দেশের ৭ জেলায় বজ্রপাতে শিশু ও নারীসহ মোট ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাদের মধ্যে নরসিংদীতে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় ৪ জন প্রাণ হারান। এছাড়া কুমিল্লা, পাবনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ জন করে এবং কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও নওগাঁয় মারা যান একজন করে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ওই ১৩ জন বজ্রপাতে প্রাণ হারান। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
সুনামগঞ্জে স্কুলছাত্র নিহত
নদীপথে ট্রলারে করে ধান পরিবহনের সময় বজ্রপাতে সুনামগঞ্জে ওমর মিয়া নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ধর্মপাশা উপজেলার ৪ নম্বর জয়শ্রী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের সীমের খাল (বরাইয়া) নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৬ বছরের ওমর মিয়া উপজেলার বাদে হরিপুর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে। ধর্মপাশার জয়শ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল সে।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা একই গ্রামের শাহীন, কালাচান ও আবুল কাশেম আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে ধর্মপাশা থানার সীমের খাল (বরাইয়া) নদীতে ট্রলারে করে মধ্যনগর ধান নিয়ে যাওয়ার সময় বজ্রপাতের আঘাতে ওমর মিয়া নৌকা থেকে নদীর পানিতে পড়ে যায়। প্রায় ২ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর মাছ ধরার জাল দিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘সকালে ধান নিয়ে মধ্যনগর যাবার পথে ট্রলারে বজ্রপাত হয়। এ ঘটনায় ১ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। আহতরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক ঘটনায় নিহত ২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় বজ্রপাতে মোজাম্মেল হক নামে ৩২ বছর বয়সী এক ইটভাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কাইয়ুম মিয়া নামের ৩০ বছর বয়সী আরেক শ্রমিক আহত হন।
মোজাম্মেল উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফখরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইউএনও ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সোনাতলা গ্রামের হাওর এলাকার এক ইটভাটায় কাজ করছিলেন মোজাম্মেল ও কাইয়ুম। সকাল ১১টার ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হলে বজ্রাঘাতে মেজাম্মেল নিহত হন। এসময় কাইয়ুম আহত হন।
নিহত মোজাম্মেলের পরিবারকে সরকারি খাত থেকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও। আহত কাইয়ুমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে একই সময়ে বজ্রপাতের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে অলি মিয়া নামের এক কৃষক নিহত হন।
তিনি বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের নমিজ উদ্দিনের ছেলে।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘বজ্রপাতে আতঙ্কিত হয়ে এক শ্রমিক মারা গেছে বলে আমি শুনেছি। তবে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।’
নরসিংদীতে নারীসহ নিহত ৪
নরসিংদী জেলার পৃথক ৪ স্থানে বজ্রপাতে এক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভিন্ন ভিন্ন সময়ে রায়পুরা, মনোহরদী ও পলাশ উপজেলায় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
নিহতরা হলেন- মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পাতরদিয়া গ্রামের মৃত বাদল মিয়ার ৩০ বছরের ছেলে রায়হান মিয়া, রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের মোমরাজ মিয়ার স্ত্রী ৪৫ বছর বয়সী শামসুন্নাহার, নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ১২ বছরের ছেলে জাবেদ মিয়া ও পলাশ উপজেলার একজন।
রায়হানের স্বজনরা বলেন, ‘দুপুরে বাড়ি থেকে একটু দূরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন প্রবাস ফেরত রায়হান মিয়া। হঠাৎ বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে রায়হান বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির কাছে পৌঁছামাত্র বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে স্বজন ও স্থানীয়রা তার লাশ উদ্ধার করে।’
কাতার প্রবাসী রায়হান মিয়া দুই মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন বলে জানান স্বজনরা।
বেলা ১১টার দিকে বজ্রপাতে নিহত হন গৃহবধূ শামসুন্নাহার। তিনি রায়পুরার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের বাসিন্দা।
শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য জালাল উদ্দিন বলেন, ‘খড়ের গাদা তৈরির জন্য বাড়ির পাশের একটি জমি থেকে খড় আনতে গিয়েছিলেন গৃহবধূ শামসুন্নাহার। তখন বৃষ্টির সাথে ব্যাপক বজ্রপাত হয়। এ সময় বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।’
খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে শামসুন্নাহারের লাশ উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি।
দুপুর ২টার দিকে একই উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুরে বাড়ির সামনে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় জাবেদ মিয়া নামে এক কিশোর।
এছাড়া উপজেলায় সকালে কৃষিজমিতে কাজ করার সময় দক্ষিণ সাধারচরে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।
নিহত ৩০ বছর বয়সী খোকন মিয়া দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার সকালে জমিতে কৃষিকাজ করতে যান খোকন মিয়া। এ সময় বজ্রপাতে তিনি আহত হন। স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নওগাঁয় প্রাণ গেল যুবকের
নওগাঁর রানীনগরে বজ্রপাতে জামিল প্রামানিক নামে ২০ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জামিল উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকার মৃত আজাদ প্রামানিকের ছেলে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, বিকেলের দিকে আকাশে মেঘ করলে জামিলসহ কয়েকজন একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে ভুট্টা তুলছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জামিলকে মৃত ঘোষণা করে।
রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভুট্টাক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান জামিল। এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই।’
কিশোরগঞ্জে নিহত ১
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বজ্রপাতে কাজী জিল্লুর রহমান নামে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া খলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জিল্লুর রহমান ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর কাজীবাড়ির মৃত কাজী গোলাপ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, জিল্লুর রহমান মাক্কু মোল্লা নামের একটি ফুড কারখানায় কাজ করতেন। কারখানার কাজে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি ওই এলাকায় যান। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি পায়ে হেঁটে ফেরার সময় বজ্রপাতের শিকার হন। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসাইন। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাবনায় বজ্রপাতে ২ ধানকাটা শ্রমিক নিহত
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে ২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ১১ জন।
মঙ্গলবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় ভাঙ্গুড়া উপজেলার বেতুয়ান, ছোট বিষাকোল ও পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার আল্লাহবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকরা জেলার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা গ্রামের বাসিন্দা ১৯ বছরের শাকিল হোসেন ও ৩০ বছর বয়সী রমিজ উদ্দিন।
বজ্রপাতে আহতদের ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত শ্রমিকরা জানান, দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ান গ্রামের বাওনজান এলাকায় বোরো ধান কাটছিলেন ১৫ জন শ্রমিক। মঙ্গলবার বিকেলে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হয়। এতে শ্রমিকরা পাশের খোলা জায়গার একটি ঘরে আশ্রয় নেন।
কিছুক্ষণ পরে বজ্রপাত হলে ওই ঘরে আশ্রয় নেয়া শ্রমিকদের মধ্যে ৫ জন মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ২ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ছোট বিষাকোল ও পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার আল্লাহবাদ গ্রামের আরো ৮ জনকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বেতুয়ান গ্রামের ইউপি সদস্য আরজু খান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিকেল থেকেই বৃষ্টির সঙ্গে প্রচণ্ড বজ্রপাত শুরু হয়। এতে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহতদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
কুমিল্লায় বজ্রপাতে কৃষক ও ছাত্রের মৃত্যু
বজ্রপাতে কুমিল্লার দুই জায়গায় দুজন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে একজন দেবিদ্বার উপজেলার নোয়াগাও গ্রামের ইদন মিয়ার ছেলে ৩০ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম। অপরজন চান্দিনা উপজেলার বুড়িমারা গ্রামের মাস্টার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিফাত হোসাইন।
সাইফুল ইসলামের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির অদূরে সাইফুল তার জমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায়।’
অপরদিকে একই দিন দুপুর আড়াইটায় কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার বুড়িমারা গ্রামে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয় হিফজ পড়ুয়া রিফাত হোসাইন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবউদ্দিন খান।
চান্দিনা থানার ইউএনও তাপস শীল বলেন, ‘রিফাত বাড়ির পাশে ঘুড়ি ওড়াতে যায়। বৃষ্টি শুরু হলে এক পর্যায়ে বজ্রপাতে নিহত হয় সে।’
সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, নওগাঁ, কিশোরগঞ্জ, পাবনা ও কুমিল্লা জেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে প্রদিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য