কোনো মামলায় যুক্তিতর্ক শেষ হলেই রায় ঘোষণা না করে দোষী ব্যক্তির সাজার পরিমাণ নির্ধারণে শুনানির নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এই আদেশ দেয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘সাজার মাত্রা নির্ধারণে ফের শুনানির নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। আমাদের আপিল ফাইল করা পর্যন্ত রায়টি স্থগিত থাকবে। পরে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।’
‘রাষ্ট্র বনাম মো. লাভলু’ মামলায় বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে। রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রায়ে দেয়া নির্দেশনা অধস্তন আদালতের বিচারকদের অবহিত করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
৮৪ পৃষ্ঠার রায়ে নির্দেশনা অংশে বলা হয়েছে, ‘যখন উভয় পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় তখন বিচারক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা কয়েক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন বিচারক তার মনের এই কথাটি উন্মুক্ত আদালতে মামলার উভয় পক্ষের আইনজীবীদের জানাবেন।
‘এরপর উপযুক্ত শাস্তি নির্ধারণের জন্য আসামির শাস্তির বিষয়ে পৃথক শুনানির জন্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটি তারিখ ঠিক করবেন। সেই তারিখে শুনানিতে আসামির সামাজিক অবস্থান, অপরাধের রেকর্ড, বয়স ও আর্থিক অবস্থার বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি ঘোষণা করবেন।’
রায়ে উচ্চ আদালত বলে, বিচারিক আদালতের বিচারকরা অবশ্যই রায় ঘোষণার আগে অপরাধীর সংশোধন এবং সংস্কারের সম্ভাবনার বিষয়গুলোও বিবেচনা করে দেখবেন।একজন ব্যক্তির জীবন কেড়ে নেয়া অত্যন্ত গুরুতর একটি কাজ। আইন দ্বারা যদি না তাতে বাধ্য করা হয়, তা না হলে এ জাতীয় কোনো আদেশ দিতে অনিচ্ছুক।
ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশই মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করেছে। তার কারণ ফৌজদারি মামলায় পক্ষগণ থাকে মানুষ। আর মানুষই ভুল করে। আর এই ভুলের জন্য ব্যক্তির জীবন কেড়ে নেয়া উচিত নয় বলে উল্লেখ করেছে আদালত।
হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে আপিলে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেয়।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় কোনো ধরনের ‘থ্রেট’ (হুমকি) নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজায় মণ্ডপ এলাকা, বিসর্জন শোভাযাত্রা ও বিসর্জনের সময় সব ধরনের মাদক ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একইসঙ্গে সব ধরনের পটকা ও আতশবাজির ব্যবহার না করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
‘বিসর্জনের সময় উচ্চৈস্বরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে না। যারা সাঁতার জানেন না তাদের বিসর্জনের সময় পানিতে না নামার অনুরোধ করছি।’
মাইনুল হাসান বলেন, ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৫৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৩১টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৩১টি মণ্ডপ রয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে শান্তি-শৃঙ্খল ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পূজা অনুষ্ঠানে আগে সমন্বয় সভা করেছি।’
পর্যায় নিরাপত্তার উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, ‘প্রতিটি পূজামণ্ডপে ফিক্সড পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি থানা পুলিশের অধিক টহল ও চেকপোস্ট স্থাপন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিং ব্যবস্থা থাকবে।
‘সাদা পেশাকে ডিবি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে। একইসঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ র্যাবের সদস্যরা টহল ও অন্যান্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূজা চলাকালীন যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যানজট এড়াতে পূজা কমিটিকে অনুরোধ করেছি মণ্ডপের আশপাশে কোনো মেলা যাতে না হয়।’
বিসর্জনে ঢাকা মহানগরীতে ১৫টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রায় ডিএমপির বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বিসর্জনের জন্য সব পূজা কমিটি ও ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
পুলিশ সদস্যদের মনোবল ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আগস্টের ৫-৬ তারিখে পুলিশের কার্যক্রম দেখেন। আর আজ ৮ অক্টোবরের পুলিশের কার্যক্রম দেখলে আপনারাই বুঝতে পারবেন পুলিশ কতটুকু মনোবল ফিরে পেয়েছে। যারা কর্মবিরতি দিয়েছিল তারাও পুরোদমে কাজে ফিরে আসছে। পূজার অনুষ্ঠানে দৃঢ় মনোবল নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশের প্রতিটি সদস্য। এতে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।’
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক আট হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৪৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সাবেক এই পুলিশ প্রধানকে মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অপরদিকে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে বিভিন্ন মেয়াদে আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে সাকিব হাসান নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় মামুনের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এরপর ইমন হোসেন গাজী নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় পুলিশের সাবেক এই প্রধানকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
এছাড়া ইরফান ভুইয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় পাঁচ দিন, মুনতাসির রহমান হত্যা মামলায় পাঁচ দিন ও ভ্যানচালক সুজন হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
এর বাইরে রফিকুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় চারদিন, একই থানায় করা মাহমুদুল হাসান জয় হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচদিনের রিমান্ড দেয়া হয়। আর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় পৃথকভাবে তাকে আরও পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর তএক আটদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় মোহাম্মদ ইসমামুল হক নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ছয়টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীর খিলগাঁও থানার চারটি ও পল্টন থানার দুটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশনের আইনজীবী।
জামিন পাওয়া মামলাগুলোর মধ্যে খিলগাঁও থানার দুটি হত্যা ও দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এছাড়া পল্টন থানায় দায়ের হওয়া দুটি হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত মঙ্গলবার শুনানি শেষে খিলগাঁও থানার মামলাগুলোতে সাবের হোসেন চৌধুরীকে জামিনের আদেশ দেন। আর পল্টন থানার দুটি মামলায় জামিন আদেশ দেন বিচারক জিয়াদুর রহমান।
প্রসিকিউশনের আসাদুল ইসলাম বলেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আর মামলা না থাকায় তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ অন্যদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা গ্রহণ করেছে আদালত। একইসঙ্গে ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে তাকে সমন জারি করা হয়েছে।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে মঙ্গলবার গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামিকে ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. খাদেমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আসামি ঊর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন। এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধানসম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদ্গার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে আসন্ন দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের (ভারত) গণমাধ্যমে উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর নানা খবর প্রচার করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পূজা পালন নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ অনেক কিছুই বলছে। তাদের মিডিয়া বিভিন্ন উস্কানি ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার করছে।
‘আমি দেশের সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, আপনারা পূজা নিয়ে সত্যি ঘটনা মিডিয়ার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবেন। আমরা সত্যি ঘটনা সবাইকে জানাতে চাই। পূজামণ্ডপে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুর্গাপূজা এবার ভালোভাবে, নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইতোমধ্যে আট দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
‘তাছাড়া দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পর্যাপ্ত সদস্যের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অধিকন্তু কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে যাতে এর তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মাধ্যমে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার সব পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্বরত থাকবে।’
বিগত ১৫ বছরে রামু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
পরিদর্শনকালে রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম পূজা পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস ও সদস্য সচিব বিশ্বজিৎ ভদ্রসহ মন্দিরের পূজা পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এম এ মান্নানকে সিলেটের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কড়া নিরাপত্তায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এম এ মান্নানকে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে তিনি মেডিসিন বিভাগের কেবিনে চিকিৎসাধীন আছেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সাখাওয়াত হোসেন রুবেল জানান, শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীকে চেকআপের জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করেন। তার নিরাপত্তায় জেল পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।
এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর বুকে ব্যথা রয়েছে। এ ছাড়া তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মেডিসিন বিভাগের কেবিনে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের আবেদন করা হয়েছে।
এম এ মান্নানকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন তাকে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে ছিলেন।
সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় শনিবার সকালে অসুস্থ বোধ করলে সাবেক এমপিকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে ওসমানীতে চেকআপ শেষে তাকে সিলেট কারা হাসপাতালে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত থেকে দুজন ভারতীয় নাগরিককে আটক করার কথা জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাহিনীটি মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সরাইল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অদ্য ০৮ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ সকাল ০৭০০ ঘটিকায় বিজিবির সরাইল ব্যাটালিয়নের (২৫ বিজিবি) ফকিরমোড়া বিওপির টহলদল দায়িত্বপূর্ণ আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী আব্দুল্লাপুর নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে পান্না রানী দেব (৫৪) নামের একজন ভারতীয় নারী ও তার ছেলে অভি দাশকে (১৮) আটক করতে সক্ষম হয়েছে। আটককৃতরা ভারতের ধলায় জেলার কমলপুর থানার মানিক ভান্ডার এলাকার জহর লাল দাসের স্ত্রী-সন্তান।
‘আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ৭ দিন পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা জেলার রামনগর থানার সরমালংগা গ্রামের বাসিন্দা ও মানব পাচারকারী দালাল মানিক দাশের সহযোগিতায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত হতে বাংলাদেশে আসে এবং কিশোরগঞ্জ জেলায় তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে। আজ আখাউড়ার হিরাপুর গ্রামের বাছির মিয়ার ছেলে ও মানব পাচারকারী দালাল মো. তোফাজ্জল হোসেন এবং নূরুল মিয়ার ছেলে মো. তৌহিদ মিয়ার সহযোগিতায় সীমান্ত পিলার ২০২২/৭-এস-এর নিকট দিয়ে ভারতে ফেরত যাচ্ছিল।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আটককৃত ভারতীয় নাগরিক এবং মানব পাচারকারী দালালচক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করত ভারতীয় নাগরিকদের আখাউড়া থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
মন্তব্য