বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠু হওয়ার সকল আলামত দৃশ্যমান।
মঙ্গলবার বিকেলে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে (খোকন সেরনিয়াবাত) বিজয়ী করার লক্ষ্যে যুবলীগের একটি মতবিনিময় সভা হয়। বরিশাল মহানগর ও জেলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং ভোলা জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে ওই সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
পরশ বলেন, ‘দেশে যে নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজমান তার একটি প্রমাণ আমি দিতে চাই। আপনারা দেখছেন বিএনপি-জামায়াত অনায়াসে সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছে। একদিকে সভা-সমাবেশ করছে, আরেকদিকে নাকে-কান্না করছে যে তাদের না কি গণতান্ত্রিক অধিকার দেয়া হয় না। তাদের না কি রাজনৈতিক স্পেস দেয়া হয় না। সুষ্ঠু নির্বাচনের না কি পরিবেশ নাই।
‘অথচ আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তখন আমাদের কিন্তু সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হতো না। পুলিশের লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার।’
যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা একুশে আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড, বোমা মেরে আমাদের ২৫ নেতাকর্মীকে হত্যা করে, অগুনতি নেতাকর্মীকে আহত করে, তাদের মুখে এ কথা শোভা পায়? এটা দেশবাসী বিবেচনা করুক।
‘বরিশাল সিটির নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে দেখছি। আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বরিশালের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচনটা এমন একটা সময় হচ্ছে যার মাত্র ৬ মাস পরে জাতীয় নির্বাচন।’
বরিশালের এ নির্বাচনে নৌকার জয় জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বলে জানান তিনি।
এ সময় খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘উন্নয়নের যে কর্মযজ্ঞ জননেত্রী শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশে সৃষ্টি করেছেন, দুঃখ ও কষ্ট লাগে আমরা বরিশালবাসী এখনও সেখানে বঞ্চিত। যেটা এখানকার মানুষই কেবল উপলব্ধি করে। বরিশালের মানুষের সেবা দেয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন।
‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করছেন, সেটা আমাদের ভূলে যাওয়া উচিত না। আমরা তা ভুলে গেলে ও তার নির্দেশ বা তার পছন্দ উপেক্ষা করলে সেটি কারও জন্য মঙ্গল আনবে না।’
তিনি বলেন, ‘গাজীপুর থেকে আমরা শিক্ষা নেব; কিন্তু আমরা শিক্ষাই তো নিই না- এটাই সবচেয়ে বড় কথা। আমি বরিশালবাসীকে বলতে চাই, মেয়র হলে সিটি করপোরেশনকে আপনাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।’
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. গোলাম কবীর রাব্বানী চিনুসহ স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন সব মিলিয়ে গুণগত মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি বলে মত ব্যক্ত করেছে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট মিশন (টিএএম)।
যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা দুটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাতে এমন অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে, ভোট চলাকালীন ও পরে সম্ভাব্য নির্বাচনী সহিংসতার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য এনডিআই ও আইআরআই টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট মিশনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল। নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রায় আড়াই মাস পর রোববার ১৭ মার্চ সংস্থা দুটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনি সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে নির্বাচনে সহিংসতার ঝুঁকি প্রশমন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আইআরআই ও এনডিআইয়ের তুলনামূলক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারের নির্বাহী ও আইন বিভাগ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীজনের সুপারিশ প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রচার ও নির্বাচনের দিনসহ অন্য সময়ে শারীরিক ও অনলাইন সহিংসতা কম হয়েছে।
এক্ষেত্রে সংস্থা দুটি আগের নির্বাচনগুলোর পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করেছে। সহিংসতা কম হওয়ার কারণ হিসেবে তারা নির্বাচনি প্রতিযোগিতার অনুপস্থিতি এবং দেশের নিরাপত্তায় সরকারের বাড়তি নজরকে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনি সহিংসতা মূলত দুটি প্রাথমিক রূপে দেখা দেয়। প্রথমটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে এবং দ্বিতীয়টি বিরোধী দলের বয়কট প্রচেষ্টার মাধ্যমে।
প্রান্তিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী এবং হিন্দুরাও নির্বাচনি সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
মিশনটি প্রতিবেদনে বলেছে, ‘বাংলাদেশের আইনি কাঠামো লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা সম্পূর্ণরূপে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, বিশেষ করে নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।
‘নারী প্রার্থীরা মিশনকে জানিয়েছে, জনসমাগমে ও অনলাইনে তাদের অপমান ও হুমকির শিকার হতে হয়েছে। বিশেষ করে পুরুষ প্রতিপক্ষ ও তাদের সমর্থকদের কাছ থেকে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা তাদের অভিযোগের ব্যাপারে কোনও সাড়া দেননি।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারির নির্বাচনের গুণগত মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর কারণ হিসেবে শাসক দল ও বিরোধীদের সহিংসতা, প্রাক-নির্বাচনী পরিবেশ, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সহিংসতা, নাগরিক স্বাধীনতার সংকোচন এবং বাক-স্বাধীনতা ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্বাচনি সহিংসতা মোকাবেলায় সংস্থা দুটির পক্ষ থেকে ২৮টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য আচরণবিধি প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনি সহিংসতা সম্পর্কিত মামলাগুলো দ্রুত ও স্বাধীন বিচার এবং পর্যালোচনার জন্য আইনি কাঠামো, রাজনৈতিক নেতাদের দলে অহিংসতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা, সংখ্যালঘু ও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার মতো বিষয়গুলো রয়েছে।
নির্বাচনের সময় সোশাল মিডিয়ার ঘটনাবলীও পর্যবেক্ষণ করেছেন মিশনের সদস্যরা।
তাদের মতে, নির্বাচনের সময় সোশাল মিডিয়ায় হিংসাত্মক বক্তব্য অব্যাহত ছিল। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, উভয় দলের দিক থেকেই সোশাল মিডিয়ায় হিংসাত্মক বক্তব্য দেয়া হয়। তবে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বেশি আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিলেন।
নির্বাচনে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে অংশীজনরা মিশনকে জানিয়েছেন, সরকারের প্রতিশোধের ভয়ে সংবাদমাধ্যম সেল্ফ সেন্সরশিপে ছিল। সাংবাদিকরা নির্বাচনি প্রচার ও বিক্ষোভের সময় ক্ষমতাসীন ও বিরোধী উভয় দলের সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
নির্বাচনি নিরাপত্তার জন্য বাজেট বাড়ানোসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকিতে সরকারের সমন্বিত ইউনিট গঠনের বিষয়ও প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে।
একইসঙ্গে সংস্থা দুটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সুবিধা দিতে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষেবা ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান অসমভাবে নির্বাচনি বিধি প্রয়োগ করেছে।
আর বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিরোধী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা ন্যায়সঙ্গত ছিল না।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে মিশনের সদস্যরা বিশ্লেষক, সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা কর্মী, রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের সংগঠনসহ যুবক, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মিশনের সঙ্গে বৈঠক করে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন চলাকালীন ও আগে-পরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে এসেছিলেন বেসরকারি সংস্থা আইআরআই ও এনডিআইর প্রতিনিধিরা। তারা সম্মিলিতভাবে গত ৩০ বছরে বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে দুই শতাধিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার জেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের দায়িত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ নেয়া হয়েছে। আবার দায়িত্ব শেষে তাদেরকে নির্ধারিত ভাতার চেয়ে অনেক কম টাকা দেয়া হয়েছে। আর বিষয়টি আড়াল করতে ভাতা বিকাশের মাধ্যমে না দিয়ে হাতে হাতে দেয়া হয়েছে। এভাবে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা।
কক্সবাজার জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট অম্লান জ্যোতির নেতৃত্বে এসব দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগী আনসার সদস্যরা অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ করলে ভবিষ্যতে আর কোনো দায়িত্ব দেয়া হবে না- এমন হুমকির কারণে তারা নাম প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে চাননি।
বিভিন্ন অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলায় যেসব আনসার সদস্য ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা পর্যন্ত আগাম ঘুষ দিতে পেরেছেন তারাই নির্বাচনি দায়িত্ব পেয়েছেন। আবার দায়িত্ব পালন শেষে প্রত্যেককে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে দেয়ার কথা বলা হলেও দেয়া হয়েছে আড়াই থেকে তিন হাজার। কাউকে কাউকে চার হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলার চারটি সংসদীয় আসনে ৮ উপজেলার মোট ৫৫৬টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের দায়িত্ব বণ্টনে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। ঘুষ না দেয়ায় অনেক দক্ষ আনসার সদস্যকেও রাখা হয়নি ডিউটি তালিকায়।
জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট অম্লান জ্যোতির স্বাক্ষরে দেয়া শতাধিক কেন্দ্রের ডিউটির তালিকা ও কমান্ড সার্টিফিকেট (সিসি) এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন করে তালিকা তৈরি করে সিসি সম্পন্ন করা হয়। যাচাই করে দেখা যায়, সিসিতে উল্লিখিত প্রায় সব নাম, ঠিকানা ও মোবাইল বিকাশ নম্বর ভুয়া। ব্যক্তির নামের বিপরীতে বিকাশ নম্বর দেয়া হয়েছে অন্যজনের। একই ব্যক্তি বিকাশে টাকা তুলে নিয়েছেন একসঙ্গে ৪-৫ জনের।
অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনের জন্য সরকার থেকে ভাতা হিসেবে কক্সবাজার জেলা আনসার ভিডিপিকে প্রতি কেন্দ্রের জন্য ৭৮ হাজার ৪৮০ টাকা করে ৫৫৬ কেন্দ্রের জন্য মোট ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮০ টাকা দেয়া হয়। টাকাটা দেয়া হয় জেলা কমান্ড্যান্ট অম্লান জ্যোতি নাগের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। আর উক্ত টাকা বিতরণে জেলা কমান্ড্যান্ট কোনো ধরনের সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করেননি।
আর এভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে এই অর্থ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এবার সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল দায়িত্ব পালনকারী পিসি, এপিসি ও আনসার সদস্য-সদস্যাদের ভাতার টাকা যেন যার যার ব্যক্তিগত বিকাশ, নগদ বা রকেট একাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু তাদের বেশিরভাগকে টাকা দেয়া হয়েছে হাতে হাতে। দায় এড়ানোর জন্য খুব অল্পসংখ্যক আনসার সদস্যকে মোবাইল সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানো হয়েছে। বিকাশে টাকা প্রেরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিকাশ এজেন্ট ও ৩৯ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য খলিলুর রহমান কতজনের কাছে টাকা পাঠিয়েছেন তার সদুত্তর দিতে পারেননি।
এসবের পেছনে সহযোগী ছিলেন প্রতিটি উপজেলার আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রশিক্ষক ও ইউনিয়ন দলনেতা-নেত্রীরা। তাদের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনে ইচ্ছুক সদস্যদের প্রতিজনের কাছ থেকে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা করে ঘুষ আদায় করা হয়। কোথাও কোথাও পিসি এবং এপিসিরাও এই অনিয়মে অংশীদার হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, উত্তোলিত ঘুষের টাকা থেকে কেন্দ্রপ্রতি ছয় হাজার টাকা করে নির্বাচনের আগেই জেলা কমান্ড্যান্ট বরাবর পৌঁছে দেন উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ও দলনেতা-নেত্রীরা। নির্বাচনের পর পৌঁছে দেন কেন্দ্রপ্রতি আরও ছয় হাজার টাকা। দলনেতা-নেত্রীরা ঠিকাদারদের মতো কেন্দ্রগুলো ভাগবাটোয়ারা করে কিনে নেন। ফলে তাদের মর্জিমতো তৈরি করা হয় কমান্ড সার্টিফিকেট (সিসি)। যার কাছ থেকে ঘুষের টাকা পেয়েছেন তাকে রাখা হয়েছে তালিকায়।
ক্ষুব্ধ আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা বলেন, ছয় থেকে সাত হাজার টাকা করে ভাতার প্রলোভন দেখিয়ে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য তাদের কাছ থেকে এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ৮১ নম্বর কেন্দ্র ইসলামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের সিসি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সিসিতে উল্লিখিত ভিডিপি পুরুষ সদস্য আব্দুল আলীমের নামের পাশে উপজেলা কোম্পানি কমান্ডার ইয়াছিন আরাফাতের বিকাশ নম্বর দেয়া আছে।
ইয়াছিন আরাফাতের মা জাহেদা বেগম ওই এলাকার সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য এবং ভিডিপি দলনেত্রী হওয়ায় ব্যাপক অনিয়মের সুযোগ পেয়েছেন। এই সিসিতে উল্লিখিত নারী ভিডিপি সদস্যদের নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। অথচ তাদের নামে ভাতা তুলে নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপজেলা আনসার অফিসার মোস্তফা গাজী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বললেও উল্টো ইয়াছিনের পদ রক্ষায় তোড়জোড় শুরু করেন তিনি।
মহেশখালীতে হোয়ানক ইউনিয়নের বড়ছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে (৪১ নম্বর কেন্দ্র) এপিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জালাল আহমেদ। তিনি জানান, সিসিতে উল্লিখিত বিকাশ নম্বরটি তার নয়। ফলে তিনি বিকাশে কোনো টাকা পাননি। দলনেতা আলমগীর তার হাতে চার হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন।
তিনি আরও জানান, সিসিতে দলনেতা আলমগীর তার নিজের লোকের বিকাশ নাম্বার বসিয়ে দিয়ে রেখেছেন।
৩০ বছর ধরে আনসার বাহিনীতে চাকরি করা আমিনুল হক দায়িত্ব পালন করেছেন মহেশখালীর হিন্দুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তিনি জানান, ঘুষের টাকা দিতে না পারায় তাকে সিসিতে নাম তালিকাভুক্ত করা হয়নি। আবার এপিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করালেও প্রাপ্য ভাতার পূর্ণাঙ্গ অংশ দেয়া হয়নি।
এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও অনেক সদস্য জানিয়েছেন, তারা কেউ বিকাশে টাকা পাননি। হাতে হাতে টাকা দেয়া হয়েছে। তা-ও ন্যায্য টাকা বুঝে পাননি। তারা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার বেশি পাননি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট অম্লান জ্যোতি নাগ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘সব টাকাই বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয়েছে। সব তথ্য আমাদের সংগ্রহে রয়েছে। কেউ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে আমরা তা দেখাব।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি টাকা কম পেয়ে থাকে এবং তা নিয়ে অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমি দুর্নীতি বা ঘুষ গ্রহণ করেছি এমন কোনো প্রমাণ নেই। সব উপজেলায় কমিটি গঠন করে যাচাই করেও কোনো ধরনের অনিয়ম পাওয়া যায়নি।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যায় পল্টনের চেম্বার থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।
গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল।
এর আগে গতকাল ২০ জন আইনজীবীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী (সাইফ)। মামলায় আরও ৩০/৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে ২ হাজার ৭৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে লাটিম মার্কার প্রার্থী রাশিক হাওলাদার। তার নিকটতম প্রার্থী শামীম আহসান ঘুড়ি মার্কা নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৪৬৫টি। মোট ভোট পড়েছে ২ হাজার ৫৩৯টি।
দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি হবেন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। হলফনামা অনুযায়ী সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মধ্যে সবথেকে কম বয়স এই প্রার্থীর।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট একটানা ভোট চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এ ওয়ার্ডে মোট ৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্ডটিতে মোট ভোটার ৫ হাজার ৪০৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৯শ ও নারী ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৮ জন।
ফলাফল ঘোষণার পর আনন্দে মেতে ওঠে লাটিম মার্কার সমর্থকরা। এ সময় জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কথা জানান বিজয়ী রাশিক হাওলাদার।
গত বছর ১১ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ষষ্ঠবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা সেলিম হাওলাদার। তবে ২৮ জুন ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। এর ১০ মাস পর ৯ মার্চ উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নীলফামারী চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষ পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হয়েছে। ভোট গণনা শেষে শনিবার রাতে ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আরিফ হোসেন মুন।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শহরের রাবেয়া বালিকা বিদ্যা নিকেতন স্কুলে ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচনে সাধারণ গ্রুপে ১২টি পদে ২৪জন প্রার্থী ও সহযোগী গ্রুপে ৫টি পদে ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ’ পূর্ণ প্যানেলে জয় পায়।
নির্বাচনে সাধারণ গ্রুপে আব্দুল ওয়াহেদ সরকার (১১০৩ ভোট), আলহাজ্ব মিজানুর রহমান (১১১৯), মনিরুল ইসলাম সুইডেন (১১১৭), আতিয়ার রহমান (১০৯৩), রুকুনুজ্জামান সরকার লেমন (১০০৬), মফিজার রহমান (১০৩৮), মোকছেদুল ইসলাম মোকছেদ (৯৭৯), আরমান হাবীব (৯৮৫), সামিউল ইসলাম শাওন (১০৯৮), দেলোয়ার হোসেন (৮৮৩), মাহবুবর রহমান মনি (৮৬৬) ও মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান রাশেদ (৮৭৮) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ঘোষিত হন।
সহযোগী গ্রুপে মো. নওশাদ আলম (৬২৫), আখতার সিদ্দিকী পাপ্পু (৬০৭), নাঈম ইসলাম জীবন (৫৯৫), রিপন কুন্ডু (৫৬৯) ও মানু হোসেন (৪৯৬) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আরিফ হোসেন মুন জানান, নির্বাচনে সাধারণ গ্রুপে ৮৪ দশমিক ৬৯ ও সহযোগী গ্রুপে ৮২ দশমিক ৩৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে ৯৯৯ ভোটের ব্যবধানে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি নেতা ফকরুজ্জামান মতিন। নারিকেল গাছ প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ৫৪২ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদার মোবাইল ফোন প্রতীকে ৭ হাজার ৫৪৩ ভোট পেয়েছেন।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ৯টি ওয়ার্ডের ১২টি কেন্দ্রে ভোট দেয়ার সুযোগ পান ৩৫ হাজার ৫১৮ জন ভোটার। ভোট গ্রহণের হার ছিল ৬৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
বকশীগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সওদাগরের কাছে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরাজিত হন মতিন। দলীয় প্রতীক না থাকায় দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদারসহ আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী এবার তার কাছে পরাজিত হন।
তারা দুজন ছাড়াও বর্তমান মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর পেয়েছেন ৭ হাজার ৪২০ ভোট এবং আনোয়ার হোসেন বাহাদুর পেয়েছেন ১ হাজার ২৬৩ ভোট।
রাত ৯টায় উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার।
রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছে অনেক আগেই। তবে ভোটের মাঠে একেবারে নতুন। বাবার উপদেশ মেনে আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে ভোটে নামেন তাহসীন বাহার সূচনা। নেমেই সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে কুমিল্লার ইতিহাসে প্রথম নারী মেয়র হলেন ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। তার জয়ে উচ্ছাসিত নগরবাসী। এখন তাদের স্বপ্ন সূচনার হাত ধরেই নগর কুমিল্লার দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর জিলা স্কুলের অডিটোরিয়ামে যখন ফলাফল সংগ্রহ ও ঘোষণা করা হয়, তখন যেন পুরো নগরী বিজয়োল্লাসে ফেটে পড়ে।
কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও কুসিক উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ডা. সূচনাকে বিজয়ী ঘোষণা করার পর থেকে নগরে চলছে উৎসবের আমেজ। মিষ্টি বিতরণ চলছে পাড়া-মহল্লায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে অভিনন্দনের ঝড়।
বিজয়ী হওয়ার পর নতুন মেয়র ডা. সূচনা বলেন, ‘কুমিল্লা নগরবাসী আমার বাবা ও আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমি তাদের আস্থা কখনও হারাতে দেব না।
‘কুমিল্লাকে নিয়ে আমার বাবার অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আর এই স্বপ্ন পূরণের সহায়ক হিসেবে আমি কুমিল্লা নগরীর উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দেব, মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে কাজ করব। কুমিল্লা স্মার্ট সিটিতে রূপ পাবে ইনশাআল্লাহ।’
১০৫টি কেন্দ্রে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, বাস প্রতীকের প্রার্থী ডা. তাহসিন বাহার সূচনা ২১ হাজার ৯৯৩ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে চার মেয়র প্রার্থীর প্রচার শেষে ২৭টি ওয়ার্ডে ১০৫টি কেন্দ্রের ইভিএম পদ্ধতিতে শনিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
রাজনীতিতে আসার আগে ডা. সূচনা জরুরি মুহুর্তে রোগীদের রক্ত দেয়ার অঙ্গীকার নিয়ে ২০১৬ সালে গঠন করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জাগ্রত মানবিকতা’। বৈষম্যহীন আর্তমানবতার সেবার অঙ্গীকার নিয়ে গঠিত এই সংগঠনের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। দলমত নির্বিশেষে সূচনা হয়ে ওঠেন অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল।
মেয়ের সামাজিক কার্যক্রমে খুশি হন বাবা সংসদ সদস্য আকম বাহাউদ্দীন বাহার। নেপথ্যে থেকে মেয়েকে দেন রাজনীতির হাতেখড়ি। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সূচনা রাজনীতির মাঠে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলছেন। ক্রমান্বয়ে সূচনা হয়ে উঠেছেন সকলের প্রিয়। তারই প্রতিফলন ঘটেছে এবারের কুসিক উপ-নির্বাচনে।
নগরবাসীর সর্বোচ্চ সমর্থনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে কুমিল্লার ইতিহাসে প্রথম কোনো নারী মেয়র হলেন তিনি।
উল্লখ্য, ২০১২ সালে গঠিত হওয়া এই সিটি করপোরেশনে টানা দুইবার মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মনিরুল হক সাক্কু। পরে ২০২২ সালের ১৫ জুন তৃতীয়বারে এসে মেয়র নির্বাচিত হন আরফানুল হক রিফাত। অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হতে পারেননি তিনি। ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
পরে বিধি অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশিন। শনিবার এই উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য