দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় এক মেয়র প্রার্থী ও ৪০ কাউন্সিলর প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত নোটিশ সিলেট বিএনপির ওই নেতাদের পাঠানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ব্যক্তি স্বার্থে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিতে হবে।
প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী নোটিশ বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত দলের। এই সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিন রিমনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকসানা বেগম শাহনাজ, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক উসমান হারুন পনির, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. কামাল মিয়া, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন- সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিম আহমদ রনি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন ও বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম মাসুম।
এ ছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিমন। তিনি বলেন, ‘আমি বর্তমানে গণসংযোগে ব্যস্ত, এসব নোটিশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।’
এসময় তিনি দলীয় পরিচয়ে প্রার্থী হননি বলেও জানান।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আজ রাতের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হোয়াটসঅ্যাপে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। যাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যাবে না, তাদের সশরীর রোববার চিঠি পৌঁছে দেয়া হবে।’
যাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে জবাব পাওয়ার পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি বলে জানান তিনি।
২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে ভোট।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুরে স্মার্ট কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। খবর ইউএনবির
তিনি বলেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।
ইসি আনিছুর বলেন, কেন্দ্রগুলোতে ভোট হবে ব্যালট পেপারে। এবার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচনের দিন সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।
উদ্বোধনের প্রথম দিনে ৩০জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্মার্টকার্ড দেয়া হয়। এই উপজেলার একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।
ইসি আনিছুর বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচান কমিশন সব ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এ জন্য সব দলের সঙ্গে সংলাপের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। আমাদের সঙ্গে সংলাপের পর নির্বাচন কমিশনের ওপর সবার আস্থা আরও দৃঢ় হবে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া চিঠির জবাব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলিকে তিনি বলছেন, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব সহায়তা নিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
২৩ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত চিঠিতে সিইসি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গত ১৯ সেপ্টেম্বর আমি আপনার চিঠি পেয়েছি, যেখানে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব সহায়তা নিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব বলে আপনাকে আশ্বস্ত করছি। সরকারও বারবার নিজের জায়গা থেকে সহায়তা করার বিষয়ে অঙ্গীকার করছে। তা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণ সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে বিশ্বাসযোগ্যতা যোগ করবে।’
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘যাই হোক না কেন, আমি বিশ্বাস করি যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তবুও আসন্ন সাধারণ সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টাকে যেভাবেই সমীচীন বলে মনে করা হোক না কেন, সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’
এর আগে চার্লস হোয়াইটলি এক চিঠিতে সিইসিকে লেখেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাজেট স্বল্পতার কারণে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না ইইউ। চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা পরিষ্কার নয় যে, নির্বাচনের সময় সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয় শর্তাবলীয় পূরণ হবে কি না। তবে তারা পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠালেও সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অন্যান্যভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সহায়তা দেবে এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল আগামী নভেম্বরে ঘোষণা করা হতে পারে এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণ হতে পারে।
২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন ভোটগ্রহণ শেষে মাত্র দুই ভোটের ব্যবধানে আব্দুল আহাদকে মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটানিং কর্মকর্তা। তবে ওই ফল মেনে নিতে পারননি পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ। ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ আদালতে মামলা করেন তিনি।
অবশেষে নির্বাচনের প্রায় আড়াই বছর পর ফল পাল্টে পরাজিত মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদকে চার ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার সিলেট যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আরিফুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
আব্দুল আহাদ ও ফারুক আহমদ দুজনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।
এসব তথ্য জানিয়ে মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন, ‘৫টি ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপার পুনরায় গণনা চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন ফারুক আহমদ। পরে আদালত বাদীপক্ষের সাক্ষী ও বিবাদীপক্ষের সাফাই সাক্ষী গ্রহণ শেষে পুনরায় ভোট গণনার নির্দেশ দেন। পুনর্গণনায় ফারুক আহমদ ৪ ভোট বেশি পান।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ফলাফলে কারচুপির অভিযোগে করা মামলা দীর্ঘদিন চলার পর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় আদালতে ভোট গণনা করা হয়। এতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদের বৈধ ভোট হয় ২০৭১ আর আব্দুল আহাদের বৈধ ভোট হয় ২০৬৭। বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক ফারুক আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় প্রদান করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আদালতের ওয়েবসাইটে রায়ের তথ্য প্রকাশ হয়।
এর আগে ভোটের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফলে আবদুল আহাদের বৈধ ভোট ঘোষণা করা হয় ২ হাজার ৮৩টি এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ফারুক আহমদের বৈধ ভোট ঘোষণা করা হয় ২ হাজার ৮১টি।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিজয়ী ফারুক আহমদ বলেন, ‘আদালত যে মানুষের শেষ ভরসা, তাই আজ প্রমাণ হলো। রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমি আইনি লড়াই করেছিলাম।’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল আহাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে তার আইনজীবী সামসুল হক জানান, রায় প্রকাশের বিষয়ে তিনি অবগত নন। আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে রায় গেলে তিনি পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন। যদি তিনি মনে করেন উচ্চ আদালতে যাবেন, তাহলে সেটা তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আব্দুল আহাদ পান ২০৮৩ ভোট আর ফারুক আহমদ পান ২০৮১ ভোট। এরপর কারচুপির অভিযোগ তুলে জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ কেন্দ্র, মধুদত্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়, আইডিয়াল কেজি স্কুল কেছরী, মাইজকান্দি মাদ্রাসা কেন্দ্র ও জকিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার জন্য ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তিনি।
সরকার একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ কে এলো আর কে গেলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।
শুক্রবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মানা-বে ওয়াটার পার্ক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঢাকাকে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ নিয়ে নানা মহলে আলোচনা চলছে।
এ আলোচনার সূত্র টেনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ কে এলো আর কে গেলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার চেষ্টা করছি। সে নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে যাবতীয় সহযোগিতা করা হবে।’
‘যারা মনে করে বিদেশি পর্যবেক্ষক না এলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, সেটি তাদের ভুল ধারণা। আমরা আশা করছি, অচিরেই তাদের এই ভুল ধারণা কেটে যাবে।’
সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে ব্যাপক রদবদলের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে বদলি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন এগিয়ে আসার কারণে বদলি বেশি হচ্ছে, এরকমটা ভাবার সুযোগ নেই।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবুজাফর রিপন, মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুমন দেব প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিদেশি পর্যবেক্ষক আসুক আর না আসুক, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটা হচ্ছে আমাদের। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকারসহ যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। আমাদের নির্বাচন কেউ পর্যবেক্ষণ করল কি করল না- এতে কিছুই আসে যায় না। এটি নিয়ে বিএনপিকেও আর দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ দেয়া হবে না।’
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন উপস্থিত ছিলেন।
ভারতে যখন নির্বাচন হয়, তখন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা সেখানে যান কি না— এমন প্রশ্ন রেখে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আর সেখানে (ভারতে) এটি নিয়ে এত কথাবার্তা হয়? কিংবা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যখন নির্বাচন হয়, সেখানে কি আমাদের দেশ থেকে কিংবা অন্য কোনো দেশ থেকে পর্যবেক্ষক যায়? যায় না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেই নির্বাচন আসলে কে পর্যবেক্ষণ করল, কে করল না- এগুলো নিয়ে নানা মাতামাতি হয়। যদি বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসেন, তাহলে তাদের স্বাগত জানাই, না আসলেও কোনো অসুবিধা নাই। কেউ পর্যবেক্ষণ করল কি করল না এতে কিছুই আসে যায় না।
‘ইতোমধ্যে আমাদের দেশে স্থানীয় সরকারসহ যে সমস্ত নির্বাচন হয়েছে সেগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। আগামী নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এবং নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘ইইউ ছোট আকারের পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে বলেছে। তাদের বাজেট স্বল্পতার কথাও তারা চিঠিতে উল্লেখ করেছে। ইইউর পর্যবেক্ষক যে আকারেই আসুক বা না আসুক আমাদের দেশে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম আছে, সার্কভুক্ত বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবে। সুতরাং আমাদের নির্বাচন আমরাই করব, আমাদের নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।’
আসন্ন নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ দল না পাঠিয়ে একটি ছোট দল পাঠাবে বলে গতকাল জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
তিনি বলেন, ‘ইইউ জানিয়েছে, তারা ইসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। তারা আমাদের দেশে এসে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে। নির্বাচনের সময় তাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ কারণে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না। কিন্তু দেশে এখন একটি ছোট দল রয়েছে। আমাদের দেশে ইইউর যারা আছে তারা এটি করবে কি না সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।’
তিনি বলেন, ইইউ নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। তারা সিইসির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন বলেও জানান তিনি।
দীর্ঘ ৮ বছর পর আগামী ১৬ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সিনেট নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবু হাসান বৃহস্পতিবার তার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনের সাময়িক ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ২৪ সেপ্টেম্বর। সাময়িক ভোটার তালিকার ব্যাপারে আপত্তি জমার সময় ২৬ সেপ্টেম্বর। এ ছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ২৭ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ২ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৪ অক্টোবর ও বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ হবে ৫ অক্টোবর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ অক্টোবর ও ৯ অক্টোবর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অফিসার ক্লাবে ভোটগ্রহণ হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘ভোটগ্রহণে যতটুকু প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা নেয়া হবে। নির্বাচনের দিন যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ১৯(১)(জে) ধারা অনুযায়ী সিনেট সদস্য হিসেবে ৩৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়ে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ তিন বছর হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচিত সব সদস্য সিনেটর হিসেবে বহাল থাকেন।
২০১৫ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ জাবির সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছিল।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বাজেট স্বল্পতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তাদের পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে পাঠাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
বৃহস্পতিবার ইসি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। খবর ইউএনবির
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে একটি ই-মেইল পেয়েছেন।
ইসি সচিব বলেন, ‘ইইউ জানিয়েছে, তারা ইসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। তারা আমাদের দেশে এসে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে। নির্বাচনের সময় তাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ কারণে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না। কিন্তু দেশে এখন একটি ছোট দল রয়েছে। আমাদের দেশে ইইউর যারা আছে তারা এটি করবে কি না সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।’
তিনি বলেন, ইইউ নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। তারা সিইসির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন বলেও জানান তিনি।
বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন অনুসন্ধান মিশনের (এক্সএম) সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের ফলোআপ হিসেবে একটি চিঠি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
চলতি বছরের জুলাই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশন নির্বাচন কমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিল।
ঢাকায় ইইউ মিশনের মতে, নির্বাচন অনুসন্ধান মিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল আসন্ন সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ইইউ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের ‘পরামর্শ, উপযোগিতা ও সম্ভাব্যতা’ মূল্যায়ন করা।
এই মিশনের কাজ ছিল প্রধান নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের পরিধি, পরিকল্পনা, বরাদ্দ, রসদ ও নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা।
ইইউ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে অবস্থানকালে সরকারি প্রতিনিধি, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য