মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) চেয়ারম্যান হিসেবে পদাধিকার বলে নিয়োগ সংক্রান্ত আইন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
এ আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে।
আদেশের বিষয়টি মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তৌফিক ইনাম টিপু। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সেলিম আজাদ।
আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু বলেন, ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২ এর মাধ্যমে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। যেখানে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী নিজেই তার চেয়ারম্যান আর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সচিব তার সদস্য। এখন জামুকার প্রধান একটি কাজ হলো গেজেটভুক্ত যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধা আছেন তাদের মধ্যে কেউ যদি তালিকাভুক্ত না হয়ে থাকেন তাহলে তার বিষয়ে তদন্ত করে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করবেন।
‘অথচ যিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আবার তিনি নিজেই জামুকার চেয়ারম্যান, আবার মন্ত্রণালয়েরও প্রধান। একই ব্যক্তি দুই জায়গার প্রধান হওয়ার কারণে জামুকা থেকে যে সুপারিশ করা হয়, সেই সুপারিশই গৃহিত হয়। তার মানে যিনি তদন্তকারি, আবার তিনিই বিচারক। এটা ন্যায় বিচার নীতির পরিপন্থী। এ কারণে আমরা ওই আইনটি চ্যালেঞ্জ করেছি। আদালত শুনানি নিয়ে সেই আইনটা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।’
একই সঙ্গে বগুড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা নবাব আলীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে জামুকার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে এবং তাকে বেতন ভাতা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আইন সচিব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাওয়াব আলী ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তান পুলিশে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি অস্ত্র লুট করে সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর গৌরবগাঁথা হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের প্রকাশিত বইয়েও স্থান পায়।
বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার গত ২০০৫ সালে তাকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করেন এবং ওই বছরেই তার নাম গেজেটভুক্ত হয়। তিনি নিয়মিত সম্মানী ভাতাও পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর জামুকার ৮১ তম সভায় তার গেজেটটি বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়।
ওই সুপারিশ অনুসারে মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি তার গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তিনি তার গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন, ভাতা বন্ধ ও জামুকার চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসাবে মন্ত্রী ও সচিবের নিয়োগ সংক্রান্ত আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজে গিয়ে সেখানে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অনুসন্ধান ও প্রচেষ্টায় দেশে ফিরেছেন ভুক্তভোগী ১২ নারী কর্মী।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত মাসে একজন নারী ভুক্তভোগীর স্বামী বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী ৬ মাস আগে এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজ করতে সৌদি আরবে যান। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। লোকমুখে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
তিনি তার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এপিবিএনের সহযোগিতা চান। একইসঙ্গে যে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে তার স্ত্রী সৌদিতে গেছেন সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এরপর এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দল বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে।
জিয়াউল হক আরও জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী কোথায় কী অবস্থায় আছেন সে বিষয়েও তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এরপর অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সি সৌদি থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়া ১২ নারী ভুক্তভোগীকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়।
অভিযোগ জানানো ব্যক্তির স্ত্রীসহ নির্যাতনের শিকার ১২ নারী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শনিবার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন।
জিয়াউল হক আরও জানান, বিমানবন্দরে পৌঁছলে এপিবিএন তাদেরকে রিসিভ করে। এ সময় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রকল্পের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। দেশে ফিরে আসা নারীদের কাছ থেকে এপিবিএনের তদন্ত দল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান যে তারা প্রত্যেকেই বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাভেল এজেন্সিসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এপিবিএন-এর এই কর্মকর্তা।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে এক লাখ ৪৩ হাজার ১০০ ডলার ও ১০ হাজার ইউরোসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করা হচ্ছে- এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ১০টায় সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় শেখ তপন নামে এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় লুকানো এক লাখ ৪৩ হাজার ১০০ ইউএস ডলার ও ১০ হাজার ইউরো উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর মূল্য প্রায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আটক তপন ঢাকার যাত্রাবাড়ী ভাঙ্গা প্রেস এলাকার শেখ জালাল উদ্দিনের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের ও উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রা চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী থেকে এক কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়েছে। আর হেরোইন খুঁজে বের করেছে একটি কুকুর।
শনিবার সকালে ভাটিয়ারীর ওয়েল ফুড রেস্টুরেন্টের সামনে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে এই হেরোইন উদ্ধার করা হয়। এ সময় হেরোইনের বাহককে ধরতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসটির চালক ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ওই বাসে হেরোইনের চালান পাচার হচ্ছে- এমন তথ্য ছিল বিজিবির কাছে। সকালে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহায়তায় ওই বাসে অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি।
‘আমরাও অভিযানে ছিলাম। এ সময় বিজিবির প্রশিক্ষিত একটি কুকুরের সাহায্যে বাসে যাত্রীদের মালামাল রাখার স্থান থেকে একটি ব্যাগে থাকা পলিথিনের প্যাকেটজাত এক কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হেরোইনের মূল্য প্রায় কোটি টাকা।’
চট্টগ্রাম-৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে হেরোইনের মালিক পাওয়া যায়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসের চালক ও চালকের সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।’
সাভারে প্রেমে বিচ্ছেদ চাওয়ায় এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকের বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনায় শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগী নারী আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এর আগেও ২৬ মে ওই নারী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায়, ৩২ বছর বয়সী অভিযুক্তের নাম সাকিব আসলাম। দুই বছর আগে ৩৭ বছর বয়সী ভুক্তভোগী নারীর রেস্তোরাঁয় সাকিবের যাতায়াতের সুবাদে তারা প্রেমে জড়ান। ভুক্তভোগী নারী বিবাহিত এবং সন্তানের মা।
প্রেমের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী নারী জানতে পারেন সাকিবেরও স্ত্রী আছে। এতে তিনি সম্পর্কের বিচ্ছেদ চান এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এর মধ্যে ওই নারী অসুস্থ হয়ে ৩০ মে আশুলিয়ার বাইপাইলে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। খবর পেয়ে শুক্রবার সাকিব হাসপাতালে গিয়ে কেবিনের দরজা বন্ধ করে ভুক্তভোগীকে মারধর করেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সাকিব আসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকির বলেন, ‘ওই নারী আগেও একটি জিডি করেছিলেন। সেটি তদন্তের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা এলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া আজও একটি অভিযোগ পেয়েছি। ওসির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার হোমনায় ট্রাকচাপায় মা-মেয়ে ও সদর দক্ষিণে ট্রেনের ধাক্কায় বাবা-ছেলে নিহত হয়েছে।
ট্রাকচাপায় নিহতরা হলেন হোমনা উপজেলার হোমনা পূর্বপাড়া গ্রামের সজল সরকারের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার ও তার এক বছরের মেয়ে সাউদা।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে ফেরদৌসী আক্তার তার একমাত্র মেয়ে সাউদাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে অটোরিকশাযোগে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি এলাকায় একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গেলে তাদের অটোরিকশাটি হেলে পড়ে। এ সময় ফেরদৌসী আক্তার ও তার কোলে থাকা কন্যা সন্তান সাউদা ট্রাকের চাকার নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হোমনা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। দুপুরে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী সোহাত ও তার ছেলে ১২ বছর বয়সী ছেলে সোহেল প্রাণ হারান।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ থানার জেলখানা বাড়ি এলাকার রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন জেলখানা বাড়ি এলাকার রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ধাক্কা খায়। এতে অটোরিকশার যাত্রী সোহাত ও তার ছেলে সোহেল ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তাদের বাড়ি বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি এলাকায়।
আরও পড়ুন:সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে স্টিলের পাইপ পড়ে এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।
ওই ঘটনায় আটক করা হয়েছে ৯ জনকে। গঠন করা হয়েছে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত সেনা সদস্য ল্যান্স কর্পােরাল দেলোয়াল হোসেন ওই সময় নগর ভবনের পাশে সিটি সুপার মার্কেটে ছিলেন বলে জানান সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ভবনের ১২ তলার ছাদ থেকে হঠাৎ একটি স্টিলের পাইপ সিটি মার্কেটের ভেতরে ওই সেনা সদস্যের মাথায় পড়ে।
সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।
এ ঘটনায় নগর ভবনের নির্মাণকাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৯ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম জানা যায়নি।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘নগর ভবনের ১১ ও ১২ তলার নির্মাণ কাজ চলছে। আজ দুপুরে নির্মাণ কাজ চলাকালেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ রকম ঘটনা এড়াতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই নির্মাণকাজ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৯ জনকে আটক করা হয়। সেনা সদস্যের মরদেহ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
তদন্ত কমিটি
ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সিটি করপোরেশন।
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন গণপূর্ত বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়, সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম, সিসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান, সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম ও সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজি উদ্দিন খান।
কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
আরও পড়ুন:দুয়ারে কড়া নাড়ছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন। নিজের পক্ষে ভোট টানতে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন প্রার্থীরা। একদিকে যেমন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস, অন্যদিকে তেমনি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে রটাচ্ছেন নানা রকমের কথা।
এর প্রেক্ষিতে এবার দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। তবে মধুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন খালেক।
শনিবার সকালে ভোটের মাঠে প্রচারকালে পাল্টাপাল্টি এ অভিযোগ পাওয়া যায়।
নগরীর সোনাডাঙা এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মধু। এসময় তিনি বলেন, ‘খালেক তালুকদারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোঁজ করুন, তার কোথায় কি আছে! আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য। আমার কোনো টাকা নেই।’
এসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে মধু বলেন, ‘অনেক দলের প্রার্থীর দেখছি প্রতিটি ওয়ার্ডে দুই-তিনশ’ করে মানুষ নির্বাচনী প্রচারে নিয়োজিত। কিন্তু, নির্বাচন কমিশন যে টাকা বাজেট করে দিয়েছে, তাতে এত লোক কাজ করানো সম্ভব নয়। তাহলে এ টাকার উৎস কোথায়? নাকি তারা আলাউদ্দিনের চেরাগ খুঁজে পেয়েছে?’
খুলনা সিটি নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হচ্ছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘এটার সঠিক তদন্ত করা উচিত। তার অনেক লোক লাগানো আছে, এ বাড়ি আছে, সে বাড়ি আছে। এ নির্বাচনে তার জিততেই হবে। যেভাবে হোক; ভোট কেটে হোক, প্রশাসন দিয়ে হোক, তার জিততেই হবে।’
নগরবাসীর কাছে সমর্থন চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাই, তালুকদার (খালেক) ভাই। তিনি তো গত তিনবার কেসিসি নির্বাচন করে দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাহলে এবারও কেন মেয়র হতে এত চেষ্টা? তিনি আমার হাতে মেয়রের সিট ছেড়ে দিক, আমি খুলনাবাসীকে দেখিয়ে দেব যে উন্নয়ন কাকে বলে।
‘আমিও অনেক কিছু জানি ও বুঝি। আশা করি, খুলনা সিটিকে আধুনিক সিটিতে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। নির্বাচন নিয়ে আমি ভোটারদের বলব, আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন ও বুঝে-শুনে সঠিক প্রার্থীকে নিজের মূল্যবান ভোটটা দেবেন।’
বয়সের কারণে খালেক দায়িত্ব পালনে দুর্বল হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বয়স হয়ে গেলে মানুষ একটু এলোমেলো হয়ে যায়। আমার তো এখনও তার মত অত বয়স হয়নি। তাই আমি বলছি, তিনি এবার আমাকে ছেড়ে দিক, আমরা একটু দেখি, কী করে সিটি কর্পোরেশন চালাতে হয়।’
তবে গণসংযোগের সময় মধুর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো মধুর দিকেই অভিযোগের তীর ছোঁড়েন তালুকদার আব্দুল খালেক।
নগরীর বানরগাতি এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা ছড়ানো মধুর মত প্রার্থীর পক্ষে সম্ভব। খুলনায় আমাদের পক্ষ থেকে কোনো কালো টাকা ছড়াছড়ি হচ্ছে না। তারা পারলে এটার প্রমাণ দেখাক।’
খুলনা সিটির উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসময় তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির এরশাদ তো ৮-১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তারা এই শহরে কী উন্নয়ন করেছেন, আর আমরা আমি কী করেছি, তা জনগণ জানে।’
১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএমে ভোটগ্রহণের এ নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য