খুলনাকে পরিকল্পিত ও পরিচ্ছন্ন স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে ৪০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
৪০ দফা ইশতেহারের প্রথমেই রয়েছে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও পরিবেশবান্ধব খুলনা গড়ার প্রত্যয়। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি নির্মাণ ও নগর পরিকল্পনায় সবুজকে প্রাধান্য দেয়া হবে। সবুজ খুলনা গড়ে তুলতে এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে। বাড়িভিত্তিক সবুজায়নে উৎসাহিত করা হবে। নগর পরিকল্পনায় পরিবেশকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। নগরায়ন হবে পরিবেশবান্ধব। জমি, বায়ু, শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া হবে।’
ইশতেহারে দ্বিতীয় দফায় নগরীতে পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খালেক। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নগরীতে বিদ্যমান পার্ক ও উদ্যানগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া উন্মুক্ত সুবিধাজনক স্থানে একটি বড় পার্ক, লেডিস পার্ক ও ২টি শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। নদী-সংলগ্ন স্থানে ভ্রমণের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।’
স্মার্ট খুলনা গড়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, বাস স্টপেজসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বিনামূল্য ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে একটি ই-লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাগরিক সমস্যা জানানো, সেবা ও প্রয়োজনীয় তথ্য সমৃদ্ধ মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে। সকল সেবাসমূহকে পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল করা হবে এবং ই-সেবা চালু করা হবে।’
খালেকের ৪০ দফার মধ্যে আরও রয়েছে- জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ড্রেন পরিষ্কার, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বৃক্ষ পরিচর্যা ও সংরক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও নিরাপদ স্বাস্থ্যকর খুলনা সিটি গড়ে তোলা, সুলভ মূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা, সূর্যোদয়ের আগেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সম্পন্ন, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পথচারী-বান্ধব ফুটপাত, মানবিক উন্নয়নের খুলনা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান উপযোগী নগরী, সিভিক সেন্টার গড়ে তোলা, অনুদান তহবিল চালু, মিডিয়া সেন্টার চালু ও সেরা সংবাদ পুরস্কার প্রবর্তন, কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছর প্রতিযোগিতার আয়োজন, স্মার্ট ডিজিটাল খুলনা, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানচিত্র প্রদর্শন, অংশগ্রহণমূলক ও সুশাসিত খুলনা, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস মিটিগেশন সেল স্থাপন, হটলাইন নগর তথ্য কেন্দ্র চালু, পরিকল্পনা প্রণয়নে পরামর্শক কমিটি গঠন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন ও বিকাশ, জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ, শিশুদের সাঁতার শেখানোর বিশেষ উদ্যোগ, নগরীর বাজারগুলোর আধুনিকায়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে রাস্তার নামকরণ, বধ্যভূমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষণ, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা প্রদান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, ওয়াসা, কেডিএ, রেলওয়ে, টেলিকমিউনিকেশন ও বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নয়ন, কেসিসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে বুলেটিন প্রকাশ এবং খুলনা মহানগরী সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ।
ইশতেহার ঘোষণার আগে গত পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণনা দেন সদ্য বিদায়ী মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
এসময় তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে দেশের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে-যা প্রায় ৩ বছর স্থায়ী ছিল। সে কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে নগরবাসীকে হয়ত কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।’
অনিচ্ছাকৃত ও অনাকাঙ্খিত এ বিলম্বের জন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। তবে চলমান উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে খুলনা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সদ্য বিদায়ী এ মেয়র।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জাহান কল্পনা, কেসিসি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কাজী আমিনুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা এম ডি এ বাবুল রানা, অ্যাডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারী, সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারতকে দরকার আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোথায় স্যাংশন, কোথায় ভিসানীতি, তলে তলে আপস হয়ে গেছে।’
রাজধানীর সাভারের আমিন বাজারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঙ্গলবার কাদের আরও বলেন, ‘দিল্লি আছে, যুক্তরাষ্ট্রেরও দিল্লিকে দরকার। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। শত্রুতা কারও সঙ্গে নেই। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। শেখ হাসিনা এমন ভারসাম্য সবার সঙ্গে করে ফেলেছেন। আর কোনো চিন্তা নেই। ইলেকশন হবে, যথাসময়ে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অক্টোবরে সোজা হয়ে দাঁড়ান, কৌশল ভালো করে শিখে নেন। করতে হবে যুদ্ধ। বিএনপির লোকেরা এখন পথ হারিয়ে দিশেহারা। দুই সেলফিতেই বাজিমাত। এক সেলফি দিল্লিতে আরেক সেলফি নিউইয়র্কে। প্রথমে দিল্লিতে গিয়ে, পরে নিউইয়র্কে বাজিমাত।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে, খেলা হবে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে, খেলা হবে চোরদের বিরুদ্ধে। সব চোর একত্র হয়েছে ক্ষমতার জন্য। ক্ষমতায় বসে দেশ ধ্বংস করবে। ওই দিন শেষ। ডিসেম্বরে বলেছিল না খালেদা জিয়া দেশ চালাবে, মনে আছে? নয় মাস চলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করেছে। ৪টা ৫টা বছর আদালতে হাজিরা পর্যন্ত দেয়নি। এত দিন খালেদা জিয়ার মামলার ফয়সালা হয়ে যেত। কিন্তু এ মামলা ফয়সালা হয়নি বিএনপির জন্য। বিএনপির মামলা রয়ে গেছে। আদালতে ঝুলে আছে। খালেদা জিয়াকে দেখিয়ে যদি কিছু করা যায়। অক্টোবরে নাকি পতন, কোন অক্টোবর, এই অক্টোবর নাকি আগামী অক্টোবর। নাকি তার পরের বছরের অক্টোবর। অক্টোবরে নভেম্বরে ডিসেম্বরে কিছুই হবে না।’
কাদের বলেন, ‘অক্টোবর থেকে শুরু, মার্চ থেকে শুরু, খেলা হবে আগামী মাসে সেমিফাইনাল। জানুয়ারিতে ফাইনাল। বিএনপি এখন ফাউল করছে। ফাউল করলে হলুদ কার্ড। ফাউল হলে লাল কার্ড। খেলা নিয়ে ফাউল করা চলবে না। খালেদা জিয়া ছাড়া বিএনপি ইলেকশন করবে না। এত দিন কই ছিল? খালেদা জিয়া বছরের পর বছর জেলে। তার জন্য একটা আন্দোলন হোক, করতে পারল না ফখরুল। আর এখন খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন করবে না।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নাকি নিষ্ঠুরতা দেখাচ্ছে, কেমন নিষ্ঠুরতা, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারকে তারা হত্যা করেছে। শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা সেদিন বিদেশে ছিলেন বলে বেঁচে গিয়েছিলেন। সেদিন নিষ্ঠুরতা কোথায় ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের নায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান। নিষ্ঠুর কারা? জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, জেলখানায় চার নেতাকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। কে করেছে এগুলো, হাওয়া ভবন কে করেছে, তারেক জিয়া শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বেগম জিয়াকে একবারও কি কেউ হত্যা করতে গিয়েছিল। তারেক রহমানের জীবনের ওপর একবারও কি হামলা হয়েছে? আওয়ামী লীগ করবে না, আওয়ামী লীগ হত্যা-সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের শিকার। এখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অক্টোবর মাস তো চলে যাচ্ছে। আর কত হুমকি, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বুড়িগঙ্গায় ভেসে গেছে। গত ডিসেম্বরের আন্দোলন গরুর হাটের খাদে পড়েছে। আর আন্দোলন আছে? কোথায় যাবেন? এখন এই জায়গায়, ওই জেলায়, ওই নগরীতে, আজকে দিশেহারা পথিকেরা আন্দোলনের নামে ঘুরে বেড়ায়। এতে কোনো কাজ হবে না। নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের জনগণ আর কিছুই চায় না।’ আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট এক সমীক্ষায় মন্তব্য করেছে, এই মুহূর্তে ভোট হলে বাংলাদেশের শতকরা ৭০ জন লোক শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগাঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আমেরিকার দেয়া ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকারের কম্পন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এরপর বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে যে ভিসানীতি আসবে সেটি আরও কঠিন হবে। এখানে মাফ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোড মার্চ উপলক্ষে জেলা শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে মঙ্গলবার দুপুরে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির এক দফা দাবিতে সারাদেশে বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে এ রোড মার্চ শুরু হয়।
আমির খসরু বলেন, ‘জীবনের বিনিময়ে হলেও ভোট চুরি প্রতিরোধ করতে হবে। জীবন দিয়ে আমাদের জয়লাভ করতে হবে। এই যুদ্ধ বিএনপির নয়, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।’
তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাতের আঁধারে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার যতদিন ফিরিয়ে দিতে না পারি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যতদিন নির্বাচন না হয় ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।’
সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুকের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ অনেকে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আবেদন ইস্যুতে সরকার আইনের কোনো ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মামলাগুলো উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। বিএনপি যদি মনে করে সরকার আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, তাহলে তারা আদালতে যেতে পারে। আদালত সেটি পরিষ্কার করবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতি যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, খালেদা জিয়া কি সে মহানুভবতা দেখিয়েছিলেন যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন? ক্ষমতায় থাকাকালে সিএমএইচ হাসপাতালে রোগী দেখতে সেনানিবাসে ঢুকতে দেননি, শেখ হাসিনাকে হেঁটে যেতে হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়া সেই মানুষ যিনি নিজের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ১৫ আগস্ট করেছে।
‘তার জন্মদিন ৪-৫টি, কোনোটিই ১৫ আগস্ট ছিল না। তার বিয়ের রেজিস্ট্রারে একটি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একটি, পাসপোর্টে একটি, পরীক্ষার ফরম ফিলাপে একটি এবং সর্বশেষ করোনা হওয়ার পর আরও একটি জন্ম তারিখ দেখা গেছে। কোনোটাতেই ১৫ আগস্ট ছিল না। যেদিন মানুষ শোক দিবস পালন করে, সেদিন তিনি কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া সেই মানুষ যার দুয়ারে দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে ২০ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু দরজা খোলা হয়নি। কী পরিমাণ দম্ভ, অহমিকা যে, দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্যও দরজা খোলেননি। বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করেছিলেন। আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেনি। যে সমস্ত মামলা হয়েছে, সেগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। সেই মামলায় তার বিচার হচ্ছে এবং তিনি সাজা খাটছেন।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুনবার্সন করেছেন, তাদের প্রমোশন দিয়েছেন। এত প্রতিহিংসা দেখিয়েছেন, কিন্তু তার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানুভবতা দেখিয়ে যাচ্ছেন। সেটি কি তারা কখনও করত? শুধু তাই নয়, তারা (বিএনপি) এফবিআইয়ের এজেন্ট লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিলেন। বেগম জিয়া টিউলিপের নাম দেখে চুক্তি পর্যন্ত বাতিল করেছেন। কীরকম প্রতিহিংসা তার! সেই মানুষটির প্রতি প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখাচ্ছেন, সেটি অনেক বেশি বলে আমি মনে করি।’
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন পর্যন্ত দাম মানুষের ক্রমক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে গিয়ে শেখ হাসিনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মানুষ যাতে ভালো থাকে, জিনিসপত্রের দাম যাতে কমে, সেজন্য শেখ হাসিনা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।’
মঙ্গলবার সাভারের আমিনবাজারে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার সমীক্ষায় উদাহরণ টেনে ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘এই মুহুর্তে ভোট হলে শতকরা ৭০ জন শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে।’ এ সময় তিনি দলটির নেতা-কর্মীদের জনগণের কাছে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার নির্দেশ দেন।
দুর্নীতির দুর্গন্ধযুক্ত কোনো রাজনৈতিক দলকে এদেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অক্টোবরে নাকি সরকারের পতন করবে? কোন অক্টোবর? অক্টোবরে, নভেম্বরে, ডিসেম্বরে কিছুই হবে না। বাংলার জনগণ বিএনপিকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যে দলে দুর্নীতির দুর্গন্ধ আছে, মানুষ সে দল চায় না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হাঁটুভাঙা দল, কোমরভাঙা দল। শক্ত হয়ে দাঁড়ান। কৌশল ভালোভাবে চিনে নেন; খেলা হবে, সাংঘাতিক খেলা হবে। আর সে খেলায় আওয়ামী লীগই জিতবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা হুমকি দিচ্ছে, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছে-খালেদা জিয়া ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু ডিসেম্বরের আন্দোলন গরুর হাটে! আন্দোলন আছে?’
নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের জনগণ আর কিছুই চায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কোনো দেশের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতিতে আওয়ামী লীগ চিন্তিত নয় মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগে এসবের পরোয়া করে না। যদিও আওয়ামী লীগ বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। প্রধানমন্ত্রীকে ২০ বার হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে। বেগম জিয়াকে কেউ কি একবারও হত্যা করতে গিয়েছে? হত্যা চেষ্টা হয়েছে? আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলটির সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ভিসা নীতি যার যার দেশের নিজস্ব বিষয়। বাংলাদেশও বিশ্বের যে কোনো সমৃদ্ধ দেশের সব নাগরিককে ভিসা দেয় না। সবকিছুর একটা নিয়ম আছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিএজেএফ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সময়ে কৃষকরা ন্যায্য দামে সারের জন্য জীবন দিয়েছে; একবার নয়, একাধিকবার। বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী হলেন কৃষিবান্ধব। তিনি কৃষকদের উন্নয়নে ব্যাপক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কৃষির জন্য ভর্তুকির জায়গাটা তিনি ধরে রেখেছেন। আওয়ামী লীগ দেশের কৃষকদের জন্য অন্তঃপ্রাণ। দেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা কাজ করি।’
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনা অস্থিতিশীল করতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের আশ্রয় নিচ্ছে। ঘুষখোর, পাচারকারী, মুনাফাখোর- এরা হলো দুর্বৃত্ত। এগুলো এক ধরনের দস্যুতা, এরা দেশের শত্রু। যেসব ব্যবসায়ীরা এমন কর্মকাণ্ড করে মানুষকে কষ্ট দেন, আমরা কখনও তাদের সমর্থন করি না। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান রয়েছে এবং তাদেরকে দমন করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।’
কৃষি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো আপনারা সমাজ, রাষ্ট্র, দেশ ও সরকারের কাছে তুলে ধরুন। শুধু লেখনি দিয়ে নয়, গবেষণায়ও থাকতে হবে; সংবাদের ভেতরেও সাংবাদিকতা থাকতে হবে।’
‘রিপোর্টিং অন এগ্রিকালচার ট্রান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ)।
বিএজেএফ সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সঞ্চালনা করেন বিএজেএফ সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান ও এনআরবিসি ব্যাংকের হেড অফ কমিউনিকেশনের প্রধান মো. হারুন অর রশিদ। দেশের কৃষি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ৬০ জন গণমাধ্যমকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে মঙ্গলবার ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট (বিজি-২০৮) এদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। খবর ইউএনবির
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাবেন।
ফ্লাইটটি বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান।
২ অক্টোবর লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) সভাপতি রুশনারা আলীর (এমপি) নেতৃত্বে এপিপিজি’র একটি প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রীসহ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
১৭ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশন ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের পক্ষ ও দ্বিপক্ষীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এছাড়া তিনি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে হবে। কোনোভাবেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না।’
বাসস জানায়, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় দলের (এপিপিজি) সদস্যরা সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে লন্ডনে তার অবস্থানস্থল তাজ হোটেলে সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ক এপিপিজির চেয়ার এবং বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশের সদস্যদের নিয়ে এপিপিজি ভাইস চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র শর্মা, ভাইস চেয়ার ভ্যালেরি ওয়াজ, ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান হুসেন এবং স্কটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের ক্রস-পার্টি গ্রুপের চেয়ার ফয়সল চৌধুরী।
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা জানান।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে এপিপিজি প্রতিনিধি দলকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার ইতোমধ্যে করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়ন হয়েছে, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন হয়েছে এবং ইসিকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করার সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।
‘বিরোধী দলে থাকাকালে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে এপিপিজি প্রতিনিধি দল সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন তদারকির জন্য বাংলাদেশ এপিপিজি প্রতিনিধি দলকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোরও প্রস্তাব দিয়েছে।
এপিপিজি’র সব সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা ব্রিটেনের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসা করছে এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ছে।’
বাংলাদেশে একশ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৯টি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বৃহত্তর বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও জাপানের মতো বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যকেও একটি নিবেদিত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে যেতে চায়।’
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক তহবিল বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যা সম্প্রতি কমে আসার প্রবণতা দেখাচ্ছে।
ব্রিটিশ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অমানবিক অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই যুদ্ধ চায় না। কারণ দরিদ্র জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যুদ্ধের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বরং চায় যে আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান হোক।’
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য