সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা। আরিফের এই ঘোষণায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের উত্তাপ হারাতে চলেছে সিলেট। আরিফের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনের জৌলুস অনেকখানিই কমে যাবে বলে মনে করছেন অন্য প্রার্থী ও ভোটাররা।
নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলেও আরিফুল হককে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরাধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০ মে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ করে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেন গত দুই মেয়াদের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান তিনি। অন্য প্রার্থী ও ভোটারদেরও নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান আরিফুল হক।
তবে বর্তমান মেয়রের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সিলেটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি সোমবার বলেন, ‘আরিফুল হক আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালেই দুবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
‘গত ১০ বছর তিনি মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। কখনো কোনো অভিযোগ করেননি। বরং ২০ মে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া সমাবেশে বক্তৃতাকালেও তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ সিলেটের অন্য মন্ত্রীরা তাকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন আরিফ। তারপরও কেন তিনি এবার নির্বাচন বর্জন করলেন, তার দুঃখটা কি- তা আমি ঠিক জানি না।’
আরিফ প্রার্থী না হওয়ায় এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা অনেকটাই কমে যাবে বলে ভোটারদের বিশ্বাস।
এ ব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আরিফুল হক শেষ মুহূর্তে ভোটের মাঠ থেকে সরে যাবেন, এটি আমাদের প্রত্যাশা ছিল না। আমি এখনও চাই আরিফুল হক ও তার দল মত পাল্টাবেন এবং ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে আসবেন। কারণ ভোট ছাড়া তো জয়ের কোনো উপায় নেই।
‘আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে আসলে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। তিনি বিগত ১০ বছর সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে অনেক ভালো কাজ করেছেন। সিলেটের মানুষ ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করুক এটাই আমি চাই।’
তিনি বলেন, ‘সিলেটে নির্বাচনের পরিবেশ নাই- ওনার এই বক্তব্য আসলে ঠিক না। তার এমন অভিযোগ সিলেটের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির সঙ্গে মাননসই নয়।’
আরিফুল হক প্রার্থী না হলে নির্বাচন কিছুটা জৌলুস হারাবে বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি বলেন, ‘আরিফুল হকের নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে নগরবাসী নৌকা, ধানের শীষ ও লাঙলের ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হল।’
তবে আরিফ না আসায় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়ের সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেল বলেও মনে করেন নজরুল ইসলাম।
সিলেটে মেয়র পদে এখন পর্যন্ত ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও নজরুল ইসলাম বাবুল ছাড়া বাকিরা হলেন হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি); স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
আরিফুল হক প্রার্থী না হলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ অনেকটা কমে যাবে উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সিলেট সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আরিফুল হক বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি ও তার দল না এলে নির্বাচন অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়বে; মানুষের আগ্রহ কমবে।’
এ অবস্থায় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে হাজির করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ সালে তৃতীয় ও ২০১৮ সালের চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। ৪টি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বিন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। অন্য দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সামান্য প্রতিদ্বিন্দ্বিতাও তৈরি করতে পারেননি।
২১ জুন ইভিএমে পঞ্চম সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে ২৫ মে পর্যন্ত। ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
আরও পড়ুন:দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় এক মেয়র প্রার্থী ও ৪০ কাউন্সিলর প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত নোটিশ সিলেট বিএনপির ওই নেতাদের পাঠানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ব্যক্তি স্বার্থে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিতে হবে।
প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী নোটিশ বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত দলের। এই সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিন রিমনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকসানা বেগম শাহনাজ, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক উসমান হারুন পনির, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. কামাল মিয়া, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন- সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিম আহমদ রনি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন ও বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম মাসুম।
এ ছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিমন। তিনি বলেন, ‘আমি বর্তমানে গণসংযোগে ব্যস্ত, এসব নোটিশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।’
এসময় তিনি দলীয় পরিচয়ে প্রার্থী হননি বলেও জানান।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আজ রাতের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হোয়াটসঅ্যাপে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। যাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যাবে না, তাদের সশরীর রোববার চিঠি পৌঁছে দেয়া হবে।’
যাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে জবাব পাওয়ার পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি বলে জানান তিনি।
২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৯ নেতাকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠিয়ে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। শনিবার রাতে স্ব স্ব নেতাদের নামে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান কাকন, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুব কায়সার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর আমান উল্লাহ আমান, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর বিএনপির সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ফজলুল কবির টিটো ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুশফিকুস সালেহীন পাইলট, মহানগর তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার মাতুব্বর, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন। তারা কেসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন।
চিঠিতে পাঠানো বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, বিএনপি এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এ সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। ১ জুন আপনাদের কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হলে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও নোটিশের জবাব দেননি, যা গুরুতর অসাদাচারণ। এহেন অবজ্ঞা ও ঔদ্ধাত্যের জন্য বিএনপির গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সকল পদ থেকে আপনাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হল।’
বিএনপির ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তের পরও সিটি নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করার কারণ জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। দলটির দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে তিনি তা জানিয়েছেন।
এসময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দকে দোষারোপ করেছেন রুপন। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া ও প্রত্যাহারের বিষয়ে কেউ কখনও যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ তার।
তিনি জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বেঁধে দেয়া সময়সীমা শুক্রবার রাত ১০টার মধ্যেই শোকজের জবাব দিয়েছেন তিনি।
নোটিশের জবাবে রুপন উল্লেখ করেন, ‘বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রার্থীতা ঘোষণার পর গণমাধ্যমে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয় যে আমি বিএনপির কেউ নই। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় বলে উল্লেখ করা হয়। তারপরও আমি সবসময় মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়েছি, বিএনপির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আসলে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করব।’
বর্তমানে তিনি কোনো সাংগঠনিক পদে নেই জানিয়ে বলেন, ‘এখন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তবে দল যে সিদ্বান্ত দেবে, তা মেনে নেব।’
বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র পদের রুপনসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের ১৯ জনকে শোকজ দেয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি।
২৪ ঘন্টার মধ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
নোটিশের জবাবে রুপনকে দায়ী করা প্রসঙ্গে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, ‘সে বিএনপি পরিবারের সন্তান। সারা দেশের মানুষ জানে নিশিরাতে ভোটের এ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির কেউ অংশ নেবে না। সে যদি বিএনপিকে ভালবাসত, তাহলে নির্বাচনে অংশ নিত না।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্বান্ত। বিএনপির সবাই এটা জানে। ঘরে ঘরে গিয়ে তো বলার কিছু নেই।’
আরও পড়ুন:বরিশালে সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরির চেষ্টার পাশাপাশি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন মেয়র প্রার্থীরা। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে কড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়মী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া বাকি মেয়র প্রার্থীরা।
শনিবার নগরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগের সময় এ হুঁশিয়ারি দেন তারা।
গণসংযোগকালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ‘ভোট দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। তবে বরিশালে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও নিশ্চিত হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখানে বিভিন্নভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে।
‘ছাত্রলীগের বিশেষ এক নেতা এসে নৌকার লোগো লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন বরিশালে। তিনি বরিশালের সিটি নির্বাচনে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে লোক এনে একটা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য, জনগণ যেন ভোটকেন্দ্রে না যায়।’
এ ধরনের অবস্থা চলতে থাকলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা নিশ্চিত করেন। নাহলে সারা দেশে ভোট চুরির বিরুদ্ধে যে গণআন্দোলন শুরু হবে, সেই আন্দোলনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে সরকার।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘বরিশালে ধীরে ধীরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার দিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের কিছু লোককে হয়রানি করা হয়েছে।
‘টুপি-দাড়ি দেখে আমাদের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কোথায় বাড়ি? কেন এসেছেন? অথচ, নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে কোথাও লেখা নেই যে শহরের বাইরের কেউ ভোট চাইতে পারবে না বা আসতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আশেপাশের কিছু লোক তো আসতেই পারে এবং সব প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার জন্যই তারা আসেন। আমি মনে করি নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে যা আছে, সেই দিকে প্রশাসনের লক্ষ্য রাখা উচিত। এর বাইরে অতি উৎসাহিত হয়ে অন্য কিছু না করাই ভালো।
‘নির্বাচনী বিধি ছাড়া যদি আমি কোনো কাজ করি, তাহলে বলবেন। কিন্তু বিধির মধ্যে থেকে কাজ হলে অতি উৎসাহী হয়ে আমাদের বাধা দেয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি করব, বরিশালের নির্বাচনের দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে আছে। ফলে নির্বাচন যদি কোনো অবস্থায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়, যদি গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেবে।
ভোটারদের সমর্থনের ব্যাপারে এসময় তিনি বলেন, ‘ভোটারদের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। তারা ইতোমধ্যে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলছে। যে ব্যক্তির মাধ্যমে বরিশালের সব দিকের উন্নয়ন হবে, সে রকম একজন প্রার্থীকে ভোটাররা যাতে নির্বাচিত করেন, আমি সে দাবি জানাই। ফেয়ার-ফ্রি ভোট হলে হাতপাখা জয়লাভ করবে।’
জাকের পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চুও মাঠে নেমে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান। তিনি বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় ও কমিশন যদি সঠিকভাবে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে আমি জয়ের আশা রাখি।’
তবে এখন পর্যন্ত অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)।
এদিকে নির্বাচনে প্রচারের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপনের তিন কর্মীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে রুপন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে গেলেও তারা সঠিকভাবে কিছু বলছে না। বিকেল সাড়ে ৪টায় আদালতে গিয়ে জানতে পারলাম রমজান, মোনায়েম খান, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মন্টু নামে আমার তিন কর্মীকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ বিনা কারণে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তাদের এখনও আদালতে তোলেনি।’
এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত সন্দেহজনক কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়াও হয়েছে।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল।
আরও পড়ুন:সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক পেয়েই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা।
শুক্রবার সকালে সিলেটের আঞ্চিলক নির্বাচন কার্যালয়ে মেয়র এবং দিনভর কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদির প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন।
মেয়র পদপ্রার্থীরা কে কোন প্রতীক পেলেন
সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন।
এদের মধ্যে দলীয় চার প্রার্থী দলের নির্ধারিত চারটি প্রতীক পান।
আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে নৌকা, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুলকে লাঙ্গল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসানকে হাতপাখা এবং জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলমকে গোলাপফুল প্রতীক দেয়া হয়।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু পেয়েছেন ঘোড়া, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন পেয়েছেন ক্রিকেট ব্যাট এবং মো. শাহজাহান মিয়া বাস গাড়ি প্রতীক পান।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ করা হবে।
প্রতীক পেয়েই প্রচারে
দুপুর থেকেই মেয়র পদপ্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে প্রচার শুরু করেন।
নগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ চালান তারা।
তবে প্রতীক বরাদ্দের দিন শুক্রবারের আগেই বিভিন্ন উপায়ে প্রার্থীরা প্রচার চালিয়ে আসছেন।
আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আগেভাগে প্রচার শুরুর অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সকালে প্রতীক পাওয়ার পর নগরের মেন্দিবাগ ও উপশহর এলাকায় প্রচার চালান আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘নৌকা কেবল আওয়ামী লীগের প্রতীক নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বিজয়ী হলে আমি আমার নগরবাসীকে স্বপ্নের স্মার্ট সিলেট উপহার দেব।’
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন প্রমুখ।
পরে বিকেলে নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন আনোয়ারুজ্জামান।
এদিকে নগরের সাগরদিঘির পাড় এলাকার একটি মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন।
বাবুল বলেন, ‘গত ২০ বছরে সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র থাকলেও নগরের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। নগরবাসী তাই এবার পরিবর্তন চায়।’
এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান বিকেলে নগরের উপশহর এলাকায় প্রচার চালান।
আরও পড়ুন:বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে প্রার্থী হওয়া বিএনপির ১৯ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দলটি।
বর্তমানে কোনো পদে না থাকা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য মেয়র পদপ্রার্থী কামরুল আহসান রুপনকেও নোটিশ দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপি ওই কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বলে জানান বরিশাল মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মো. জাহিদুর রহমান রিপন।
চিঠিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
নোটিশ পাওয়ারা হলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হাবিবুর রহমান টিপু, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হারুন অর রশিদ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন।
এ ছাড়া মহানগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম হাওলাদার, সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের জাহানারা বেগম, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিনা বেগম এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রাশিদা পারভীন।
নোটিশ পাওয়া অন্যরা হলেন নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউল হক মাসুম, একই ওয়ার্ডের প্রার্থী দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের আব্দুল্লাহ সাদি ও বরিশাল জেলা তাতি দলের সাবেক সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শাহীন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান ফারুক, ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সৈয়দ হুমায়ন কবির লিংকু, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পদপ্রার্থী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ২২ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সামাদ, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মহানগরের সাবেক সহসভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদউদ্দিন হাওলাদার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ব্যক্তি স্বার্থে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায় কেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা প্রয়াত আহসান হাবীব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রুপন বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার রাতে নোটিশ পেয়েছি। বর্তমানে আমি গণসংযোগে ব্যস্ত। নোটিশের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পরে জানাব।’
নোটিশ পাওয়া ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জাবের আব্দুল্লাহ সাদি বলেন, ‘আমার তো দলে কোনো পদ নেই। এখন কি তাহলে সমর্থক পদ থেকে বহিস্কার করবে?’
আরও পড়ুন:নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বড় বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রের ভেতরে শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের। এ দায়িত্ব হালকা ভাবে নেবেন না। দায়িত্বপালনকালে কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে হলে করুন; চাইলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করবেন।’
বুধবার দুপুরে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে একটা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তা হচ্ছে, ভোটারদের ভোট প্রদানের অধিকার রক্ষা করা। কোনো প্রার্থীকে জিতিয়ে বা হারিয়ে দেয়া নয়।
‘ভোটারদের সে অধিকার যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়। কেউ যেন সে অধিকার কোনোভাবে প্রতিহত করতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল সাবজেক্ট হচ্ছে ভোটাররা; তারা যাতে সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। ভোটারদের মধ্যে যেন কোনোরকম অনাস্থা না থাকে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান (অব.) ও নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঁঞা, খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মঈনুল হক ও খুলনার পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য