আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে এবারের বাজেট দেয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার সকালে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি লুটপাটের চ্যাম্পিয়ন ছিল। তাদের মুখে লুটপাটের কথা শোভা পায় না। আমরা তাদের থেকে বড় বাজেট দিতে পেরেছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জিডিপি ১০০ বিলিয়ন হতে সময় লেগেছিল ৩৯ বছর। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ৪০২ বিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষিকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমাদের দেশ কৃষি প্রধান হওয়ায় এখনও খাদ্য সংকটে পড়তে হয়নি।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে আজকে সবকিছুর দাম বেড়েছে। আমরা কাউকে কষ্ট দিচ্ছি না। বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। পৃথিবীতে যেভাবে পানির সংকট দেখা দিয়েছে, দেশেও সংকট দেখা দিতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর গুলশানের নদ্দায় বাসের ধাক্কায় নিহত অজ্ঞাত নারীর পরিচয় মিলেছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই নারীর ছেলেসহ স্বজনরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে এসে মরদেহটি শনাক্ত করেন।
নিহতের ৬৮ বছর বয়সী নারীর নাম সাহেরা খাতুন। তার স্বামী প্রয়াত জসীমউদ্দীন। তাদের বাসা বসুন্ধারা ভাটাড়ায়।
নিহত নারীর বড় ছেলে নাজিমুদ্দিন বলেন, আমার মা গত দুই দিন আগে আমার মেজো মামা নুরুজ্জামানের মধ্য বাড্ডার মোল্লাপাড়ার বাসায় যান চিকিৎসা করাতে। শুক্রবার সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে দুপুরে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তিনি বলেন, পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেন হৃদয় মায়ের ছবিটি তার ফেসবুক পেইজে আপলোড করলে আমরা সেখান থেকে জেনে হাসপাতালে এসে আমার মাকে শনাক্ত করি।
এর আগে এদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দুর্ঘটনায় আহত হন ওই এই নারী। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ৭টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মৃত নারীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি বড় ব্যাগে তার কিছু কাপড় এবং কতগুলো ওষুধ ও ১৫৩০ টাকা পাওয়া যায়।
বাচ্চু মিয়া জানান, ওই নারীর শরীরে কালো বোরকা ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছিল।
বৃদ্ধাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা কয়েকজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর একজন জাহিদ হোসেন হৃদয় জানান, বিকেলের দিকে গুলশানের নদ্দা কালাচাঁদপুরে এই বৃদ্ধা রাস্তা পারাপারের সময় রাজধানী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দিলে তিনি পড়ে যান।
তিনি বলেন, এরপর এই বৃদ্ধা উঠে দাঁড়ান। তবে দ্বিতীয়বারে আবার বাসটি তাকে ধাক্কা দিলে তখন তিনি রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়েন। আমরা দৌড় দিয়ে বাসটি ও চালককে আটক করি।
হৃদয় জানান, এর কিছুক্ষণ পরে গুলশান থানার উপপ্রদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। পরে তিনি তাদের মাধ্যমে এই নারীকে ঢামেক হাসপাতালেল জরুরি বিভাগ পাঠান।
রাজধানীর গুলশানের নদ্দা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দুর্ঘটনায় আহত হন আনুমানিক ৬৫ বছর বয়সী এই নারী। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ৭টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মৃত নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি বড় ব্যাগে তার কিছু কাপড় এবং কতগুলো ওষুধ ও ১৫৩০ টাকা পাওয়া গেছে।
বাচ্চু মিয়া জানান, ওই নারীর শরীরে কালো বোরক ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি গুলশান থানায় জানানো হয়েছে।
বৃদ্ধাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা কয়েকজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর একজন জাহিদ হোসেন হৃদয় জানান, বিকেলের দিকে গুলশানের নদ্দা কালাচাঁদপুরে এই বৃদ্ধা রাস্তা পারাপারের সময় রাজধানী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে ধাক্কা দিলে তিনি পড়ে যান।
তিনি বলেন, এরপর এই বৃদ্ধা উঠে দাঁড়ান। তবে দ্বিতীয়বারে আবার বাসটি তাকে ধাক্কা দিলে তখন তিনি রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়েন। আমরা দৌড় দিয়ে বাসটি ও চালককে আটক করি।
হৃদয় জানান, এর কিছুক্ষণ পরে গুলশান থানার উপপ্রদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। পরে তিনি তাদের মাধ্যমে এই নারীকে ঢামেক হাসপাতালেল জরুরি বিভাগ পাঠান।
বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘এক সময় এ দেশকে মিসকিনের দেশ বলা হতো। তলাবিহীন ঝুড়ি বলে কটাক্ষ করা হতো। বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে নিয়ে এসেছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা জেলে বসেই বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করেছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, রূপপুরে পারমাণবিক চুল্লিসহ এরকম শত শত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে সারা বিশ্বের কাছে প্রশংসিত। এসব দেখে বিএনপির সহ্য হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জন্ম নিয়েছেন বলেই আমরা একটি দেশ পেলাম। বঙ্গবন্ধুর কন্যারা দেশে না আসলে বিদেশে তারা মর্যাদার সঙ্গেই বসবাস করতে পারতেন। কিন্তু পিতার রক্ত তাদের ধমনীতে প্রবাহিত।
‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের অবস্থা ভালো ছিল না। একটা প্রতিকূল অবস্থায় ১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং দলকে নিয়ে ১৯৯৬ ও পরে ২০০৮ সালে সরকার গঠন করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের দেশ পরিচালনার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তাদের ছিল লুটপাট ও আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা। তাদের জ্বালাও পোড়াও রাজনীতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে নেতাদের কাজ করতে হবে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর মেয়র গোলাম হাক্কানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূইয়া বকুল, সাবেক পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, জেলা পরিষদ সদস্য আবদুল আজিজ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান রিমন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জন্মদিনের কেক কাটা ও দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।
দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘সময় থাকতে পদত্যাগ করুন। আগামী তিন মাস নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অনেকবার পার পেয়েছেন, এবার আর পার পাবেন না।'
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষ কিন্তু ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদদের চিনবে না। তাই পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করুন।
‘জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। যাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় কে কত অস্ত্র নিয়ে এলো ওইটা কিন্তু তারা দেখবে না। জনগণের যে উত্তাল আন্দোলনের ঢেউ সেই ঢেউয়ের কাছে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র টিকতে পারে না। সরকারের তৈরি করা কোনো প্রাইভেট বাহিনীও টিকতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘৩৬ দিন পর উনি কী করবেন? তারপর কি উনি ওনার দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেবেন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে? এটাই তো বোঝা যায় কাদেরের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।’
আইনমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘১/১১ তে যখন মাইনাস ফর্মুলার প্রচেষ্টা চলেছে, যখন সব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ভাঙার প্রচেষ্টা চলেছে, সেই সময়ে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি যিনি কাজ করেছেন দুদকের আইনজীবী হিসেবে তিনি হচ্ছেন আইনমন্ত্রী। তাকে শেখ হাসিনা পছন্দ করেছেন। কারণ এই লোকটা কীভাবে মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হয় সেটা খুব ভালো করে জানেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আইনমন্ত্রী অত্যন্ত নিষ্ঠুর টাইপের একজন ব্যক্তি। তার কোনো বিবেক নেই, কোনো মানবতাবোধ নেই। শেখ হাসিনার খাস পেটুয়া হিসেবে তার নীলনকশা বাস্তবায়নকারী হিসেবে কাজ করছেন আইনমন্ত্রী। শেখ হাসিনা কী চান তার জন্য কাজ করছেন তিনি (আইনমন্ত্রী)। তার (প্রধানমন্ত্রী) মুখের দিকে চেয়েই তো দেশের আইন-কানুন চলছে।’
দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো কাজ হচ্ছে না মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি যে দেশে এখন বাকশালী আইন চলছে, নৌকা মার্কা আইন চলছে। চলমান আইনের সঙ্গে প্রচলিত আইনের কোনো মিল নেই।’
মিলাদ মাহফিলে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার, নিলুফা ইয়াসমিন মনিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে মুরগি চুরির সালিশে ছুরিকাঘাতে এক যুবককে খুন করা হয়েছে। তার মরদেহ জোর করে হাসপাতাল থেকে কিশোর গ্যাংয়ের একটি দল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেরাণীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত হন ১৯ বছর বয়সী মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ।
নিহতের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার মনসুরগঞ্জে। তিনি জুরাইন আলমবাগ এলাকার ঢাকা হোটেলের পাশে একটি ভাড়া বাসায় মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন।
আরিফকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা তার বন্ধু হাসান জানান, বুধবার রাতে মুরগি চুরির বিষয় নিয়ে হাসনাবাদ আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে একটি সালিশ বসে। সালিশে তার এক বন্ধু নাজমুলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
তিনি জানান, এক পর্যায়ে নাজমুল ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফের বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তাকে মৃত বলে জানান।
আরিফের বাবা মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘বুধবার রাতে আমার বড় ছেলে আমাকে মোবাইল ফোনে জানায়, আরিফকে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করেছে। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে। আমি মেডিক্যালে এসে আমার ছেলের মরদেহ দেখতে পাই।’
আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার বন্ধু হাসান জানান, চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করার কিছুক্ষণ পরই ৫০ থেকে ৬০ জনের একদল বখাটে এবং উশৃঙ্খল কিশোর আনসার সদস্যকে ধাক্কা দিয়ে ক্যাজুয়েলেটি বিভাগ থেকে আরিফের মরদেহ জোর করে পুলিশ ক্যাম্পের সামনে দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, এরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তারা চিপস, চিনাবাদামওয়ালার ভান্ড থেকে চিপস, বাদাম, বুট রাস্তার ওপর ফেলে দেয়, কয়েকজন হকারসহ রিকশাওয়ালাদেরকে মারধর করে। ২০ থেকে ২৫ মিনিট এ তাণ্ডব চালায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কেরাণীগঞ্জের যুবকের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে পৌঁছায়নি। তবে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, বিস্তারিত পরে জানা যাবে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার অধীনে কেন নির্বাচন হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কেন নির্বাচনের দায়িত্ব দেয়া হবে না, এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ‘রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে যদি একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না যায়, তাহলে এই দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি কেন নির্বাচনে যাবে?’
বুধবার বিকেলে রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ চলমান এক দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
সমাবেশে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির প্রথম কমিটিতে আমি ছিলাম শ্রমবিষয়ক সম্পাদক। সেই কমিটিতে একজন সাবেক বিচারপতি, যদিও তখনও বিচারপতি হননি, ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক। তিনি পরে ১৯৭৯ সালে ইরাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ওকালতি শুরু করেন। পরে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবেও তিনি যোগ দেন। তারপর অ্যাপিলেট ডিভিশনে গিয়ে প্রধান বিচারপতি হয়ে ২০০৬ সালে অবসরে যান।
‘১৯৭৯ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই সময়টাতে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না ওই বিচারপতি। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী তার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার কথা, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলো- তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।
‘২৬ বছর ধরে রাজনীতি থেকে দূরে থাকা একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির অধীনে যদি নির্বাচন নিরপেক্ষ না হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি কেন নির্বাচনে যাবে?’
বর্ষীয়ান এ নেতা বলেন, ‘এজন্যই বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে অনঢ়। আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেলে তাদের (সরকার) ভরাডুবি হবে- এজন্যই তারা বারবার সংবিধানের ধোয়া তুলছে।’
‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কারণে সরকার বিপদে আছে’ দাবি করে বিএনপির নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিপদে আছে যে তারাই (সরকার), এটা বোঝা যায়। বিভিন্ন বক্তৃতায় তারা চাপাবাজি করে। অথচ তাদের ছেলে-মেয়েরা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারছে না, ফিরে আসতেছে। বড় বড় সরকারি কর্মকর্তারা ভিসার দরখাস্ত দিয়ে রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে কান্নাকাটি চলতেছে। আর বাইরে এসে মাইকের সামনে বলছেন এই সব স্যাংশন, এই সব রেস্ট্রিকশসন আমরা পরোয়া করি না।’
তিনি বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত। তাই যাদের কারণে আমাদের এই লজ্জা, তাদের আর বহন করার কোনো প্রয়োজন নাই।’
সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের দাবি ন্যায্য। আমরা জনগণের পক্ষে আছি, জনগণও আমাদের পক্ষে আছে। বাংলাদেশের সবাই পরিবর্তন চায়। কেউ বলতেছে, কেউ বলতেছে না। বাংলাদেশের জনগণ শুধু নয়, গণতান্ত্রিক বিশ্বও এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কিন্তু যারা এখনও রাস্তায় নামছেন না, তাদের বলি— এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে। এই সরকারের পতন হবেই হবে।
‘যারা এই সরকার পতনের আন্দোলনে আছেন, তারা স্বৈরাচারের পতন করেছেন বলে গৌরব করবেন। আর যারা আন্দোলনে আসছেন না, তারা এক সময় আক্ষেপ করবেন আর বলবেন— আহা! স্বৈরাচারবিরোধী এই আন্দোলনে থাকতে পারলাম না!’
এসময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানান তিনি। বলেন, ‘খালেদা জিয়া পালিয়ে যাওয়ার মানুষ না। তিনি জীবনে কখনও পালিয়ে যাননি। চিকিৎসা শেষে তিনি ফিরে এসে আবারও আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন।’
এদিকে নির্ধারিত সময় বেলা ২টার আগেই মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। জমায়েতের ফলে গাবতলী বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন ব্যস্ত সড়কের অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। এতে পুরো এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। নেতা-কর্মীদের রাস্তা পরিষ্কার রাখতে বারবার সমাবেশ মঞ্চ থেকে বলা হলেও তাতে খুব একটা সাড়া দেননি তারা।
ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
এছাড়াও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
আরও পড়ুন:‘হ্যালো এটা কি পুলিশের কন্ট্রোল? আমি একটা দোকানে ঢুকছিলাম চুরি করতে। এখন লোকজন টের পাইয়া গেছে। আমারে তো পিটাইয়া মাইরা ফালাইবো। আমারে গ্রেপ্তার করেন। তাড়াতাড়ি খানকা রোডে পুলিশ পাঠান। আমারে বাঁচান!’
মঙ্গলবার ভোর সোয়া চারটার দিকে রাজধানীর কদমতলী এলাকার খানকা রোডে অবস্থিত পাসপোর্ট অফিসের পাশের একটি দোকান থেকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে এমন অনুরোধ জানান হৃদয় নামের এক কলার।
কল পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা থেকে তাৎক্ষণিক কদমতলী থানায় বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়।
এ বিষয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯-এর গণমাধ্যম কর্মকর্তা আনোয়ার সাত্তার বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে কদমতলী থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ততক্ষণে জনগণ কলার হৃদয়কে ধরে পিটুনি দেয়া শুরু করেছিল। পুলিশের দলটি ওই অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে গ্রেপ্তার করে তাকে থানায় নিয়ে আসে।’
২৫ বছর বয়সী হৃদয় কদমতলী থানার মেরাজনগরের বি ব্লকে বসবাস করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে ইতোমধ্যে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’
মন্তব্য