অজাতশত্রু রাজনীতিক আফছারুল আমীনের মৃত্যু দলের জন্য ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সদ্যপ্রয়াত চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীনের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আফছারুল আমীন একজন অজাতশত্রু মানুষ ছিলেন। তার অকালমৃত্যুতে আমাদের দল, বিশেষ করে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
‘ডা. আফছারুল আমীন যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে কারাগারে গেছেন, সেখান থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তার নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম শহরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তিনি অনেক কাজ করেছেন, যা থেকে মানুষ উপকৃত হচ্ছে।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭২ বছর বয়সে মারা যান শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আফছারুল আমীন।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আফছারুল আমীন ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য থাকাকালে নৌপরিবহন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
রাজধানী ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর বড় আকারের সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে এ সমাবেশ আয়োজন করবে বলে জানিয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার রাতে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণার পর ঢাকায় এটি হবে আওয়ামী লীগের প্রথম সমাবেশ। ভোট বর্জন করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে হরতাল ও অবরোধ করছে। আর আওয়ামী লীগ ও তার শরিকসহ জাতীয় পার্টি ও অন্য দলগুলো নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস ও পেট্রোল বোমা হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে এ সমাবেশ ডাকা হয়েছে। নিহত ও আহত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে সমাবেশ দ্রুত বিচার চাওয়া হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
২০২২ সালের এ দিনে নয়া পল্টনে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিএনপি। দলটির ওই কর্মসূচিকে ঘিরে রাজনীতিতে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। নয়া পল্টনে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে পরে সায়েদাবাদের গোলাপবাগে সমাবেশ করেছিল বিএনপি।
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে মৌখিকভাবে ঢাকা মহানগরের ওয়ার্ড-থানা পর্যায়ের নেতাদের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি এ দিন রাজধানীর মূল সড়ক ও প্রবেশমুখগুলোতে সর্তক অবস্থান নেবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ঢাকার প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, বুড়িগঙ্গা নদীতে থাকা দুই সেতুর মুখে অবস্থানে নেতাকর্মীরা থাকবেন বলে জানা যায়।
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ শুরু হচ্ছে আজ রোববার। ৩১ অক্টোবর থেকে এটি বিরোধী দলগুলোর নবম দফা অবরোধ কর্মসূচি। এই দফার কর্মসূচি শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার রাতে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দেশবাসী এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ পরিবহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতার বাইরে থাকবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিরোধী দলের দিনব্যাপী হরতাল শেষ হওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা আগে নতুন করে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বিরোধী দল যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে, তারাও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে।’
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে।
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর আধ ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। দ্রুতই তা নয়াপল্টনের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং মাঝপথে সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়।
নির্বাচন জমিয়ে তুলতে দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রেখেছে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে নেতাকর্মীদের উৎসাহ দিয়েছেন। আর দলীয় প্রধানের এ সিদ্ধান্তকে লুফে নিয়েছেন নির্বাচন করতে ইচ্ছুক দলের নেতাকর্মীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অর্ধশতাধিক আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রাপ্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে ধরাশায়ী হতে পারেন।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রায় সাড়ে চারশ’ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা দলের সভাপতির এমন নির্দেশনাকে ভোটের মাঠে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের সুযোগ হিসেবে দেখছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রংপুর-৫ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী জাকির হোসেন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দল অবশ্যই ত্যাগী-নিবেদিতদের মূল্যায়ন করে। কিন্তু অনেক সময় কৌশলগত কারণে মূল প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারে না। তারপরও দলের আদেশ শিরোধার্য মেনে নৌকাকে জেতাতে সর্বোচ্চ ঢেলে দিয়ে কাজ করে এসেছি। কিন্তু এবার সুযোগ এসেছে নিজের সক্ষমতা প্রমাণের। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এবার আওয়ামী লীগের তিন হাজার ৩৬২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর বিপরীতে নৌকার টিকেট পেয়েছেন ২৯৮ জন। বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে বাদ পড়েছেন ৭১ জন, যাদের মধ্যে ৬৩ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়াও মনোনয়নবঞ্চিত হেভিওয়েট নেতাদের অনেকেই এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতাই জনপ্রিয়। তারা পেশি, অর্থ বা অন্য শক্তিতে কুলাতে না পেরে দলের মনোনয়ন হারান। দল স্বতন্ত্র প্রার্থিতার সুযোগ রাখায় তারা এবার নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি কেন্দ্রকে বার্তাও দিতে পারবেন যে তিনিই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য।’
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ঢাকা-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ। আর এখানে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী হলেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
জানা যায়, শাহীন আহমেদ পেশি, টাকা এমনকি স্থানীয় সাংগঠনিক সক্ষমতায় শক্তিশালী। তিনি কামরুলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবেন।
অন্যদিকে ঢাকা-১৯ আসনে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর বিপরীতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ। তিনি এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং স্থানীয়ভাবে অনেক শক্তিশালী।
ঢাকা-৫ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন ওই আসনের চারবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল।
একইভাবে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত ফরিদপুর অঞ্চল ফরিদপুর-৪ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ। বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিক্সন চৌধুরী। যিনি এর আগের দুই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাফর উল্লাহকে পরাজিত করেছিলেন।
ফরিদপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী শামীম হক। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হা-মীম গ্রুপের মালিক এ কে আজাদ, যার সঙ্গে রয়েছে দলের একাংশ।
ফরিদপুর-১ আসনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান মনোনয়ন পেলেও চ্যালেঞ্জে পড়বেন সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনের কাছে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
ফরিদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব আকবর। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন নগরকান্দা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন, যিনি স্থানীয়ভাবে বেশ জনপ্রিয়।
জামালপুর-৪ আসনে আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানও মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর বিপরীতে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন জনপ্রিয় আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। নৌকা চেয়ে না পেয়ে এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন।
যশোর-৩ (সদর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম।
রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম।
বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে এবার প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন চিকিৎসক তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তিনি আওয়ামী লীগের বর্ষীয়াণ নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা হলেও রাজনীতি করেননি কখনোই। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির।
চাঁদপুর-৪ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়া।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-১২ আসনে সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বদলে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তবে মাঠ ছাড়ছেন না সামশুল হক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়বেন তিনি।
সিলেট-১ সদর আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
কুমিল্লা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া। তার পরিবর্তে এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে সুবিদ আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে গত তিন নির্বাচনে জয় পাওয়া আওয়ামী লীগের মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে এবার মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এখানে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রনজিত চন্দ্র সরকার। রতন এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সংসদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য।
তাদের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনে মাজাহারুল হক প্রধান, গাইবান্ধা-৪ আসনে মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, নওগাঁ-৪ আসনে এমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, রাজশাহী-৩ আসনে আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনে এনামুল হক, ঝিনাইদহ-৩ আসনে শফিকুল আজম খান, যশোর-৪ আসনে রণজিৎ কুমার রায়, সাতক্ষীরা-২ আসনে মীর মোশতাক আহমেদ রবি, বরিশাল-৪ আসনে পঙ্কজ নাথ, টাঙ্গাইল-৫ আসনে সানোয়ার হোসেন, গাজীপুর-৩ আসনে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে জয়া সেনগুপ্ত, হবিগঞ্জ-১ আসনে গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, চট্টগ্রাম-৪ আসনে দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-১২ আসনে শামসুল হক চৌধুরী এবং কক্সবাজার-১ আসনে জাফর আলম উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে নন্দিত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন সাহসী রাজনৈতিক নেতা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর লে মেরিডিয়েন হোটেলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিশিষ্ট লেখক ও রাজনৈতিক গবেষক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টনের লেখা ‘শেখ হাসিনা: দ্য মেকিং অফ অ্যান এক্সট্রাঅর্ডিনারি সাউথ এশিয়ান লিডার’ (Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি প্রমুখ।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচনের বিরল সুযোগ পেয়ে আমরা সবাই বেশ সম্মানিত। কেননা যার জীবনালেখ্য নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে, তিনি একজন অসাধারণ ও অমূল্য মানুষ। তিনি আর কেউ নন; আমাদের সবার প্রিয়, অতি পরিচিত, অতি আপন, দেশের মানুষের মধ্যমণি, নন্দিত প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের দেশ পরিচালনার একজন যোগ্য ও সাহসী রাজনৈতিক নেতা। তিনি শুধু বাংলাদেশেরই অসাধারণ একজন নারী নন, তিনি অত্যন্ত সাহসী রাজনীতিবিদ। পাশাপাশি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজ সমগ্র বিশ্বনেতার কাতারে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সারা বিশ্বে তার সফল কর্মের জন্য নন্দিত। আমরা আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুধু জাতীয়ভাবে বিবেচনা করব না। তিনি আজ বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিচরণ করছেন তার সাহসী সব সিদ্ধান্তের কারণে।’
স্পিকার বলেন, ‘এই বইটিতে লেখক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটবেলা থেকে কীভাবে ধাপে ধাপে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অতিবাহিত করেছেন এবং কীভাবে একজন সফল রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন- তার সঠিক তথ্য দারুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের মতো একটি ঘটনা যার জীবনে ঘটেছে, শুধু তিনিই বলতে পারবেন তার প্রতি নির্মমতা কতটা গভীর এবং কতটা বেদনাদায়ক। তারপরও শেখ হাসিনা এগিয়ে গেছেন এবং দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
বঙ্গবন্ধুর মতোই বাংলার মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা অপার। তিনি ’৭৫-এর সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়কে বুকে ধারণ করে, সেই নির্মমতাকে সঙ্গী করে দেশের হতদরিদ্র মানুষের জন্য তার বাবার অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। এটিই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। যে স্বপ্ন ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, তার সবই বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করবেন বলেই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে আসেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করেন। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে তিনি এ বাংলায় রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছেন এবং আস্তে আস্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করেছেন এবং পরবর্তীতে দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। এই যে মহাকর্মযজ্ঞ এবং দেশের মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন মানুষ, তার সম্পর্কে জানার জন্য অবশ্যই এমন সব বই দরকার।’
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এমন একটি বই সত্যিই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জাতীয় চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন এ বইটির আগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে বইটি লিখেছেন, সেটির জন্যও তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমি বলব- দুটি বই-ই আমাদের জন্য অমূল্য রচনা। ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষের জন্য বইগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্পদ হিসেবে আমাদের কাছে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
অনুষ্ঠানে বইটি লেখার স্মৃতিচারণ করে ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা এই বইটির আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি বই লেখার তাগিদ অনুভব করি। করোনাকালে আমার একজন পরিচিত মানুষ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন যে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই উপহার দেবেন। কিন্তু কোনোভাবেই জাতির পিতার ওপর লেখা একটি ভালো ইংরেজি বই পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর আমি শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই লেখার অনুমতি চাই। সেটি আমি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর মাধ্যমে জানাই। এরপর নানাভাবে অনেকের সহযোগিতা পেয়ে বইটি লিখে ফেলি। ওই বই লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনাকে অন্যভাবে আবিষ্কার করি। তখনই আমি তার ওপর আরেকটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। সেটিও আমি যথারীতি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিনকে জানাই।
‘তখন প্রধানমন্ত্রী জানান, তাকে নিয়ে বই লেখা লাগবে না; তার বাবাকে নিয়ে আরও কাজ যেন করি। কিন্তু ওই বইটি লিখতে গিয়ে আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীকে এত ঘটনাবহুল একজন মানুষ মনে হয়েছে, যা আমাকে বেশ আবেগতাড়িত করে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার একজন নেতা হিসেবে তিনি কাজ করছেন। এটি সারা বিশ্বকে জানাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বইটি লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনার বেশ সান্নিধ্য পেয়েছি। তিনি আমাকে বড় বোনের মতো স্নেহ দিয়েছেন, ছায়াও দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানের একটি বই করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমি তাই করেছি।’
‘এটি শুধু একটি বই নয়। একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জীবনে কী কী অধ্যায় পার করে আজকের জায়গায় এসেছেন, তার সবই জানা যাবে বইটি পড়লে। ১৯৭৫-এর পরবর্তী সময়ে একজন শেখ হাসিনা শুধু শোক নিরসনের মধ্য দিয়ে যাননি। তিনি সেই জীবনকে কীভাবে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেছেন এবং নিজেই নিজেকে কীভাবে তৈরি করেছেন- সব কথা আছে বইটিতে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর থেকে শুরু করে আজকের দিনটি পর্যন্ত তার সমগ্র জীবন বইটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়- একজন মানুষ হিসেবে শেখ হাসিনা কেমন, একজন মা হিসেবে, নেতা হিসেবে, এমনকি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কেমন- তার সবই আছে বইটিতে।’
‘Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader’ বই হাতে লেখকসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: নিউজবাংলা
ডা. মিল্টন বলেন, ‘তাই আমার প্রত্যাশা- বইটি দেশ এবং দেশের বাইরের সব মানুষের কাছে পৌঁছুক। এত ঘটনাবহুল ও বেদনাবহুল একজন মানুষের রাজনৈতিক সংগ্রামটা কেমন- তা জানতে হলে বইটি পড়তে হবে।’
‘যে শেখ হাসিনাকে চেনেনি, শেখ হাসিনাকে জানেনি, সে আসলে হতভাগা। শেখ হাসিনাকে জানা মানেই আজকের বাংলাদেশ এবং আজকের রাজনীতিকে চমৎকারভাবে অধ্যয়ন করা।’
জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সমন্বিত অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং কপ-২৮ বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. হাছান মাহমুদ। সূত্র: বাসস
ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুরে দুবাইতে কপ-২৮ সম্মেলনের সাইডলাইনে ‘রাইজিং উইথ দ্য টাইড: ট্র্যাকিং রিফর্মস ইন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার ফর এক্সিলারেটেড ডেভেলপমেন্ট-পজিটিভ ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্যভাবে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই আহ্বান জানান।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম এবং ২০টি ভালনারেবল দেশের জোট সিভিএফ-ভি ২০-এর বর্তমান চেয়ারম্যান ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো আডো অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফোরামের পরবর্তী চেয়ারম্যান বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে, ফোরামের থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর সায়মা ওয়াজেদ এবং প্রথম মহাসচিব মোহাম্মদ নাশিদ।
ঘানার প্রেসিডেন্ট এই ফোরামে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বের দুই মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “সিভিএফ-ভি ২০ ফোরামে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো সহনীয়তা ও সক্ষমতায় সমৃদ্ধ হয়েছে। সে সময়ে বৈশ্বিক জয়েন্ট মাল্টি ডোনার ফান্ড গঠন এবং দেশে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ প্রণীত হয়েছে।”
জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানের অধীনেই প্রতি বছর দেশের প্রয়োজন ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
‘বাংলাদেশ উচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ নয়, বরং এর অসহায় শিকার। তবু বঙ্গবন্ধু-কন্যার পরিকল্পনামাফিক ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের দেশ ৪০ শতাংশ সবুজ শক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে চলেছে।’
মন্ত্রী হাছান মাহমুদ পরে কপ-২৮ প্রেসিডেন্সি গোলটেবিল বৈঠকে ‘অ্যাক্সিলারেটিং ওয়াটার অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ বৈঠকে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি বাবা-মা, ছোট ভাই, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শনিবার সন্ধ্যা ৫টা ১৭ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিউজবাংলাকে এ খবর জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম মিলন।
তিনি জানান, দীপু চৌধুরীর সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক হলে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দীপুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য ১৯ নভেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বাবার সঙ্গে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন দীপু। অবশ্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তার বাবা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
টানা তিনবার নির্বাচন করে একবারও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেননি মানিকগঞ্জের ঘিওরের ৬০ বছরের মো. আব্দুল আলী বেপারী। অথচ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচনে লড়বেন তিনি।
হলফনামা থেকে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ আসনের এ এমপি প্রার্থী ঘিওর উপজেলার বেড়াডাংগা এলাকার কিয়ামুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের মাধ্যমে তার বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তার কাছে নগদ ২ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে।
আব্দুল আলী বেপারীর স্ত্রী গৃহিনী। সংসারজীবনে তাদের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে আর ছেলেরাও চাকরি করছেন। আব্দুল বেপারীর শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি স্বশিক্ষিত।
আব্দুল আলী বেপারী জানান, ইউপি নির্বাচনে মনের মতো প্রার্থী না পেয়ে তিনি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনের মতো প্রার্থী পাননি তিনি। ফলে মানিকগঞ্জ-১ আসনে নিজেই দাঁড়িয়ে গেছেন এমপি প্রার্থী হিসেবে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘জনগণ আমাকে ভোট দিলে পাস করব, না দিলে কিছু করার নাই; আমার ভোট তো আমি দিতে পারব! আসলে মনের মতো প্রার্থী না থাকায় আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার ভোট আমাকে দিতে পারলেই আমার আত্মতৃপ্তি। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি, যাচাই ঠিকঠাক থাকলে আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবই। কোটি কোটি টাকা দিলেও আমি সরে দাঁড়াবো না। কারণ নির্বাচন আমার কাছে ক্যান্সারের মতো হয়ে গেছে।’
নির্বাচনে আসার পিছনের কারণ তুলে ধরে আব্দুল আলী বেপারী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় রাস্তা না থাকায় তৎকালীন বিএনপির চীফ হুইপ খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কাছে যাই। রাস্তার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। তখন খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তিনি আমাকে বলেন- পারলে আমার মতো হয়ে দেখিয়ে রাস্তা করে নিও। সেই রাগ আর ক্ষোভে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছি, এখন এমপি প্রার্থী হয়েছি।’
স্বতন্ত্র এ প্রার্থীর বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় সময়ই মা ও আমরা পাঁচ ভাই-বোন বাবাকে না করেছিলাম। কিন্তু তিনি কথা শুনেন নাই। এমপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময়ও বুঝিয়েছি, তাতেও লাভ হয়নি। পরে মনোনয়নপত্রে আমি প্রস্তাবকারী ও আমাদের এলাকার লিটন ইসলাম সমর্থনকারী ছিলাম। মনোয়নপত্র জমা দেয়ার সময় পরিবারের কেউ সঙ্গে ছিল না। বাবার সঙ্গে শুধুমাত্র আমার ছোট ভাগিনা ছিল। বাবা কষ্ট করে আমাদের মানুষ করেছে। তাই বাবার কথার অবাধ্য হয় নাই।’
মন্তব্য