তাদের সহযোগিতা করব। আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে বলেছি, তারা যেন ওই পরিবারগুলোর পাশে থাকে।’
আরও পড়ুন:বরিশালে র্যাবের অভিযান ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে মাধ্যমে লাইভ (সরাসরি) প্রচার করায় এক ছাত্রকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। ওই ছাত্রকে সামাজিক ও জনকল্যানমূলক কর্মকাণ্ড করতে নির্দেশ দিয়ে প্রবেশন কর্মকর্তার জিম্মায় জামিন দেয়া হয়েছে।
রোববার বরিশালের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম ফারুক এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানান বেঞ্চ সহকারী নুরুল ইসলাম কাকন।
অর্থদণ্ডে দণ্ডিত কিন্তু প্রবেশন জামিন পাওয়া ২০ বছর বয়সী মারুফ মুন্সী ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা এবং বরিশাল নগরীর বেসরকারী ইনফ্রা পলিটেকনিকের ছাত্র।
মামলার বরাত দিয়ে বেঞ্চ সহকারী কাকন বলেন, ‘২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি র্যাব-৮ এর একটি দল জিয়া সড়ক মসজিদ গলিতে অভিযান করে। মারুফ তার ফেইসবুক পেজ ডিপ্রেশন ও চ্যানেল টিভি নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে তা সরাসরি প্রচার করে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে এ তথ্য জানতে পেরে র্যাব মারুফকে আটক করে।
‘এ ঘটনায় ২২ জানুয়ারি কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করে র্যাবের ডিএডি জিএম আনসার আলী। একই বছরের ৩০ জুন একমাত্র মারুফকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় কোতয়ালী মডেল থানার এসআই সাইদুর রহমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামি মারুফ তার দোষ স্বীকার করেছে। তাই বিচারক তাকে জরিমানা ও প্রবেশনে জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
চবির দ্বিতীয় কলা অনুষদের সামনে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ওই সাংবাদিকের নাম মোশাররফ শাহ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য।
মারধরকারীরা চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী ও সিএফসি গ্রুপের কর্মী বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ শাহ।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মোশাররফ শাহ বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে আটকায়। আমাকে লাঠিসোটা দিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে সেখান থেকে রব হলে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফা মারধর করে।’
তিনি বলেন, “মারধরের সময় নেতা–কর্মীরা আমাকে পরবর্তী সময়ে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’”
আহত মোশাররফকে শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। বুক ও হাতে আঘাত থাকায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব বলেন, ‘মোশাররফের কপালে চার সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতেও আঘাত আছে। এক্সরে করাতে হবে। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসা জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘আমি এই ঘটনা শুনেছি। খোঁজখবর নিচ্ছি৷ যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘আমি ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়েছি। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট এলাকার সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। রোববার দুপুরে রাজশাহী আদালত চত্বরে এই বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচির ব্যানারে লেখা ছিলো “বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কর্তৃক আর কত নির্যাতন সইব?’ আয়োজনে: নির্যাতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ।”
কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বাঘা পৌরসভার মেয়র ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাছ আলী। নেতাকর্মীরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে শাহরিয়ার আলমের বিকল্প প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে আক্কাছ আলী বলেন, ‘রাজশাহী-৬ আসনের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নির্দেশে বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা আমাদের নামে মামলা করছে। বর্তমানে এক শ’ নেতাকর্মী বিনা দোষে মামলার আসামি। অজ্ঞাত আরও তিন শ’ আসামী রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন আমাদের নামে মামলা করেন তবে বুঝেন কেননে থাকি। আমরা চাই এই ধরনের লোককে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে নেতৃত্বে দেয়া হোক।’
আক্কাছ আরও বলেন, ‘শাহরিয়ার আলম বাঘা ও চারঘাট এলাকার সব স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন। তিনি অন্য মতাদর্শীদের নির্বাচনে বিজয়ী হতে সহযোগিতা করেছেন। উপরন্তু বাঘা ও চারঘাট এলাকার ত্যাগী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এলাকার জনগণ শাহরিয়ার আলমের ওপর ব্যাপকভাবে ক্ষিপ্ত। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় তাকে এই আসনে মনোনয়ন দিলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হবে না।’
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাঘা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সানোয়ার হোসেন সুরুজসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা রাজশাহী আদালত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মন্তব্য