সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জাতীয় পার্টি।
রোববার এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জাপার দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ইয়াহ্ইয়াকে আগে শোকজ হয়। তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়া পার্টির মহাসচিব মুজিবুল চুন্নুর সুপারিশে পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতির আদেশ অনুমোদন করেন।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে গত নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়ে জামানত হারান।
গত নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট-২ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবার সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান। দুজনের বাড়িই একই এলাকায়।
গত ১২ মে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর একটি নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী তার পক্ষে ভোট চান বলে অভিযোগ ওঠে।
সিলেট সিটি করেপারেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন দলটির সিলেট মহানগর শাখার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল। ইয়াহ্ইয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ১৩ মে দলের চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করেন বাবুল। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ মে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় জাতীয় পার্টি।
নোটিশে বলা হয়, ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী গত ১২ মে রাত ৯টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরিপাড়ায় মঞ্চে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য রেখে ভোট চেয়েছেন। দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও এমন কর্মকাণ্ড সুস্পষ্টভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ও স্বার্থের পরিপন্থী। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে কেন শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, এ বিষয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
ওই কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব পাওয়ার পর দল থেকে বহিষ্কৃত হলেন ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী।
এ ব্যাপারে সোমবার ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ ওঠার পর ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী বলেছিলেন, আমি এলাকাবাসীর আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে গিায়েছিলাম। সেটি দলীয় কোন অনুষ্ঠান ছিলে না। কারো পক্ষে ভোটও চাইনি।
আনোয়ারুজ্জামানের সমর্থনে ওই সভাটি হয় নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরিপাড়ায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই সভার ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, দল মত নির্বিশেষে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করে সিলেটের উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে বিজয়ী করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আনোয়ারুজ্জামান একজন ভালো মনের মানুষ। দীর্ঘদিন থেকে আমি চিনি। তিনি নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। আগামী ২১ জুন নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানাই।
আমেরিকার দেয়া ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকারের কম্পন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এরপর বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে যে ভিসানীতি আসবে সেটি আরও কঠিন হবে। এখানে মাফ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোড মার্চ উপলক্ষে জেলা শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে মঙ্গলবার দুপুরে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির এক দফা দাবিতে সারাদেশে বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে এ রোড মার্চ শুরু হয়।
আমির খসরু বলেন, ‘জীবনের বিনিময়ে হলেও ভোট চুরি প্রতিরোধ করতে হবে। জীবন দিয়ে আমাদের জয়লাভ করতে হবে। এই যুদ্ধ বিএনপির নয়, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।’
তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাতের আঁধারে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার যতদিন ফিরিয়ে দিতে না পারি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যতদিন নির্বাচন না হয় ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।’
সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুকের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ অনেকে।
কোনো কারণ ছাড়াই ময়মনসিংহের ভালুকার একটি বিদ্যালয় থেকে নুপুর আক্তার নামে এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘুষ খেয়ে নুপুর আক্তারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) ও সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও)।
বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও এলাকাবাসীর দাবি, বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাকে বারবার নূপুর আক্তারকে দায়িত্বে রাখতে অনুরোধ করার পরও তাকে সরিয়ে ওই দুই শিক্ষা কর্মকর্তা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে টিইও সৈয়দ আহমদ ও এটিইও দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ৭১ নম্বর কাদিগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন কাচিনা-মল্লিকবাড়ি সড়কে এই মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ক্ষুব্ধ বক্তারা জানান, নুপুর আক্তার এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে ছোট ছোট শিশুরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। পড়া-লেখার ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব নিয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভালো করেছে। শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখায় মেধাবী করতে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তবুও বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবকদের মতামতকে উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুপুর আক্তারকে কোনো কারণ ছাড়াই ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে দায়িত্ব থেকে সরিয়েছেন ওই দুই কর্মকর্তা।
এর আগে স্কুলের সীমানা থেকে স্থানীয় সাইফুল ইসলাম ও তার জামাতা রমিজ খানের বিরুদ্ধে বাঁশ কেটে মাটি ভরাট করে দখলের অভিযোগ করলেও অনৈতিক সুবিধা নিয়ে টিইও সৈয়দ আহমেদ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
গত মাসে এই বিদ্যালয়ে নুপুর আক্তারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে বহাল রাখতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষর্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তিনবার আবেদন করা হয়। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদ ও সহকারি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন এসবের কোনো কিছুতেই পাত্তা দেননি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সাইফুল ইসলাম ও তার জামাতা রমিজ খানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়েই উপজেলার দুই শিক্ষা কর্মকর্তা নুপুর আক্তারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে গাঁজাসহ চালক ও এক যাত্রীকে আটক করে মামলা দিয়েছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
রংপুরের পরশুরাম থানা এলাকায় পুলিশ ১৫ কেজি গাঁজাসহ রোববার রাত ৩টার দিকে তাদের আটক করে। এসময় মোতাহার হোসেন নামে অপর এক যাত্রী কৌশলে পালিয়ে যায়।
মামলার পর আসামি দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পরশুরাম থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার কালিয়াকৈর পৌরসভার অ্যাম্বুলেন্স চালক ৩৫ বছর বয়সী ছানোয়ার হোসেন মানিকগঞ্জের সদর থানার দেড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা। অপর গ্রেপ্তার ২১ বছর বয়সী রাকিব শেখ পাবনার সাথিয়া উপজেলার আত্রাইশুখা গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা।
পরশুরাম থানার ওসি রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় পৌর অ্যাম্বুলেন্সে ও দুটি স্মার্ট মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ঘটনায় মাদক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দুজনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তারের ঘটনায় কালিয়াকৈর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সোমবার অ্যাম্বুলেন্সের চালককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভা জানায়, ছানোয়ার হোসেন প্রায় দুই বছর ধরে কালিয়াকৈর পৌরসভার অ্যাম্বুলেন্সে চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। রোববার ওই চালক কালিয়াকৈর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে একটি লাশ নিয়ে রংপুরের যান। কিন্ত ওইদিন রাতে লাশ রেখে ফেরার পথে পৌর এ্যাম্বুলেন্সটি আটক করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার বলেন, ‘যাত্রী বহনের অভিযোগে প্রায় ছয় মাস আগেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ওই চালককে শোকজ করেছিল।’
ঘটনার পর থেকেই গ্রেপ্তার ছানোয়ারের পৃষ্টপোষক হিসেবে দাবি করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং কালিয়াকৈর পৌর মেয়র মজিবুর রহমানের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পক্ষকে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পৌরসভার অনেকে বাসিন্দাকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিষয়। এটা মন্ত্রী মহোদয়ের কোনো বিষয় নয়। তার সম্মানহানী করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন একটি কুচক্রী মহল। তবে দলীয় ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান বলেন, ‘মানুষের সেবা করার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চালু আছে। রোগী বা লাশ বহন শেষে চালক অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী নিয়ে আসায় এ সমস্যা ঘটেছে। এখানে পৌরসভা কোন ভাবে দায়ী নয়। কিন্তু একটি চক্র মন্ত্রী মহোদয় ও আমাকে হেয় করার জন্য এটাকে ভিন্নভাবে মিথ্যা অপপ্রচার করছেন।’
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা তালতলা মাদ্রাসা রোডে জনি ওয়ার্কশপে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ গাড়ির গ্রিজার মিস্ত্রি সুমন শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২৮ বছরের সুমন।
সুমন পটুয়াখালী সদরের গড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। পাগলা বাজার পপুলার হাসপাতাল এলাকায় ভাড়া থাকতেন তার স্ত্রী শাহিনুর বেগম সঙ্গে। দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক ছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সুমন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার শরীরে ৪৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
ওই ঘটনায় জনি নামে আরও একজন ৪০ শতাংশ দগ্ধ চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা তালতলা মাদ্রাসা রোডের জনি ওয়ার্কসপে বিদ্যুতের সুইচ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস লীকেজ থেকে বিস্ফোরণে ওয়ার্কশপে আগুনের লাগার ঘটনাটি ঘটে। এতে ওয়ার্কসপের মালিক জনিসহ পথচারী সুমন দগ্ধ হন।
আরও পড়ুন:সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল কুড়িগ্রামের চারণ ও স্বভাব কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে জেলা জুড়ে। এ ঘটনায় তিব্র নিন্দা ও হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান স্বাংস্কৃতিক অঙ্গন ও সচেতন মহল।
চারণকবি রাধাপদ জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নে গোড্ডারাপাড় বটতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আঞ্চলিক ভাষায় গ্রামীন ও নৈতীক ঘটনা নিয়ে কবিতা লিখেন এবং তা গ্রামে গ্রামে জলশায় শুনিয়ে যে অর্থ পান তাই দিয়ে সংসার চালান। বেশ কিছুদিন আগে তার ছেলের সঙ্গে আরেক শ্রমিকের টাকা পয়সা নিয়ে দ্বন্দ তৈরি হয়। সেই জের ধরে গত শনিবার সকালে কবির ওপর হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়। বর্তমানে তিনি নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলার ঘটনায় রোববার কবির ছেলে যুগল চন্দ্র রায় বাদী হয়ে নাগেশ্বরী থানায় দুই জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, ৩৫ বছর বয়সী রফিকুল ইসলাম ও ৪৫ বছর বয়সী কদুর রহমান। মামলার পর দুইদিন অতিবাহিত হলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করনি পুলিশ।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের মাদাইখাল গোদ্দার পাড় এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছর বয়সী চারণকবি রাধাপদ রায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাড়িঘর বিক্রি করে তিনি চলে যান ভারতে। যুদ্ধ শেষে ভারতে কেনা বাড়ী বিক্রি করে আবারও ফিরে আসেন বাংলাদেশে। একসময় পরিবারের প্রয়োজনে ছেলেসহ ঢাকায় গিয়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ নেন। সেখানে থাকা অবস্থাতেই তার কবিতা লেখা শুরু। বয়সের ভারে তিনি গ্রামে চলে আসলেও তার ছেলে রয়ে যায় ঢাকাতে। সেখানে ছেলেও রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। ছেলে মাধবকুমারের সঙ্গে ৫০০ টাকা নিয়ে কয়েক মাস আগে প্রতিবেশী আরেক শ্রমিকের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর মাধবকুমার বাড়িতে আসলে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাধাপদ রায়ের ছেলে মাধবকুমারকে শায়েস্তা করতে প্রতিবেশী রফিকুল ও তার ভাই কদুর রহমান তাদের বাড়িতে যান। সেখানে মাধবকুমারকে না পেয়ে রাধাপদ রায় ও তার স্ত্রীকে অকথ্য ও বর্ণবাদী ভাষায় গালিগালাজ করে তারা। এতে প্রতিবাদ জানায় তারা (রাধাপদ রায় ও তার স্ত্রী)। তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান রফিকুল ও কদুর রহমান।
কিন্তু ওই ঘটনার প্রায় সাত মাস পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে রফিকুল ও কদু রাধাপদ রায়কে বিলে মাছ ধরার সময় হঠাৎ পেছন থেকে আঘাত করে। এ সময় নির্মমভাবে লাঠি দিয়ে তার শরীরে এলোপাতারি আঘাত করে। এ সময় তার আত্নচিৎকারে স্থানীয়রা তাকে নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন চারণকবি রাধাপদ রায়কে দেখতে যান ও তাকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
আহত চারণকবি রাধাপদ রায় বলেন, ‘শনিবার সকালে বাড়ির পাশের ডুবুরির ব্রিজের পাড়ে মাছ ধরার সময় রফিকুল হঠাৎ করে আমার ওপর হামলা চালায়। আমার ঘাড়ে ও পিঠে বেধম মারেন। পিঠের অনেক স্থানে ফেটে ক্ষত হয়েছে। কি কারণে হামলা করেছে তা জানি না। তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। তবে মাস কয়েক আগে রফিকুলের বড় ভাই কদুর সঙ্গে একটা বিষয় নিয়ে তর্ক হয়। তার বড় ভাইয়ের ইন্ধনে সে এটা করতে পারে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই আমি।’
কবির ছেলে জুগল চন্দ্র রায় বলেন, ‘তারা বাবাকে অমানুষিকভাবে মারধোর এবং মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। আমরা এই বর্ণবাদি আচরণ ও ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
প্রেসক্লাব নাগেশ্বরীর সভাপতি লিটন চৌধুরী বলেন, ‘একজন চারণকবি ও বয়বৃদ্ধ নিরিহ মানুষকে এভাবে পেটানোর ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। তিনি একজন স্বভাব কবি। সাদা মনের মানুষ। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাহেব আলী জানান, ‘রাধাপদ রায়কে ফিজিক্যালি এ্যাসাল্ট করা হয়েছে। তার পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ব্যাথা আছে।’
পুলিশ সুপার আল আসাদ দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন। এবং ব্যক্তিগত ঘটনাটি যারা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:নাটোরের লালপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের মামলায় ১৯ বছর পর এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে আরও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম মঙ্গলবার দুপুরে এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত শাহানুর লালপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আসামি বর্তমানে পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ১২ জুলাই রাতে লালপুরে শাহানুর এক শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। ওই সময় শিশুটির চিৎকার শুনে বাবা-মা ছুটে এলে সে তাদেরকে ঘটনার কথা জানায়।
পরে ২৬ জুলাই ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শাহানুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
আদালত লালপুর থানা পুলিশকে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়। ওই সময়ে থানার উপপরিদর্শক মমিনুল ইসলাম তদন্ত শেষে ওই বছরের ২২ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ওই বছরই মামলাটি বিচারের জন্য আদালতে আসে। কিন্তু মামলা চলাকালীন পুরোটা সময় সাক্ষীরা আদালতে আসতে গড়িমসি করেন যার ফলে ১৯ বছরে মাত্র ৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়।
আদালতের বিশেষ সরকারি কৌসুলি আনিসুর রহমান বলেন, ‘মামলার বাদী দীর্ঘদিন আদালতে হাজির হননি। এছাড়া এই মামলায় মাত্র চারজন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। ওই চারজন সাক্ষীদের দেয়া সাক্ষ্য সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। বর্তমানে আসামি পলাতক রয়েছেন।’
ঢাকার উপকণ্ঠ সাভারে একই পরিবারের শিশু ও মা-বাবাকে জবাই করে হত্যার ঘটনার দুইদিন পর রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) ।
মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া পেশায় কবিরাজ এক দম্পতিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে বাহিনীটি।
র্যাব জানিয়েছে, চুক্তিমত কবিরাজির ফির ৯০ হাজার টাকা না পেয়েই একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করেছে কবিরাজ ও তার স্ত্রী। কবিরাজ সাগর আলী ইতোপূর্বেও একই কায়দায় মাত্র ২০০ টাকা না পেয়ে টাঙ্গাইলে একই পরিবারের চারজনকে হত্যা করে গ্রেপ্তারের পর জামিনে ছিলেন বলেও জানান র্যাব।
সোমবার রাতে গাজীপুর শফিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, টাঙ্গাইল জেলার ৩১ বছর বয়সী সাগর আলী ও তার স্ত্রী সহযোগী জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার ২৫ বছর বয়সী ঈশিতা বেগম।
র্যাব জানায়,৩০ সেপ্টেম্বর আশুলিয়ার জামগড়া ফকিরবাড়ী মোড় এলাকায় তাদের ফ্ল্যাট থেকে বাবুল হোসেন ওরফে মোক্তার, তার স্ত্রী সহিদা বেগম ও ১২ বছরের সন্তান মেহেদী হাসান জয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানায় ভুক্তভোগীর পরিবার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে। তারপর থেকেই খুনিদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজদারী শুরু করে র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে র্যাব দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৪-এর একটি আভিযানিক দল অপরাধীদের সনাক্ত করে। পরে গাজীপুরের শফিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাগর ও তার স্ত্রীকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছে থেকে নিহত বাবুল হোসেনের লুটকৃত আংটি উদ্ধার করা হয়। পরে তারা প্রাথমিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, প্রথমে অর্থের লোভে ও পরবর্তীতে কাঙ্খিত অর্থ না পেয়ে ক্ষোভ থেকেই তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী বাবুল আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকার একটি ভেষজ ঔষধের দোকানে নিজের শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় পাশেই চায়ের দোকানে চা খাওয়া কবিরাজ সাগর বাবুলের কথোপকথন শুনতে থাকে। ওই ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসা বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করেও নিহত বাবুল কোন ফলাফল পাননি বলে জানতে পারেন হত্যাকারী সাগর। পরে কৌশলে সাগর বাবুলকে ডেকে নিয়ে আসে। পরে কথাবার্তায় জানতে পারে যে, বাবুলের ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ ও আস্থা রয়েছে। তখন বাবুল তার ও তার পরিবারের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার কথাও সাগরকে জানান।
র্যাব আরও জানায়, সাগর ও তার স্ত্রী ঈশিতা মিলে সমস্যার সমাধান করে দিবে বলে ভিকটিমকে আশ্বাস প্রদান করে। কবিরাজি চিকিৎসা বাবদ তাদের মধ্যে ৯০ হাজার টাকার চুক্তি হয়। কথামতো, সাগর ও তার স্ত্রী গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে ঔষধসহ ভিকটিমের জামগড়ার বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করবে বলে জানায়। পরে ওই দিন তারা পরিকল্পণা করে যে, ভুক্তভোগীর পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করবে তারা।
পরিকল্পণা মত সাগর গাজীপুরের মৌচাক এলাকার একটি ফার্মেসি থেকে ১ বক্স (৫০টি) ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে বাবুলদের বাসায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক পরিচয়ের পর সাগরের স্ত্রী ঈশিতা তাদের সমস্যার কথা শুনে এবং ইসবগুলের শরবতের সঙ্গে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়। পরে মোক্তার, তার স্ত্রী ও তার ছেলে ঘুমিয়ে পড়লে তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলে আসামিরা। এরপর তারা বাবুলের মানিব্যাগ, তার স্ত্রীর পার্স ও বাসার অন্যান্য স্থানে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রীর জন্য তল্লাশি করে মাত্র ৫ হাজার টাকা পায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাগর ও তার স্ত্রী ঈশিতা বটি দিয়ে প্রথমে বাবুলের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে।
পরবর্তীতে অপর কক্ষে বাবুলের ছেলে ও স্ত্রীকে একই বটি দিয়ে পর্যায়ক্রমে কুপিয়ে হত্যা করে। গ্রেপ্তাররা তাদের সকলের মৃত্যু নিশ্চিত করে ভিকটিম মোক্তারের হাতে থাকা আংটিটি নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা উভয়ে ভিন্নপথে রিকশাযোগে গাজীপুরের মৌচাকে তাদের ভাড়া বাসায় আসে এবং সেখানেই অবস্থান করতে থাকে।
উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি মিডিয়া ও আশেপাশের এলাকায় ব্যাপকভাবে প্রচার হলে তারা দুইজন একসঙ্গে আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাবের মিডিয়া ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার মঈন জানান, ‘গ্রেফতারকৃত সাগর মাদকাসক্ত এবং সে বিভিন্ন পেশার আড়ালে চুরি ও ছিনতাই করে। ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ২০০ টাকার জন্য একই পরিবারের ৪ জনকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে একই কায়দায় গলাকেটে হত্যা করে সে। ওই ঘটনায় সে র্যাব-১২ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে সে প্রায় সাড়ে ৩ বছর কারাভোগ করে সম্প্রতি জামিনে মুক্ত ছিল। দীর্ঘদিন জেলে থাকায় তার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। তাই সে রাজমিস্ত্রি, কৃষি শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে ঢাকা, সিলেট ও টাঙ্গাইলে অবস্থান করে সুযোগ বুঝে চুরি ও ছিনতাই করতো। সে একটি জেলায় বেশকিছু দিন অবস্থানের পর স্থান পরিবর্তন করে অন্য জেলায় গমন করতো। এছাড়াও সে অবৈধ পথে গত জুলাই মাসে পার্শ্ববর্তী দেশে গিয়ে ২০-২৫ দিন অবস্থান করে আগস্ট মাসে দেশে ফিরে কুমিল্লায় কিছুদিন অবস্থান করে। পরবর্তীতে ২৬ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তার ভাড়া বাসায় এসে বসবাস শুরু করে।’
তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি বিষয় প্রক্রিয়াধীন।
বাবুল হোসেন ওরফে মোক্তার ও তার স্ত্রী সহিদা বেগম আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তাদের সন্তান মেহেদী হাসান জয় স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা করতো। মোক্তার ও তার স্ত্রী চাকুরীর উদ্দেশ্যে সন্তানসহ ঠাকুরগাঁও হতে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য