কাদিয়ানিদের ‘ঈমানবিধ্বংসী অপতৎপরতা’ বন্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ। এতে ধর্মীয় নেতাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ নামে ওই কর্মসূচিতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়।
সমাবেশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হযরত মোহাম্মদ (স.) ইসলামের শেষ নবী। এর পর যারা নিজেদের নবী দাবি করে তারা ইসলামের শত্রু। আমি আজকের এই সমাবেশের উলামা মাশায়েখদের দাবির প্র্রতি একাত্মতা পোষণ করছি।’
রেজিস্ট্রারি মাঠে বেলা ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। তার আগে সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ও ট্রাকযোগে সমাবেশে লোকজন আসতে থাকেন। নগর থেকে মিছিল নিয়েও আসেন অনেকে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।
দুপুরের পর রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে জনতা। এতে আশপাশের কয়েকটি সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত জনতা স্লোগান দেয় ‘নবীর পরে নবী নাই, সংসদে আইন চাই’, ‘কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করতে হবে’ ইত্যাদি। অনেকে এসব দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়েও হাজির হন সমাবেশে।
আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও পূর্ব সিলেট আযাদ দ্বীনি আরবী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা শায়খ আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুণা, উলামা পরিষদ বাংলাদেশের মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মাওলানা শায়খ নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী প্রমুখ।
বিকাল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সমাবেশ।
প্রসঙ্গত, সুন্নি মুসলিমদের অনেকে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের অমুসলিম বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানি বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে।
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে ইসলামের একজন নবী ঈসা ও ইমাম মাহদি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দাবি থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত।
পাকিস্তানে আহমদিয়াদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী আনন্দ উৎসব জশনে জুলুস।
নগরের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জশনে জুলুসের আনন্দযাত্রা শুরু হয়।
জামেয়া মাদ্রাসার মাঠ পেরিয়ে সড়কের দিকে আসতেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জশনে জুলুস।
আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই জুলুস নগরীর মুরাদপুর, চকবাজার, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, ওয়াসা, জিইসি প্রদক্ষিণ করে ফের মুরাদপুর হয়ে বিবিরহাট মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হয়।
এরপর মাহফিল ও জোহরের নামাজের পর দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
জুলুসে আসা চট্টগ্রাম হাটহাজারী এলাকার শামিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর ১২ রবিউল আউয়াল নবী করিম (সা.)-এর পৃথিবীতে আগমন উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। দূরদুরান্ত থেকে নবী প্রেমিকরা জুলুসে অংশগ্রহণ করতে আসেন। আমি গত ১৫ বছর ধরে নিয়মিত জুলুসে অংশগ্রহণ করি।’
জুলুস আয়োজকদের মধ্যে গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, ‘আমাদের প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক জুলুসে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত পরিমাণ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। জুলুসে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে বিশেষ মেডিক্যাল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
বুধবার রাত থেকেই চট্টগ্রাম ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জামেয়া ময়দানে এসে জড়ো হতে থাকেন ভক্তরা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মানুষ বিবিরহাট, মুরাদপুর থেকে জুলুসে যোগ দেন।
জুলুস উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন এলাকা সেজেছে রঙিন সাজে। নানা ব্যানার-ফেস্টুন ও আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে সড়কের দুই পাশ।
৫১তম জুলুসে নেতৃত্বদানকারী তাহের শাহর জন্য সাজানো হয় বিশেষ গাড়ি। সেই গাড়িতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান।
এদিকে জুলুসে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে বিশেষ নির্দেশনা দেয় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। নির্দেশনায় সকাল আটটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন রোডের মুখে রোড ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে কোথাও যান চলাচল সীমিত, আর কোথাও বন্ধ রাখা হয়েছে।
১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম নগরীর বলুয়ার দীঘি খানকাহ থেকে এই জুলুসের সূচনা করেন আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.)। এরপর থেকে নিয়মিতভাবে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ১২ রবিউল আউয়াল জুলুসের আয়োজন করে আসছে। এতে প্রতি বছর চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক লাখ মানুষ এতে অংশ নেন।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ বৃহস্পতিবার, ১২ রবিউল আউয়াল। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দের এই দিনে মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর শুভ আবির্ভাব ঘটে।
হিজরি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দের এই দিনে আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর জন্মের আগে গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। ওই সময় আরবের মানুষ মহান আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃংখলা। এই যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’-এর যুগ।
তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করতো। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত লাভ বা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভ করেন।
পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না।’
এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এই দিনের (পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী) গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাপক। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।
এদিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানব কল্যাণে ব্রতী হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর জীবনের ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হবে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে কতজন মুসল্লী হজে যেতে পারবেন, তা জানিয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, সরকারিভাবে কতজন ও বেসরকারি এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে কতজন হজে যাবেন, সেই কোটাও নির্ধারণ করেছে সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৬৮ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ১৩ হাজার ৪০০ জন হজ করতে পারবেন।
বুধবার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে হিজরি ১৪৪৫/২০২৪ সনের হজ আগামী বছরের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর রাজকীয় সৌদি সরকার কর্তৃক বাংলাদেশকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমের বরাদ্দ করা হজযাত্রীর কোটা বিভাজনের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৯৬৮ জন হজযাত্রী এবং তাদের সঙ্গে ২৩০ জন গাইড থাকবেন। ফলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট হজে যাবেন ১০ হাজার ১৯৮ জন।
অন্যদিকে বেসরকারিভাবে হজযাত্রী এক লাখ ১৩ হাজার ৪০০ জন এবং গাইড ও মোনাজ্জেম থাকবেন ৩ হাজার ৬০০ জন। তাই বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে মোট এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ করতে সৌদি আরব যেতে পারবেন।
চলতি বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ কোটার মধ্যে ১৫ হাজার জনের সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাদ বাকি ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের বরাদ্দ ছিল। তবে সেই কোটা পূরণ করতে পারেনি।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বুধবার ৭৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তাতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত একেকজন রপ্তানিকারক ৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে।
তবে ইলিশ রপ্তানিতে ৮টি শর্ত দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- রপ্তানির অনুমতিপ্রাপ্ত পণ্যগুলোর একটি ম্যানুয়াল পরিদর্শন করবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ; প্রতিটি চালান শেষ হওয়ার পরে পুরো রপ্তানি নথি অবশ্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে; কেউ অনুমোদিত পরিমাণের বেশি ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে না; অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং সাব-কন্ট্রাক্টিংয়ের মাধ্যমে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না।
দুর্গাপূজা সামনে রেখে এর আগে পাঁচ হাজার টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা।
চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাছ আমদানিকারকদের সমিতি কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে এই আবেদন জমা দেয়। আবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসে ৪ সেপ্টেম্বর।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর পূজা উৎসব উপলক্ষে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে রপ্তানি করা হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ টন ইলিশ।
আগের বছরগুলোতেও একই ঘটনা ঘটেছে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন:মক্কায় ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য পোশাক-সম্পর্কিত নিয়ম ঘোষণা করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, নারী ওমরাহ পালনকারীরা ওমরাহ পালনের সময় তাদের পছন্দমতো পোশাক পরতে পারবেন। তবে কিছু নীতি মেনে চলতে হবে।
এক্স পোস্টে মন্ত্রণালয় আরও জানায়, নারীর পরণের পোশাকটি হতে হবে ঢিলেঢালা এবং নিশ্চিত করতে হবে এটি যেন পুরো দেহকে ঢেকে ফেলে। ওমরাহ পালনকালে কোনো ধরনের অলংকার পরা যাবে না।
সৌদি আরবে চলমান ওমরাহর মৌসুমকে কেন্দ্র করে এ নিয়মগুলো ঘোষণা করা হলো।
এক প্রতিবেদনে গালফ নিউজ জানিয়েছে, দুই মাস আগে শুরু হওয়া এ বছরের মৌসুমে প্রায় এক কোটি মুসলিম ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় ভ্রমণ করবেন বলে আশা করছে সৌদি সরকার। হজের ঠিক পরপরই ওমরাহ মৌসুম শুরু হয়। করোনা মহামারির কারণে তিন বছর হজ পালনে বিধিনিষেধ থাকার পর এ বছর প্রায় ১৮ লাখ মুসল্লী হজে অংশ নেন।
তিন বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে হজ ও ওমরাহ, উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিনিষেধ এ বছর তুলে নেয়া হয়। গত কয়েক মাসে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক বিদেশি মুসলিমদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা চালু করেছে সৌদি আরব।
যারা শারীরিক ও আর্থিকভাবে হজ পালনে সক্ষম নন, সাধারণত তারাই সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে যান।
এবার ওমরাহ যাত্রীদের ভিসা সহজ করেছে সৌদি আরব। ব্যক্তিগত, ভিজিট ও ট্যুরিস্ট ভিসাধারী ব্যক্তিরা এখন চাইলেই ওমরাহ পালন ও আল রাওদা আল শরিফা (রিয়াজুল জান্নাহ) পরিদর্শন করতে পারবেন। ওখানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কবর রয়েছে। রিয়াজুল জান্নাহ পরিদর্শনের জন্য এখন অনলাইনে ই-অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারছেন ওমরাহ পালনকারীরা।
এ ছাড়া ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ওমরাহ ভিসাধারীরা এখন চাইলে স্থল, আকাশ বা সমুদ্র- যেকোনো পথেই সৌদি আরব ভ্রমণ করতে পারবেন এবং যেকোনো বিমানবন্দর থেকে ফিরে যেতে পারবেন।
সম্প্রতি নারীদের ওমরাহ বা হজের জন্য পুরুষ সঙ্গী বা ‘মাহরাম’ সঙ্গে নিয়ে আসার বাধ্যবাধকতাও প্রত্যাহার করেছে দেশটি।
আরও পড়ুন:আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ আবদুল হামিদ জমাদ্দার। খবর বাসসের
সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আকাশে শুক্রবার কোথাও ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার পবিত্র সফর মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা করা হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। আমরা আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ও ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।’
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: বাসস
সরকার প্রধান দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনো পদক্ষেপ এবং জাতির অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার সম্পর্কে সবাইকে সব সময় সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আরও এগিয়ে যাবে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান সংশোধন করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ জনগণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব স্বাধীনভাবে পালন করবে।
তিনি বলেন, ‘সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্মের অধিকার রক্ষা ও ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সব অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিলেন। জিয়া সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেন, যেই অনুচ্ছেদ আমাদের ধর্মীয় নিরপেক্ষতাকে নিশ্চিত করেছিল।’
প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘দেশটি সবার। কারণ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছিল।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য