গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট শুরুর ১৫ মিনিট আগেও একটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় টেকনিশিয়ানদের।
কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল পৌনে আটটায় এমন ঘটনা দেখা যায়।
এ কেন্দ্রের ৭টি বুথে ভোট দেবেন ২ হাজার ৩৫৬ জন ভোটার। অন্যদিকে গাজীপুর ভোট সুষ্ঠু করতে এ সিটির ৪৮০ ভোটকেন্দ্রে ৪ হাজার ৪৩৫ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয় নিশ্চিত করা হয়, তবে কেন্দ্রে গিয়ে দেখা মেলে ভিন্ন পরিস্থিতি।
কানাইয়া স্কুলে নিজের ভোট দেবেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শামসুজ্জামান বলেন, ‘একটা বুথ নেব কি নেব না ওটা নিয়ে ঝামেলা। লাস্টে ম্যাজিস্ট্রেট স্যার ফাইনালি বলছে ভোট নেয়া যাবে। তাই বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।’
দুই দিন আগেই লাগানোর কথা ছিল জানিয়ে এই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বলেন, ‘অস্থায়ী বুথ নেয়ার কথা ছিল। বৃষ্টি আসলে ঝামেলা হতে পারে। তাই স্থায়ী বুথ নিয়েছি।’
নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ।
স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
এদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন ট্রান্সজেন্ডার ভোটার।
আরও পড়ুন:জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চোখে আঘাতপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই মানসিক রোগে ভুগছেন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালিত এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত ৫৫ তরুণের ওপর গবেষণা চালায় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। তাদের বেশিরভাগই ২২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থী, যারা চোখের চিকিৎসায় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল আহত তরুণরা কী মাত্রায় বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপে ভুগছেন তা নিরীক্ষা করা।
গবেষণায় দেখা যায়, আহতদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ হালকা থেকে গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগছেন এবং তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর স্তরে পৌঁছেছে।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, ৫০ শতাংশেরও বেশি ভুক্তভোগী হালকা থেকে গুরুতর উদ্বেগে ভুগছেন, ২০ শতাংশের বেশি অত্যন্ত গুরুতর উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করছেন এবং প্রায় ৬০ শতাংশ মানসিক চাপে ভুগছেন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুনতাসির মারুফ বুধবার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইওএইচ) আয়োজিত এক কর্মশালায় এই গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন।
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট জুলাই আন্দোলনে আহতদের দৃষ্টিশক্তি ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার সবকিছু করবে। ডাটাবেজ চূড়ান্ত করতে বিলম্ব হওয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। সরকার সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার আহতের নাম পেয়েছে এবং এখন পর্যন্ত অর্ধেক তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়েছে। যাচাই শেষে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ), জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ নেতৃস্থানীয় হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল কর্মশালায় উপস্থিত আহতদের প্রশ্নের জবাব দেন।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের প্রশ্নের জবাবে প্যানেল সদস্যরা বলেন, তারা আহতদের শরীরে থাকা সব বুলেট অপসারণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। তবে কিছু এখনও রয়ে গেছে। গুলিগুলো তাদের কোনো ক্ষতি করবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তারা।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, এনআইওএইচ-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনির আহমেদ।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। টাস্কফোর্সটি আগামী বর্ষাকাল পর্যন্ত কাজ করবে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে করণীয় নিয়ে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
কিছু এলাকা ‘নো ব্রিকফিল্ড জোন’ ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বায়ুদূষণ সমস্যার রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয়। তাই জনগণকে মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বায়ুদূষণের প্রধান উৎস চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আইন বাস্তবায়ন ও মনিটরিং জোরদারের মাধ্যমে বায়ুদূষণ সমস্যার সমাধান করা হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, বায়ু দূষণ রোধে নির্মাণ কাজের ধুলা, ইটভাটা ও যানবাহনের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নির্মাণ কাজে ধুলা কমাতে পানি ছিটানো, নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখা এবং সুরক্ষা বেষ্টনী ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নিয়মিত ভ্যাকুয়াম ট্রাকের মাধ্যমে রাস্তা পরিষ্কার এবং দ্রুত সড়ক মেরামতের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি, রাস্তার ধারে ঘাস লাগানো, নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য ফেলা এবং বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরনো গাড়ি অপসারণ করা হবে এবং রাজধানীতে খোলা ট্রাক প্রবেশ বন্ধে পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, খাল উদ্ধার এবং উন্মুক্ত জায়গায় খেলার মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে। দেশের পরিবেশের মানোন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন:সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করেছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। তা চলবে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রার্থীদের আবেদন ফি দুশ’ টাকা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরুর একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অনলাইনে আবেদন অনিবার্য কারণে স্থগিত করে পিএসসি।
সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয় পর্যালোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে সরকার। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-সচিব সৈয়দ আলী বিন হাসানের সই করা আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনার পক্ষে অবস্থান নেয়নি ভারত। নয়াদিল্লি এটিকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য ছোটখাটো ধাক্কা হিসেবেই দেখছে।
বুধবার কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের সভাপতিত্বে পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মিশ্রি নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারের সঙ্গে জোটবদ্ধ না হয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ভারতের মনোভাবের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, “শেখ হাসিনা তার মতামত প্রকাশের জন্য ‘বেসরকারি যোগাযোগের চ্যানেল’ ব্যবহার করছেন। ভারত তাকে তার মাটি থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুবিধা দেয়নি।”
অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের নীতির কথাও তুলে ধরেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনার ভিডিও বার্তা প্রচারের পরই এই ব্রিফিং করা হয়।
মিশ্রি কমিটিকে জানান, এ সপ্তাহের শুরুতে ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলেছেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ‘কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল’ বা নির্দিষ্ট সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয় এবং বর্তমান সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক থাকবে।
পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফরেন অফিস কনসালটেশনসহ বেশ কয়েকটি বৈঠক করতে সোমবার ঢাকায় আসেন বিক্রম মিশ্রি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈঠক এবং পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে ‘ইতিবাচক, গঠনমূলক ও পারস্পরিক লাভজনক’ হিসেবে দেখতে চান বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে এই পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক অব্যাহত না রাখার কোনো কারণ নেই।’
এসব বৈঠকে মিশ্রি একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা তুলে ধরেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জোর দিয়ে বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল অংশীদার হলো জনগণ।
তিনি বলেন, ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতা এবং সংযোগ, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে বহুমুখী সম্পৃক্ততা সবই বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য।
আরও পড়ুন:সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন (সার্ক) সক্রিয় করে তোলার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন অনকোলজির (এসএফও) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার বাসভবন যমুনা থেকে বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত হন।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান বলেন, ‘সার্ক আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই সার্ককে সক্রিয় করার বিষয়ে বলেছি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার কিছু ইস্যুর জন্য সার্ক সক্রিয় হচ্ছে না। আমি মনে করি, দুটি দেশের মধ্যকার সমস্যা অন্য দেশগুলোকে প্রভাবিত করা উচিত নয়।
‘প্রতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার নেতারা যদি সাক্ষাৎ করেন, একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন তাহলে গোটা বিশ্বের কাছে বার্তা যায় যে আমরা একসঙ্গে আছি। এটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বিশ্বের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করবে এবং এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’
এই কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্ককে সক্রিয় করতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে আবারও আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস এ সময় এসএফও-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. এবিএমএফ করিমের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন।
নিজের ছোট ভাই, বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক, সমালোচক ও খ্যাতনামা টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে স্মরণ করেন প্রফেসর ইউনূস। ভাইয়ের ক্যানসার শনাক্ত ও চিকিৎসার সময় তার পুরো পরিবারকে কী ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল সেসব অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। সেসময় ডা. করিম কীভাবে তার চিকিৎসায় সাহায্য করেছিলেন সে কথাও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসায় যে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন তা এখনও আমরা পাচ্ছি না। সার্ক যে ক্যানসার চিকিৎসাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে এটা অত্যন্ত জরুরি ও অনুপ্রেরণামূলক।’
আরও পড়ুন:নাটোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোর অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-এর বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কাদিরাবাদ সেনানিবাসের ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অফ মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধান বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলনে উপস্থিত কোর অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-এর সব অধিনায়ক ও অন্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন এবং এই কোরের উন্নয়ন, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও দেশ-বিদেশে পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
সেনাপ্রধান কোর অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-এর গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য, দেশমাতৃকার সেবায় এই কোরের অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে এই কোরের সব সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়াও দেশ ও জাতি গঠনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশেষ করে কোর অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-এর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন সেনাবাহিনী প্রধান।
সম্মেলনে সেনাবাহিনী ও কোর অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-এর জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সব ইউনিট অধিনায়ক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য