জরুরি বিভাগ আছে, অপারেশন থিয়েটারও আছে। তবে লাইসেন্স নেই। ডাক্তার এবং পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিও নেই। পাওয়া গেছে অপরিচ্ছন্ন নোংরা কক্ষ ও মেয়াদ উর্ত্তীণ রক্ত।
অসততা আর অব্যবস্থার এমন চিত্র মিলেছে কুমিল্লা শহরের ‘সততা স্পেশালাইজড হসপিটালে’। আর এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়েছে। একইসঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের সামনে অবস্থিত সততা স্পেশালাইজড হসপিটালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন কুমিল্লা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার আবদুল কাইয়ুমসহ পুলিশের একটি টিম।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘গত বছরও এই সততা হসপিটালের যারা মালিক তাদেরকে বলা হয়েছিল লাইসেন্স করার জন্য। তারা তা করেনি।
‘এই হসপিটালে অনেক অনিয়ম। পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই। যন্ত্রপাতি নেই। লাইসেন্স নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত পাওয়া গেছে। অপরিচ্ছন্ন কক্ষ। এসব কারণে হসপিটালটি সিলগালা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই অভিযানে পুলিশ লাইন্স এলাকায় একজন ভুয়া ডাক্তারকে ধরতে ন্যাশনাল ডিজিটাল স্পেশালাইজড ডায়গনস্টিক সেন্টারে যাই। সেখানে গিয়ে ওই ভুয়া ডাক্তারকে পাইনি। তবে ডায়গনস্টিক সেন্টারটিতে কোনো কার্যক্রম দেখতে পাইনি। তারা দালালের মাধ্যমে এখানে রোগী আনে। তারপর বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে আনে।
‘তবে এরা অনেক ডাক্তারের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে। যাদের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তারা কেউ এখানে রোগী দেখেন না। এসব অপরাধের কারণে ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারটিও সিলগালা করা হয়েছে।’
কুমিল্লা জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা ১৩৮ জন ভুয়া ডাক্তারের তালিকা তৈরি করেছি। অনিয়ম করা হসপিটাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারেরও তালিকা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত রেখেছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল বলেছেন ‘সমন্বয় সভার পরিসংখ্যানগত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বিগত ২৩ বছরে যত ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে গত ২০২৩ সালে এক বছরেই তার থেকে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ গত ২৩ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গু রোগী ছিল প্রায় আড়াই লক্ষ। কিন্তু গত ২০২৩ সালে মাত্র এক বছরেই রোগী আক্রান্ত হয় প্রায় ৩ লাখ। এই সংখ্যা শুধু হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের।’
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এর বাইরে তো আরও রোগী ছিলই। এতেই বোঝা যায়, ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আমাদের এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোন উপায় নেই। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে এক দিকে যেমন মশা মারতে হবে, আবার অন্যদিকে প্রাদুর্ভাব কমাতে আমাদেরকে আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। সবার আগে আমাদের নিজ নিজ এলাকার কমিউনিটি সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। মশা মারার জন্য ওষুধ যেমন মান সম্পন্ন কিনতে হবে তেমনি আমাদেরকে ভালো ট্রিটমেন্ট ব্যাবস্থাও রাখতে হবে। তবে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আজ থেকে যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া শুরু হলো, এটিকে চলমান রেখে সব সেক্টরকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
মন্ত্রীর সভাপতিত্বে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাসকরণ ও চিকিৎসাসেবা সুসমন্বিত করণ বিষয়ক একটি বিশেষ সভা করা হয়। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জনাব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর আবদুল্লাহ, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএসএমএমইউ ভিসি শারফুদ্দিন আহমেদসহ মন্ত্রণালয়ের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্যবৃন্দ।
সভার শুরুতে বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ও নানাবিধ সমস্যা তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করতে আমাদেরকে এক হয়ে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। কোন ভেদাভেদ যেন আমাদের মধ্যে না হয়। করোনা যেভাবে আমরা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করেছি, ডেঙ্গুও আমরা এক হয়ে সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ করবো। একই সঙ্গে এ বছর ওষুধ কিনতে আরো বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে আমাদেরকে ওষুধ কেনার উদ্যোগ নিতে হবে।’
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘করোনার মত ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবছর আমরা আগেভাগেই এই সমন্বয় সভার আয়োজন করেছি। আশা করছি, এ বছর সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে এক যোগে কাজ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনতে সক্ষম হব।’
সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উপস্থিত মিডিয়া কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় তাঁর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন:খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ওষুধ আবার চুরির ঘটনায় এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ।
হাসপাতালের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড (মেডিসিন) থেকে রোববার দুপুর একটার দিকে ওষুধ চুরি হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ জব্দ করা হয়। পরে তাদের সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সোপর্দ করে মামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন সালেহা বেগম ও তার স্বামী আব্দুর রাজ্জাক। ওই হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মচারী হিসেবে সালেহা ২০২২ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ফ্রি কর্মী হিসেবে কর্মরত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রসূতি বিভাগের অপারেশন টেবিলের নিচ থেকে ১ মার্চ বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ জব্দ করা হয়। ওই ঘটনার পর ওষুধ চুরি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোববার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ওষুধ চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় সালেহা বেগম ও তার স্বামী আবদুর রাজ্জাককে আটক করেন কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা।
ওই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক চিকিৎসক হুসাইন শাফায়াত বলেন, ‘মাত্র কয়েক দিন আগে প্রসূতি বিভাগের টেবিলের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ওষুধ উদ্ধার করে নার্সিং ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট। এ ঘটনায় তিনজন চিকিৎসককে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি তাদের তদন্তকাজ করছে।
‘এর পর থেকে হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সে কারণেই আজ (রোববার) আবার ওষুধ জব্দ করা সম্ভব হয়।’
তিনি জানান, আটক দুজনকে থানায় সোপর্দ করে মামলা করা হয়। পুলিশের তদন্তে এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তারাও আইনের আওতায় আসবে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হাই বলেন, ‘ওষুধ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই নারী ও তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।’
হাসপাতালের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা যায়, ২০২১ সালের নভেম্বরে খুমেক হাসপাতালের ইমার্জেন্সি অপারেশন থিয়েটারে মজুত করা বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও মালামালসহ আউটসোর্সিং কর্মচারী মনিরা বেগমকে আটক করেন প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা। এ সময় তার কাছে থাকা ১৪টি ড্রয়ার থেকে ৪২ ধরনের বিপুল পরিমাণ ওষুধ জব্দ করা হয়।
এ ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আউটসোর্সিং কর্মচারীকে বরখাস্ত ছাড়াও অন্য দুজন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদ ও মুকুলকে চাকুরিচ্যুত করার সুপারিশ করে, তবে ওটি ইনচার্জ নার্সকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।
গাংনী হাসপাতাল বাজার এলাকায় রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে সোনালী ব্যাংক শাখার নিচতলায় অবস্থিত হাসিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড গাংনী সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওই ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ২২ বছর বয়সী পান্না খাতুন গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের বাজার পাড়ার সেলিম রেজার স্ত্রী। তার নবজাতকটি বেঁচে আছে।
প্রসূতি পান্না খাতুনের পরিবারের অভিযোগ, ডায়াগনস্টিক সেন্টারটিতে রোববার বিকেলের দিকে পান্না খাতুনের সিজার শেষে একটি সন্তান জন্ম হয়। সন্তান জন্ম নেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তার শরীরে রক্ত দেয়া হয়। রক্ত দেয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে পান্না খাতুনকে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে কুষ্টিয়া নেয়ার সময় রাস্তায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, এ ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতি পান্না খাতুনের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে চেষ্টা শুরু করে যেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা না নেয়া হয়।
ডায়াগনস্টিকের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ ইমরান গৃহবধূ পান্না খাতুনকে সিজারিয়ান অপারেশন করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। অপারেশন শেষে তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। তার ঘণ্টা খানেক পর পান্না খাতুনের শারীরিক অবস্থা অবনতি দেখা দেয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়।
গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি শুনেছি, তদন্ত সাপেক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজার স্থগিতাদেশ বাড়ানো এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে এই আবেদন করেছেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ায় সরকার।
করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশত্যাগ না করার শর্তে সাজা স্থগিত করে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি ছয় মাস অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। ওই বছরই আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবারের পাশাপাশি পানি পান থেকে বিরত থাকেন মুসলিমরা। রোজায় দেহে পানিশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি হয়, যা থেকে হতে পারে অবসাদ ও বমি বমি ভাব।
কাতারের প্রধান অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন জানিয়েছে, সাধারণত শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক, ডায়াবেটিস, কিডনি বা অন্যান্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কিংবা সূর্যের নিচে শারীরিক ব্যায়াম করা লোকজন পানিশূন্যতার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন।
রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে ৭টি উপায়
হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন পানিশূন্যতা এড়াতে সাতটি পরামর্শ দিয়েছে।
১. ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে আট থেকে ১২ কাপ পানি পান করুন। ঠান্ডা পানির তুলনায় দ্রুত শোষণ হয় বলে কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে।
২. রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিদিন স্যুপ খেতে পারেন। শরীরে তরলের চাহিদা পূরণের ভালো উৎস হতে পারে খাবারটি।
৩. তরমুজ, টমেটো, শসা, আঙুরের মতো ফল ও সবজিতে অনেক পানি থাকে, যা তৃষ্ণা কমাতে সাহায্য করে।
৪. ইফতারে উচ্চ মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এ ধরনের খাবার শরীরে পানির চাহিদা বাড়ায়। এ ছাড়া সালাদ ও তরকারিতে লবণ কম দেয়া উচিত। বেশি পরিমাণে লবণ খেলে বাড়তে পারে তৃষ্ণা।
৬. ক্যাফেইন শরীরের তরল শুষে নিয়ে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে রমজানে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এ ধরনের পানীয়র মধ্যে এনার্জি ও কার্বনযুক্ত পানীয়, চা ও কফি রয়েছে। ধূমপান মুখকে শুষ্ক করে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে ধূমপানও এড়িয়ে চলুন।
৭. গরমের দিনে সূর্যতাপে ব্যায়াম করলে প্রচুর পরিমাণে পানি পানের চাহিদা তৈরি হয়। এ কারণে রোজায় ব্যায়ামের সবচেয়ে ভালো সময় হলো ইফতারের পর। কারণ ইফতারের মধ্য দিয়ে শরীর পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয়র মাধ্যমে শক্তি পায়। রোজা ভেঙে ব্যায়াম করলে শরীর থেকে ঝরে যাওয়া তরলের চাহিদা পূরণের জন্যও পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার পর তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছেন।
বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। রাতে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে তিনি বৃহস্পতিবার বাসায় ফেরেন।
খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করার বিষয়ে বুধবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘চেয়ারপারসন আজ (বুধবার) ইফতারের পর শারীরিক নিয়মিত চেকআপ করার জন্য এভারকেয়ার হসপিটালে আসেন। এখানে আসার পর মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা ওনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং কিছু কিছু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়।
‘পরীক্ষা পরবর্তীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন রয়েছে। সে জন্যই ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা সবাই বসবেন। সুন্দরভাবে যাতে ওনার সুস্থতা আরও বেশি ত্বরান্বিত করা যায় সে ব্যাপারে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।’
খালেদা জিয়া দেশবাসীকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জানিয়ে অধ্যাপক ডা. জাহিদ বলেন, ‘উনি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে সারা দেশের মানুষকে রমজানুল মোবারক জানিয়েছেন এবং ওনার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:জামালপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। মৃত রোগীর স্বজনদের হামলায় আহত হয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এ প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্নরা।
হামলা-ভাঙচুরের এ ঘটনায় মৃত রোগীর ছেলেকে পুলিশ আটক করেছে। আর রোগীর মৃত্যুর ৮ ঘণ্টা পর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে জামালপুর পৌর এলাকার রশিদপুর গ্রামের গুল মাহমুদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। পরে রোগীকে মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের ওপর চড়াও হয়। অন্য ওয়ার্ড থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মেডিসিন ওয়ার্ডে গেলে তাদের ওপরও স্বজনরা হামলা চালায় এবং চিকিৎসকদের কক্ষ ভাঙচুর করে। এতে ইন্টার্ন চিকিৎসক মঞ্জুরুল হাসান জীবন, ডা. ফহমিদুল ইসলাম ফাহাদ ও ডা. তুষার আহমেদ আহত হন।
এদিকে, চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করে
মৃতের স্বজনদের অভিযোগ, মৃত্যুর পর গুল মাহমুদের মরদেহ হাসপাতালে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তার দুই ছেলে হায়দার ও হাফিজের সঙ্গে হাসপাতালের স্টাফদের বাকবিতন্ডা হয়। এ কারণে মধ্যরাতে মৃত্যু হলেও দুপুর পর্যন্ত মরদেহ আটকে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডাক্তাররা দাবি তোলেন যে মৃতের ছেলেকে আটক করার পর মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
অপরদিকে হামলাকারীদের আটক, শাস্তি ও ইন্টার্নদের নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান জামালপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে মৃতের ছেলে হায়দার হাসপাতালে তার বাবার মরদেহ নিতে এলে পুলিশ তাকে আটক করে। আর সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে মৃত্যু হলেও ছেলেকে পুলিশ আটক করার পর মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীকে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে রোগীর দুই ছেলে হায়দার ও হাফিজ চিকিৎসকদের ওপর হামলা করে এবং চিকিৎসকদের কক্ষ ভাঙচুর করে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছি।
‘ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছে। এতে চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে অন্যান্য চিকিৎসককে দিয়ে সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি দাবি করেন, ‘নিকটাত্মীয় কেউ না থাকায় রোগীর মৃত্যুর পরপরই মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। স্বজনরা যখন এসেছে তখন তাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।’
জামালপুর সদর থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। একজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য