রাজধানীর বনানী এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীটি বুধবার বেলা ১টা ৩ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায়। দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ১টা ৩৫ মিনিটে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের এক কর্মকর্তা বেলা পৌনে তিনটার দিকে নিউজবাংলাকে জানান, এ আগুনে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছিল, বনানীর ২৭ নম্বর রোডের এফ ব্লকে এ আগুন ধরে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের সংঘর্ষ হয়েছে।
রোববার রাত ৮টার দিকে মিরপুর ১৩ নম্বরে পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। এক পর্যায়ে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ।
রাত ১০টার পরও থেমে থেমে হামলা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, হাফিজ সিরাজী নামে এক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া স্ট্যাটাস থেকে ঘটনার শুরু। গত শুক্রবার দুপুর ১২টা এক মিনিটে এ অ্যাকাউন্ট থেকে স্ট্যাটাস দিলে রোববার সন্ধ্যায় মিরপুর ১৩ নম্বরে করেকজন সন্দেহ করে একজনকে আটক করে। এ সময় কয়েকজন যুবক তাকে মারধর করলে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। এরপরই সংঘর্ষ বাধে।
হাফিজ সিরাজী নামের অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া স্ট্যাটাসের জন্য যাকে মারধর করা হয়েছে তিনি দাবি করেছেন, তার নাম সোহেল। তিনি স্থানীয় দোকানদার। উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পর এই ব্যক্তি বলেন, তার আইডি হ্যাক করে এসব পোস্ট দেয়া হয়েছে। তারই এক রুমমেট অন্যদের ডেকে এনে হামলা করিয়েছেন।
রাত পৌনে ১০টার দিকে কাফরুল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে- এমন অভিযোগে এক ব্যক্তিকে মারধর করে জনতা। তাকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এর ফলে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এখনো থেমে থেমে হামলা করা হচ্ছে। কতজন আহত হয়েছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।’
হামলাকারীদের বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে দালাল চক্রের সাত সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতি ও রোববার গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের আটক করে।
এর মধ্যে ২১২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ড থেকে এক নারীসহ চারজনকে আটক করা হয় বৃহস্পতিবার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক। তিনি বলেন, তারা হাসপাতালের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। আমরা তাদেরকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করি।
এ ছাড়া রোববার বিকেলে মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে আটক করা হয় তিনজনকে। এদের মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, তিনজনকে আটক করা হয়। একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে মুচলেকা নিয়ে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।আরেকজন শিক্ষার্থীকেও মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। একজনকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধরনের অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন:বেলাল উদ্দিন পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর শান্তিনগরে। চলমান দাবদাহে বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে রোববার সকালে গেলেন এলাকার ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানে। উদ্দেশ্য, চার্জার ফ্যান কেনা। একে একে ৪-৫টি দোকান ঘুরেও কোন দোকানেই মিললো না চার্জার ফ্যান। দোকানিদের বক্তব্য, ক্রেতার চাপ বেশি। স্টকে থাকা সবই বিক্রি হয়ে গেছে।
বেলাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৪-৫ দোকান ঘুরে না পেয়ে অবশেষে তিনি যান ওয়াল্টনের শো-রুমে। শান্তিনগর মোড় থেকে মালিবাগের দিকে এগুতেই রাজিয়া মঞ্জিলে ওই শো-রুমে যাওয়ার পরও হতাশ হতে হলো। শো-রুমের এক কর্মী বললেন- গতকালই (শনিবার) আমাদের এখানে অন্তত একশ’ চার্জার ফ্যান বিক্রি হয়েছে। স্টক শেষ। কোম্পানিতে অর্ডার পাঠানো হয়েছে। দুই/তিন পর এল পেতে পারেন।’
‘তবে ওই বিক্রেতা ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম বললেন ৩ হাজার ৯৯০ টাকা। আর ১৪ ইঞ্চি আকারে ফ্যানের দাম ৪ হাজার ৩৯০ টাকা। এটা আমার কাছে বেশি মনে হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে লোডশেডিংয়ের সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারা চার্জার ফ্যানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’
বাজার ঘুরে অবশ্য চার্জার ফ্যানের দাম নিয়ে বেলাল উদ্দিনের বক্তব্যের সত্যতা মিলেছে। কোম্পানিভেদে প্রতিটি চার্জার ফ্যানের দাম ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
গুলিস্তানের সুন্দরবন মার্কেটের পাইকারি ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিক্রেতা রাজিব খানও দাম বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।
রোববার দুপুরে রাজিবের ‘খান এন্টারপ্রাইজ’ নামের দোকানে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতার ভিড়। ওই মার্কেটের অন্য সব ইলেক্ট্রনিকসের দোকানেও ক্রেতার ব্যাপক আনাগোনা দেখা গেছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে অনেকেই এসেছেন তার দোকানে। সবার একটাই চাহিদা- চার্জার ফ্যান।
রাজিব খান বলেন, ‘গত ৪-৫ দিন ধরে চার্জার ফ্যানের চাহিদা অনেকটা বেড়ে গেছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। এগুলো আমদানি করা পণ্য। মার্কেটে সরবরাহে ক্রাইসিস দেখা দিলেই দাম বেড়ে যায়। আমদানিকারকরা যে পণ্য এক মাস ধরে বিক্রি করবেন, চাহিদা বাড়ায় সেই পণ্য ১-২ দিনেই শেষ হয়ে গেছে।
‘আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ানোর কারণে আমাদেরও দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বিক্রেতাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। গত ৪-৫ দিনে ফ্যানের সাইজ ও কোয়ালিটি ভেদে ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেছে।’
মহল্লার দোকানেও একই চিত্র
শনিবার রাত সাড়ে ১০টায়ও মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডে ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানগুলোতে চার্জার ফ্যান কেনার হিড়িক দেখা যায়।
এখানে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর হাউজিং লিনটেডে। লোডশেডিংয়ের কারণে গরমে দিনে রুমে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কিছুক্ষণ পর পরই কারেন্ট চলে যায়। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। কিন্তু দোকানিরা দাম অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। যে ফ্যান আগে ৫ হাজার টাকায় কিনেছি, সেই ফ্যান এখন সাড়ে ৬ হাজার টাকা চাচ্ছে। দোকানি বলছে- ফ্যানের সাপ্লাই কম অনেক, তাই দাম বেশি।’
নোমানের মতো আরও বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার এই প্রতিবেদকের। তাদের কেউ চার্জার ফ্যান কিনেছেন, কেউবা কিনতে এসেছেন। সবার একটাই কথা, মনের মতো চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। আর পেলেও দাম অনেক বেশি।
সোলার প্যানেল ও ব্যাটারির দাম বেড়েছে
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে চার্জার ফ্যানের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হলেও এই মার্কেটে এসি, আইপিএস, সোলার প্যানেল এবং ব্যাটারির বিক্রি বেড়ে গেছে। প্রভাব পড়েছে দামেও।
এ অবস্থায় ঢাকার বাইরে থেকে আসা ক্রেতাদের এসব পণ্য কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
মার্কেটটির ফারহানা ইলেক্ট্রনিকসের বিক্রেতা রবিউল আলম বলেন, ‘সোলার আইটেমের সঙ্গে এসি/ডিসি লাইটের বিক্রিও খারাপ না। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা চার্জার ফ্যানের। তবে সরাসরি বিদ্যুৎনির্ভর ফ্যানের চাহিদা নেই।’
কেরানীগঞ্জ থেকে আসা মো. সুমন বলেন, ‘গরম বেড়ে যাওয়ার কারণে সোলার আইটেম ও আইপিএসের চাহিদা বেড়েছে। দোকানের জন্য আজ মাল কিনতে এসে দেখি দাম অনেক বাড়তি।’
সুন্দরবন মার্কেটের দোতলায় ওয়ার্ল্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেদের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গরমের কারণে আইপিএসের চাহিদা ও দাম দুই-ই বেড়েছে। সোলার প্যানেল ও ব্যাটারির বিক্রি বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে দামও। সোলার প্যানেলে প্রতি ওয়াটে দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। এছাড়া মানভেদে ব্যাটারির দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ীরা মাল কিনতে এসে দেখছেন দাম বেশি। তারাও মন খারাপ করছেন। আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা যেমন দামে কিনি তেমন দামে বিক্রি করি। তবে দাম বাড়লেও বিক্রি ভালো।’
বেড়েছে এসির চাহিদাও
নুরজাহান রোডের আরবি ইলেক্ট্রনিক্সের ইনচার্জ মঞ্জুর মোর্সেদ বলেন, ‘গত ৩-৪ দিনে এসির বিক্রি বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৩-৪ গুণ বেশি এসি বিক্রি হচ্ছে এখন। তবে সমস্যা হচ্ছে এসির সাপ্লাই কম।’
মোহাম্মদপুরের সপ্তর্শী ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক সুমন নন্দী বলেন, ‘রোজার ঈদের সময় গরমে এসি বিক্রি হয়েছিল অনেক। তবে গত কয়েক দিনের গরমেও এসির বিক্রি বেড়েছে, তবে রোজার ঈদের সময়ের চেয়ে একটু কম। এসি, কুলার, চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেশি। আমাদের সাধারণ দোকান। অন্য সময় দিনে ১-২টা এসি বিক্রি হলেও এখন ৫ থেকে ৭টা এসি বিক্রি হচ্ছে।’
এসির টেকনিশিয়ানের অভাব
এসির বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় দোকানিরা পড়েছেন আরেক সংকটে। স্বাভাবিকভাবে দিনে এক থেকে দুটি এসি বিক্রি হয়। সেই চাহিদা মাথায় রেখেই দোকানিরা এসি বাসা বা অফিসে নিয়ে সেট করে দিয়ে আসার জন্য টেকনিশিয়ান রাখেন।
বর্তমানে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এসি নির্দিষ্ট সময়ে সেট করে দিয়ে আসার মতো টেকনিশিয়ান নেই অধিকাংশ দোকানে। এ অবস্থায় সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে হাতেগোনা টেকনিশিয়ানদের। কোনো কোনো ক্রেতার বাসায় গভীর রাতে গিয়ে এসি সেট করে দিচ্ছেন তারা।
এসি কিনতে আসা ঢাকা মেডিক্যালের চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাসায় এয়ার কুলার আছে। কিন্ত এই গরমে তা দিয়ে কাজ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে এসি কিনতে এসেছি। তবে সমস্যা হলো দোকানিরা বলছেন তাদের টেকনিশিয়ানের অভাব। এসি সেট করে দিতে একদিন দেরি হবে।’
মোহাম্মদপুরের এইচ এ ইলেক্ট্রনিক্সের বিক্রেতা ওহিদুর রহমান বলেন, ‘এসি টেকনিশিয়ানের অভাব। গরমের কারণে হুট করে এসির চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু টেকনিশিয়ান অর্থাৎ এসি বাসায় গিয়ে সেট করে দেয়ার জনবল তো বাড়েনি। তাই তাদের এখন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এসি বিক্রি করেও ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিস দিতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘মার্কেটে এয়ার কুলারের অভাব। সাপ্লাই থাকলে এখন প্রতিদিন অন্তত ২০টা এয়ার কুলার বিক্রি করতে পারতাম। এসিরও সাপ্লাই নেই। কারণ এলসি করতে পারছে না কোম্পানি।’
গরমে বেড়েছে রোগবালাই
একে তো ভয়াবহ গরম, তার ওপর চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এ অবস্থায় গরমজনিত রোগবালাই বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ফলে ওষুধের দোকানে ভিড় বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা শিশুদের সর্দি-জ্বর, কাশির সিরাপ, ওরস্যালাইন ও গ্লকোজের।
বসিলার রিফাত মেডিক্যাল কেয়ারের মালিক মো. আজাদ বলেন, ‘গত ৪-৫ দিনে এলার্জি ট্যাবলেট, স্যালাইন, ঘামাচি পাউডার, গ্লুকোজ, টেস্টি স্যালাইন, জুস, কোমল পানীয় বিক্রি বেড়েছে। আর শিশুদের সর্দি-জ্বর ও কাশির ওষুধের বিক্রিও অনেকটা বেড়ে গেছে। তবে এসব ওষুধের সাপ্লাইয়ে কোনো ঘাটতি নেই।’
আরও পড়ুন:সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পুলিশ ও সরকারি কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে ‘গুজব’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে পুলিশের মনোবল ভাঙার কোনো সুযোগ নেই।’
সম্প্রতি ডিবি প্রধান হারুন সিঙ্গাপুরে নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ১৩ দিনের ছুটি নেন।
ছুটির আদেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তিনি আর দেশে ফিরবেন না বলে গুঞ্জন ওঠে।
রোববার নিজ কার্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটা শুধু আমাকে নিয়ে নয়, গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে দেশের বাইরে থেকেও কিছু লোক সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে ভিডিও করছে। তারা বলছে, অনেক সরকারি কর্মকর্তা দেশের বাইরে যাওয়ার পর ফিরবেন না। এটা সম্পূর্ণ গুজব। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি প্রাপ্তি একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া। এর জন্য একাধিক স্তরে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদেরও অন্যদের মতোই পরিবার আছে এবং বিশেষ কারণে তাদের ছুটির প্রয়োজন হয়।’
‘কেউ যদি মনে করে এ ধরনের ভিডিও বানালে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়বে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে এসব কথা ছড়িয়ে ভিউ পেতে পারে, অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু আমি পুলিশের মনোবল ভাঙার কোনো কারণ দেখছি না।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেকে এক সেনা কর্মকর্তার বাসা থেকে চুরি হওয়া পিস্তল চার বছর পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) শনিবার রাতে বরিশালের গৌরনদী থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করে।
এ সময় চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তারেক হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ির রান্না ঘরের মাটির নিচে অস্ত্রটি লুকানো ছিল।
রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ রাতে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সামছুল হুদার বাসায় চুরি হয়।
চোর বাসার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে টাকা, ঘড়িসহ বিভিন্ন সামগ্রীর সঙ্গে লাইসেন্স করা বিদেশি পিস্তল, ৫০টি গুলি ও দুটি ম্যাগজিন নিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ভাষানটেক থানায় মামলা করেন।
পিবিআই জানায়, অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখায় তারেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চুরির মামলাসহ ভাষানটেক থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
রোববার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শাহ আহমদ বাদল ওই আবেদন করেন।
আবেদনে ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম ও সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেব’- তাপসের এমন বক্তব্য আদালত অবমনানর শামিল উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে রুল জারির আবেদন করা হয়।
আবেদনটি সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান আইনজীবী শাহ আহমেদ বাদল।
তিনি বলেন, ‘মেয়র তাপস যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আদালত অবমাননামূলক বক্তব্য। তিনি জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নজিরবিহীন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাপস পেশি শক্তি ব্যবহার করে আইনের শাসন ব্যাহত করার চেষ্টা করেছেন। বিষয়টি প্রধান বিচারপতিকে জানানোর ১০ দিনেও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আদালত অবমনানার মামলা করেছি।’
২৪ মে মেয়র তাপসের ওই বক্তব্য আপিল বিভাগের নজরে আনেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম।
ওই সময় তার সঙ্গে বিএনিপন্থী আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের লেকে ডুবে প্রাণ হারানো দুই শিশুর পরিচয় মিলেছে।
রোববার দুপুরে দুই শিশুর পরিচয় পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
ওই দুই শিশু হলো লালবাগ এলাকার নবাবগঞ্জ রোডের বাসিন্দা মো. সোহেলের ছেলে মো. আরাফাত ও মোস্তফা কামাল বাদলের ছেলে তামিম ইসলাম নুর।
ওসি জানান, শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে স্থানীয়দের দেয়া খবরে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের লেক থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা পোশাক ও জুতা লেকের পাড়ে রেখে গোসল করতে নেমেছিল। সাঁতার না জানার কারণে ডুবে মৃত্যু হয় দুই শিশুর।
তিনি জানান, আরাফাত স্থানীয় সাহেলা স্কুলের সপ্তম এবং তামিম ইসলাম নুর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
তামিমের মা তাসলিমা পারভীন ঝর্ণা বলেন, ‘আমার ছেলে সবসময় পার্কে খেলত, কিন্তু কীভাবে এত দূরে গেল বুঝতে পারছি না। শনিবার স্কুল বন্ধ ছিল। বিকেল তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিল। এরপর কী হয়েছে বলতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত হয়ে যাওয়ার পরেও বাসায় না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করি। পরে মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে লাশ উদ্ধারের তথ্য পাই। আজ আমার ছেলের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল।’
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গ সূত্রে জানা যায়, কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিয়ে গেছে দুই শিশুর পরিবার। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের মরদেহ বুঝিয়ে দেয় থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য