রাজধানী লাগোয়া দেশের সবচেয়ে বড় আয়তনের সিটি করপোরেশন গাজীপুরে ভোটের দিন আজ বৃহস্পতিবার। নগরপিতা বেছে নেয়ার দিন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। আর এবারই প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেবে এই নগরীর ভোটাররা।
ভোট মানেই উৎসব। তবে এই উৎসব-আমেজের পাশাপাশি ভোটকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর মধ্যে রয়েছে নানা শঙ্কা, উৎকন্ঠা আর জল্পনা-কল্পনা৷
গাজীপুর সিটিতে ভোট যুদ্ধে আছেন ৩৩২জন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী। নগরজুড়ে জল্পনা- কে হচ্ছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয় মেয়র।
নির্বাচন কমিশন ৯ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ২৩ মে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত টানা ১৫ দিন ধরে গাজীপুর নগরী জুড়ে চলে জমজমাট প্রচারণা। নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দিন-রাত প্রচার চালিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন ভোটারের এই সিটির নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডের ৪৮০টি কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে তিন হাজার ৪৯৭টি ভোটকক্ষ। বুধবার সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইভিএমসহ ৪৬ ধরনের সরঞ্জাম বুঝিয়ে দেয়ার কাজ শুরু হয়।
ইসি সূত্র জানায়, ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য ৪৮০ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৩ হাজার ৪৯৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, ৬ হাজার ৯৯৪ জন পোলিং অফিসারসহ মোট ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রে কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা, ৫,২৪৬টি ইভিএম
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এইচ এম কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে ও কক্ষে একটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ব্যবহার করার জন্য পাঁচ হাজার ২৪৬টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
‘ইভিএমে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে মোট ৪৮০ জন ট্রাবলশুটার, প্রতি দুই কেন্দ্রে একজন করে মোট ২৪০ জন (ভ্রাম্যমাণ) টেকনিক্যাল এক্সপার্ট, ১৪ জন সহকারী প্রোগ্রামার এবং চারজন প্রোগ্রামার থাকবেন।’
নির্বাচন কমিশনা সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৩৫১টি, যা মোট কেন্দ্রের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি। আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
৫৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৭৬ জন। সঙ্গে থাকবেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও। র্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবির থাকবে ২০টি প্লাটুন, যার প্রতিটিতে ২০ জনের বেশি সদস্য থাকবেন।
এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে।
ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বিধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ একজন এসআই অথবা এএসআই ও চারজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন অঙ্গীভূত আনসার পিসি, একজন অস্ত্রসহ আনসার এপিসি, লাঠিসহ চারজন নারী ও ৬ জন পুরুষ আনসার/ভিডিপি সদস্যসহ মোট ১৭ জন মোতায়েন থাকবে।
আর সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ একজন এসআই অথবা এএসআই ও তিনজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন অঙ্গীভূত আনসার পিসি, একজন অস্ত্রসহ এপিসি, লাঠিসহ চারজন নারী ও ৬ জন পুরুষ আনসার/ভিডিপি সদস্যসহ মোট ১৬ জন মোতায়েন থাকবে।
ভোট যুদ্ধে ৩৩২ প্রার্থী
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট ৩৩২ জন প্রার্থী সরাসরি ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাদের মধ্যে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৫ জন।
‘নৌকার সমর্থক ছাড়া ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে দেয়া হবে না’- এমন বক্তব্য দেয়ায় প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আজিজুর রহমান শিরিষের।
মেয়র পদে যারা লড়ছেন
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ ও মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ এবং হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম লড়াই করছেন।
মেয়র প্রার্থীরা কে কোথায় ভোট দেবেন
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজমত উল্লা খান বাড়ির পাশে টঙ্গী দারুস সালাম মাদ্রাসা, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গী কলেজ রোড এলাকার নিউ ব্লুন হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোট দেবেন।
হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান টঙ্গীর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজ, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ নগরের চাংকির টেক এলাকার হাজী আলমাছ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম নলজানির বাড়িআলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের জায়েদা খাতুন নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম রনি টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতাল ও ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ উত্তর খাইলকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়। এদিন সংশ্লিষ্ট এলাকার সব ব্যাংকের কার্যালয়ও বন্ধ থাকবে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন হয় ২০১৮ সালের ২৬ জুন। এবার তৃতীয়বারের মতো এই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার ক্রমিক নম্বর নিয়ে বুথ-৪ এ প্রবেশ করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্যালট সংগ্রহ করলেন ভোটার। গোপন কক্ষে গিয়ে নিজের ভোট প্রদানও করলেন। ভোট দেয়া শেষে কক্ষের বাইরে গণমাধ্যমকর্মীরা ওই ভোটারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানালেন, ‘ভোটার কীভাবে হলাম নিজেও বলতে পারি না।’
মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচনে ভোট দিয়ে এক তরুণ ভোটার নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির ভোটার কীভাবে হওয়া যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও জানি না কীভাবে ভোটার হলাম। আমাকে ফোনে নিশ্চিত করা হয়েছে যে আমি চেম্বারের একজন ভোটার, তাই ভোট দিতে এসেছি।’
তার কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, তার নিজস্ব কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে কি না? জবাবে তিনি জানান, তিনি একজন বাইক (মোটরসাইকেল) মেকানিক। তার নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান আছে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের এখনও নামকরণও করা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা না হলে ট্রেড লাইসেন্স কীভাবে হলো বা আদৌ ট্রেড লাইসেন্স হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি আর কোনো জবাব না দিয়ে সরে পড়েন।
ভোট দিয়ে বের হচ্ছিলেন লিমন নামের আরেক ভোটার। তিনি জানান, সদর উপজেলার নারগুণ থেকে তিনি এসেছেন ভোট দিতে। তার ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না এবং কী প্রক্রিয়ায় ভোটার হলেন- জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি৷ এ সময় তাকে ক্যামরার সামনে কথা বলতে না করেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যানেলের এক প্রার্থী।
ভোট দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন দুলালি ইসলাম। তিনি জানান, তার মামা একটি হিমাগারের ম্যানেজার। তিনিই তাকে ভোটার হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ‘দুলালি ফার্মেসী’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তার।
চেম্বারের ভোটার হতে প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন মনে নেই।’
এদিকে ভোটের একদিন আগে সোমবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে ৭ কারণ উল্লেখ করে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দুটি প্যানেলের মধ্যে আলমগীর-মুরাদ ও সুদাম প্যানেল ভোট বর্জন করে। এ সময় প্রার্থীরা নির্বাচনের অনিয়ম, ভোটার তালিকা নিয়ে অসঙ্গতিসহ নানা কারণ উল্লেখ করেন।
এর আগে, গত ১৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে ভোটার তালিকা সংশোধন ও নির্বাচনের তারিখ পেছানোর জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল প্যানেলটি। সে সময় ভোটের মাঠে থাকার কথা জানালেও অবশেষে ভোটের আগের রাতে তারা ভোট বর্জন করেন। ফলে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই অংশ নিয়েছে দুলাল-বাবলু ও আরমান প্যানেল।
চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচন নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিত্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
জাতীয় তেল গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ঠাকুরগাঁও সদস্য সচিব মো. মাহবুব আলম রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঠাকুরগাঁও চেম্বারের ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, আমরা দেখছি এখানে সাধারণ শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভোটার হয়েছেন। অনেকেই আছেন যারা কোনো ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত না।
‘তাহলে অন্য যে প্যানেলটি অভিযোগ করেছে- নিরপেক্ষ ভোটার তালিকা হয়নি। সেটার প্রমাণ আমরা পাচ্ছি। এই নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা তাদের সঠিক প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছেন।’
ভোটারদের প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচনি বোর্ডের আহ্বায়ক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ভোটার তালিকা নিয়ে বেশ কিছু প্রার্থী অভিযোগ করছেন। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর অভিযোগ আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট জানানোর সুযোগ ছিল। নির্ধারিত সময়র মধ্যে করা আপিলগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আপিল নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর অভিযোগ করায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু দীর্ঘ বছর যাবৎ ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির কমিটি ছিল না, তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে চেম্বারের প্রশাসনের দায়িত্ব দিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।’
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলের দিকে উঠেছে অভিযোগের আঙুল।
সোমবার বিকেলে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
লুৎফুল হাবিব রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক।
দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন লুৎফুল হাবিব রুবেল। রোববার পর্যন্ত তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আর কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি।
সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল ও ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন দেলোয়ার হোসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার ভাই কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সি।
এ সময় জরুরি প্রয়োজনে তারা জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখান থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে চড়ে কয়েকজন যুবক আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন নির্বাচন অফিস থেকে বের হেলে তাকেও একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
গাড়ির ভেতর মারধর অপহরণকারীরা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যদের।
তারা আরও জানান, এক পর্যায়ে তারা দেলোয়ারকে বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে তিনি জাতীয় জরুরি সেবার নম্বরে (৯৯৯) ফোন করে পুলিশকে ঘটনাটি জানান। এ সময় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
দেলোয়ার হোসেনকে ছেড়ে দিলেও তার ভাই আলাউদ্দিন মুন্সিকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে লুৎফুল হাবিবের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকার ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা ধরেননি।
নাটোর পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়ার থেকে পুলিশ দুর্বৃত্তদের অবস্থান শনাক্তে কাজ শুরু করেছে। আলাউদ্দিন মুন্সিকে উদ্ধারে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে উদ্ধার ও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাট জেলা পরিষদ উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, যিনি আগে ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো. লুৎফুল কবীর সরকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে এ ফল ঘোষণা করেন।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদ উপনির্বাচনের ছয়টি কেন্দ্রের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক মোবাইল ফোন প্রতীকে পান ২৮২টি ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম কাপ-পিরিচ প্রতীকে ২৭৩টি ভোট পান।
চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক মোবাইল ফোন প্রতীকে ৯ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন।
এ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের মমতাজ আলী ৫৮টি, চশমা প্রতীকের আশরাফ হোসেন বাদল সাতটি, আনারস প্রতীকের নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা শূন্য ভোট পেয়েছেন।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান গত ২৭ নভেম্বর পদত্যাগ করায় পদটি শূন্য হয়।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, তাকে নির্বাচনি আইন-কানুন শতভাগ মেনে চলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। সকল প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে কমিশন সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।’
বুধবার দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে খুলনাসহ পাঁচ জেলার নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কমিশনার আহসান হাবিব।
এই নির্বাচনের বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে, আবার একই মতাদর্শের একাধিক প্রার্থী হতে পারে। সুতরাং তাদের মধ্যে কিছুটা রাগ-বিরাগ ও সহিংসতা সৃষ্টি হতে পারে। সেটাকেও কীভাবে আমরা রক্ষা করতে পারি, বিশ্লেষণ করেছি এবং আমরা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- সুন্দর ব্যবহার ও বিনয়ের সঙ্গে সবাইকে আমরা একইভাবে পরিচালিত করব।’
অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের সুবিধা তুলে ধরে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এবারই প্রথম সব প্রার্থীর জন্য অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে কেউ কাউকে প্রার্থী হতে বাধা দিতে পারবেন না এবং জোরপূর্বক প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানোর সম্ভাবনাও কমে যাবে।
‘অনলাইন ব্যতীত কোনোভাবেই মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে না। এ কারণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কারিগরি ও পদ্ধতিগত সুবিধার্থে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনের অপেক্ষা না করে আগেই অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা।’
এর আগে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. মঈনুল হক, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম এবং খুলনা, যশোর, নড়াইল, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, এ বছর চারটি ধাপে দেশের উপজেলা পরিষদসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম ধাপের নির্বাচন আগামী ৮ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ও এবং চতুর্থ ধাপে ৫ জুন নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন:ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই-আইআরআইসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদন দেখে পরবর্তী কমিশনের জন্য বাস্তবায়নের সুপারিশ রেখে যাবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের রিপোর্ট দেখেছি, তবে ফরমালি বসতে পারিনি। আমাদের সময়ে তো জাতীয় নির্বাচন আর হবে না। কাজেই অনেক সময় আছে।
‘প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা দেখেছি। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এখন সারাংশ করার জন্য বলা হয়েছে যে, তারা আমাদের ভালো দিক এবং দুর্বল দিক কী দেখেছে। ইসি সচিবালয় খসড়া করেছিল, আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে আমরা পরবর্তী কমিশনের জন্য সাজেশন (পরামর্শ) রেখে যাব। আমাদের ত্রুটি দেখে ভবিষ্যতের কমিশন সেটি দেখবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, ‘তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্রসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখব। তারা যে সুপারিশ করেছে, সেটা করা যায় কি না- সেটা আমরা দেখব। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব, সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাব।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘তারা একটা (প্রতিবেদনে) জায়গায় বলেছে ভোটে কারচুপি হয়েছে বেশ কয়েকটা কেন্দ্রে, যেখানে কমিশন ব্যবস্থাও নিয়েছে। যদি বলত- কমিশন অবহেলা করেছে…এমন তো বলেনি। তারা কমিশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলেনি যে, কমিশনের এমন সক্ষমতা ছিল অথচ ব্যবস্থা নেয়নি। অথবা ভোটের এই সমস্ত কেন্দ্রগুলোতে জাল ভোট হয়েছে, কিন্তু কমিশন বন্ধ করেনি। এমন কোনো রিপোর্ট নাই।
‘বরং কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তাদের রিপোর্টে আছে। প্রশাসনে রদবদল করেছে- এগুলোও আছে। এখন টোটাল গণতান্ত্রিক বিষয় তো আর নির্বাচন কমিশন দেখে না। তারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে যা বলেছে, আমাদের দৃষ্টিতে দেখিনি যে খারাপ কিছু বলেছে। আমরা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করেছি। কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে সেটা দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’
এরপর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন মানে ছেলেখেলা নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়; স্থানীয় সরকার পরিচালনার বিষয়। সেখানে নিয়ম করেছিল যেন যে কেউ চাইলেই প্রার্থী হতে না পারে। এজন্য প্রার্থী সমর্থনে সই নেয়ার বিধান করা হয়েছিল। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থি। এছাড়া যারা সমর্থন দেন তারা অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হন। এ ধরনের অভিযোগ আছে। তাই আমরা সেটা তুলে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ওই বিধান প্রতিপালন করতে গিয়ে সমর্থন দেখানোর জন্য প্রার্থীরা ছলচাতুরি বা মিথ্যার আশ্রয়ও নিতেন। প্রার্থী নিজেই ডানহাত, বাম হাত মিলিয়ে সই করতেন। তাই এ ধরনের আইন কেন থাকবে যা ন্যায়ের পক্ষে না? তাই তুলে দিয়েছি। এটা অন্যায় করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, ‘কোনো দল থেকে প্রার্থী না দিলে স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে কারোরই সমর্থনসূচক সই লাগবে না। জেনে-বুঝেশুনে গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য যেটা সহায়ক, সেটা তো করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দেয়ার জন্য নয়। তাহলে তো সংসদেও (দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন) করতাম!’
স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে করার বিষয়ে এ কমিশনার বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশেই তৃণমূলে রাজনৈতিক নির্বাচন হয়। আমাদের এখানে সেটা আগে ছিল না। পরে এখানেও করা হয়েছিল। হয়তো ভালো দিক চিন্তা করেই করেছিল। এখন হয়ত তারা মনে করছে, অপপ্রয়োগ বেশি হচ্ছে।’
লালমনিরহাট জেলা পরিষদ উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মো. আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো. লুৎফুল কবীর সরকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
উপনির্বাচনে ৬টি কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক মোবাইল ফোন প্রতীকে ২৮২ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম কাপ-পিরিচ প্রতীকে পর ২৭৩ ভোট। ফলে ৯ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আবু বক্কর সিদ্দিক।
এছাড়া মোটরসাইকেল প্রতীকে মো. মমতাজ আলী ৫৮টি, চশমা প্রতীকে মো. আশরাফ হোসেন বাদল ৭টি ভোট পেয়েছেন। তবে আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো. নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা একটি ভোটও পাননি।
বিজয়ী হয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘আমার সঙ্গে জেলার নেতারা বিরোধিতা করলেও হাইকোর্টের রায় নিয়ে মাত্র ৪ দিন ভোটের মাঠে থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছি। জেলা পরিষদকে এতদিন কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছিল। এখন আমি নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে চাই।’
এ সময় তাকে বিজয়ী করায় জেলার সকল ভোটারদের তিনি অভিনন্দন জানান।
মন্তব্য