রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারের মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মার্কেটটি ধসে যে কোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘দূর্ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব কে নেবে?’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর টিসিবি ভবনে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের লক্ষ্যে কারওয়ান বাজারস্থ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
পৃথিবীর কোনো উন্নত দেশের রাজধানীর মাঝখানে পচনশীল পণ্যের পাইকারি কাঁচাবাজার নেই উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন পাইকারি কাঁচাবাজার থাকতে পারে না। কারওয়ান বাজারে কোন কাঁচাবাজার থাকবে না।
‘উন্নত দেশের পাইকারি মার্কেটগুলো পরিদর্শন করেছি। পর্যাপ্ত খালি জায়গাসহ সকল সুবিধা নিশ্চিত করে নতুন মার্কেটের ডিজাইন করা হবে।’
সবার সাথে আলোচনা করেই কারওয়ান বাজার মার্কেটটি স্থানান্তর করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এগারো সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিচ্ছি। স্থানীয় তিনজন কাউন্সিলর, কারওয়ান বাজারের সুপার মার্কেট ও কাঁচাবাজার মার্কেটের ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ডিএনসিসির কর্মকর্তার সমন্বয়ে এই কমিটি গঠিত হবে। ১৫ দিনের মধ্যে তারা কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে।'
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট স্থানান্তরের চিঠি পাওয়ার পরই আমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে এ এলাকার কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দিয়েছি। আমি কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করেছি, কাঁচাবাজারে আসা-যাওয়ার রাস্তা নির্মাণের জন্য বিএডিসির জায়গা প্রয়োজন। কৃষিমন্ত্রী তাতে সম্মতি দিয়েছেন।
‘স্থানান্তর হলে নতুন মার্কেটে সমপরিমাণ জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। এর জন্য নতুন করে কোনো টাকা দিতে হবে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এমন সিদ্বান্ত আমাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি, ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য কারওয়ান বাজারের চেয়ে বহুগুণ সুবিধা-সম্বলিত নিরাপদ আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করে দেয়া হবে।’
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি ডিএনসিসির আটটি মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। আমাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারাই তড়িৎ গতিতে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট স্থানান্তর করার সিদ্বান্ত জানিয়েছে।
‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে কারওয়ান বাজার সরানোর জন্য যাত্রাবাড়ী, গাবতলী ও মহাখালীতে মার্কেট নির্মাণ করা হয়। এটি একনেকে পাশ হওয়া প্রকল্পের আলোকে হয়েছে। সে সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনেই একনেকে পাশ হয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হয়। অতএব, এটি কারও মনগড়া কথা নয়।’
মেয়র আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় ছয় মাস আগে পার্লামেন্টে বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। অতএব, দক্ষিণের জেলাগুলো থেকে আসা পণ্য ঢাকা শহরের দক্ষিণ প্রান্তে থাকবে। আর বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আসা পণ্য ঢাকার উত্তর প্রান্তে থাকবে।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা আমাদের জন্য অনুশাসন। সেই আলোকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই ও বাস্তবায়ন করি। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্বান্তেই স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আমাকে বলেছেন ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট স্থানান্তরে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটের ভবন ধসে পড়ছে। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার পুনরায় চিঠি দিয়েছে আটটি ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট ইমিডিয়েটলি সরিয়ে নিতে হবে। তাই আমরা মার্কেটগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ লিখে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই সাইনবোর্ডও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কারওয়ান বাজার একটি ঐতিহ্যবাহী পাইকারি বাজার। প্রকৌশলীরা এ বাজারের কয়েকটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো থেকে ব্যবসায়ীদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য বলেছে।
‘কারওয়ান বাজারের পাশ দিয়ে মেট্রোরেল হচ্ছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। একসময় হয়তো কারওয়ান বাজারের রাস্তায় ট্রাক চলবে না। ব্যবসায়ীদের এটি আগে থেকেই বিবেচনা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাউকে জোর করে, ব্যবসা বন্ধ করে, রুটি-রোজগার বন্ধ করে আমরা স্থানান্তর করব না। আপনাদের জন্য বিকল্প ভালো ব্যবস্থা করেই স্থানান্তর করা হবে। আরও আধুনিক সুন্দর মার্কেট নির্মাণ করে স্থানান্তর করা হবে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই সিদ্বান্ত নেয়া হবে।
‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিকল্প ব্যবস্থা দ্রুতই করতে হবে। আমরা কেউই চাইনা আত্মাহুতি দিতে৷ সবাই মিলেমিশে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করি, উইন-উইন পজিশন নিশ্চিত করে কারওয়ান বাজারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি মানুষ যেন আত্মমর্যাদা নিয়ে জীবনযাপন করতে পারে, সে লক্ষ্য নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করছেন। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা, কেউই পরিকল্পনার বাইরে নয়। কারওয়ান বাজারের পাইকারি মার্কেট স্থানান্তর একটি জটিল সমস্যা। সবার সহযোগিতায় এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মার্কেট স্থানান্তরে অনেকের জীবন-জীবিকার বিষয় জড়িত। কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। পৃথিবীর সকল দেশের উন্নয়নে ডেস্ট্রাকশন-কনস্ট্রাকশন হয়েছে। কাউকে রিজিড হওয়া যাবে না। কাউকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিন্তা না করে, একপক্ষ হিসেবে চিন্তা করতে হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় শিশু হৃদরোগ (কার্ডিয়াক) বিভাগের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) লাগা আগুন পুরোপুরি নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার দুপুর দেড়টার কিছু সময় পর ওই আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় এক এক ঘণ্টার চেষ্টার পর ২টা ৪০ মিনিটে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছেন। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট, সিদ্দিক বাজার থেকে একটি ইউনিট, তেজগাঁও থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ২টা ৪০ মিনিটে আগুন পুরো নিভিয়ে ফেলা হয়।
তবে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে লাগা এই আগুনে রোগীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, রোগীদের সবাইকে নিচে নামিয়ে আনা হয়েচে। ইউসিইউতে ১৭ জন রোগী ছিলেন আমরা নামিয়ে এনেছি। কারো কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
তিনি বলেন, হাসপাতালের বি ব্লকের ৫ তলার কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে আগুন লেগেছে। আগুনের চেয়ে ধোঁয়া একটু বেশি ছড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে করা হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তবে আশঙ্কা করছি এসি থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে লাগা আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।
এ ছাড়া কমিটিতে একজন মেইনটেইন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ড মাস্টার, একজন নার্স ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
এদিকে বিকেলে দেখা যায়, আগুন লাগার পর হাসপাপতালের ৫ তলা ও ৪ তলার পুরো ধোঁয়ায় ভরে গেছে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে। আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নেন।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে। ওপরে সবকিছু কখন ঠিক হবে তা জানেন না এ রোগী ও স্বজনরা। রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা আশঙ্কা করছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাদের বাচ্চারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৭ দিন আগে শিশু হাসপাতাল আইসিইউতে ভর্তি হয় পাঁচ মাসের শিশু রাইয়ান। আগুন লাগার পর শিশুটির মা আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে শিশুটিকে নিয়ে নিচে নামে আসেন। বাচ্চাকে নিয়ে এই অসহনীয় গরমে অবস্থান নিয়েছেন হাসপাতালের বাইরে।
কয়েকজন শিশুর অভিভাবক জানান, পাঁচতলার আইসিইউতে যেসব বাচ্চা ছিল তাদের সমস্যা হচ্ছে। অনেক বাচ্চাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছিল। তাদের অক্সিজেন ছাড়া নিচে নামানো হয়। তাদের প্রত্যেকের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল।
মধ্যসত্ত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ।
শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সজাগ থাকলে কৃষকরা বঞ্চিত হবেন না।
মন্ত্রী বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য দিতে চায় সরকার। সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সুনামগঞ্জ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে বন্যা দুর্যোগ বেশি হয়। খড়াও হয়। জেলা প্রশাসনকে বলেছি, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে।
তিনি বলেন, কৃষিকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ। কৃষকের ধানের মূল্য নির্ধারণ করতে আগামী পরশু মিটিং করব। দাম নির্ধারণ করে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক, ১ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ধরা আগুন প্রায় এক ঘণ্টা পর নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীর মিডিয়া সেল জানায়, শুক্রবার বেলা দুইটা ৩৯ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ কেন্দ্রে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে।
আগুনে হতাহতের কোনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় নৌবাহিনী।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।
আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
আসন্ন জুলাইয়ের আগেই পান্থকুঞ্জকে নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকালে নগরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের অভ্যন্তরে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র এ কথা জানান।
মেয়র তাপস বলেন, পান্থকুঞ্জ উদ্যান এই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যান। এটা উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে মেগা প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কারণে ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ে এদিক দিয়ে নওয়ার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফলে এই পার্কের উন্নয়ন কাজটা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছি, দেন-দরবার করেছি। এর ফলশ্রুতিতে তারা সুনির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করবে। বাকি জায়গা আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। সেই জায়গায় আমরাই কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে এটার অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে একটি নান্দনিক উদ্যান উপহার দিতে চাই। যদিও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের কারণে উদ্যানের বড় একটা অংশ তাদের কাছে চলে যাবে। তারপরও যতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি তা ঢাকাবাসীর জন্য অচিরেই উন্মুক্ত করে দিতে পারব। পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। জুলাইয়ের আগে পান্থকুঞ্জকে একটি নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে।
নিউমার্কেট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, গত বছর কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছে বিশেষ করে নিউমার্কেটের সামনে ও শান্তিনগরে। যেসব কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমরা সেগুলো পরিষ্কার করেছি। আশা করি এবার আর জলাবদ্ধ থাকবে না। নিউমার্কেট এলাকার জন্য নতুন প্রকল্প নিয়েছি।
তিনি বলেন, এর মূল কারণ হচ্ছে পিলখানা ভেতর দিয়ে আগে যে পানি প্রবাহ প্রবাহের নর্দমা ছিল সেগুলো ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য গত বছর সেখানে বড় ধরনের জলবদ্ধতা হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং সম্মতি পেয়েছি। আমরা পিলখানার ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহের বড় নর্দমা করছি। এটা করতে পারলে ওই এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। এভাবে প্রত্যেকটা এলাকায় বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ঢাকায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি জায়গা ছাড়া তেমন কোন জায়গায় এখন দীর্ঘ সময় জলবদ্ধতা থাকে না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের আগে সূচি অনুযায়ী বক্স কালভার্ট, খাল ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে থাকি। কারণ যাতে করে বর্ষার সময় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া ঢাকা শহরে আমরা ব্যাপকভাবে নর্দমা অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রেখেছি।
পরে মেয়র সায়েদাবাদ টার্মিনাল সংলগ্ন সায়েদাবাদ সুপার মার্কেট, গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র পাঠাগার ও ওয়ারীর তাজউদ্দীন স্মৃতি পাঠাগার পরিদর্শন করেন।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রেনটি।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ট্রেন আটকে যায়। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এবং মগবাজারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফেরদৌস আহমেদ জানান, দ্রুতই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে লাইনচ্যুত বগি ছাড়াই ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। খবর ইউএনবির
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরবর্তীতে স্থানটির নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর রাখা হয়। প্রথম সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তাজউদ্দীন আহমদকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়। মূল মন্ত্রিসভার সফল নেতৃত্ব সেই বছরের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যায়।
মন্তব্য