গবেষকরা ২০০০ সালের দিকে ধরেই নিয়েছিলেন যে বাংলাদেশ থেকে বাটাগুর বাসকা (কালি কাইট্টা) প্রজাতির কচ্চপ একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে গত ৯ বছরে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে ৩২৬টি কচ্চপের জন্ম হয়েছে। সেখান থেকে ৫২টি কচ্ছপকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে। প্রকৃতিতে ফিরছে বিলুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপ।
এমনই বাস্তবতায় ২৩ মে মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস।
করমজল প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২০০৮ সালের দিকে ভোলা, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার কয়েকটি পুরনো জমিদার বাড়ির পুকরে ৮টি বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে ছিল চারটি নারী ও চারটি পুরুষ। এরপর উদ্যোগ নেয়া হয় পরিচর্যার মাধ্যমে এগুলোর প্রজনন ঘটিয়ে বংশ বিস্তারের।
‘ওই বছরই গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে প্রজননের কাজ শুরু হয়। সেখানে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৯৪টি বাচ্চার জন্ম হয়। কিন্তু বাচ্চাগুলো বার বার অসুস্থ হতে থাকে। কারণ প্রজাতিটি ঈষৎ লবণযুক্ত পরিবেশে ভাল বংশ বিস্তার করে। ভাওয়ালে তেমন পরিবেশ নেই।’
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূল ৮টি কচ্ছপ ও ভাওয়ালে জন্ম নেয়া ৯৪টি বাচ্চা ২০১৪ সালে লবণাক্ত বনভূমি সুন্দরবনের করমজলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে গবেষণায় বাংলাদেশ বন বিভাগের সঙ্গে আরও তিনটি সংস্থা যোগ দেয়। এগুলো হলো- প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, অস্ট্রিয়ার জু ভিয়েনার গবেষণা দল ও যুক্তরাষ্ট্রের টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স। পুকুরে তাদের পরিচর্যা শুরু হয়। ডিম দেয়ার উপযোগী করে পুকুর পাড়ে স্যান্ড বিচ তৈরি করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে কেন্দ্রটিতে ডিম দিতে শুরু করে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপগুলো।
হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘করমজলে প্রথমে ২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপ ৬৩টি ডিম পাড়ে। তা থেকে ৫৭টি বাচ্চার জন্ম হয়। বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপের চলাফেরা, পছন্দের পরিবেশ ও যাত্রাপথসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে ২০১৭ সালে অবমুক্ত করা দুটি কচ্ছপের দেহে ট্রান্সমিটার লাগিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল সুন্দরবনের নদীতে।
এরপর প্রতি বছরই ডিম দিচ্ছে ও বাচ্ছার জন্ম হচ্ছে। গবেষণার জন্য এগুলোকে প্রকৃতিতেও অবমুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে করমজলে ৪৩২টি বাটাগুর বাসকা রয়েছে।’
প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা টিকে আছে কি-না, তা জানতে ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছিল শুধু পুরুষ কচ্চপের গায়ে। গবেষকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর পাঁচটি বাটাগুর বাসকার শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটারের সঙ্গে স্যাটেলাইট যুক্ত করে সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পার্টমেন্ট এলাকা কালিরচরে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবমুক্ত করা হয়। অবমুক্ত হওয়া বাটাগুর বাসকাগুলোর বিচরণ ও জীবনাচার ভিয়েনা থেকে পর্যবেক্ষণ করা হতে থাকে। তবে প্রকৃতিতে কোনো নারী বাটাগুর বাসকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সাধারণত এক বছর পর খোলস বদলালে কচ্ছপের দেহ থেকে ওই ট্রান্সমিটার পড়ে যায়।
ঈষৎ লবণযুক্ত পরিবেশ বাটাগুর বাসকা বসবাসের উপযোগী হলেও, মিঠা ও নোনা দুই ধরনের পানিতেই এরা টিকে থাকতে পারে। এই ক্ষমতা অন্য কোনো কচ্ছপের নেই। এদের দেহ অপেক্ষাকৃত বড়। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার ও ওজন ১৮ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
পুরুষ কচ্ছপের খোলস বা কৃত্তিকাবর্ম বাদামি থেকে সবুজ। স্ত্রী কচ্ছপের ক্ষেত্রে জলপাই ধূসর রঙের। মাথা ছোট, তুণ্ড উপরের দিকে বাঁকানো, সূঁচালো এবং বেশ প্রসারিত। প্রকৃতিতে এরা বেঁচে থাকতে পারে ৪০ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত।
আজাদ কবির বলেন, ‘বাটাগুর বাসকা সাধারণত পূর্ণিমা গোনের কাছাকাছি সময়ে রাতের শেষভাগে পুকুর পাড়ের বালুতে প্রায় এক ফুট গর্ত করে ডিম পাড়ে। পরে সেই ডিম তুলে নিয়ে ইনকিউবেশনে (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ) রাখা হয়। ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তামপাত্রায় ইনকিউবেশনে রাখলে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
‘গবেষণার জন্য করমজল থেকে এখনও মাঝেমধ্যে কিছু বাচ্চা গাজীপুরের ভাওয়ালে নেয়া হয়। এই গবেষণায় বেশ সফলতা এসেছে। আর সে সুবাদে বিলুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপ ধীরে ধীরে ফিরে আসছে প্রকৃতিতে।’
এক সময় সুন্দরবন থেকে শুরু করে মিয়ানমার-থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া উপকূল পর্যন্ত বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের বসতি ছিল। তবে কিছু মানুষের খাবার হিসেবে এই কচ্ছপের দিকে দৃষ্টি এবং প্রকৃতির বিরূপতায় এটি বিলুপ্ত হতে বসেছিল।
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ে কাজ করা সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) তালিকায় এই প্রাণীর নাম মহাবিপন্ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। ফলে এটি শিকার, মাংস বা অংশবিশেষ অথবা এর থেকে উৎপন্ন দ্রব্য দান, বিক্রি বা অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
আরও পড়ুন:গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা-যশোরসহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে গরমের দাপট আরও বেশি।
শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এদিন চুয়াডাঙায় ছিল ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাগেরহাট জেলাজুড়ে বয়ে যাওয়া দাবদাহের মধ্যে শনিবার বিকেল ৩টায় মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি অতীতের যেকোনো সময়ের মধ্যে এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, শুক্রবারের চেয়ে বাগেরহাটের তাপমাত্র শুন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
গত পাঁচদিন ধরে বাগেরহাটে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তীব্র গরমে খেটে খাওয়া লোকজন বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় শ্রমিক সঙ্কটে অনেক মিল-কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
সূর্যের প্রচণ্ড তাপে সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের পিচ গলে ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। সড়কে যানবাহন চলাচলও অনেক কমে গেছে। অতি-প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরবাড়ি থেকে বের হচ্ছে না।
বাগেরহাট আন্তঃজেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকী বলেন, ‘গত পাঁচদিন ধরে বাগেরহাটে তীব্র তাপদাহের কারণে লোকজন বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল অনেক কমে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার দুপুর থেকে সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে হিটওয়েভে রাস্তার পিচ গলে একাকার হয়ে ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। এই অবস্থায় নিরাপদে যানবাহন চালানোও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এদিকে হঠাৎ গরমে জেলার জনস্বাস্থ্যেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, জ্বর-কাশি নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ৩২ বেডের শিশু ওয়ার্ডেই ভর্তি রয়েছে ১১২ জন। এর মধ্যে শিশু রয়েছে ৭১টি।
তীব্র তাপদাহে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে লোকজনকে অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া ও শিশুসহ সবাইকে সুপেয় পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার।
বৃষ্টি না হলে বাগেরহাটের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানান মোংলা আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহওয়াবিদ মো. হারুন অর রশিদ।
আরও পড়ুন:চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে এক সপ্তাহের ছুটি দেয়া হয়েছে। স্কুলে আরও এক সপ্তাহ ছুটির নির্দেশ আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা আরও এক সপ্তাহ স্কুলগুলোকে বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছি। আমাদের কিছু নির্দেশনা আছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সেগুলো সব জায়গায় দেয়া হবে।
শনিবার দুপুরে সাভারের সিআরপি নার্সিং কলেজের ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন না থাকলে ঘরের বাইরে না যায়। আর বাকি যে নির্দেশনাগুলো সেগুলো আজকেই চলে যাবে। স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক ইউনিটের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা তদন্ত করতে বলেছি। আজকেই তদন্ত হবে।’
স্বাস্থ্যখাতে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে, জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আমি সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছে দেব। প্রত্যেকটা হেলথ কমপ্লেক্সকে, কমিউনিটি ক্লিনিককে উন্নত করতে হবে যেন সাধারণ মানুষ গ্রামেই চিকিৎসা পায়।’
সাভার ও ধামরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এটাকে করা যায় কি না, তা নিয়ে কাজ করব।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরপি প্রতিষ্ঠাতা ড. ভ্যালেরি টেইলর, সিআরপির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এর আগে, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সাত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তারও আগে দেশজুড়ে চলমান দাবদাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পরবর্তীতে শনিবার বিকেলে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজও সাত দিন বন্ধ থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক (কলেজ-১) মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন বলেছেন, ‘পরবর্তী তারিখ ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধ থাকবে।’
তবে ক্লাস বন্ধ থাকলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব পরীক্ষা বিদ্যমান সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
গত কয়েক দিন ধরে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকাও চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অনুভব করেছে আজ। এদিন ঢাকায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকায় শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে জেলায় এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
জেলার দামুড়হুদায় গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানবলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’
দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এই অঞ্চলের জনজীবন। দিনের বেলায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শহর-গ্রামের রাস্তাঘাট ফাঁকা।
শ্রমজীবী মানুষগুলো বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে তারা কাজে বেরুতে পারছে না। ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সূর্যের প্রখর তাপের কারণে শ্রমিকরা মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে ভ্যানচালক করিম আলী বলেন, ‘জীবনে আমি এত তাপ দেখিনি। ছেমায় গিয়িও শান্তি নেই। যে তাপ পড়চি তাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি না। আমাদের ভাড়াও কমি গিচে।’
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে বলায় জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, অসনীয় গরমে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবন। শনিবার জেলার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ।
শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সুকুমার দাস পাবনার শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, কয়েকদিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এর আগে চলতি বছরে জেলায় এতোটা বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তীব্র এই তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বাইরে বের হওয়ার সময় অনেকেই ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন।
আরও পড়ুন:তীব্র তাপদাহ চলমান থাকা চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা তিন দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী জেলাটিতে।
অতি তাপে অতিষ্ঠ চুয়াডাঙ্গার লোকজন। জেলার হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।
প্রচণ্ড গরমে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্যানচালক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক দিন থেকি যে তাপ পড়চি মনে হচ্চি যেনে সূর্য মাতার ওপর চলি এসিচে। আজ যেনে সব থেকি বেশি তাপ পড়চি। গা দিয়ি তরতর করি ঘাম ঝরচি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আরও কয়েক দিন এমন দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে, তবে এখনই এই এলাকায় বৃষ্টির কোনো সম্ভবনা নেই।’
হিট অ্যালার্ট
তীব্র দাবদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে হিট এলার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে।
সতর্কতার অংশ হিসেবে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বৈশাখের শুরুতেই তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চুয়াডাঙ্গায় আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে (৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এ অবস্থা সপ্তাহজুড়ে চলমান থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে জলীয়বাষ্পের কারণে ভ্যাপসা গরম অস্বস্তি বাড়াবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২২ শতাংশ। মঙ্গলবারও এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় (৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেইসঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূর্যের তাপ, তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশে।
প্রচণ্ড গরমে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইকচালক ও ভ্যান-রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রয়োজনের তাগিদেও ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। ছন্দপতন ঘটছে জেলাবাসীর দৈনন্দিন কাজকর্মে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে এখনই বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।’
এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে এবং কিছু কিছু স্থানে তা প্রশমিত হতে পারে।
এ সময়ে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাতে কারণে বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বি.দ্র.: চুয়াডাঙ্গার তাপপ্রবাহের তথ্য নিউজবাংলার চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন:মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র বৃষ্টিপাত ও ঝড়। এ ঘটনায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যায় স্থানীয় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া বন্যার কবলে পড়ে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।
দেশটির জাতীয় আহওয়া কেন্দ্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আমিরাতের আবুধাবি প্রদেশের ওমান সীমান্তে অবস্থিত আল আইন শহরে ২৫৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ৭৫ বছরে অর্থাৎ ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এটিই দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
মঙ্গলবার দিনের শেষভাগে বৃষ্টিপাত কমে এলেও বুধবার সকাল থেকেই জলাবদ্ধতার কারণে দুবাই বিমানবন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বেশ কিছু ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়।
বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের অন্যতম দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের ফ্লাইট শিডিউল উল্লেখযোগ্য আকারে বিঘ্নিত হয়েছে। অসংখ্য ফ্লাইটকে ভিন্ন দেশে অবতরণ করতে বলা হয়েছে বা আগমন বিলম্বিত করা হয়েছে।
দুবাই ছাড়তে আগ্রহী যাত্রীদের বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে ফ্লাইট শিডিউল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিতে বলা হয়েছে।
বিমানবন্দরের প্রাতিষ্ঠানিক এক্স অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, ‘অত্যন্ত বৈরি পরিবেশে আমরা বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, আরব আমিরাতের ৭০ বছর বয়সী এক নাগরিক মঙ্গলবার সকালে মারা গেছেন। দেশের উত্তরের রাস আল খায়মাহ প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় তার গাড়িটি ডুবে যায়।
আরব আমিরাতের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের কিছু অংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে, যার মধ্যে আছে ধসে পড়া সড়ক ও দালান। এগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে ওমানে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে।
বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে আইকিউ এয়ারের তালিকায় গতকাল চতুর্থ অবস্থানে থাকা ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি হয়েছে, তবে ‘অস্বাস্থ্যকরই’ রয়ে গেছে বাংলাদেশের রাজধানীর বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১৫৪ স্কোর নিয়ে বাতাসের নিম্ন মানে ১২০টি শহরের মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে ছিল ঢাকা।
একই সময়ে যথাক্রমে ১৭১ ও ১৬৮ স্কোর নিয়ে তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৪ গুণ বেশি।
এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আইকিউএয়ার চারটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করা; দুই, বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা যেন দূষিত বায়ু ঘরে প্রবেশ না করতে পারে; তিন, বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং চার, এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৪। এর মানে হলো ওই সময়টাতে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।
একই সময় ১২০টি দেশের এ তালিকায় ৮ স্কোর নিয়ে সর্বশেষ অবস্থানে থাকা কানাডার মন্ট্রিলের বাতাস ছিল ‘ভালো’।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য