ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পরকীয়ার জেরে স্বামী হারুন-অর-রশিদকে শ্বাসরোধে হত্যার মামলায় স্ত্রী সর্জিনা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল মতিন এ দণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমাইল হোসেন জানান, ২০০৮ সালের ২৫ জুলাই ঝিনাইদহের শৈলকুপার উপজেলার উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের হারুন-অর-রশিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তার স্ত্রী সর্জিনা খাতুন ও তার প্রেমিক লিটন হোসেন। এ ঘটনায় হারুন-অর-রশিদের ভাই ইব্রাহিম বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় সর্জিনা খাতুন ও লিটন হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন।তদন্ত শেষে পুলিশ ২০০৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর সর্জিনা খাতুন ও লিটনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলায় স্ত্রী সর্জিনা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। মামলার অপর আসামি লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
জঙ্গিভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও গান কমান্ডার রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুছা ও আরসার সদস্যসহ চারজনকে আটক করেছে র্যাব। জব্দ করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক।
বুধবার দুপুরে র্যাব-১৫ এর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া উপজেলার তেলখোলা-বরইতলী এলাকার গহীন পাহাড়ের রাস্তার মুখোমুখি এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব-১৫। এ সময় বিস্ফোরকসহ মো. শফিক ও মো. সিরাজ নামে দুজনকে আটক করা হয়। তারা দুজনই বাংলাদেশি।
তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকার গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ আরসার অন্যতম কমান্ডার ও আরসার জিম্মাদার রহিমুল্লাহ ওরফে মুছা এবং ক্যাম্প-৪ এর আরসার অন্যতম কমান্ডার শামছুল আলম ওরফে মাস্টার শামসুকে আটক করে র্যাব। সেখান থেকে মোট ৪৩ কেজি ৩১০ গ্রাম বিস্ফোরক, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটারগান, ৪টি পিস্তলের বুলেট, ৩টি ওয়ান শুটার গানের বুলেট এবং ২টি বাটন মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, আরসার শীর্ষ নেতারা বালুখালী রোহিঙ্গ ক্যাম্প ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে। এছাড়া তারা এসব কাজ করার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে দুর্গম সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরক চোরাচালান করত।
আটক কৃষক শফিক ও টমটম চালক সিরাজ বিস্ফোরক দ্রব্য কৌশলে সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এনে সংরক্ষণ করে রাখতো এবং সুবিধাজনক সময়ে আরসার সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করত।
আটক হওয়া অপর দুই আরসা কমান্ডার রহিমুল্লাহ ও শামছুল আলম মিয়ানমারের নাগরিক।
অভিযোগ রয়েছে, ক্যাম্পে অবস্থান করে তারা দলের সদস্যদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয়দের খুন, অপহরণ ও গুমের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতো। চাঁদা না পেলে অপহরণ করে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনসহ মুক্তিপণ আদায় করত। মুক্তিপণ না মিললে খুন করে গহীন পাহাড়ে অথবা জঙ্গলে মরদেহ গুম করতো।
আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী রহিমুল্লাহ ২০১৭ সাল থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করে মিয়ানমারে থাকা তার আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবার চালান নিয়ে আসত। পরে তা সহযোগীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত।
রহিমুল্লাহ ২০১৮ সালের দিকে আরসা নেতা খালেদের মাধ্যমে আরসা সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগ দেন। এরপর আরসার সন্ত্রাসী গ্রুপের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ, অপহরণ, খুন, ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে গোলাগুলিসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
র্যাব জানায়, জঙ্গিবাদী এই সন্ত্রাসী মিয়ানমার ও বাংলাদেশের দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্ত্র ও বোমা বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেন। পরে আরসার গান কমান্ডার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ এর জিম্মাদারের দায়িত্ব পান। এছাড়া আরসার সদস্যদের বোমা তৈরি ও অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি।
র্যাব আরও জানায়, রহিমুল্লাহ আরও স্বীকার করেছেন যে ক্যাম্পের হেড মাঝি আজিম উদ্দিন ও সাব-মাঝি জাফর হত্যাকাণ্ড, এপিবিএন-এর ওপর হামলা, ক্যাম্পে মাদ্রাসায় হামলা করে ৬ জন শিক্ষক ও ছাত্রকে হত্যা, জসিম ও শফিক হত্যা, মৌলভী সামশুল আলম হত্যা, নুর হাসিম ও নূর হাবা হত্যা, সাব-মাঝি আইয়ুব হত্যাসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে তিনি জড়িত ছিলেন।
আটক হওয়া আরেক আরসা কমান্ডার শামছুল আলম ২০১২ সালে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসেন। ২০১৯ সালে তিনি মৌলভী জাবেদের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আরসায় যোগ দেন। আরসায় যোগ দেয়ার পর তিনি অস্ত্র চালানো ও রণকৌশল প্রশিক্ষণ নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এর অন্যতম কমান্ডারের দায়িত্ব পান। এই সন্ত্রাসী বিভিন্ন সময়ে আরসার শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনায় টার্গেট কিলিং, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় এবং মুক্তিপণ না পেলে হত্যা করে মরদেহ গুম করতেন।
এছাড়াও ক্যাম্পে হেড মাঝি হোসেন ও কামাল হত্যাকাণ্ডে শামসুল আলম জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার ও উখিয়া থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। জেলও খেটেছেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুইডিশ রাজনীতিবিদ মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু সুইডিশ আপিল কোর্টে বিচারপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত স্টকহম আপিল কোর্টের জন্য পুনরায় বিচারপতি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এই বিচারপতি ২০১০ থেকে একই আদালতে এই দায়িত্ব পালন করে আসছেনl তিনি স্টকহম আপিল কোর্ট নির্বাচিত বিচারপতি সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্টওl
মহিবুল ইজদানী ডাবলু প্রায় ৩৩ বৎসর থেকে সুইডেনের মূধারার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি সুইডিশ লেফট পার্টি সেন্ট্রাল কমিটির ১১ সদস্য বিশিষ্ট মনোনয়ন বোর্ডে একটানা ৬ বছর নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেনl
ডাবলু সুইডিশ লেফট পার্টির মনোনয়ন নিয়ে গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনl তিনি প্রথম বাংলাদেশি যিনি স্টকহল্ম সিটি কাউন্সিল ও গ্রেটার স্টকহল্ম এসেম্বলির নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেনl এ ছাড়া একটানা ১০ বছর লেফট পার্টি স্টকহম হেসেল্বি ভেলেংবি ব্রাঞ্চের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে চলতি বৎসরের মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেনl
মহিবুল ইজদানী খানের বাবা মরহুম আলী মেহদি খান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা অফিসার হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার ছোট ভাই কবিরুল ইজদানী খান বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের গোলকনগর গ্রামে দফায় দফায় চলছে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা।
বুধবার সকালসহ গত কয়েক দিন ওই গ্রামের মধ্য, পশ্চিম ও উত্তরপাড়ায় অন্তত ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। লুটপাট করা হয়েছে গোয়ালের গরু-ছাগল।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আবু সাঈদ বিশ্বাস নামের আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হন। এ ঘটনাকে পুঁজি করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী মেম্বর আসামিপক্ষের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালান।
হামলায় ওই গ্রামের শাহীন বিশ্বাস, জজ বিশ্বাস, মোতলেব বিশ্বাস, বকু কাজীসহ অন্তত ১৫ জনের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলাকারীরা গোয়ালের গরু-ছাগলসহ ঘরের মালামাল লুট করে।
ওই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মুকুল কাজী বলেন, ‘আমি মারামারির সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না। আমরা কোনো ঝামেলায় থাকি না। আমার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে; ঘরের মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। আমি সামাজিকভাবে দল করি। এটাই আমার দোষ।’
ক্ষতিগ্রস্ত সোহান বিশ্বাস বলেন, ‘মারামারিতে একজন মারা যাওয়াকে পুঁজি করে প্রতিপক্ষের লোকজন এখন বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অত্যাচারে গ্রামে অন্তত ২০টি পরিবারের পুরুষ বাড়িছাড়া। তারা দফায় দফায় হামলা ও ভাঙচুর করছেন।’
এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে এমন কোনো খবর তার জানা নেই। তারপরও এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সেই জন্য ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের দ্রুত হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশটি ‘বৈষম্যমূলক বিধান’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোলায়মান তুষার বুধবার এ নোটিশ ডাক ও ইমেইলে করে পাঠিয়েছেন।
লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, বিবাহিত ও গর্ভবতী হওয়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলী এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা-২০২১ এর ১৭ নং ধারা মোতাবেক বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বিধায় তারা অতি দ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায় তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই মর্মে গত ২৫ সেপ্টেম্বর হলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উক্ত বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ছাত্রীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।’
নোটিশে সোলায়মান তুষার বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা অন্য স্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করিবেন। বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীদের জন্য এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথে অন্তরায় এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘নোটিশ প্রাপ্তির পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।’
এ বিষয়ে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘আমি কারোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে না, সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখার পর আমি নিজে থেকে এই নোটিশ পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালাও যদি এই রকম কিছু থেকে থাকে তাহলে সেই বিধিমালার সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংঘর্ষিক। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বা বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়।’
জানতে চাইলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ‘আমি এখনও হাতে নোটিশ পাইনি। আর হল থেকে যে নোটিশ দেয়া হয়ছে, তা বিধিমালায় রয়েছে। এর বাইরে তো কিছু করিনি।
‘আমি বিবাহিত কিংবা গর্ভবতী যারা তাদের তো সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু আইনি নোটিশ কেন দেয়া হবে বুঝলাম না। যারা বিবাহিত আছে তাদেরকে আবারও নোটিশ দিয়ে হল থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। আর বিষয়টি (আইনি নোটিশ) আমাদের মধ্য থেকেই কেউ করেছে। আমি খুঁজে বের করব।’
এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের অতি দ্রুত হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। একই সঙ্গে মাস্টার্সের ফল প্রকাশ হওয়া আবাসিক ছাত্রীদেরও হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ও চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন:অর্থ পাচার আইনের মামলায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাকির হোসেনকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছে চেম্বার আদালত।
জামিন পেলেও তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। এ জন্য তার পাসপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
চেম্বার আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বুধবার এ আদেশ দেন।
অর্থ পাচার আইনে করা মামলায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাকির হোসেনকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর জামিন দেয় হাইকোর্ট। এ জামিন স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল করে দুদক।
দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তিনি চেম্বার আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। আমরা সেই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করি।
‘আদালত শুনানি নিয়ে জামিন স্থগিত না করলেও পাসপোর্ট জমা দিতে বলেছে এবং বিদেশ যেতে আদালতের অনুমতি নিতে হবে তার।’
জাকির হোসেনের নামে গত ১৪ মার্চ মামলা করে দুদক। মামলায় তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলের অভিযোগ আনা হয়।
জাকির হোসেনের জমা দেয়া আয়কর নথি ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে দুদক তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের তথ্য পায়।
২০২১-২২ আয়কর নথির তথ্য অনুযায়ী, জাকির হোসেনের নামে ধানমন্ডির ১ নম্বর সড়কে ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট, খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ায় ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭০০ টাকা খরচ করে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণসহ ১ কোটি ৫১ লাখ ১০ হাজার ২০০ টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের টয়োটা রাশ গাড়ি, নগদ ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৭০ টাকা ও ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত ৭২ হাজার ৫০৬ টাকাসহ মোট ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭৬ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য রয়েছে আয়করে। সব মিলিয়ে জাকির হোসেনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৬ টাকায়।
জাকির হোসেন ১৯৯২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। তিনি ১৯৯৫ সালে কুয়েত দূতাবাস এবং ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কেনিয়ার নাইরোবিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বদ্ধ খাল থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের একটি খালের কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো মো. হোসেন রাহাত কোনাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকার শুয়োরমরা নামক খালে মঙ্গলবার রাতে মাছ ধরা নিয়ে একই এলাকার বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় রাহাতের। এরই জের ধরে রাহাতকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে খালের কচুরিপানার ভেতরে লুকিয়ে রাখেন বোরহান।
নিহত রাহাতের বাবা আলী হোসেন বলেন, “সন্ধ্যার দিকে রাহাত মাছ ধরতে গিয়ে ঘরে না ফেরায় রাতে খোঁজ নিতে গিয়ে স্টেশন এলাকায় গেলে বোরহান বলে, ‘মাছ ধরা নিয়ে রাহাতের সঙ্গে তর্ক হইছে। আমি ওরে থাপ্পড় মারছি।’ পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে খালের কচুরিপানার ভেতরে রাহাতের লাশ লুকানো অবস্থায় পাওয়া যায়।’’
চকরিয়া থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালে মাছ ধরা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে বোরহান উদ্দিন দা দিয়ে কোপ দিলে ঘটনাস্থলে পানিতে ডুবে মারা যায় রাহাত। বোরহান উদ্দিন পলাতক আছেন।
তিনি জানান, রাহাতের মাথার উপরিভাগে একটি দায়ের কোপ রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:নেত্রকোনার মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাত গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে স্থানীয় জনতা বাজারের পাশের কৃষি জমিতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নায়েকপুর ইউনিয়নের দুটি পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই দুটি পক্ষের মধ্যে এক পক্ষে রয়েছে নোয়াগাও, পাঁচ আলমশ্রী, বাউশা ও তালুককানাই গ্রাম। আর অপর পক্ষে রয়েছে আলমশ্রী, দেওয়ানপাড়া ও মাখনা গ্রাম। এর আগেও এসব গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ঝগড়া, মারামারি এবং মামলা-মোকদ্দমার ঘটনা ঘটেছে। মিমাংসার জন্য উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধি এবং মাতব্বররা একাধিকবার বৈঠক করেও সুরাহা করতে পারেনি।
বেশ কিছুদিন ধরে জমি দখল, রাস্তাঘাটে ছাত্রীদের উত্যক্তকরণ ও জনতাবাজারের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পুরনো বিরোধ আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠে। এরই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে দুই পক্ষের কয়েক হাজার লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত আলমশ্রী গ্রামের হিরণ উদ্দিন, নয়ন মিয়া, নোয়াগাঁও গ্রামের রফিক, গণি মিয়া ও সিয়ামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতরা হলেন আছিরুল, রমজান, মনির হোসেন, পারভেজ, ইনছান, নিজাম উদ্দিন, হারুন, মাছুম আলী, খাইরুল ইসলাম, জয়ফুল, আরশ, মাসুম খাঁ ও সেলিমসহ অন্তত ৪০ জন। এদের কেউ মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, কেউ তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, আবার কেউ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হীরা বলেন, ‘আমাদের এলাকার ছেলেমেয়েরা নোয়াগাঁও আফতাব হোসেন একাডেমিতে পড়ালেখা করে। কিন্তু স্কুলে যাওয়া-আসার পথে নোয়াগাঁও গ্রামের কিছু বখাটে ছেলে প্রায়ই উত্যক্ত করে। তাছাড়া আমাদের এলাকার অটোচালকরা জনতা বাজারে গেলেও সেখানকার লোকজন বাধা দেয়। হাটবাজার করতে গেলেও তারা নানাভাবে হয়রানি করে। এসববের কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় গ্রামবাসী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।’
অন্যদিকে নোয়াগাঁও গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল মিয়া বলেন, আলমশ্রী ও আশপাশের গ্রামের লোকজন জনতা বাজারটি পরিকল্পিতভাবে দখল করার জন্য আক্রমণ শুরু করলে আমাদের এলাকাবাসী তাদের জানমাল রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। এ কারণেই সংঘর্ষ ঘটে।’
মদন থানার ওসি মুহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বলেন, ‘কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে ৫-৬জন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। তবে আমরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
‘এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য