আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাম চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে হাজারো কিশোরী ও তরুণীর ভিডিও সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মালিবাগে সিআইডি সদরদপ্তরে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বিভাগের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
সিআইডি জানায়, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আইডি হ্যাক করে তরুণীদের গোপন ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিত চক্রটি। পরে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা দাবি করতেন চক্রের সদস্যরা। টাকা দিতে না পারলে ভিডিও কলে এসে আপত্তিকর কর্মকাণ্ড করতে বাধ্য করা হতো। আর কোনো প্রস্তাবেই সাড়া না দিলে তরুণীদের নাম-পরিচয় ও ব্যক্তিগত তথ্য লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবার থাকা টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে ভাইরাল করে দেয়া হতো।
গ্রেপ্তার ৯ জন হলেন মার্ক সাকারবার্গ ওরফে আবু সায়েম, শাহরিয়ার আফসান অভ্র, বোগদাদী শাকিল, ডিটিআর শুভ ওরফে মশিউর রহমান, মো. জসীম, ক্যাকটাস ওরফে কেতন চাকমা, এল ডোরাডো ওরফে শাহেদ, তুর্য ওরফে মারুফ ও মিঞা ভাই ওরফে নাজমুল সম্রাট। তাদের মধ্যে সাকারবার্গ চক্রটির হোতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
‘ভিডিও দেশ-বিদেশে বিক্রি’
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী টেলিগ্রাম গ্রুপে গ্রেপ্তার ৯ জনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই, গ্রুপটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের কাছ থেকে যে কেবল টাকা আয় করে, তা নয়; চক্রটি ওইসব ভিডিও দেশে-বিদেশে বিক্রি করেও কোটি টাকা আয় করেছে। মাসে ১ থেকে দুই হাজার টাকা সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, পর্তুগাল, কানাডা, আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের মতো দেশের অসংখ্য ক্রেতা গ্রুপটির সদস্য হয়েছেন। তারা অল্পবয়সী মেয়েদের আপত্তিকর ওইসব কনটেন্ট কিনে সংরক্ষণ করেন।
‘চক্রটির নেতৃত্ব দেয় মার্ক সাকারবার্গ নামের এক ব্যক্তি। শুরুতে খুবই চতুর এই মার্ককে চিহ্নিত করা সহজ ছিল না। মার্কের আসল নাম আবু সায়েম। বেকার সায়েম থাকে চট্টগ্রামে। এনআইডি অনুযায়ী তার বয়স ২০ বছর। সে শ্যামলী পলিটেনিক ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম থেকে ইলেকট্রিক্যালে ডিপ্লোমা করেছে। তার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।’
সিআইডি জানায়, এক ভুক্তভোগী ও তার প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পমপম গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মার্ক সাকারবার্গ ও তার দলের নামে পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মার্ক সাকারবার্গ ওরফে সায়েমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মার্কের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার ঘনিষ্ট দুই বন্ধু শাহরিয়ার আফসান অভ্রকে চট্টগ্রামের একটি হাউজিং এলাকা থেকে এবং বোগদাদী শাকিলকে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
সিআইডির প্রধান বলেন, মার্ক ওরফে সায়েমের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে মার্ক সাকারবার্গ আইডিটি লগইন করা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আবু সায়েমই মার্ক সাকারবার্গ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পমপম গ্রুপের যতগুলো চ্যানেল ও গ্রুপ আছে, সেগুলোর অ্যাডমিনদের আসল নাম-পরিচয় পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, অ্যাডমিনদের কাজ ছিল মার্কের হয়ে নতুন নতুন কনটেন্ট জোগাড়। নতুন কনটেন্ট পেতে তারা ভুয়া এনআইডি বানিয়ে টার্গেটের ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম আইডি হ্যাক করতেন একসময়।
‘প্রতিশোধের নেশায় কনটেন্ট সরবরাহ’
অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীদের সাবেক প্রেমিকরাই নতুন নতুন কনটেন্টের জোগান দেন। অর্থাৎ সুসময়ে প্রেমিকার যেসব অন্তরঙ্গ মুহূর্ত তারা ক্যামেরাবন্দি করেছেন, সেগুলোই প্রতিশোধের নেশায় তুলে দেন মার্ক সাকারবার্গদের গ্রুপে। মার্ক তার অ্যাডমিনদের দিয়ে সেগুলোতে মিউজিক বসিয়ে, ফেসবুক আইডি থেকে ছবি নিয়ে ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ডের প্রমো বানিয়ে আপলোড করতেন তার গ্রুপগুলোতে। প্রমো দেখে যারা ফুল ভার্সন দেখতে চান, তাদের ১ থেকে ২ হাজার টাকার প্রিমিয়াম সার্ভিস কিনতে হয়।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, মার্ক ওরফে সায়েম, অভ্র এবং শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের ডিভাইস তল্লাশি করে মার্ক সাকারবার্গের বিভিন্ন পেজের অ্যাডমিনদের আসল পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। দেখা যায়, তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ডিটিআর শুভ ওরফে মশিউর রহমান। মশিউরের দায়িত্ব ছিল গ্রুপ থেকে কৌশলে কনটেন্ট সেভ করে রাখা এবং নানা প্রলোভনে তরুণীদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও হাতিয়ে নেয়া। মশিউর চট্টগ্রামের একটি ফিশিং কোম্পানিতে চাকরি করেন। অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে কর্ণফুলী এলাকা থেকে প্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তার সহযোগী জসীমকেও।
ফাঁদ পেতে গ্রেপ্তার
সিআইডির প্রধান বলেন, সায়েম ও মশিউরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই অ্যাডাল্ট গ্রুপগুলোর অ্যাডমিনদের অনেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বেইলি রোড এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় গেট টুগেদারের ফাঁদ পাতা হয়। ফাঁদে পা দিয়ে একে একে গ্রেপ্তার হন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাডমিন ক্যাকটাস ওরফে কেতন চাকমা, এল ডোরাডো ওরফে শাহেদ, তুর্য ওরফে মারুফ এবং মিঞা ভাই ওরফে নাজমুল সম্রাট।
চ্যানেলগুলোতে সাবস্ক্রাইবার কত
সিআইডির প্রধান বলেন, ‘মার্ক সাকারবার্গ ও তার সহযোগীদের গ্রুপ ও চ্যানেলগুলোতে সাবস্ক্রাইবের সংখ্যা প্রায় সোয়া চার লাখ। আর সেগুলোতে ২০ হাজার আপত্তিকর ভিডিও এবং প্রায় ৩০ হাজার কন্টেন্ট রয়েছে।
‘অন্যদিকে মাসে ১ থেকে ২ হাজার টাকা ফি দিয়ে তাদের প্রিমিয়াম গ্রুপের সদস্য হয়েছেন দেশ-বিদেশের প্রায় সাড়ে সাত শ মানুষ। আমরা তাদের বিস্তারিত পেয়েছি। তাদের নিয়েও কাজ করছি। তরুণীদের অ্যাডাল্ট কনটেন্ট কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’
এ ঘটনায় মানিলন্ডারিং তদন্তের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে সিআইডির প্রধান বলেন, ‘তাহলে কেবল টেলিগ্রাম চক্রের হোতারাই নয়, ফলো দ্য মানি করে তাদের দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সহযোগীদেরও আইনের আওতায় আনা যাবে।’
সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীদের (কিশোরী) সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে, একান্ত মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি এবং তা আদান-প্রদান করে তারা যেমন ভুল করেছে, তেমনিভাবে সেই ভুল করে বিপদে পড়া কঠিন সময়ে তারা নির্ভরযোগ্য কাউকে পাশে পায়নি; না পরিবার, না অন্যান্য স্বজন। ফলে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তারা কোনো আইনের আশ্রয় নিতে পারেনি।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে জৈনসার ইউনিয়নের ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলা পুলিশের বিশেষ কর্মসূচিতে যোগ দি ৩০ শিক্ষার্থী অতিরিক্তি গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, জেলা পুলিশের সচেতনতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার বেলা ১১টার দিকে তীব্র গরমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে দীর্ঘ সময় অ্যাসেম্বলি করানো হয়। কর্মসূচিতে সিরাজদিখান থানার এএসআই কামরুল ইসলাম যৌন হয়রানি ও মাদকবিরোধী বক্তব্য দেয়ার সময় ওই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আমিন উদ্দিন বলেন, ‘দুই মাস আগেই আমাদের স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে শ্রেণিকক্ষে প্রার্থনা ও শপথ করানো হয়।
‘কামরুল ইসলাম নামে সিরাজদিখান থানার একজন অফিসার আমাদের বিদ্যালয়ে এসে সচেতনতামূলক কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের মাঠে বের করেছিলেন। ওই সময় শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘ভবানীপুর বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে আমার এখানে চিকিৎসা নিয়েছে।’
মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত জানান, বিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত এসেম্বলিতে অল্প সময়ের জন্য শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও মাদক বিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পুলিশ ও সরকারি কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে ‘গুজব’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে পুলিশের মনোবল ভাঙার কোনো সুযোগ নেই।’
সম্প্রতি ডিবি প্রধান হারুন সিঙ্গাপুরে নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ১৩ দিনের ছুটি নেন।
ছুটির আদেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তিনি আর দেশে ফিরবেন না বলে গুঞ্জন ওঠে।
রোববার নিজ কার্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটা শুধু আমাকে নিয়ে নয়, গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে দেশের বাইরে থেকেও কিছু লোক সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে ভিডিও করছে। তারা বলছে, অনেক সরকারি কর্মকর্তা দেশের বাইরে যাওয়ার পর ফিরবেন না। এটা সম্পূর্ণ গুজব। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি প্রাপ্তি একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া। এর জন্য একাধিক স্তরে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদেরও অন্যদের মতোই পরিবার আছে এবং বিশেষ কারণে তাদের ছুটির প্রয়োজন হয়।’
‘কেউ যদি মনে করে এ ধরনের ভিডিও বানালে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়বে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে এসব কথা ছড়িয়ে ভিউ পেতে পারে, অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু আমি পুলিশের মনোবল ভাঙার কোনো কারণ দেখছি না।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেকে এক সেনা কর্মকর্তার বাসা থেকে চুরি হওয়া পিস্তল চার বছর পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) শনিবার রাতে বরিশালের গৌরনদী থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করে।
এ সময় চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তারেক হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ির রান্না ঘরের মাটির নিচে অস্ত্রটি লুকানো ছিল।
রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ রাতে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সামছুল হুদার বাসায় চুরি হয়।
চোর বাসার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে টাকা, ঘড়িসহ বিভিন্ন সামগ্রীর সঙ্গে লাইসেন্স করা বিদেশি পিস্তল, ৫০টি গুলি ও দুটি ম্যাগজিন নিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ভাষানটেক থানায় মামলা করেন।
পিবিআই জানায়, অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখায় তারেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চুরির মামলাসহ ভাষানটেক থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় এক কেজি স্বর্ণ, তিনটি মোবাইল ফোন ও দুটি ল্যাপটপসহ এক যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে দরজার কব্জার ভেতরে লুকিয়ে তিনি এসব দেশে আনেন।
রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দাদের (সিআইআইডি) যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
আটক যাত্রীর নাম আবদুল করিম সজন। ফেনীর পরশুরাম এলাকার বাসিন্দা তিনি।
এনএসআই জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছেন তিনি৷ পরবর্তীতে তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে তল্লাশি করেন এনএসআই ও সিআইআইডির সদস্যরা।
এ সময় তার ব্যাগ থেকে দরজার কব্জার ভেতর কৌশলে লুকানো ৭৪৬ গ্রাম ওজনের ১২টি দণ্ডাকৃতির স্বর্ণের টুকরো, ১১৬ দশমিক ৫ গ্রাম ওজনের একটি বার এবং ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ওই যাত্রীর ব্যাগ থেকে একটি আইফোন-১৪, একটি রেডমি ফোন ও একটি গুগল পিক্সেল মোবাইলফোন এবং দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়৷
কাস্টম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ বলন, ‘অবৈধভাবে এসব পণ্য এনে বিপুল অংকের শুল্ক ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নগর ভবনের ছাদ থেকে লোহার পাইপ পড়ে সেনাসদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়।
মামলায় নির্মাণকাজে অবহেলাজনিত অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
ওসি জানান, মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর, জামাল অ্যান্ড কো.–এর সাইড ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রাজ্জাক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কো.–এর মালিক মো. জামাল উদ্দিন, ক্রেনচালক মো. সাদেক। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক এবং ঠিকাদারকেও আসামি করা হয়।
এর আগে শনিবার দুপুরে বন্দরবাজার এলাকার সিটি সুপার মার্কেটের নিচতলা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নগর ভবনের ছাদ থেকে লোহার পাইপ পড়ে সেনাসদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন মারা যান।
দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জগিরগোফার রায়পুর গ্রামে। তিনি ল্যান্স করপোরাল হিসেবে সিলেট ক্যান্টনমেন্টের ৫০ ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন।
ওই ঘটনার পরপরই সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
তবে রাতে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলার পর রোববার তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করেন মেয়র। কমিটি থেকে প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানকে বাদ দেয়া হয়।
পুনর্গঠিত তদন্ত কমিটিতে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হককে আহ্বায়ক করা হয়।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার হোমনায় স্কুলছাত্র আশিকুর রহমান আশিক হত্যার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
এ ছাড়া দুজনকে কারাদণ্ড এবং এক আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
রোববার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন হোমনার ২৫ বছর বয়সী মো. সুজন মিয়া, ৩০ বছর বয়সী আল আমিন, ২৫ বছর বয়সী সোহেল মিয়া, ২৭ বছর বয়সী মো. শাহিন মিয়া ও ২৮ বছর বয়সী মো. সোহাগ মিয়া। সেই সঙ্গে তাদের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া আকিমুল হক মধু ও আবদুর রহমানের সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। খালাস পান মো. সোহেল।
সাজাপ্রাপ্ত সোহেল মিয়া, আকিমুল হক মধু, আবদুর রহমান এবং খালাস পাওয়া মো. সোহেল ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১২ সালে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আশিককে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়।’
আশিকের বাবা মো. হারুন ভূঁইয়া বলেন, ‘উচ্চ আদালতেও যেন এ রায় বহাল থাকে। রায় শিগগির কার্যকর চাই।’
কুমিল্লা আদালতের পরিদর্শক মুজিবুর রহমান জানান, আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দিতে চলন্ত ট্রাকে ইট নিক্ষেপে আহত হন ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহীম। গুরুতর আহত ইব্রাহীমকে তাৎক্ষণিক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
কিন্তু ১৮ ঘণ্টায়ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে তার জন্য আইসিইউতে শয্যা খালি পাওয়া যায়নি। এতে তার অবস্থার অবনতি হয় এবং তিনি মারা যান।
৬০ বছর বয়সী মো. ইব্রাহীম ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আহত হন তিনি।
এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা শিগগির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই সময় ঢামেক হাসপাতালে আইসিইউর শয্যা খালি ছিল না।
এরপর রাজধানীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চেষ্টা করেও আইসিইউর শয্যা পাননি স্বজনরা। বাধ্য হয়ে ১৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে এনে তাকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে শনিবার রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
স্বজনরা জানান, আহত হওয়ার পর একমাত্র ছেলে ওমর ফারুক ইমনকে কল করেন ইব্রাহীম।
ইমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি।
আহত ইব্রাহীম ছেলেকে বলেন, ‘ইমন, আমার চোখ-মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে ইমন আক্ষেপ করে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। তিনি লিখেন, ‘আমাকে ভরসা করে বাবা কল দেন। আমি বাবার জন্য কিছু করতে পারিনি।’
ভাতিজা কামরুল হোসাইন সবুজ বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে খবর নিয়ে আইসিইউ না পাওয়ায় তাকে সড়ক পথে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। তিনি গাছের ব্যবসা করতেন। চট্টগ্রাম থেকে ট্রাকে করে গাছ নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। চালকের পাশের আসনে বসা অবস্থায় হঠাৎ ইট এসে তার মাথার বাম পাশে আঘাত করে।’
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা তো এ রকম কোনো অভিযোগ পাইনি। শুনেছি, বুধবার সন্ধ্যায় দুজন শিশু একটা গাড়িতে ইট মেরেছিল। ওই ইটে চালক বা তার পাশে থাকা কেউ আহত হন৷’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিস্তারিত জানতাম না। কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও জানায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে টোল প্লাজার পাশে। ৬টার দিকে ডাকাতি হয় না বা হওয়ার কথাও না। আমরা তবুও ঘটনাটি তদন্ত করছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য