প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধ এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের সুযোগ তৈরিতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ছয় সদস্য।
কংগ্রেস সদস্য বব গুড ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২ জুন প্রকাশ করেন। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী অন্য কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন ও কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।
চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস ও জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে আসা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, বাক-স্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের ওপর হামলার’ কথা বলেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শত শত উদাহরণ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও তাদের প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করেছে। যাতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অস্বীকার করেছে।
‘সরকার তার নাগরিকদের ওপর নির্যাতন করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সাংবাদিকদের কারাগারে বন্দি করেছে, বিরোধীদের গুম করেছে এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের লাঞ্ছিত করেছে বা হত্যা করেছে। এ ঘটনা শুধু তার রাজনৈতিক বিরোধীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; জাতিগত এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিক্ষোভ করেছে, যা হাসিনা সরকারের পরিবর্তনের জন্য জনগণের একমাত্র আশা। এর জবাবে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করেছে, এমনকি হত্যা করেছে।
‘জার্মানির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা নেত্রা নিউজের সাম্প্রতিক তদন্তে বলা হয়েছে, র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুমের এসব ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া সম্ভব ছিল না।’
কংগ্রেস সদস্যরা চিঠিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এক বছরেরও বেশি সময় আগে র্যাবকে একটি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য নৃশংসতার জন্য দায়ী একাধিক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শেখ হাসিনার সরকারের সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণকে ধীর করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি। উল্টো তারা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থে আঘাত করার জন্য চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:লন্ডনে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনার বক্তারা মেরিন একাডেমিতে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করাসহ মেরিটাইম শিল্পে নারীদের উৎসাহিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনে (আইএমও) ‘এমপাওয়ারিং উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যান্ড ওশান ডিপ্লোম্যাসি’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সূত্র: ইউএনবি
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি আইএমও-তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং উইমেন ইন ডিপ্লোম্যাসি নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডিএন), লন্ডনের সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, আইএমও-তে নিয়োজিত স্থায়ী প্রতিনিধি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞসহ ১০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।
বৈশ্বিক সামুদ্রিক শিল্পে নারীদের কম উপস্থিতির কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার তাসনিম বলেন, বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ২ মিলিয়ন সনদপ্রাপ্ত নাবিকের মধ্যে নারী মাত্র ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। অন্যদিকে ক্রুজ শিল্পে শ্রমশক্তির মাত্র ২ শতাংশ নারী।
হাইকমিশনার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেরিন ইন্ডাস্ট্রিতে নারী ক্যাডেট নিয়োগের দূরদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য গর্ব বোধ করি। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নেভিগেশন অফিসার, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এমনকি ক্যাপ্টেনের মতো সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট পদসহ বিভিন্ন ভূমিকার জন্য বার্ষিক ১০০ জনেরও বেশি মহিলা নাবিক নিয়োগ করা হয়।
‘এই রূপান্তরমূলক প্রচেষ্টাগুলো ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষ-প্রধান সামুদ্রিক শিল্পে লিঙ্গ বৈচিত্র্যের প্রচারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।’
দূত নারী-পুরুষ সমতা বাড়াতে ও সামুদ্রিক খাতে নারীদের কণ্ঠ জোরদার করতে বিআইএমসিওসহ আইএমও সচিবালয়, আইএমও-এর সহযোগী সদস্য, উইমেনস ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউআইএসটিএ) ইন্টারন্যাশনাল, উইমেন ইন মেরিটাইম অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউআইএমএএস) এবং নেতৃস্থানীয় শিপিং শিল্প সমিতিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় কাজ করার জন্য ডাব্লিউডিএন-এর দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী নারী নাবিকসহ নাবিকদের অবদানের ওপর বাংলাদেশ হাইকমিশনের তৈরি একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়, যা অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করে ও প্রশংসিত হয়।
উচ্চ পর্যায়ের এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এক্সটারনাল রিলেশনস ডিভিশনের ডিরেক্টর ডোরোটা লস্ট সিমিনস্কা, যুক্তরাজ্যে মালদ্বীপের হাইকমিশনার ড. ফারাহ ফয়জল, জর্জিয়ার আইএমও-এর রাষ্ট্রদূত ও জনসংযোগ সোফি কাস্ত্রাভা, অ্যান্টিগুয়া ও বারমুডার হাইকমিশন কারেন-মাই হিল ওবিই, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ফর শিপিং অ্যান্ড মেরিটাইম কেনিয়ার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি ডব্লিউ কারিগিথু, আইএমওর মার্শাল আইল্যান্ডের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও কার্গোস অ্যান্ড কন্টেইনার ক্যারেজ অন আইএমও সাব-কমিটির চেয়ার মেরিয়ান অ্যাডামস, আইএমওতে আর্জেন্টিনার জনসংযোগ এবং ইউএস জারেড ব্যাংকসের জনসংযোগ ফার্নান্দা মিলিশে, সৌদি আরবের এপিআর হায়াত আল ইয়াবিস এবং এডিটর অব ম্যাগাজিন লন্ডনের সম্পাদক এলিজাবেথ স্টুয়ার্ট।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।
সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মেয়র আতিকুল ইসলামের মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হয়। পরে সম্মতি প্রদান করলে ডিএনসিসি মেয়রকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে চূড়ান্তভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। খবর বাসসের
জাতিসংঘের মহাসচিব তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, আন্তঃসরকার ও জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের সম্পৃক্ততা জোরদার করার ক্ষেত্রে এই উপদেষ্টা পরিষদের সময়োপোযোগী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এবং আধুনিক শহর গড়তে স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে এই উপদেষ্টা পরিষদ করণীয় বিষয় নির্দিষ্টকরণে ভূমিকা রাখবে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, উপদেষ্টা পরিষদ স্থানীয় এবং আঞ্চলিক সরকারের সংশ্লিষ্টতা এবং কার্যকর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দেবে, সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য, আমাদের বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় সংশোধনে ভূমিকা রাখবে। জাতীয় পর্যায়ে যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ এবং জাতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারগুলির ধারাবাহিকভাবে যে ভূমিকা পালন করা উচিত এবং বৈশ্বিক পদক্ষেপেও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ অবদান রাখবে।
উল্লেখ্য এই উপদেষ্টা পরিষদে মোট সদস্য ১৫ জন। এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে দুইজন সদস্য হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের মেয়র অ্যাবি বিনায়। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে-ইউরোপ থেকে তিন জন, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে তিনজন, উত্তর আমেরিকা থেকে দুইজন, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চল থেকে তিনজন, মধ্য প্রাচ্য ও মধ্য আফ্রিকা থেকে দুইজন।
সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান পৌঁছেছে।
সড়কপথে চালানটি নেয়ার জন্য শুক্রবার ভোর থেকে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শিথিল করা হয়। বন্ধ রাখা হয় বাস চলাচল।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় শুক্রবার দুপুর সোয়া একটার দিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো প্রবেশ করে বলে নিশ্চিত করেন পাবনার এসপি আকবর আলী মুনসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয় ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো। পথে গাজীপুরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে কিছুক্ষণ থেমে থাকে। পরে সেখান থেকে সাতটার দিকে গাড়ি পাবনার দিকে রওনা দেয়।
ঢাকা থেকে রূপপুর পর্যন্ত সড়কে ফাঁকে ফাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশি তল্লাশি চৌকি বসানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
একটি সূত্র জানায়, রূপপুর প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এ ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।
দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে রূপপুরে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও জোরদারে আন্তরিকতা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন নির্দেশনা দেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশের ভাবমূর্তি আরও উন্নত করতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, পেশাদারত্ব, সততা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন।’
বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শহিদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু কর্নারসহ দূতাবাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দূতাবাসে পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী প্রথমে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭ সালে এই চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০০০ সালে নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সালাউদ্দিনসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় পরিবারের সঙ্গে মায়ের জন্মদিন পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মায়ের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি।
ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ভার্জিনিয়ায় আমার গলফ ক্লাবে পরিবারের সঙ্গে মায়ের জন্মদিনের নৈশভোজ।’
ছবিতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার দুই পাশে পরিবারের অন্য সদস্যরা। পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন জয়। জন্মদিনে তারা একসঙ্গে রাতের খাবার খান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দেশে নেয়া হয় বিভিন্ন কর্মসূচি। কেন্দ্রীয়ভাবে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, বাদ আসর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
একই সঙ্গে সকালে মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধ মন্দিরে বৌদ্ধ সম্প্রদায়, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে ও বেলা ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে তার দল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে পৌঁছান। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ ও দূতাবাসের কর্মীদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির এ অবস্থানের কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি এক সাংবাদিক মিলারের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত পিটার হাস তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। শুধু তার নিরাপত্তাই নয়, এমনকি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন তিনি। তার এ উদ্বেগ যথার্থ। কারণ বর্তমান সরকারের অধীনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতের ওপর কয়েকটি হামলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন কি না, তাও জানতে চাওয়া হয় মিলারের কাছে।
উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ দূতাবাস বা সেখানকার কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিশদ আলোচনায় যাচ্ছি না। আমি বলব যে, আমাদের কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা আমাদের কাছে অবশ্যই সর্বোচ্চ গুরুত্বের বিষয়…কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেশন অনুযায়ী, সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণের সুরক্ষা এবং কোনো কর্মীর ওপর হামলা প্রতিহতের বিষয়টি নিশ্চিতে সব কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়ার বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে স্বাগতিক দেশগুলোকে।
‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র এবং আমরা আমরা আশা করব যে, (বাংলাদেশ) সরকার দেশটিতে থাকা আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র) পাশাপাশি সব বিদেশি মিশন ও কর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’
আরও পড়ুন:সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে দেশ এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে আমরা এগিয়ে যাব অগ্রগতির দিকে, উন্নয়নের দিকে। দেশ ধাবিত হবে সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে। আমার সেই অগ্রযাত্রায় শামিল হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নৌকাবাইচ আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির একটি অনন্য ঐতিহ্য। বাংলার প্রতিটি আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি সঠিকভাবে লালন করা গেলে এগুলো বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যেরও অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘বাঙালি বীরের জাতি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। তিনি বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আমৃত্যু লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন।
‘স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাঙালিকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেছিলেন। সে লক্ষ্যে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সংবিধানও আমাদের উপহার দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমরা জাতির পিতাকে হারাই। এটা ছিল জাতি হিসেবে আমাদের চরম ব্যর্থতা।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সকল মেগা প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ হয়েছে। জনগণ এর সুফল পেতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘পাবনার উন্নয়নে নতুন গতি এসেছে। ২০০৮ সালে পাবনায় মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিনে কোনো হাসপাতাল ছিল না। আজ সকালেই পাবনার ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজের শুভসূচনা করা হয়েছে।
‘পাবনা থেকে ঢাকা রেল চলাচল এ মাসেই শুরু করার কথা থাকলেও প্রশাসনিক ও কারিগরি কারণে তা সম্ভব হয়নি, তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা শুরু হবে। এ ছাড়াও ইছামতি নদী সংস্কার ও পুনরায় খননের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনায় ৫০০ শয্যা হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য