ডলার সংকটে বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় কয়লা সরবরাহ নেই, তাই বন্ধ হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। যার প্রভাব পড়বে দেশের বিদ্যুৎ খাতে। এর ফলে গোটা দেশে লোডশেডিংয়ের সময় বেড়ে যাবে।
জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকেই টানা এক মাস বন্ধ থাকবে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। অবশ্য সংশ্লিষ্টদের দাবি, জুন মাসের শেষ সপ্তাহে পুনরায় চালু করতে সক্ষম হবে পাওয়ার প্লানটি। তবে তখন ‘ফুল ক্যাপাচিটি’তে প্লানটি চালু করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহ আবদুল মাওলা সোমবার নিউজবাংলাকে বলেন, যে পরিমাণ কয়লা আছে তা দিয়ে ৩ জুন পর্যন্ত প্লান্টটি চালু রাখা যাবে। ৩ তারিখের পর গোটা প্লান্টটি বন্ধ হয়ে যাবে। তবে আমরা আশা করছি, জুন মাসের শেষে কয়লার জাহাজ আসবে। তখন আমরা পুনরায় প্লান্টটি চালু করতে সক্ষম হবো।
তিনি বলেন, ১০ কোটি ডলারের পুরোটা আমরা এখনও পাইনি। তবে আশা করছি ২/১ দিনের মধ্যেই পেয়ে যাব। আপাতত সেই আশায়ই আমরা নতুন করে চেষ্টা করছি কয়লা আনার জন্য। তবে সেটা এসে পৌঁছাতে পারে, আশা করি জুন মাসের শেষ নাগাদ।
প্লান্টটি বন্ধ হলে দেশে লোডশেডিংয়ের প্রভাব পরবে কি না এমন প্রশ্নে শাহ আবদুল মাওলা বলেন, এটি বলা মুশকিল। কারণ পিডিবি এটা কীভাবে ট্যাকেল করবে বা কোন পদ্ধতি নিবে তার ওপর নির্ভর করবে। এটা পিডিবি ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রেজওয়ান ইকবাল খান নিউজবাংলাকে বলেন, আপনারা সবাই জানেন কয়লা সংকটের কারণে ইতোমধ্যে ১৩২০ মেঘাওয়াটের এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট মজুদ কয়লা দিয়ে বাকি ইউনিটটি আমরা চালু রেখেছি। কিন্তু সেটিও কয়েকদিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে, মানে ৩ তারিখের পর এটিও বন্ধ হবে।
তিনি বলেন, যে পরিমাণ কয়লা আছে তাতে আগামী ৩ জুন তারিখ পর্যন্ত প্লান্টটি চালু রাখা সম্ভব হবে। এরপর হয়তো জুন মাসের শেষ নাগাদ আমরা আবার প্লান্টটি চালু করতে পারবো, এমন আভাস পাচ্ছি আমরা। কিন্তু তখন এই প্লান্টটি ফুল ক্যাপাচিটিতে চালু করতে পারবো কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
৩ তারিখের পর প্লান্টটি বন্ধ হলে দেশে লোডশেডিং বেড়ে যাবে কি না এমন প্রশ্নে রেজওয়ান ইকবাল খান বলেন, আমাদের পায়রার বিদ্যুৎ এখান থেকে গোপালগঞ্জ যাবার পর যেহেতু ঢাকাসহ অন্যান্য জায়গার বিদ্যুৎ লাইন রেডি আছে সেক্ষেত্রে এটি নির্ভর করবে এনএলডিসির (ন্যাশনাল লোড ডিসপাস সেন্টার (জাতীয় লোড প্রেরণ কেন্দ্র) ওপর। কোন জায়গায় লোডশেডিং দেবে, কোন জায়গায় লোডশেডিং দেবে না, এটি সম্পূর্ণ তাদের ব্যপার। কারণ বাংলাদেশে যত বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যায়, তারপর তারাই সিদ্ধান্ত নেন কোন জায়গায় বিদ্যুৎ দেবেন বা কোন জায়গায় বিদ্যুৎ দেবেন না।
তারপরও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হলে এর প্রভাব জাতীয় গ্রিডে পড়বে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ১৩২০ মেঘাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশের উৎপাদিত এই মুহূর্তে সবচেয়ে সর্ববৃহৎ একটি প্লান্ট। দেশের মোট চাহিদার ৯ভাগ বিদ্যুৎ এখান থেকে আমরা সাপ্লাই দিয়ে আসছি এতদিন। অর্থাৎ এখান থেকে উৎপাদিত ১২৪০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যাবার পর সেখান থেকে বরিশাল এবং খুলনা বিভাগেও আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। যে কারণে এত বড় প্লানটি বন্ধ হলে এর একটি প্রভাব অবশ্যই পড়ার কথা। তারপরও যেসব প্লান্ট বন্ধ ছিল সেগুলো সরকার হয়তো চালু করতে পারে তবে সেটি সংশ্লিষ্টরাই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু কমবেশি একটা প্রভাব অবশ্যই পরবে এতে সন্দেহ নাই। তবে সেটি কী পরিমাণ হবে কম না বেশি তা নির্ভর করবে সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর।
রেজওয়ান ইকবাল খান আরও বলেন, আমাদের এমডি স্যার ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন, কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় দ্রুত সময়ের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোদমে চালাতে গড়ে প্রতিদিন ১২ হাজার টন কয়লা ব্যবহার হয়। যার পুরোটাই ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে আসছিল সিএমসি। ডলার সংকট দেখা দেয়ায় গত ছয় মাস ধরে কোনো বিল পরিশোধ করা হয়নি। ফলে ২৯৮ মিলিয়ন (২৯ কোটি ৮০ লাখ) মার্কিন ডলার বা ৩ হাজার ১৭৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) বকেয়া পড়েছে।
সূত্র জানায়, ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদিত দুইটি ইউনিটের মধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারিতে উৎপাদনে আসে। পরে একই বছরের ২৬ আগস্টে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসে। পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি করে পিডিবি।
তবে সঞ্চালন লাইনের জটিলতায় দেড় বছর ধরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির একটি ইউনিট বন্ধ রাখতে হয়। এরপর বিকল্প উপায়ে রাজধানী এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখা হয়।
এর আগে বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও ডলার-সংকটে পড়ে কয়লা কিনতে না পেরে দুই দফায় বন্ধ হয়েছিল। এখন উৎপাদনে রয়েছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র।
শেরপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি বহরে হামলার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি সঠিক নয়।
সোমবার (২৬ মে) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শেরপুরে পরিবেশ উপদেষ্টার গাড়ি বহরে হামলা বিষয়ে কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই খবরটি বিভ্রান্তিকর ও এটি সত্যনির্ভর নয়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘উপদেষ্টা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শেরপুরের নালিতাবাড়ীর দাওধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মধুটিলা রেঞ্জে দীর্ঘমেয়াদি বাগান এলাকা পরিদর্শনের উদ্দেশে রওনা হন।
‘পরবর্তীতে তিনি মধুটিলাতে একটি জনসভা করেন। সেখানে তিনি হাতির আক্রমণে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেন এবং হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব ও প্রাকৃতিক বন রক্ষার বিষয়ে মতবিনিময় করেন, যা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল।’
এসব অনুষ্ঠানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে। ‘এরপরে একটি স্থানে কয়েকজন সাংবাদিক ও কতিপয় ব্যক্তির মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে।’
তবে, এটি উপদেষ্টার সফরের সম্পর্কিত নয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আজ রবিবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা’র নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সাবেক কমিটির সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু নব নির্বাচিত সভাপতি এরফানুল হক নাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কিরণের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার মহাসচিব উদয় হাকিম, সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম আঙ্গুর, সংগঠনের সাবেক সভাপতি এরশাদ উদ্দিন, নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র সভাপতি হামিদ মোহাম্মদ জসিম, যুগ্ম সম্পাদক এম শাহজাহান, শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসাইন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ এনায়েত উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক যোবায়ের আহসান জাবের, জনকল্যাণ সম্পাদক গোলাম রসূল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এম শাহীন আরিফিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাছান, মুশতাক আহমেদ লিটন, জহুরুল আলম জাবেদ।
দায়িত্ব হস্তান্তর শেষে নবনির্বাচিত সভাপতির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কিরণের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার মহাসচিব উদয় হাকিম, সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল হক এরশাদ, সিনিয়র সহসভাপতি হামিদ মোহাম্মদ জসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম শাহজাহান, শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসাইন, নির্বাহী সদস্য জহুরুল আলম জাবেদ, জনকল্যাণ সম্পাদক গোলাম রসুল ভূইয়া, মুস্তাক আহমেদ লিটন, আবুল হাছান প্রমুখ।
বক্তারা সংগঠন কে অগ্রসর করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। সংগঠনের প্রয়াত নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করা হয় এবং যারা অসুস্থ আছেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। বক্তারা বেকার সদস্যদের চাকুরির ব্যবস্থা করা, সদস্যদের যে কোনো সমস্যায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, জনকল্যাণ ফান্ড কে শক্তিশালী করাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য গত ১৭ মে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এ কমিটি ষোষণা করা হয়।
আগামী চার দিন সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শনিবার আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া ২৭ মে পশ্চিম-মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পাবে।
আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়াও আগামী মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আর আগামী বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো কিংবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা (১-৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় দিনদিন বেড়েই চলেছে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। মাদকের নীল দংশন থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের শত চেষ্টা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাদক ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক বিরোধী র্যালী সেমিনার কোনো কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। ৫ই আগষ্টের আগে প্রশাসনের তৎপরতা থাকায় উপজেলায় মাদকের ভয়াবহতা কিছুটা কম থাকলেও সম্প্রতি আবার বেড়েছে মাদকের বিস্তার।
মাদকের এই ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছেন উপজেলার অভিভাবকরা।
কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাদক কারবারীরা মাদকের কেনাবেচা করে থাকে। এর মধ্যে পৌর শহরেই রয়েছে বেশ কয়েকটি মাদকের স্পট। পৌর ৬নং ওয়ার্ডের ওয়াপদা রোড, আঃ জঃ কলেজ গেইট ও তৎসংলগ্ন এলাকা, উত্তর বাসষ্টান্ড, দক্ষিণ বাসষ্টান্ড, পঞ্চায়েত বাড়ির চৌরাস্তা, পৌর ৯নং ওয়ার্ডের বিএনপি বাজার, পৌর ১নং ওয়ার্ডের জয়া সড়ক, পৌর ৪নং ওয়ার্ডের সালাহউদ্দিন কমিশনারের বাড়ির পাশে রয়েছে ২টি স্পট। এছাড়া বড়মানিকা ইউনিয়নের মানিকার হাট বাজারের পাশে একটি স্পট, কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা গ্রাম, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বোরহানগঞ্জ বাজার, টবগী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা, নতুন ও পুরান হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকা, হাসাননগর ইউনিয়নের খাসমহল, কাজীরহাট সহ এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি স্পট রয়েছে।
জানা যায়, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নের প্রানকেন্দ্র কুঞ্জেরহাট ও এর পাশে ফুলকাচিয়ায় রয়েছে ইয়াবা ও গাজার সবচেয়ে বড়স্পট আর এসব স্পটের নিয়ন্ত্রক ওই এলাকার প্রভাবশালী জ্বীন প্রতারকরা। এদের রয়েছে বেশ শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাত ধরে মাদকের চালান পৌছে যায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের হাতে। সুত্রটি জানায় এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে অটোরিকশা ড্রাইভার, মটরসাইকেল ড্রাইভার, এরা এই পেশায় কাজ করলেও এরা মাদক বহন করে নিরাপদে কাষ্টমারের কাছে মাদকের চালান পৌছে দেয়।
আরও জানা যায়, ২০২৪ সালের (২২ডিসেম্বর) টবগী ইউনিয়নের হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকার মাদক বিক্রেতা ইউসুফ কে স্থানীয় জনতা মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করে। একইদিনে টবগী ইউনিয়নের বেড়িবাধ সংলগ্ন গুচ্ছগ্রামে ঐ এলাকার এক মাদক বিক্রেতা ইয়াবা ডেলিভারি দিতে আসলে স্থানীয় লোকজন দাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির লোকজনের সহায়তায় পালিয়ে যায়।
এসব জীবন বিধ্বংসী ক্ষতিকারক দ্রব্য সেবনের ফলে যুবসমাজের সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। এরই পরিণাম স্বরূপ ছেলেমেয়ের হাতে মা-বাবা খুন, মাদকের টাকা জোগাড় করতে না পেড়ে বাবা- মায়ের কাছে টাকা চেয়ে টাকা না পেয়ে অভিমান করে আত্নহত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি এখনকার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা।
পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুলিশের টহল জোরদার করে মাদক বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে যুবসমাজকে মাদক থেকে দুরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন এখানকার সচেতন মহল।
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চলমান একটি জলকপাট নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার স্বীকার দৈনিক ইত্তেফাকের তজুমদ্দিন উপজেলা প্রতিনিধি রফিক সাদী ও আজকের ভোলার প্রতিনিধি মো: ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ।
শুক্রবার সকালে তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইস গেট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে এই মামলার এজাহারভূক্ত আসামি আজগর (৪০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজগর হাজারীগঞ্জ এলাকার মো: মোস্তফার পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রতিনিধি রফিক সাদী ও আজকের ভোলা প্রতিনিধি মো: ফারুক নির্মাণস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কন্সট্রাকশন এর কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করে তাদের সাথে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে হামলার শিকার ওই দুই সাংবাদিকদের মধ্যে মো: ফারুক তজুমদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেফতার করে। বাকিরা পলাতক রয়েছে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মোহাব্বত খাঁন জানান, সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগে ১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ফেনীর কয়েকটি উপজেলায়। এসব এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ নলকূপে পানি নেই। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির নলকূপে মিলছে না সুপেয় পানি। বেশিরভাগ গভীর নলকূপে পানি উঠছে না। একই চিত্র দেখা দিয়েছে পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঁঞা ও সদর উপজেলায়। ফলে পানি সংগ্রহে বেশ দূরে ছুটছেন ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে পুকুর বা ডোবার জীবাণুযুক্ত পানি ফুটিয়ে পান করতে হচ্ছে অনেককে।
প্রায় এলাকায় পুকুর, খাল ও জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে। অনাবৃষ্টির পাশাপাশি গরমের তীব্রতা বাড়ায় ভূগর্ভের পানির স্তর নেমে গভীর নলকূপেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি। জেলার লক্ষাধিক নলকূপে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
‘গত দুই-তিন মাস ধরে গভীর নলকূপে পানি পাচ্ছি না। পানির জন্য এলাকার লোকজন হাহাকার করছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে নলকূপ দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি করছি,’ এসব কথা বলেন ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ উদ দৌলা।
ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আছমত আরা শিরি বলেন, ‘নলকূপে পানি না উঠায় আমরা পানির জন্য কষ্ট করছি। অপরদিকে নলকূপের সঙ্গে থাকা মোটরেও পানি উঠছে না। অনেক দূর থেকে পানি এনে পান করছি। ওখানেও পানি উঠছে না, দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে এক কলস পানি ভর্তি করতে হয়। নলকূপের পানির জন্য সরকার যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।’
এলাকাবাসী জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গত ৪-৫ মাস ধরে তারা কোনো গভীর নলকূপে পানি পাচ্ছেন না। পুকুরের পানি ফুটিয়ে পান করা হচ্ছে।
ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল হক বলেন, ‘গত ছয় মাস বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির লেয়ার নিচে নেমে গিয়ে ফেনীর অনেক এলাকায় গভীর নলকূপে প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পৃথিবীতে কোথাও এভাবে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে না। সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার নষ্ট করে ফেলছি। অপ্রয়োজনীয় পানি তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। নলকূপের নির্ভরশীলতা থেকে ফিরে আসতে হবে। ফেনীতে দেড় লাখ নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নলকূপে পানি উঠছে না। বর্তমানে প্রতি ইউনিয়নে ৮টি করে নলকূপ বরাদ্দ রয়েছে। সামনে অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করছি।’
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। সেইসঙ্গে অসময়ে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। গত বছর নদীভাঙনের পর যেটুক ভূমি ছিল, সেটুকুও এবার ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশার দিন পার করছেন নদীপাড়ের শত শত ভাঙন-কবলিত মানুষ।
সরেজমিনে উপজেলার জিগাতলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জিগাতলা গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সেখানে এবার স্থানীয়রা ভুট্টা, তিল, বাদাম, বোরো ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করেছিল। এ ছাড়া রামপুর, গোপিনাথপুর, বাসুদেবকোল এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যায়।
গত বছরের মতো এবারও উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া ও মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ীসহ কয়েকটি এলাকায় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বারবার আশ্বাস দিলেও বাঁধের কাজ শুরু হচ্ছে না।
এদিকে প্রতিবছর বন্যায় ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা বাঁধের জিওব্যাগ আনলোড ড্রেজারগুলোর কারণে মাটি ধসে যাচ্ছে। যার ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধ পাকা সড়ক, গাইড বাঁধ, বসতবাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
জিগাতলা গ্রামের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, এখান থেকে প্রতিবছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হতো। সেসময় কোনো ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে পারত না, প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দিত। সাবেক এমপি ছোট মনির খোকার মাধ্যমে ঘাটটি পরিচালনা করতেন। এখন তার খেসারত দিচ্ছে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। তা না হলে ফসলিজমির সঙ্গে তাদের ঘরবাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খানকে একাধিবার মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শামীম মিয়া জানান, ভূঞাপুরের ইউএনও এসিল্যান্ডের সঙ্গে তিনি ভাঙন-কবলিত জিগাতলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদীভাঙনের স্থান থেকে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার নিকটে ঘরবাড়ি রয়েছে। সুতরাং এলাকাটি মনিটরিং করে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য