যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দৈনিক কালবেলায় রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেন।
কালবেলার ছাপা ও অনলাইন সংস্করণে রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ওপর আরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসছে। মানবাধিকার ইস্যু ছাড়াও গণতন্ত্র খর্ব, রাজনৈতিক নিপীড়ন, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে জড়িত সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ওপর চলতি মাসেই নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করা হচ্ছে, তবে যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে সরকার।’
ওই সংবাদের বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আই ডোন্ট নো, কালবেলা একটা রিপোর্ট দিয়েছে। উই হ্যাভ নো আইডিয়া অফ ইট (এ বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই)। আমরা জানি না, তবে এখানে মিথ্যা দিয়েছে।
‘মিথ্যা তথ্যটা হলো এটা একটু ডিমিনিং (মর্যাদাহানিকর) আমাদের দেশের সরকারকে। সেখানে মিথ্যা তথ্য বলেছে যে, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মানে আমি এই মন্ত্রী হওয়ার আগে চায়নিজ একটা লবি, চাইনিজ লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছি। এটা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা। সো আই থট, ইউ নো, এই মিথ্যাটা বলা উচিত?’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি কোনো দিন কোনো চায়নিজ কোম্পানিতেও কাজ করিনি…বরং বলতে পারেন যে আমি সারা জীবনেই আমেরিকায় ছিলাম এবং সেখানে কাজ করেছি।
‘…তারা নিশ্চয়ই জেনেশুনে এই মিথ্যা এবং বানোয়াট একটা তথ্য দিয়েছে। আর (নিষেধাজ্ঞা) হবে কি না, সেটা আমরা জানি না। আমাদের বলে-কয়ে তো কেউ কোনো দিন কিছু করে না, তবে আমাদের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী কালকে বলেছেন যে, দেশে এই স্যাংশনের কোনো কারণই নাই, তবে এটা ডিপেন্ডস অন ইন্ডিভিজুয়াল গভর্নমেন্ট (নির্দিষ্ট দেশের সরকারের ওপর)। এটা (নিষেধাজ্ঞা) যদি হয়, খুব দুঃখজনক হবে।’
আজ বুধবার ৭ জুন, ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এদিন বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা আদায়ের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর গুলি চালায়।
ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, সফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন। শহীদের রক্তে ৬ দফা আন্দোলন স্ফূলিঙ্গের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র; রাজপথে নেমে আসে বাংলার মুক্তিকামী জনতা। ১৯৬৬ সালের এই দিনে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন স্পষ্টত নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়।
পাকিস্তানি শাসন-শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে সর্বদলীয় জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ওই সম্মেলন।
পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফিরে ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ৬ দফার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
বাংলার সর্বস্তরের জনগণ ৬ দফার প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। ৬ দফা হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সনদ।
৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার জনগণ। সূচনা হয় গণআন্দোলনের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালের ৭ জুন নতুন মাত্রা পায়। গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এদিন হরতাল পালিত হয়। সেদিন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১১ জন শহীদ হলে দিনটি ৬ দফা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।
৬ দফা ভিত্তিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। ৬ দফা ভিত্তিক ১১ দফা আন্দোলনের পথপরিক্রমায় শুরু হয় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। সর্বোপরি ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে বাংলার জনগণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে একচেটিয়া রায় প্রদান করে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পরও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী সরকার গঠনে নির্বাচিত বাঙালি জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য গড়িমসি শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১-এর ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রতিবছরের মতো এবারও দিনটি যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে পালন করবে জাতি। দিবসটি স্মরণে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শাসক দল আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল দিনটি পালনে যথাযোগ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এ লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যথাযথভাবে ৬ দফা দিবসের কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের কষ্ট লাঘবে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে জ্বালানি ও বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বাজার ও কাঁচাবাজারের পণ্যের দামের পার্থক্য থাকায় গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। পেঁয়াজ ও আদার মতো পচনশীল আইটেমগুলোর জন্য আঞ্চলিক স্টোরেজ ব্যবস্থা স্থাপনের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন সরকার প্রধান।
‘প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রবণতা এবং দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির কারণে লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন। এই দুটি সমস্যা সমাধানে কাজ করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রথম কৌশল হবে এটিকে আরও বাড়তে না দেয়া এবং তারপর তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এটা ঠিক নয়। এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।
‘ডলার ছাড়া অন্যান্য মুদ্রার সঙ্গে বাণিজ্য পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এখনও ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে রয়েছে। তবে এটি আবারও ৫০ বিলিয়ন ডলারে যেতে পারে।’
আগামী অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার উল্লেখ করে মন্ত্রী মান্নান বলেন, ‘এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কিছু উদ্বেগ থাকতে পারে। তবে সামনে এমন লক্ষ্য রাখা ভুল নয়।’
স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পণ্যটি আমদানির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে ও সঠিক সময়ে বাজারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে হবে।’
জিটুজি প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর জোর
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত ও চীনের মতো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি (লাইন্স অফ ক্রেডিট) রয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ বিষয়ে কালবিলম্ব বা অবহেলা যাবে না। কারণ এসব উদ্যোগ বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াবে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদিও কিছু বেসরকারি ব্যাংক রেমিট্যান্স পাঠাতে সরকার নির্ধারিত আড়াই শতাংশের বাইরে কিছু বাড়তি প্রণোদনা দিচ্ছে।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের বিপুল আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে যে, ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভোট চাইতে সরকার দৃঢ় মনোবল নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে পারবে।’
১১৩৮৭ কোটি টাকার ১৮ প্রকল্প অনুমোদন
এম এ মান্নান জানান, একনেক সভায় মোট ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে ৭ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে এবং বাকি ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নয়টি নতুন ও নয়টি সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া বৈঠকে একটি প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
সভার শুরুতেই একনেক বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য এত চমৎকার বাজেট প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানায়।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনড় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সেদেশের কংগ্রেসের ছয় সদস্যের চিঠি দেয়ার বিষয়টিও হোয়াইট হাউস অবগত।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন্সের পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারাইন জ্যাঁ পিয়ের সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল- “বাংলাদেশে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি দিয়ে ছয় কংগ্রেসম্যান অনুরোধ করেছেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানানো হয়েছে সেখানে। পাশাপাশি ওই চিঠিতে বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?”
জবাবে জন কিরবি বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় এবং এই যোগাযাযোগের (চিঠি পাঠানো) বিষয়েও আমি অবগত। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার লক্ষ্যে আমরা অনড় অবস্থানেই আছি।
‘এই দায়বদ্ধতা থেকেই সম্প্রতি পররাষ্ট্র দপ্তর ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের (অবাধ ও সুষ্ঠু) নির্বাচন আয়োজনে বাধাদানকারীদের ভিসা দেয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য বব উড ২ জুন নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বাকি কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।
চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
চিঠিটির বিষয়ে সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে ছয় কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলবে সরকার।
তিনি বলেন, ‘এরকম চিঠি অতীতেও এসেছে, ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে আসতে পারে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এ ধরনের কার্যক্রম তত বাড়তে থাকবে।’
বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম বা শক্তির কাজ করার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তাদের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন- বাংলাদেশের মানুষ আমাদের শক্তি।’
আরও পড়ুন:গত কয়েকদিন থেকে সারা দেশে বয়ে চলেছে তীব্র দাবদাহ। সূর্য ওঠার পর থেকেই বাইরে বের হওয়া বা কাজ করা এক প্রকার দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। রাতেও তাপ কমার আভাস নেই।
গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করছে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ। এমনকি নেচে-গেয়েও বৃষ্টির কামনা করার খবর এসেছে গণমাধ্যমে। কিন্তু, কবে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি? কবে থেকে কমবে গরম এ বিষয়ে সবাই জানতে উদগ্রীব।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আরও অন্তত পাঁচ থেকে ছয়দিন থাকতে পারে তাপপ্রবাহ। তাছাড়া বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে।
সারাদেশে আজ দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসমূহ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যহত থাকতে পারে।
আজ সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। পরবর্তী তিন দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।
ঢাকায় আজ দক্ষিণ-পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘন্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে।
আরও পড়ুন:দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে এক মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালত বলেছে, কারাগারে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশই গরিব। এজন্য কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে এই গরিব মানুষগুলোকে বাঁচান।
আদালত বলেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। মানুষের সেবার জন্য ক্ষমতা ব্যবহার করুন।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। আর কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রথমে আদালত জানতে চায় কারাগারে কতজন ডাক্তার নিয়োগ হয়েছে। জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, ১২৫ জন।
আদালত বলে, এই ১২৫ জন দিয়ে বাদ বাকি কীভাবে কাভার করছেন? কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, কাজ চলছে।
এ সময় আদালত বলে, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারের অবস্থা তো আরও খারাপ বলে মন্তব্য করে আদালত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে আপনারা বের হতে পারছেন না। এটা যে স্বাধীন দেশ তা মনেই হয় না। শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকলেও ডিভিশন পান অনেকেই। গরিব মানুষদের বাঁচান।
পরে আদালত কারা অধিদপ্তরের আইনজীবীর উদ্দেশে বলে, ‘আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। আপনি রিকুইজিশন দেবেন।’
এরপর আদালত শুনানি মুলতবি করে।
আরও পড়ুন:টানা তাপপ্রবাহে অস্বস্তিতে মানুষ। সঙ্গে যোগ দিয়েছে লোডশেডিং। ঘরে-বাইরে গরমের দাপট। কোথাও বসে থাকলেও শরীর দিয়ে বেয়ে পড়ছে ঘাম। এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেতে এখন আকাশের দিতে তাকিয়ে আছে সবাই।
তবে এ আশা ভঙ্গ করে দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টির ফোঁটা হয়তো পড়বে। কিন্তু গরম এতে কমবে না। বরং রাতের দিকে গরম আরও বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯ থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন তথ্য দিয়েছে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এতে বলা হয়, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে জানিয়ে আবাহওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময়ের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে বৃষ্টি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৪ মিলি মিটার।
আরও পড়ুন:সিটি করপোরেশনের কাজে অনিয়ম, অবৈধ সম্পদ ও দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দুদক কার্যালয়ে আসেন তিনি।
দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান জানান, সকাল ১০টার আগেই জাহাঙ্গীরের একজন আইনজীবী দুদক কার্যালয়ে আসেন। এরপর তিনি এসে হাজির হন।
ভুয়া ব্যাংক হিসাবে অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে জাহাঙ্গীর আলমকে গত ১৬ মে নোটিশ দেয় দুদক। এ ছাড়া আলাদা নোটিশে ২১ ও ২২ মে হাজির হয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আলী আকবর।
গত ১৮ মে দুদকের তলবে হাজির হতে এক মাস সময় চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে কোনো জবাব না পেয়ে ২১ মে দুদকে উপস্থিত হয়ে সময় চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আসেন তিনি। পরে দুদক তাকে চলতি মাসের ৬ ও ৭ তারিখ দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলে।
মন্তব্য