ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডা এলাকায় দেশটির বৃহৎশিল্প গ্রুপ আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের শুরু হয়েছে।
১৫০০ মেগাওয়াটের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৫০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট গত মে মাসে বাণিজ্যিক উৎপাদনে এসেছে। আর ৭৫০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
ঝাড়খন্ড থেকে আসা বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও বাংলাদেশ অংশের কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় ১৫০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার আদানির কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে ১ হাজার ৫০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ নিতে পারবে না বাংলাদেশে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।
এ বিষয়ে পিজিসিবি মুখপাত্র এ বি এম বদরুদ্দোজা খান বলেন, ‘আদানির বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে সরবরাহ শুরু হয়েছে। যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করা হচ্ছে। যেহেতু তাদের দুটি ইউনিট রয়েছে, প্রতিটি ইউনিটের ক্ষমতা ৭৪০ মেগাওয়াট করে। এখন তারা ৭৫০ মেগাওয়াট করে সরবরাহ করছে।’
আদানির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা ইচ্ছে করলেই এখন ১৫০০ মেগাওয়াট দিতে পারি। আমাদের কেন্দ্র পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু পিজিসিবির সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ না হওয়ায় এখন ১ হাজার ৫০ মেগাওয়াটের বেশি দিতে পারছি না। বৃহস্পতিবার বিকেল সারে চারটার দিকে আদানির ৭৫০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। প্রথমে এটি ৭০ থেকে ৮০ মেগাওয়াট সরবরাহ করলেও সন্ধ্যা ও রাতে আরও বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।’
জ্বালানির অভাব ও দাবদাহের কারণে দেশে তীব্র লোডশেডিং শুরু হয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে ১৭ হাজার মেগাওয়াটের পৌঁছেছে। তবে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হওয়ায় চাহিদা নেমে পিক আওয়ারে (সন্ধা ৭ টা থেকে রাত ১১টা) ১৬ হাজার মেগাওয়াটে ঠেকেছে। এই সময় আদানির দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসায় স্বস্তি এসেছে বিদ্যুৎ বিভাগের।
আদানির বিদ্যুৎ ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর দিয়ে বগুড়া হয়ে আনার জন্য সঞ্চালন লাইন করা হয়েছে। বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর এলাকায় সঞ্চালন লাইন ‘ট্রিপ’ করলে আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ আসা বন্ধ হয়ে যায়। ১৩ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার ফের লাইনটি সচল করা সম্ভব হয়।
কয়লার অভাবে ২৫ মে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রার ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইউনিটটি গত সোমবার দুপুরে বন্ধ হয়ে যায়। এটি ২৫ জুনের আগে চালু হবে না।
‘একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে মুক্ত ও সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার অর্জনের জন্য বাঙালি জাতি বহু শতাব্দি ধরে সংগ্রাম চালিয়ে এসেছে’- জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের পর দেয়া বঙ্গবন্ধুর প্রথম ভাষণ থেকে এই উক্তি আজ তার কন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিনে স্মরণ করছি।
আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালে সমগ্র জাতি যখন সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করছে তখন বঙ্গবন্ধুর ২৪ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা কন্যা স্বামী, মা-বোন ও ভাইদের সঙ্গে পাকিস্তইন সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। ধানমন্ডি ১৮ নম্বর সড়কের (এখনকার ৯/এ) একটি স্যাঁতস্যাঁতে বাড়িতে (২৬ নম্বর) তাদের ধরে এনে আটকে রাখা হয়। ২৫ মার্চ থেকে ১২ মে পর্যন্ত তারা খিলগাঁও, মগবাজার এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। সঙ্গত কারণেই তাদের অবস্থান জানাজানি হয়ে যেত ও কোনো কোনো বাড়িওয়ালার অসহযোগিতায় তাদের বাসা ছেড়েও দিতে হতো।
এরকম রুদ্ধশ্বাস ও অস্বস্তিকর অবস্থায় ১২ মে সন্ধ্যার দিকে এক পাকিস্তানি মেজরের নেতৃত্বে সেনা পাহারায় তাদের সে বাড়িতে নিয়ে এসে বন্দি করা হয়। গেটের বাইরে ২০-২৫ জন সৈন্য পাহারায় রেখে দেয়া হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু-কন্যা যে বাড়িতে সবার সঙ্গে বন্দি ছিলেন সে বাড়িটিতে কোনো আসবাবপত্র এমনকি কোনো ফ্যানও ছিল না। দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর হোসেনের কাছে অনুরোধ করেও সেসবের ব্যবস্থা করা যায়নি। পুরো বন্দি জীবন তাদের থাকতে হয়েছিল ঘরের মেঝেতে। দেয়া হয়েছিল একটিমাত্র কম্বল।
ছোট দুই ভাই জামাল ও রাসেল, বোন রেহানা, স্বামী এম ওয়াজেদ মিয়া ও অসুস্থ মা-কে নিয়ে সে কী এক দুর্বিষহ জীবন কাটিয়েছেন, শেখ হাসিনার নানা কথোপকথন এবং ওয়াজেদ মিয়ার লিখে রাখা বর্ণনায় সেসবের বিবরণ পাওয়া যায়।
শেখ হাসিনার মুখেই শুনেছি, একটি কেরোসিনের চুলায় রান্না করা সীমিত খাবারের জন্য তাদের মা আধপেট খেতে বলতেন। কারণ খাবার ফুরিয়ে গেলে কারফিউর মধ্যে জোগাড় করা কঠিন হবে। পাকিস্তানি সেনারা তো কোনো সাহায্য করবে না।
জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে শেখ হাসিনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে দিতে অনুমতি মেলে। বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ চিকিৎসক-দম্পতি ডা. এম এ ওয়াদুদ ও ডা. সুফিয়া ওয়াদুদের পরামর্শ মেনে চলতেন শেখ হাসিনা। যে কেউ আজ অনুধাবন করবেন অন্তঃসত্ত্বা একজন বন্দি মায়ের কি সেসব পরামর্শ মেনে চলার কোনো সুযোগ ছিল, যারা প্রচণ্ড গরমের সময় আধপেট খেয়ে মেঝেতে থাকতেন? ডা. ওয়াদুদ স্নেহবশত কএনা টাকাপয়সা নিতেন না বলে কিছুটা রক্ষা ছিল বটে, কিন্তু আসন্ন সন্তানের পুষ্টি ও সুস্থতার জন্য এই মায়ের বা তার স্বামীর কী-ই বা করার ছিল?
ওয়াজেদ মিয়া লিখেছেন, “জুন মাসের প্রথম থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিভিন্ন অবস্থান ও সরকারি ইলেক্ট্রিক সাব-স্টেশন, পুলিশ ফাঁড়ি ইত্যাদি স্থানে আক্রমণ জোরদার করতে থাকে। জুন মাসের শেষের দিকে এই আক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করে। যখনই বাইরে গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যেত, পাহারারত সুবেদার মেজর স্টেনগান হাতে ‘ডক্টর সাব, ডক্টর সাব’ বলতে বলতে আমার রুমে ঢুকতো। সে সময়ে তারা আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। বাড়ির ছাদে উঠে লাফালাফি করতো এবং লাইট জ্বালিয়ে রেখে ঘুমোতে দিত না। রাইফেলের মাথায় বেয়নেট লাগিয়ে কক্ষের জানালার ধারে দাঁড়িয়ে থাকত।” ভাবা যায়? এই গর্ভধারিণী মায়ের মন তখন কী স্বপ্নে বিভোর থাকার কথা!
জুলাই মাসের মাঝামাঝি ডা. ওয়াদুদের তত্ত্বাবধানে শেখ হাসিনা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সন্তান প্রসবিনী মায়ের সঙ্গে আমাদের দেশের প্রচলিত সংস্কৃতি অনুযায়ী তার মায়েরই থাকার কথা। বেগম মুজিব যেন তার মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালে থাকতে পারেন সে অনুমতি চাইলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর ইকবাল নামের একজন অত্যন্ত বাজে আচরণ করে।
ওয়াজেদ মিয়া লিখেছেন, “মেজর ইকবাল নামক এক সামরিক কর্মকর্তা বাসায় এসে আমার শাশুড়িকে রূঢ় ভাষায় বলে, আপনি তো নার্স নন যে হাসপাতালের কেবিনে আপনার মেয়ের সঙ্গে থাকা বা দেখাশুনা করার প্রয়োজন রয়েছে।”
এ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ছোট বোন খাদিজা হোসেন লিলি (লিলি ফুপু, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরক্ত সচিব এ টি এম হোসেনের স্ত্রী) সারাক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে হাসপাতালে থাকতেন। ২৭ জুলাই রাত ৮টার দিকে নির্ধারিত সময়ের ছয় সপ্তাহ আগে শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়-এর জন্ম হয়। গর্ভকালে এই শিশু মায়ের সঙ্গে মায়ের পেটে বন্দি ছিল। ভূমিষ্ঠ হয়েও সে বন্দি। ‘মুক্ত জীবনের অধিকার’ এই সদ্যোজাত শিশুরও ভাগ্যে ছিল না।
দু-একজন আত্মীয়-স্বজন এই শিশুকে দেখতে এলে পাকিস্তানি সৈন্যরা খারাপ ব্যবহার করত। একদিন শেখ হাসিনার লিলি ফুপু ছাড়া দেখতে আসা আর সব আত্মীয়কে পাকিস্তানিরা ভয় দেখিয়ে কেবিন থেকে বের করে দেয়। তারা জানায়, তাদের কাছে সরকারি নির্দেশ রয়েছে যে এই কেবিনে একজনের বেশি সেবিকা থাকতে পারবে না।
ধানমন্ডির বন্দিশালায় গিয়েও পাকিস্তানি সৈন্যরা বেগম মুজিবকে এই বলে হুমকি দিয়ে আসে, ‘আপনারা জয় বাংলা রেডিও শোনেন। এটা বন্ধ না করলে জামালকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে ঘরের সিলিং-এ পা বেঁধে ঝুলিয়ে পিটিয়ে তার পিঠের চামড়া উঠানো হবে।’
হাসপাতালে বড় বোনের কাছে সদ্য মামা হওয়া এই ভাইয়ের জন্য আশংকার খবর পৌঁছানোর পর তখন শেখ হাসিনার কেমন লেগেছিল আজকের দিনে যে কোনো সংবেদনশীল মানুষেরই তা উপলব্ধি হওয়ার কথা।
এই শিশু সন্তান নিয়ে শেখ হাসিনা যখন ধানমন্ডির বন্দি গৃহে ফেরেন সেই মেঝেতেই তাদের ঠাঁই হয় একটি মাত্র কম্বল বিছিয়ে। একদিন জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে সন্তানের জন্য ডাক্তার ডাকার প্রয়োজন হলে সেনারা গেট থেকে আটকে দেয়। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনার প্রসবোত্তর অতি-জরুরি চিকিৎসার জন্য (যাতে তার জীবনাশঙ্কা হয়েছিল) কিছুতেই ডাক্তার ওয়াদুদ-কে আসতে দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে ডাক্তার ব্যবস্থাপত্র লিখে দিলে তা নিয়ে কারফিউ শুরুর মাত্র কয়েক মিনিট আগে জরুরি ওষুদ কিনে এনে সে যাত্রায় রক্ষা হয়।
এই ক্রমাগত বাধা আর অত্যাচারের যন্ত্রণা দায়িত্বশীল স্বামী হিসেবে, আদর্শ পিতা হিসেবে ওয়াজেদ মিয়াকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তখন বহন করতে হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু আগে থেকেই তার পছন্দ বলে রেখেছিলেন- শেখ হাসিনা যেন তার ছেলে সন্তান হলে নাম রাখেন ‘জয়’ ও মেয়ে হলে ‘জয়া’। বন্দিশালায় সদ্যোজাত ছেলে সন্তানের নাম যখন ‘জয়’ রাখা হল তখন এ নিয়েও পাকিস্তানিরা প্রশ্ন তুলেছে। কটাক্ষ করে তারা বলত, ‘পশ্চিম পাকিস্তানমে এক নমরুদকো পাকড়াও করকে রাখা হুয়া, লেকিন এধার এক কাফের পয়দা হুয়া।’
বঙ্গবন্ধু-পুত্র শেখ জামাল একদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে চলে যান। জামালের অনুপস্থিতি ও জানা আশঙ্কার মধ্যে একদিন বাসায় কর্মরত এক তরুণ সদস্য ফরিদকে পাকিস্তানি সৈন্যরা ধরে নিয়ে নির্মম অত্যাচার করে। টুঙ্গিপাড়ায় বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিলে বঙ্গবন্ধুর অসুস্থ বাবা-মাকে ঢাকায় এনে আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছিল।
অক্টোবরে ওয়াজেদ মিয়াও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং চিকিৎসার জন্য ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে তখনকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। একই সময়ে যুদ্ধ ঘনীভূত হলে ও ঢাকায় ক্রমাগত গেরিলা আক্রমণ শুরু হলে পাকিস্তানি বাহিনীর সতর্ক দৃষ্টি পড়ে বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি। সেসব কঠোর পাহারার মধ্যে ধানমন্ডির বন্দি গৃহে বেগম মুজিব ও শেখ হাসিনাসহ অন্যরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পরও তারা মুক্ত হতে পারেননি। বাড়ির পাহারা পাকিস্তানিরা ত্যাগ করেনি। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে ওয়াজেদ সাহেব তাদের ১৮ ডিসেম্বর মুক্ত করতে সমর্থ হয়েছিলেন।
জেনারেল অরোরা নিজে এসে ১৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। সে বাসায় কোনো চেয়ার ছিল না বলে জেনারেল অরোরাকে কোথায় বসতে দেবেন তা ভেবে বেগম মুজিব খুব বিব্রত বোধ করছিলেন। (তথ্যসূত্র: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথন ও এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’)।
এই যে একাত্তরের বন্দি জীবন সে জীবনেও শেখ হাসিনার একটি জন্মদিন ছিল, ২৮ সেপ্টেম্বর। জয়-এর জন্মের মাত্র দুই মাস পরের কথা, শুনেছি আপার তা মনেও ছিল না। আমরা আজও জানি না বঙ্গবন্ধু-কন্যার সেই বন্দিদশা আদৌ মুক্ত হয়েছে কী না।
কারণ, বঙ্গবন্ধুর উক্তি ‘একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে মুক্ত ও সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার অর্জনের জন্য বাঙালি জাতি বহু শতাব্দি ধরে সংগ্রাম চালিয়ে এসেছে’; সেই সংগ্রামের হাল ধরে শেখ হাসিনা নিজে মুক্ত, স্বাধীন ও সম্মানজনক জীবন প্রতিষ্ঠার লড়াই করছেন ও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার মুক্তি কোথায়?
যুদ্ধের দিনে অভাব-অনটনে, কষ্ট-অপমানে জন্ম নেয়া একটি বন্দি শিশুর জন্য শেখ হাসিনার যে মাতৃত্ববোধ তা আজ সমগ্র জাতির কাছে ছড়িয়ে গেছে। তিনি যখন বলেন ‘আত্মমর্যাদা অর্জন করেই বাঙালিকে বাঁচতে হবে, আমি দেশের মানুষের সে আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্যই লড়াই করছি’ তখন আমাদের মনে হয়- এই সংগ্রাম কবে শেষ হবে?
যদি শেষ হতো, একবার সবাই মিলে আপার জন্মদিনে টুঙ্গিপাড়া যেতাম। আপা বসে থাকতেন বঙ্গবন্ধুর শয়নের পাশে। আমরা একটি দূরের উঁচু ঢিবি থেকে দেখতাম পাখিগুলো ফিরে যাচ্ছে আপন মনে।
শেখ হাসিনার জন্মদিনে আজ এই প্রার্থনা করি- বাঙালির জীবনে পাখি দেখার সেই দিন আসুক, আমরা তখন বেঁচে থাকি বা না থাকি।
লেখক: রেজা সেলিম, পরিচালক, আমাদের গ্রাম
ই-মেইল: [email protected]
ভিসা নীতি প্রয়োগ করা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ব্যাপার মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এ বিষয়ে কথা বলার এখতিয়ার নেই তার।
মন্ত্রী বুধবার দুপুরে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শিবপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে আমাদের বিচলিত হবার কিছু নেই। এ নিয়ে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনোভাবেই উদ্বিগ্ন নয়। বর্তমান সময় ও নির্বাচনকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই পরিচালনা করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আগে যেমন ছিল এখনও তেমনই আছে পরিস্থিতি। বিষয়টি নিয়ে একটি মহল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে।
‘যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি প্রণয়ন করেছেন, যা তাদের ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে কাকে যেতে দেবে, কাকে যেতে দেবে না, এটি তাদের বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের মন্তব্য নেই এবং বলারও কিছু নেই।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ভিসা নীতি তারা ডিক্লেয়ার করেছে বলে আমরা শুনেছি। আমাদের কাছে তো চিঠির মাধ্যমে তারা জানায়নি। কাজেই আমরা যেটা শুনেছি সেটাই জানি। এখন পর্যন্ত কাকে নিষিদ্ধ করেছে, সেগুলো আমরা জানি না।
‘তারা যে লিস্টটা দিয়েছে, তার ভিত্তি কী, সেটিও আমি জানি না। যেহেতু কিছুই জানি না, আমি মনে করি, এ সম্বন্ধে মন্তব্য করার কোনো এখতিয়ার আমার নেই।’
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে’ নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের কার্যালয় প্রকাশিত বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে আমি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি।
‘এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত।’
যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেন ব্লিঙ্কেন।
শিবপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমজদার, সংসদ সদস্য শহিদুজ্জামান সরকার, আনোয়ার হোসেন হেলাল, ছলিম উদ্দিন তরফদার, জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
পরে জেলা পুলিশের আয়োজনে শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান। সেখানে যোগ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আরও পড়ুন:দেশের সব বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দুই বিভাগের কোথাও কোথাও হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গা, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, কিছু গোষ্ঠী সেই সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি করার চেষ্টার পাশাপাশি বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যে নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র সেই নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ, যেখানে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি।
‘আমরা জনগণের ভোটে জয়লাভ করলেও ১৯৭১ সালে আমাদের সরকার গঠন করতে দেয় নাই; বরং আমাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। আর তখন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলাম গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এ জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধে আমাদের ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের মতের, চিন্তার মিল আছে। নীতিগতভাবে আমাদের দুই দেশের মধ্যে মিল আছে, তবে তাদের কোনো কোনো ব্যক্তিবিশেষ হয়তো আমাদের উন্নয়ন পছন্দ করছেন না।’
কেউ বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করলে তাদের মিথ্যাচারকে চ্যালেঞ্জ করতে দল-মত নির্বিশেষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে যেসব ভালো পরামর্শ দেয়, আমরা সেটা গ্রহণ করি। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে আর আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যারা নির্বাচন বয়কট করতে চায়, নির্বাচন ভয় পায়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ২৬তম বড় অর্থনীতিতে পরিণত হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ, তাই আমাদের নিজস্ব বাজারও অনেক বড়। সে জন্য আমাদের দেশের প্রতি অনেকেরই আগ্রহ বেড়েছে। কারণ আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ গুণ বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার অর্ধেকের বেশি কমেছে। এসবই শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কারণে সম্ভব হয়েছে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ ও সবজি উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়। চাল উৎপাদনে আমরা বিশ্বে চতুর্থ। আমাদের কৃষি জমি অনেক কমে গেছে, কিন্তু খাদ্য উৎপাদন চার গুণ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে, তবে আমরা এই উন্নতি করছি বলে অনেকেরই গাত্রদাহ হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, “আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি সুন্দর পররাষ্ট্রনীতি দিয়ে গেছেন। আর এই নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা একটা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করি।”
আরও পড়ুন:আসন্ন দূর্গাপুজাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে কোনো গুজব ছড়াতে না পারে, সেজন্য সতর্ক থাকতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। পুজা উপলক্ষে পুলিশের টহল জোরদার করারও নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে সারা দেশের পুজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ প্রদান করেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ এবং ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পুজা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য পুলিশ সদস্যদের সজাগ থাকতে হবে।’
এসময় স্থানীয়ভাবে পুজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাক পুজা, পুজা চলাকালীন ও পুজা পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। অতীতে যেভাবে উৎসব ও আনন্দমুখর পরিবেশে দূর্গাপুজা উদযাপিত হয়েছে, এবারও নিরাপদে-নির্বিঘ্নে আসন্ন দূর্গাপুজা পালিত হবে।
‘দূর্গাপুজা উপলক্ষে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং অন্যান্য পুলিশ ইউনিটে মনিটরিং সেল স্থাপন করা হবে।’
সভায় উপস্থিত হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ আসন্ন দূর্গাপুজা ঘিরে বাংলাদেশ পুলিশের গৃহীত ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ বছর আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত শারদীয় দূর্গাপুজা উদযাপিত হবে।
ভোটের দিন নির্বাচনী কাজে সাংবাদিকদের সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নানা আলোচনা-সমালোচনার পর আগের নীতিমালা সংশোধন এনে মঙ্গলবার এমন নির্দেশনা জারি করেছে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি।
নীতিমালার ৬ নম্বর নির্দেশনায় সংশোধন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক।
ওই নির্দেশনায় আগে বলা হয়েছিল, সাংবাদিকরা ভোটের কাজে মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে সংশোধনের পর এখন বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের যাতায়াতের জন্য যৌক্তিক সংখ্যক গাড়ির স্টিকার দেয়া হবে।
সংশোধিত নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতার আলোকে স্থানীয় প্রশাসন (রিটার্নিং অফিসার, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার সমন্বিতভাবে) প্রকৃত সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র প্রেস আইডির কপি, এনআইডির কপি এবং যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হবে সেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জমা দিতে হবে।
রিটার্নিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যাচাই বাছাই শেষে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দেবেন। কোনো সাংবাদিকের জন্য গাড়ির স্টিকার দেয়া হলে স্টিকারের ক্রমিক নম্বর রেজিস্টারে লিখে রাখতে হবে। এ ছাড়া নীতিমালার অন্যান্য বিষয় আগের মতোই আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে নির্বাচনে বাধাদানকারীদের ভিসার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, কোনো পক্ষ নেয়া এর উদ্দেশ্য নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
মিলার বলেন, ‘আমি বলব, যেমনটা আমরা আগেও বলেছি, যেমনটা গত মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ নতুন নীতি ঘোষণা করেছিলেন, তখনও আমরা বলেছিলাম, এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশে নির্বাচনে কারও পক্ষ নেয়া নয়। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা বা সমর্থন করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার যখন আমরা এ নতুন ভিসা বিধিনিষেধ কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছিলাম তখন আমরা উল্লেখ করেছি, এতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মিলার জানান, এ বিষয়ে তার কোনও মন্তব্য নেই।
ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমের ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি জানান, ভিসা-সংক্রান্ত রেকর্ড গোপনীয় হওয়ায় সুনির্দিষ্ট সদস্য বা ব্যক্তি- কার জন্য এ নীতি প্রযোজ্য হবে, তার ঘোষণা তারা দেননি।
তবে তারা এ বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এ নীতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য