সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানায়।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে, তবে খুলনা বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাপমাত্রার বিষয়ে জানানো হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতি ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার।
ঢাকায় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঢাকায় মঙ্গলবার সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১১ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারা দেশে ৪৩৫টি টহল দল মোতায়েন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এর মধ্যে শুধু রাজধানীতে ১৪১টি টহল দল মোতায়েন রয়েছে। খবর বাসসের।
র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, র্যাবের গোয়েন্দারা ছদ্মবেশে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি জানান, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে নিরাপত্তা প্রদানে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও পণ্যবাহী পরিবহনকে র্যাব টহলের মাধ্যমে এস্কর্ট প্রদান করে নিরাপদে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিচ্ছে র্যাব।
এদিকে অবরোধের আগের দিন শনিবার রাতে রাজধানী ঢাকায় তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল শিকদার জানান, শনিবার রাতে রাজধানীর গাবতলী, আগারগাঁও ও যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন:দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার সকালে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১১.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮২.৫০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’-এ পরিণত হয়েছে।
‘ঘূর্ণিঝড়টি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।’
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশের অবস্থা নিয়ে বলা হয়, ‘ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।’
বন্দরে সতর্ক সংকেত নিয়ে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ঢাকায় আসা ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক শুরু হয়েছে।
রোববার সকাল ১১টার দিকে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সম্মেলনকক্ষে অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের নেতৃত্বে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন।
বৈঠকে ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড (ইলেকশন এক্সপার্ট), আলেকজান্ডার ম্যাটাস (ইলেকটোরাল এনালিস্ট), সুইবেস শার্লট (ইলেকটোরাল এনালিস্ট) এবং রেবেকা কক্স (লিগ্যাল এক্সপার্ট)।
দুই মাসের মিশন নিয়ে গত ২৯ নভেম্বর ঢাকায় পৌঁছায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চার সদস্যের এ নির্বাচনি এক্সপার্ট টিম।
এদিকে বাংলাদেশে এবারের নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ কোনো পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে না ইইউ। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে এ সিদ্ধান্ত জানায় ইউরোপের ২৭ দেশের এই জোট।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে গত ২৯ নভেম্বর যৌথসভা করে ইইউ। বৈঠকে সংস্থাটির ১০ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দেন ইসিকে।
আরও পড়ুন:বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে।
সড়ক, রেল ও নৌপথে ডাকা সর্বাত্মক এই অবরোধ রোববার সকাল ৬টায় শুরু হয়েছে, শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে গত বৃহস্পতিবির এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
শনিবার রাতে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দেশবাসী এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ পরিবহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতার বাইরে থাকবে।
বিএনপির এই অবরোধ-হরতালের এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের পর। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সেদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিল বিএনপি। ওই সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান দলটির নেতা-কর্মীরা।
এ অবস্থায় সমাবেশ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতালের ডাক দেন। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। অজ্ঞাত স্থান থেকে রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি দেন। বিএনপির অবরোধে একাত্মতা জানায় জামায়াতে ইসলামীও।
এর পর থেকে বিরতি দিয়ে দফায় দফায় অবরোধ-হরতালের ঘোষণা দিয়ে আসছে বিএনপি। দলীয় সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ কিছু দাবিতে এমন কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে। তবে এর মাঝে নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল দিয়েছিল বিএনপি। এ ছাড়া একদিন হরতাল ও একদিন অবরোধও ঘোষণা করা হয়েছিল। সর্বশেষ ঘোষণা করা হয় টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।
বিএনপির ডাকা অবরোধে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপসহ নানা সহিংসতা হচ্ছে। কঠোর অবস্থানে থেকে দলটির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। তবে আতঙ্ক সঙ্গে করেই বাইরে বের হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে নন্দিত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন সাহসী রাজনৈতিক নেতা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর লে মেরিডিয়েন হোটেলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিশিষ্ট লেখক ও রাজনৈতিক গবেষক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টনের লেখা ‘শেখ হাসিনা: দ্য মেকিং অফ অ্যান এক্সট্রাঅর্ডিনারি সাউথ এশিয়ান লিডার’ (Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি প্রমুখ।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচনের বিরল সুযোগ পেয়ে আমরা সবাই বেশ সম্মানিত। কেননা যার জীবনালেখ্য নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে, তিনি একজন অসাধারণ ও অমূল্য মানুষ। তিনি আর কেউ নন; আমাদের সবার প্রিয়, অতি পরিচিত, অতি আপন, দেশের মানুষের মধ্যমণি, নন্দিত প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের দেশ পরিচালনার একজন যোগ্য ও সাহসী রাজনৈতিক নেতা। তিনি শুধু বাংলাদেশেরই অসাধারণ একজন নারী নন, তিনি অত্যন্ত সাহসী রাজনীতিবিদ। পাশাপাশি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজ সমগ্র বিশ্বনেতার কাতারে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সারা বিশ্বে তার সফল কর্মের জন্য নন্দিত। আমরা আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুধু জাতীয়ভাবে বিবেচনা করব না। তিনি আজ বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিচরণ করছেন তার সাহসী সব সিদ্ধান্তের কারণে।’
স্পিকার বলেন, ‘এই বইটিতে লেখক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটবেলা থেকে কীভাবে ধাপে ধাপে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অতিবাহিত করেছেন এবং কীভাবে একজন সফল রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন- তার সঠিক তথ্য দারুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের মতো একটি ঘটনা যার জীবনে ঘটেছে, শুধু তিনিই বলতে পারবেন তার প্রতি নির্মমতা কতটা গভীর এবং কতটা বেদনাদায়ক। তারপরও শেখ হাসিনা এগিয়ে গেছেন এবং দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
বঙ্গবন্ধুর মতোই বাংলার মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা অপার। তিনি ’৭৫-এর সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়কে বুকে ধারণ করে, সেই নির্মমতাকে সঙ্গী করে দেশের হতদরিদ্র মানুষের জন্য তার বাবার অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। এটিই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। যে স্বপ্ন ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, তার সবই বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করবেন বলেই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে আসেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করেন। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে তিনি এ বাংলায় রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছেন এবং আস্তে আস্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করেছেন এবং পরবর্তীতে দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। এই যে মহাকর্মযজ্ঞ এবং দেশের মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন মানুষ, তার সম্পর্কে জানার জন্য অবশ্যই এমন সব বই দরকার।’
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এমন একটি বই সত্যিই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জাতীয় চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন এ বইটির আগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে বইটি লিখেছেন, সেটির জন্যও তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমি বলব- দুটি বই-ই আমাদের জন্য অমূল্য রচনা। ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষের জন্য বইগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্পদ হিসেবে আমাদের কাছে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
অনুষ্ঠানে বইটি লেখার স্মৃতিচারণ করে ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা এই বইটির আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি বই লেখার তাগিদ অনুভব করি। করোনাকালে আমার একজন পরিচিত মানুষ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন যে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই উপহার দেবেন। কিন্তু কোনোভাবেই জাতির পিতার ওপর লেখা একটি ভালো ইংরেজি বই পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর আমি শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই লেখার অনুমতি চাই। সেটি আমি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর মাধ্যমে জানাই। এরপর নানাভাবে অনেকের সহযোগিতা পেয়ে বইটি লিখে ফেলি। ওই বই লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনাকে অন্যভাবে আবিষ্কার করি। তখনই আমি তার ওপর আরেকটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। সেটিও আমি যথারীতি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিনকে জানাই।
‘তখন প্রধানমন্ত্রী জানান, তাকে নিয়ে বই লেখা লাগবে না; তার বাবাকে নিয়ে আরও কাজ যেন করি। কিন্তু ওই বইটি লিখতে গিয়ে আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীকে এত ঘটনাবহুল একজন মানুষ মনে হয়েছে, যা আমাকে বেশ আবেগতাড়িত করে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার একজন নেতা হিসেবে তিনি কাজ করছেন। এটি সারা বিশ্বকে জানাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বইটি লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনার বেশ সান্নিধ্য পেয়েছি। তিনি আমাকে বড় বোনের মতো স্নেহ দিয়েছেন, ছায়াও দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানের একটি বই করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমি তাই করেছি।’
‘এটি শুধু একটি বই নয়। একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জীবনে কী কী অধ্যায় পার করে আজকের জায়গায় এসেছেন, তার সবই জানা যাবে বইটি পড়লে। ১৯৭৫-এর পরবর্তী সময়ে একজন শেখ হাসিনা শুধু শোক নিরসনের মধ্য দিয়ে যাননি। তিনি সেই জীবনকে কীভাবে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেছেন এবং নিজেই নিজেকে কীভাবে তৈরি করেছেন- সব কথা আছে বইটিতে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর থেকে শুরু করে আজকের দিনটি পর্যন্ত তার সমগ্র জীবন বইটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়- একজন মানুষ হিসেবে শেখ হাসিনা কেমন, একজন মা হিসেবে, নেতা হিসেবে, এমনকি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কেমন- তার সবই আছে বইটিতে।’
‘Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader’ বই হাতে লেখকসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: নিউজবাংলা
ডা. মিল্টন বলেন, ‘তাই আমার প্রত্যাশা- বইটি দেশ এবং দেশের বাইরের সব মানুষের কাছে পৌঁছুক। এত ঘটনাবহুল ও বেদনাবহুল একজন মানুষের রাজনৈতিক সংগ্রামটা কেমন- তা জানতে হলে বইটি পড়তে হবে।’
‘যে শেখ হাসিনাকে চেনেনি, শেখ হাসিনাকে জানেনি, সে আসলে হতভাগা। শেখ হাসিনাকে জানা মানেই আজকের বাংলাদেশ এবং আজকের রাজনীতিকে চমৎকারভাবে অধ্যয়ন করা।’
বাণিজ্যিকভাবে চালুর পরদিনই কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটের রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর ঝুঁকির শঙ্কায় আধ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’।
শনিবার সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনে এই ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ গোলাম রব্বানীকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে লাইনের সংস্কারকাজ শুরু করলে কক্সবাজার এক্সপ্রেস আধ ঘণ্টা দেরিতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।
গোলাম রব্বানী জানান, শনিবার সকালে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের রামু উপজেলার কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলার খবর পান তিনি। পরে বিষয়টি রেল অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের সকল স্তরে অবহিত করেন। এরপর রেল প্রকৌশলসহ নির্মাণকাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে রেললাইনের বিটের খুলে ফেলা নাট-বল্টু পুনঃসংযোজন ও মেরামত কাজ শুরু করেন নির্মাণ শ্রমিকরা। তা শেষ করে ট্রেন চলাচল করার উপযোগী করতে বেলা সাড়ে ১২টা বেজে যায়।
তিনি বলেন, ‘রেললাইনের এ ত্রুটিপূর্ণ স্থান দিয়ে ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি থাকায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ছাড়া সম্ভব হয়নি। পরে রেললাইন চলাচল উপযোগী হওয়ার পর দুপুর ১টায় কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।’
তবে এটি নিছক চুরির ঘটনা, নাকি নাশকতার চেষ্টা- তা নিশ্চিত করতে পারেননি কক্সবাজার রেলের এ কর্মকর্তা।
এদিকে খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রামু উপজেলা ইউএনও ফাহমিদা মোস্তফা ও ওসি আবু তাহের দেওয়ানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান জানান, খবরটি শোনার পর প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলা অবস্থায় দেখা গেছে।
ঘটনাটি নিছক চুরির ঘটনা, নাকি কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
আবু তাহের বলেন, ‘ঘটনাটি কারা, কী উদ্দেশ্যে ঘটিয়েছে এবং যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।’
আরও পড়ুন:আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ দিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম শনিবার জানান, নিবন্ধিত ২৯টি রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৭৪৭ জন।
ইসি প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে সবচেয়ে বেশি ৩০৪টি মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থীরা। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে যাওয়া জাতীয় পার্টিরও ৩০৪ জন জমা দেন মনোনয়নপত্র।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুটি মনোনয়নপত্র জমা দেয় হারিকেন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে যাওয়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি তথা জেপি (বাইসাইকেল) ২০, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয়, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি তথা ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ছয়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল তথা জাসদ (মশাল) ৯১, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৪, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) ১৪২, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭, বাংলাদেশ মুসলিম লিগ তথা বিএমএল (পাঞ্জা) পাঁচ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট তথা বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬, তৃণমূল বিএনপি (সোনালি আঁশ) ১৫১, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (নোঙ্গর) ৪৯ ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (একতারা) ৮২টি মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর নাগাদ। আপিল নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর।
১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা চলবে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য