বিএনপি দেশে অস্বাভাবিক সরকারকে ক্ষমতায় এনে তার ছায়ায় থাকতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু্।
শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুরের নওদা বহলবাড়ীয়ার একটি মসজিদের উন্নয়নকাজের উদ্বোধন করে ইনু এ মন্তব্য করেন।
ওই সময় জাসদের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইনু বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে বিএনপি মূলত যুদ্ধাপরাধী ও দুর্নীতির বিচার বন্ধ করতে, দণ্ডিত নেতা-নেত্রীদের মুক্ত করতে, তারা সংবিধানটাকে খেয়ে ফেলতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না অনির্বাচিত একটি অস্বাভাবিক সরকার দেশে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করুক। জামায়াত-বিএনপির পার্টনারশিপের সরকার দেশে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিল, তা দেখেছি। তাই দেশের মানুষ আর রাজাকারের সরকার দেখতে চায় না।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইনু আরও বলেন, ‘কমিশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে পাতানো নির্বাচনের কিছু দেখছি না।’
বাজেট নিয়ে বিএনপির মন্তব্য প্রসঙ্গে ইনু বলেন, ‘১৪ বছরে শেখ হাসিনার সরকার বাজেট দিয়ে এক ফোঁটাও ঘি খায়নি, বরং বাজেট দিয়ে আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা বন্দর তৈরি করেছি। রেল ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সেক্টরে উন্নতি করেছি।
‘দারিদ্র্য কমিয়ে এনে বিনা মূল্যে বাচ্চাদের কোটি কোটি বই উপহার দিয়েছি। বাজেট দিয়ে উন্নয়নের স্বার্থে ঘি খাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।’
আমেরিকার দেয়া ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকারের কম্পন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এরপর বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে যে ভিসানীতি আসবে সেটি আরও কঠিন হবে। এখানে মাফ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোড মার্চ উপলক্ষে জেলা শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে মঙ্গলবার দুপুরে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির এক দফা দাবিতে সারাদেশে বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে এ রোড মার্চ শুরু হয়।
আমির খসরু বলেন, ‘জীবনের বিনিময়ে হলেও ভোট চুরি প্রতিরোধ করতে হবে। জীবন দিয়ে আমাদের জয়লাভ করতে হবে। এই যুদ্ধ বিএনপির নয়, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।’
তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাতের আঁধারে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার যতদিন ফিরিয়ে দিতে না পারি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যতদিন নির্বাচন না হয় ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।’
সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুকের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ অনেকে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আবেদন ইস্যুতে সরকার আইনের কোনো ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মামলাগুলো উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। বিএনপি যদি মনে করে সরকার আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, তাহলে তারা আদালতে যেতে পারে। আদালত সেটি পরিষ্কার করবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতি যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, খালেদা জিয়া কি সে মহানুভবতা দেখিয়েছিলেন যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন? ক্ষমতায় থাকাকালে সিএমএইচ হাসপাতালে রোগী দেখতে সেনানিবাসে ঢুকতে দেননি, শেখ হাসিনাকে হেঁটে যেতে হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়া সেই মানুষ যিনি নিজের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ১৫ আগস্ট করেছে।
‘তার জন্মদিন ৪-৫টি, কোনোটিই ১৫ আগস্ট ছিল না। তার বিয়ের রেজিস্ট্রারে একটি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একটি, পাসপোর্টে একটি, পরীক্ষার ফরম ফিলাপে একটি এবং সর্বশেষ করোনা হওয়ার পর আরও একটি জন্ম তারিখ দেখা গেছে। কোনোটাতেই ১৫ আগস্ট ছিল না। যেদিন মানুষ শোক দিবস পালন করে, সেদিন তিনি কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া সেই মানুষ যার দুয়ারে দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে ২০ মিনিটের বেশি সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু দরজা খোলা হয়নি। কী পরিমাণ দম্ভ, অহমিকা যে, দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্যও দরজা খোলেননি। বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করেছিলেন। আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেনি। যে সমস্ত মামলা হয়েছে, সেগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। সেই মামলায় তার বিচার হচ্ছে এবং তিনি সাজা খাটছেন।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুনবার্সন করেছেন, তাদের প্রমোশন দিয়েছেন। এত প্রতিহিংসা দেখিয়েছেন, কিন্তু তার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানুভবতা দেখিয়ে যাচ্ছেন। সেটি কি তারা কখনও করত? শুধু তাই নয়, তারা (বিএনপি) এফবিআইয়ের এজেন্ট লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিলেন। বেগম জিয়া টিউলিপের নাম দেখে চুক্তি পর্যন্ত বাতিল করেছেন। কীরকম প্রতিহিংসা তার! সেই মানুষটির প্রতি প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখাচ্ছেন, সেটি অনেক বেশি বলে আমি মনে করি।’
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন পর্যন্ত দাম মানুষের ক্রমক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে গিয়ে শেখ হাসিনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মানুষ যাতে ভালো থাকে, জিনিসপত্রের দাম যাতে কমে, সেজন্য শেখ হাসিনা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।’
মঙ্গলবার সাভারের আমিনবাজারে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার সমীক্ষায় উদাহরণ টেনে ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘এই মুহুর্তে ভোট হলে শতকরা ৭০ জন শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে।’ এ সময় তিনি দলটির নেতা-কর্মীদের জনগণের কাছে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার নির্দেশ দেন।
দুর্নীতির দুর্গন্ধযুক্ত কোনো রাজনৈতিক দলকে এদেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অক্টোবরে নাকি সরকারের পতন করবে? কোন অক্টোবর? অক্টোবরে, নভেম্বরে, ডিসেম্বরে কিছুই হবে না। বাংলার জনগণ বিএনপিকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যে দলে দুর্নীতির দুর্গন্ধ আছে, মানুষ সে দল চায় না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হাঁটুভাঙা দল, কোমরভাঙা দল। শক্ত হয়ে দাঁড়ান। কৌশল ভালোভাবে চিনে নেন; খেলা হবে, সাংঘাতিক খেলা হবে। আর সে খেলায় আওয়ামী লীগই জিতবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা হুমকি দিচ্ছে, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছে-খালেদা জিয়া ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু ডিসেম্বরের আন্দোলন গরুর হাটে! আন্দোলন আছে?’
নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের জনগণ আর কিছুই চায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কোনো দেশের নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতিতে আওয়ামী লীগ চিন্তিত নয় মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগে এসবের পরোয়া করে না। যদিও আওয়ামী লীগ বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। প্রধানমন্ত্রীকে ২০ বার হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে। বেগম জিয়াকে কেউ কি একবারও হত্যা করতে গিয়েছে? হত্যা চেষ্টা হয়েছে? আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলটির সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ভিসা নীতি যার যার দেশের নিজস্ব বিষয়। বাংলাদেশও বিশ্বের যে কোনো সমৃদ্ধ দেশের সব নাগরিককে ভিসা দেয় না। সবকিছুর একটা নিয়ম আছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিএজেএফ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সময়ে কৃষকরা ন্যায্য দামে সারের জন্য জীবন দিয়েছে; একবার নয়, একাধিকবার। বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী হলেন কৃষিবান্ধব। তিনি কৃষকদের উন্নয়নে ব্যাপক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কৃষির জন্য ভর্তুকির জায়গাটা তিনি ধরে রেখেছেন। আওয়ামী লীগ দেশের কৃষকদের জন্য অন্তঃপ্রাণ। দেশের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা কাজ করি।’
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনা অস্থিতিশীল করতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের আশ্রয় নিচ্ছে। ঘুষখোর, পাচারকারী, মুনাফাখোর- এরা হলো দুর্বৃত্ত। এগুলো এক ধরনের দস্যুতা, এরা দেশের শত্রু। যেসব ব্যবসায়ীরা এমন কর্মকাণ্ড করে মানুষকে কষ্ট দেন, আমরা কখনও তাদের সমর্থন করি না। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান রয়েছে এবং তাদেরকে দমন করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।’
কৃষি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো আপনারা সমাজ, রাষ্ট্র, দেশ ও সরকারের কাছে তুলে ধরুন। শুধু লেখনি দিয়ে নয়, গবেষণায়ও থাকতে হবে; সংবাদের ভেতরেও সাংবাদিকতা থাকতে হবে।’
‘রিপোর্টিং অন এগ্রিকালচার ট্রান্সফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ)।
বিএজেএফ সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সঞ্চালনা করেন বিএজেএফ সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান ও এনআরবিসি ব্যাংকের হেড অফ কমিউনিকেশনের প্রধান মো. হারুন অর রশিদ। দেশের কৃষি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ৬০ জন গণমাধ্যমকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে মঙ্গলবার ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট (বিজি-২০৮) এদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। খবর ইউএনবির
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাবেন।
ফ্লাইটটি বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান।
২ অক্টোবর লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) সভাপতি রুশনারা আলীর (এমপি) নেতৃত্বে এপিপিজি’র একটি প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রীসহ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
১৭ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশন ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের পক্ষ ও দ্বিপক্ষীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এছাড়া তিনি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখতে হবে। কোনোভাবেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না।’
বাসস জানায়, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় দলের (এপিপিজি) সদস্যরা সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে লন্ডনে তার অবস্থানস্থল তাজ হোটেলে সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ক এপিপিজির চেয়ার এবং বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশের সদস্যদের নিয়ে এপিপিজি ভাইস চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র শর্মা, ভাইস চেয়ার ভ্যালেরি ওয়াজ, ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান হুসেন এবং স্কটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের ক্রস-পার্টি গ্রুপের চেয়ার ফয়সল চৌধুরী।
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা জানান।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে এপিপিজি প্রতিনিধি দলকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার ইতোমধ্যে করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়ন হয়েছে, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন হয়েছে এবং ইসিকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করার সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।
‘বিরোধী দলে থাকাকালে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে এপিপিজি প্রতিনিধি দল সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন তদারকির জন্য বাংলাদেশ এপিপিজি প্রতিনিধি দলকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোরও প্রস্তাব দিয়েছে।
এপিপিজি’র সব সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা ব্রিটেনের সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসা করছে এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ছে।’
বাংলাদেশে একশ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৯টি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বৃহত্তর বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও জাপানের মতো বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যকেও একটি নিবেদিত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে যেতে চায়।’
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক তহবিল বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যা সম্প্রতি কমে আসার প্রবণতা দেখাচ্ছে।
ব্রিটিশ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অমানবিক অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই যুদ্ধ চায় না। কারণ দরিদ্র জনগণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যুদ্ধের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বরং চায় যে আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান হোক।’
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা।
ঈশ্বরগঞ্জ থানায় রোববার ময়মনসিংহ বিভাগীয় রোড মার্চ কর্মসূচির সমাবেশে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণে ঘটনায় আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনিকে প্রধান আসামি করে এবং ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে এ মামলাটি হয়।
মালমা বাদী মশিউর রহমান কাঞ্চন ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বাদী ও তার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চর হোসেনপুর ভূইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনের সড়কের পাশে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
এ সময় বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বেশকিছু নেতা-কর্মী অতর্কিতে তাদের ওপর ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। পরে তাদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দেয়। হামলাকারীরা পাশের একটি দোকানে হামলা চালিয়ে ফ্রিজ ভাঙচুর ও মালামাল তছনছ করে।
ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা উত্তর বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমীরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘সরকার হটানোর আন্দোলন থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের দূরে রাখতে এখন ঘটনা সাজিয়ে মামলা দেয়া হচ্ছে। গত রোববারের রোডমার্চ কর্মসূচির সমাবেশে যোগ দিতে আসা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের গাড়ি বহরে হামলা করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী। এসব করে সরকার পতনের আন্দোলন থামানো যাবে না।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান কাঞ্চন বলেন, ‘আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা করে গাড়ীতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
ওসি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
মন্তব্য