গাজীপুর নগরীর যানজট সমস্যা ও জলাবদ্ধতা নিরসনকে প্রাধান্য দিয়ে ২৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খান।
রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের প্রকৌশল ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশন থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এই সিটিকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চান বলে জানিয়েছেন এই প্রার্থী।
আজমত উল্লা বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাজীপুর মহানগরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। প্রায় ৫৮ বছর যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি।
তিনি বলেন, আপনাদের মূল্যবান ভোটে মেয়র নির্বাচিত হলে আমি একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বছর, দুই বছর ও পাঁচ বছর মেয়াদি তিন স্তর বিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করবো।
আজমত উল্লার ঘোষিত ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার
সেবার মান বৃদ্ধি
অভিজ্ঞ নগরবিদ ও প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে বিশ্বমানের একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন সনদের ফি, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি অনলাইনের মাধ্যমে পরিশোধের ব্যবস্থা এবং ওয়ার্ডগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা ও ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
হোল্ডিং কর
হোল্ডিং করের হার না বাড়িয়ে রিভিউ বোর্ডের মাধ্যমে সহনশীল পর্যায়ে চূড়ান্ত করা হবে। অধিগ্রহণকৃত ভূমির জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান সরকার কর্তৃক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তা যথাযথভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যসেবা
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোগ নেওয়া হবে। স্বল্পমূল্যে অ্যাম্বুলেন্স। সার্ভিস সেবার উদ্যোগ নেওয়া, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের মৃত্যুর পর প্রয়োজন অনুযায়ী কাফনের কাপড়ের ব্যবস্থা করা এবং সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে শ্রমিক, বস্তিবাসী ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য কার্ড/লাল কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন
সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে সব নাগরিকদের সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার জন্য ‘জিআইএস’ পদ্ধতি অবলম্বন করে সার্ভের মাধ্যমে ড্রেন ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রতিবন্ধী নাগরিক এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ হবে।
গুরুত্ব বিবেচনায় সড়ক উন্নয়ন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট জনদের নামে রাস্তার নামকরণ ও নির্মাণ কাজের গুণগতমান নিরীক্ষার জন্য শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।
যানজট নিরসন, পার্কিং, ফুটপাতসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ
পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাথ নেটওয়ার্ক, যানজট নিরসনের জন্য বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ এবং পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠনসহ অন্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ, নতুন ফুটওভার ব্রিজ, আধুনিক বাসস্ট্যান্ড ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাগরিকদের রেলে যাতায়াত সহজীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক
অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণসহ সরকারের সহযোগিতায় সমগ্র গাজীপুরে সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শিক্ষা
শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রয়োজনে জিসিসি'র অধীনে কারিগরি ও অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। নগরীতে অবস্থিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাসমূহে সাহায্য দেওয়া হবে। এছাড়া অনাথ, গরীব, যোগ্যতাসম্পন্ন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব পাঠাগারের আধুনিকীকরণ, নতুন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারকে সহায়তা দেওয়া হবে।
শ্রমিক-কর্মচারী ও বস্তিবাসীদের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ
পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী ভাই-বোনদের অধিকার সংরক্ষণে ও নির্যাতন প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। শ্রমজীবী মায়েদের শিশুদের পরিচর্যার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ডে-কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং বিকেল ৫টার পর তারা যেন টিসিবির পণ্য পেতে পারেন সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকার ও মালিক পক্ষের সহযোগিতায় বেতন-ভাতাদি, নিরাপত্তা, বাসস্থান ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সহয়তা দেওয়া হবে। গাজীপুর মহানগরীর সব বস্তিবাসীর প্রাপ্ত নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে ।
শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে জিসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে হেল্প ডেস্ক তৈরি করা হবে।
শিল্পকলা ওয়ার্ড সেন্টার ও ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার নির্মাণ
তরুণদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এবং বয়স্ক আর শিশুদের মিলনস্থল ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ওয়ার্ড সেন্টার’ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেগুলোতে কমিউনিটি সেন্টার, সেবাদান কেন্দ্র, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শিক্ষা কেন্দ্র,পাঠাগার প্রতিষ্ঠাসহ বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করা হবে।
ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরির মাধ্যমে নাগরিক সেবা ও নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্মার্ট নেইবারহুড কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত পাড়া উৎসবসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে ।
বর্জ্য ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ
বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্র স্থাপন এবং ৩আর পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে বর্জ্যকে জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তরিত করার পদক্ষেপ নেওয়া করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে বর্জ্য সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে বর্জ্য ও দুর্গন্ধমুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রসারের উদ্যোগ
নগরীর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীলের লক্ষ্যে নতুন অডিটোরিয়াম এবং কালচারাল কমপ্লেক্স, মুক্তমঞ্চ নির্মাণসহ মিলনায়তনগুলো সংস্কার, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে সহযোগিতার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে শিল্পকলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং মেয়র নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হবে।
ক্রীড়া উন্নয়ন
ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য উপযুক্ত মাঠ তৈরি করা, মেয়র গোল্ডকাপ ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্যোগ এবং কারাতে, সাঁতারসহ বিভিন্ন খেলার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংবাদকর্মীদের সহায়তা
গাজীপুরে অবস্থিত প্রেস ক্লাবসমূহের উন্নয়ন ও সংবাদকর্মীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও সুবিধা বঞ্চিতদের সহায়তা
বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, প্রতিবন্ধী ও বিশেষ শিশুদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, ভবঘুরে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন ও সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী যুবক/নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
পার্ক ও উদ্যান নির্মাণ ও উন্নয়ন
গাজীপুর মহানগরীতে বিদ্যমান পার্ক ও উদ্যানগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন করাসহ নতুন পার্ক নির্মাণ, শিশুদের জন্য বিশেষায়িত পার্ক নির্মাণ এবং নদী সংলগ্ন স্থানকে নান্দনিক, পায়ে হাঁটা ও বিনোদন উপযোগী করার পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ঈদগাহ, কবরস্থান ও শ্মশানের উন্নয়ন এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহায়তা
প্রতিটি ওয়ার্ডে ঈদগাহ ও কবরস্থান নির্মাণ, শ্মশানগুলোর উন্নয়ন ও নির্মাণ, নগরীর উপযুক্ত স্থানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য সমাধিক্ষেত্র তৈরির উদ্যোগ, আলেম-মাশায়েখসহ সব ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির, গির্জায় সহায়তা দেওয়া হবে।
জলাশয় দখলমুক্তকরণ, নদী ও পরিবেশ রক্ষা, মশক নিধন
পরিবেশ অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট শিল্প-কল কারখানা, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও স্থানীয় অধিবাসীদের সহযোগিতায় নদী ও জলাশয়কে দখলমুক্ত, দূষণমুক্ত ও সংস্কারের উদ্যোগ এবং নগরীর উপযুক্ত স্থানে বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। নিয়মিত মশক নিধনের কার্যক্রম নেওয়া হবে।
জিসিসির কাচাঁ বাজার ও মার্কেট আধুনিকীকরণ ও হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা
সব কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফ্রাইডে মার্কেট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পরিবেশবান্ধব আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ হবে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং হবে।
বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়
গাউক, রেলওয়ে, বিটিআরসি, তিতাস গ্যাস, পল্লি বিদ্যুৎ, ডেসকো সহ গাজীপুর মহানগরীতে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ
বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ, সম্প্রীতি রক্ষা ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য জিসিসি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।।
গাজীপুরের ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ
গাজীপুরের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা
গাজীপুরকে মাদকমুক্ত মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি সংগঠন, যুব সংগঠন, ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় মাদকসেবীদের সুচিকিৎসার ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থানের এবং মাদক বিরোধী সামাজিক আন্দোলনকে আরো গতিশীল করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
নতুন আয়ের উৎস সৃষ্টি
আধুনিক বিপণীবিতান তৈরি এবং যুব নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে গাজীপুরে বিনিয়োগে উৎসাহিত করাসহ নতুন আয়ের উৎস তৈরি করা হবে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। সিটি করপোরেশনের প্রতিটি বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে জিসিসির সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। ‘জনতার মুখোমুখি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহানগর ও ওয়ার্ড ভিত্তিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ইশতেহার ঘোষণার সময় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, আইনজীবী ওয়াজউদ্দিন মিয়া, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, আইনজীবী আমানত হোসেন খান, ইলিয়াস আহমেদ, মজিবুর রহমান, আব্দুল হাদী শামীম, আইনজীবী রিনা পারভীন, মাসুদ রানা এরশাদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ভারত ও পাকিস্তানের চলমান সংঘাতকে ঘিরে যশোরের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তবে বিজিবি টহল জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোয় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, যশোরে ৭০ কিলোমিটার এই সীমান্ত রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সাতক্ষীরার ৭০ ব্যাটালিয়ন রয়েছে। সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নীরব নজরদারির সঙ্গে বিজিবি জোরদার করেছে টহল। এলাকাবাসীও সীমান্তের দিকে নজর রাখছেন।
সীমান্তবাসী আল মামুন জানিয়েছেন, এখনও যশোর সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিএসএফের অপতৎপরতায় কোনো প্রকার অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান বিজিবির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিহত করতে প্রস্তুত এলাকাবাসী।
সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের থাকলেও এই সীমান্ত এখন স্বাভাবিক। তবে আগে ৫০০ গজ অন্তর একজন বিএসএফ সদস্য দায়িত্ব পালন করলেও এখন ৩০০ গজ অন্তর দেখতে পাওয়া গেছে। এটা কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। যদি বিএসএফ কোনোরকম তৎপরতা দেখায়, তাহলে বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।’
৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, সীমান্তে বিজিবিকে কঠোর আবস্থানে রাখা হয়েছে।
নিরাপওা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারত থেকে যাতে কোনো অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বিজিবিও টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও ৯০ কিলোমিটার পায়রা নদীতে অবাধে অবৈধ জাল দিয়ে রেণু পোনার সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা নিধন করছে জেলেরা। এতে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
মৎস্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ অবৈধ সুবিধা নিয়ে পোনা নিধনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এমন অভিযোগ সচেতন জেলেদের। এতে অসাধু রেণু পোনা ব্যবসায়ীরা আরও উৎসাহিত হচ্ছেন।
দ্রুত রেণু পোনা নিধনের সঙ্গে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সাগর ও পায়রা নদী থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জেলেরা।
জানা গেছে, বছরের মধ্য ফাল্গুন থেকে শুরু করে মধ্য জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চিংড়ি ও বাগদা মা-মাছ সাগরের মোহনা ও নদ-নদীর মিঠা পানিতে রেণু পোনার জন্ম হয়। বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত রেণু পোনা মিঠা পানিতে থাকে। ওই সময় জেলেরা অবৈধ মশারি জাল ফেলে ওই পোনাগুলো শিকার করেন। এ রেণু পোনা শিকারের সঙ্গে আমতলী-তালতলী উপজেলার অন্তত ৩০ হাজার জেলে পরিবার জড়িত। প্রতিদিন তারা অন্তত এক কোটি রেণু পোনা আহরণ করেন। ওই রেণু পোনার সঙ্গে অন্তত ১০ গুণ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা নিধন হচ্ছে। এতে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।
দাদন ব্যবসায়ীরা জেলেদের থেকে ১০০ চিংড়ি ও বাগদা রেণু পোনা ১৫০-২০০ টাকা দরে ক্রয় করেন। ওই পোনা খুলনা, বাগেরহাট ও যশোরসহ বিভিন্ন এলাকার ঘের মালিকদের কাছে ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে গত আড়াই মাসে অন্তত কয়েকশ কোটি টাকার চিংড়ি ও বাগদার রেণু পোনা আহরণ করেছেন জেলেরা।
অভিযোগ রয়েছে দাদন ব্যবসায়ীরা উপজেলা মৎস্য অফিস, পুলিশ ও নৌপুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে অবৈধ নেট মশারি জাল ফেলে জেলেদের দিয়ে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ রেণু পোনা শিকার করাচ্ছে। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মিল রেখে জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের প্ররোচনায় পড়ে ওই রেণু পোনা শিকার করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দাদন ব্যবসায়ী বলেন, তালতলী উপজেলা মৎস্য অফিসার ভিক্টর বাইনকে প্রতি মাসে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। ফলে তারা অবাধে জেলেদের থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করে গাড়িতে রপ্তানি করতে পারছেন। তারা আরও বলেন, পুলিশ ও নৌপুলিশ সবাই এ বিষয়টি জানে।
আমতলী-তালতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ ও শিশুরা নেট মশারি জালের মাধ্যমে বাগদা ও চিংড়ির রেণু পোনা শিকার করছে। লাভজনক হওয়ায় জেলে পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুরা এ পেশায় ঝুঁকে পড়েছেন।
আমতলী-তালতলী উপজেলার শতাধিক পয়েন্টে আড়তদাররা জেলেদের থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করে গভীর রাতে মিনি ট্রাক, মোটরসাইকেল ও বাসে করে খুলনা, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করছে।
গতকাল দুপুরে তালতলী উপজেলার রেণু পোনার আড়তদার দুলাল মিয়ার আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, আড়ত ঘরের সামনের তালা দেওয়া, পেছনের দরজা দিয়ে জেলেরা পোনা নিয়ে আসেন। দুলালের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম ওই পোনা গণনা করে পাত্রে রাখছেন।
জেলে মালেক ও জয়নাল বলেন, জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মিল রেখে রেণু পোনা শিকার করতে হয়। রেণু পোনা শিকার করা অন্যায় কিন্তু কেউ তো নিষেধ করছে না। তারা আরও বলেন, মহাজনদের যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে রেণু পোনা আহরণে আসতে হয়।
শিশু নাদিম বলেন, ‘হুনছি পোনা ধরা নিষেধ কিন্তু স্যারেরা তো মোগো মানা হরে নাই।’
তালতলীর অবৈধ বাগদা রেণু পোনা ব্যবসায়ী বশির হাওলাদার বলেন, ‘বাগদা ও চিংড়ির রেণু আহরণ নিষিদ্ধ তা জানি। কিন্তু জেলেরা নিয়ে এলে আমরা তো ফেলে দিতে পারি না। তারা আরও বলেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, নৌপুলিশ ও থানা পুলিশ সবই জানেন, তারা তো কিছু বলেন না। শুধু আপনারাই (সাংবাদিক) মোদের ডিস্টার্ব করেন।’
তালতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১২টা অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কিছু জাল পুড়ে ফেলেছি।’ উপজেলা শহরের নিকটবর্তী দুলাল মিয়া ও বশির উদ্দিনের আড়তে রেণু পোনা জেলেদের থেকে সংগ্রহ করে গাড়িতে চালান করছে, এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার দাশ বলেন, অবৈধ রেণু পোনা নিধন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে শতাধিক নেট মশারি জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত আছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সামলা বলেন, রেণু পোনা আহরণ অবৈধ। রেণু পোনা নিধন বন্ধে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত আছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসারকে নিয়ে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন বলেন, রেণু পোনা নিধন রোধে অভিযান অব্যাহত আছে। উপজেলার কোনো মৎস্য কর্মকর্তা রেণু পোনা নিধনের যোগসাজশের সঙ্গে জড়িত থাকলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে রেণু পোনা মজুত করে বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এ মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেব।’
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী নেতা শেখ মো. নিজামের বালুর রাজ্যে হানা দিয়েছেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার পশ্চিম উজানচর এলাকায় শেখ নিজামের মালিকানাধীন গোধূলি পার্কে অভিযান চালিয়ে সেখানকার বিশাল জলাশয় থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে ৩টি ড্রেজার মেশিনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ৫টি বালুবাহী ট্রাক জব্দ করেন ইউএনও।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে শেখ নিজাম সেখানে তার ক্রয়কৃত কয়েক শ বিঘা জমিতে মৎস্য প্রকল্পের পুকুর খননের নামে বিপুল পরিমাণ মাটি ও বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। এভাবে সেখানে পুকুরের নামে বড় বড় দিঘির সৃষ্টি করে তিনি কোটি কোটি টাকার মাটি ও বালু বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ছিল সহায়তার অভিযোগ। প্রকল্পের আশপাশের বহু লোকের কৃষি জমি ওই জলাশয়ে ধসে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। হয়েছে একাধিকবার মানববন্ধন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে অনেক সংবাদ।
কিন্তু শেখ নিজাম রাজবাড়ীর সাবেক এমপি ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর একান্ত স্নেহধন্য হওয়ার সুবাদে সেখানে প্রশাসন কখনোই কোনো ধরনের অভিযান চালায়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কাজী কেরামত আলী বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে মোট ৪টি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস এবং মাটি ও বালু পরিবহনের দায়ে ১০টি মাটি বহনকারী ড্রাম ট্রাক জব্দ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদুর রহমান।
এদিকে গত ৬ মে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মাখন রায়ের পাড়া এলাকায় মরা পদ্মা নদী হতে বালু উত্তোলনের দায়ে শহিদ নামের এক বালু ব্যবসায়ীর একটি ড্রেজারের ৫০-৬০টি পাইপ ধ্বংস করে উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহায়তার অভিযোগ এনে স্থানীয় দুলাল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির উপর চড়াও হয়েছেন বালু ব্যবসায়ী সহিদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য লিপু মন্ডল।
তবে ইউএনও নাহিদুর রহমান জানান, লিপু মন্ডলের সেখানে একটি সরকারি রাস্তায় বালু ফেলার কথা থাকলেও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে বালু ফেলা হচ্ছিল। সে জন্য সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। দুলাল বিশ্বাস বা এলাকার অন্য কেউ এ বিষয়ে তাকে কিছু বলেনি।
ইউএনও আরও জানান, অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন কিংবা নদী ও জলাশয় হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করে সড়কে জান-মালের নিরাপত্তা ও ক্ষতিরোধ নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান আগেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। ভবিষ্যতেও চলবে।
অভিযানে আটক করা মাটিবাহী ড্রাম ট্রাকগুলোর চালকরা পলাতক রয়েছেন। মালিকরা এলে তাদের কাছ থেকে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা আদায়সহ সতর্ক করা হবে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাচন অফিস অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই অফিসের ঘুষ ও দুর্নীতির বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ভুক্তভোগীরা পোস্ট দিচ্ছেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোটার জটিলতার কারণে নাগরিক নানান সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নতুন ভোটার হওয়া, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধন ও ভোটার স্থানান্তরসহ সব কাজেই গুনতে হয় টাকা। ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা থেকে নির্বাচন অফিসার বুলবুল আহমেদ এখানে যোগদান করেন। যোগদানের পরেই তিনি বিভিন্ন ঘুষ ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রবাসীরা তাদের ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে এলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তিনি ঘুরাতে থাকেন। পরে জরুরী ভিত্তিতে করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোট অংকের টাকা দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। তার অফিসে প্রায় ১ হাজার সেবা প্রার্থীর ভোটার স্থানান্তর ও সংশোধনের তদন্ত প্রতিবেদন আটকে রয়েছে। এই কর্মকর্তাকে ৩ বছর আগে এ ধরনের অনিয়ম ও সেবাপ্রার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করায় কুমিল্লার সদর থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয় রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায়।
সরেজমিনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের দিকে নির্বাচন অফিসের সামনে ও বিভিন্ন কক্ষের ভেতর সেবাগ্রহীতাদের ঘুরতে দেখা যায়। নির্বাচন কর্মকর্তা ভিড় ঠেকাতে অফিসের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখেন। নতুন আইডি কার্ড করতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে শতাধিক সেবাগ্রহীতা এসেছেন। বেশ কয়েকজন দালাল অফিসের ভেতরে অবস্থান করে। সেবা গ্রহীতারা দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই অফিসের পিয়ন শহীদ রুমে ঢুকতে দেন। পরে মেলে কাজের রাস্তা। দালালদের অধিকাংশই নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মচারীদের সাথে রয়েছে সখ্যতা।
ভুক্তভোগী শাহিদুর রহমান অভিযোগ করে জানান, গত ৩০ এপ্রিল বেলা ২ টার দিকে নতুন ভোটার হতে বেগমগঞ্জ নির্বাচন অফিসে যান। নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ আবেদনে কাগজপত্রের ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। তিনি একইভাবে অন্যান্য নতুন ভোটারদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামের শাকিল তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন, তিনি এরআগে এনআইডি সংশোধন করতে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়েছিলেন। নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ সংশোধন হবে না মর্মে জানিয়ে দেন। পরে তার কাছে সংশোধন করিয়ে দিতে ১০ হাজার টাকা ঘুষ করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় তার সাথে দুর্ব্যবহার করে ওই কর্মকর্তা তার রুম থেকে তাড়িয়ে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেগমগঞ্জ নির্বাচন অফিসের এক কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ এই অফিসে যোগদান করার পর অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়েছে। তিনি নিজেই সেবা প্রার্থীদের কাছে এনআইডি সংশোধন, স্থানান্তর ও নতুন ভোটার হতে ঘুষ নেন। আর সেবা প্রার্থীদের সাথে প্রতিদিন দূর ব্যবহার করে থাকেন। বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, নতুন ভোটার হতে সেবা প্রার্থীরা ত্রুটিপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে আসেন। তাই তিনি একটু রাগান্বিত হন। এখান থেকে সেবা না পেয়ে ফিরে যাওয়া লোকজনই ফেইসবুকে দুর্নাম ছড়াচ্ছে।
ময়লা-আবর্জনা আর অবৈধ দখলের কারণে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ জারিরদোনা শাখা খালটি। এ জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রশাসনের উদাসীনতাকে দুষছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজার অংশে জারিরদোনা খাল দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট-বড় বহু দোকানপাট ও বহুতল ভবন। কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই খালের পানি বাধাগ্রস্ত করে ইচ্ছামতো সরু পুল, কালভার্ট নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। সেই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন অবৈধ দোকানপাট। এ ছাড়া এলাকার কিছু প্রভাবশালী বাজারের আবর্জনা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে খালটি ভর্তি করে ফেলেছেন। যাতে করে পরে সময় সুযোগ বুঝে ওই স্থান দখলে নেওয়া যায়।
এলাকাবাসী জানান, চরফলকন, চরলরেন্স, হাজিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিকাজ এ খালের পানি প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে যেমন পানি সংকটে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনজনিত সমস্যায় সয়াবিন, ধান, মরিচ, বাদাম ও সবজীসহ বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্তমান এ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা চলছে। খালটি দখলের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জীবনযাত্রা চরম দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের। বন্যার পানি না নামার কারণ হিসেবে খাল দখলকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
হাজিরহাট এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নূর সেলিম বলেন, জারিরদোনা শাখা খালটির সংযোগ সরাসরি মেঘনা নদীর সঙ্গে। আশির দশক পর্যন্ত এ খালটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হিসেবেই বিবেচিত ছিল। এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যেও এর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। ওই সময়ে কাঁচা রাস্তা দিয়ে বাস-ট্রাক যাতায়াত করা ছিল দুর্সাধ্য। এমনকি ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এ অঞ্চলের সড়ক পথই ছিল না।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৮০ দখলবাজের কবজা থেকে খালটি উদ্ধার করতে উচ্ছেদের আদেশ হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। তারা খাল উদ্ধারে গড়িমসি করে সময় পার করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উপজেলা ভূমি অফিসের তথ্যমতে, পিএস জরিপে হাজিরহাট বাজার অংশে খালের প্রশস্ততা ছিল গড়ে প্রায় ৩২ ফুট। বর্তমান আরএস জরিপে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ ফুটে। কিন্তু কিছু ইমারত (ভবন) এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে ওই সব অংশে খালের প্রশস্ততা বর্তমানে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি নেই।
হাজিরহাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাছান বলেন, ‘এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে খালটি সংস্কার করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখা একান্ত জরুরি। পুরো খাল দখল করে যারা ইমারত তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে খালটি দখলমুক্ত করা এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাত হুসাইন বলেন, ‘জারিরদোনা খাল দখলমুক্ত করতে ইতোমধ্যে আদেশ হয়েছে। আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব।’
এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত-উজ জামান বলেন, খালটি সংস্কার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
গত মার্চের ১৯ তারিখে চাল না দেওয়া ও চাল সংগ্রহে চুক্তি না করায় রাজশাহী বিভাগে ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে খাদ্য বিভাগ। রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য বিভাগ থেকে চাল সংগ্রহ মৌসুম শেষ হওয়ার পর সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এই সুপারিশ পাঠানো হয়। সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ না দেওয়ায় রাজশাহী বিভাগের ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ হয়েও কোনো চাল সরবরাহ করেনি এসব চালকল মালিকরা। এছাড়া চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে অসহযোগিতাকারী ৯১৩টি চালকলকেও সাবধান করা হয়েছে।
খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সাথে চুক্তি করেও ঠিকভাবে চাল সরবরাহ দেয়নি এমন চালকলের সংখ্যা ১৬২টি। এর মধ্যে চুক্তির ৮০ ভাগ চাল দিয়েছে এমন চালকলের সংখ্যা ৩০টি। ৫০ ভাগ চাল দিয়েছে- এমন চালকলের সংখ্যা ৭১টি। আর চুক্তিবদ্ধ হয়েও কোনো চালই দেয়নি এমন চালকলের সংখ্যা ৬১টি। এছাড়া, ব্যবসা করলেও চাল সরবরাহের চুক্তি না করা চালকলগুলোরও লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ।
রাজশাহী খাদ্য অফিসের তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগে আমন সংগ্রহ ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫৬,৩৫৯ টন, সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন (লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭%), সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন। আর আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন। সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ মেট্রিক টন।
৬১টি চালকলের মধ্যে যারা সিদ্ধচালের কোনো চালই প্রদান করেনি- এমন চালকল রাজশাহীর একটি, নওগাঁয় ৮টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ তিনটি, পাবনায় ১১টি, বগুড়ায় ৩৪টি ও জয়পুরহাটে তিনটি। আর আতব চাল দেয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি মিল। এর আগে এসব চালকল মালিকদের ব্যাখ্যা তলব করা হয়। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় এসব চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
রাজশাহী খাদ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি উপপরিচালক ওমর ফারুক বলেন, সরকারি যেকোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ হলে তা বাস্তবায়ন না করতে পারলে অপরাধ বলে গণ্য হবে। যেসব মিল চুক্তি করেও ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে, তাদের জামানত থেকে জরিমানা কেটে নেওয়ার আর যারা কোনো চাল সরবরাহ করেনি, তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছিলাম। রাজশাহী বিভাগের যে সব মিল চাল দেয়নি বা চুক্তিযোগ্য ছিল কিন্তু চুক্তি করেনি- এমন মিল ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। এদের মধ্যে ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। বাকিদের শোকজ করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যারা চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
নীলফামারীর জলঢাকায় ইজারাবিহীন খাসে যাওয়া মীরগঞ্জ হাট-বাজারে গরু-ছাগল ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সরেজমিনে গিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায়, সরকারি খাস খতিয়ানে যাওয়া মীরগঞ্জ হাট-বাজারের পশুরহাটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গরু ক্রেতার কাছ থেকে রশীদ ফি ৬০০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদাসহ গরু প্রতি মোট ৮০০ টাকা আদায় করছেন হাট-বাজারের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ। এ হাট-বাজারে প্রশাসনের কাউকে দেখা না গেলেও সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুইজন ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক হাট বাজারের অফিসে উপস্থিত হতে দেখা যায়। তারা হলেন গোলনা ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম ও কাঁঠালী ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। মীরগঞ্জ হাট-বাজারের টোল আদায়ের মুল দায়িত্বে ছিলেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে হাটে এসেছি। তারা আমাদের চাপে ফেলে হাটের টোল আদায় করছেন। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করেছি।
তারা কারা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা বিএনপি-জামায়াতের লোকজন। সংবাদকর্মীদের দেখে হাট-বাজারের থাকা ক্রেতা বিক্রেতা এগিয়ে এসে বলেন, গত ৩টা হাটে শুধু গরু ক্রেতার কাছে রশীদের ফি বাবদ ৬০০ টাকা নিয়েছেন। আর যারা গরু বিক্রেতা ছিলাম আমাদের কাছ তেকে কোন প্রকার চাঁদা নেয়নি। কিন্তু আজকের হাটে গরু ক্রেতার কাছে রশীদের মাধ্যমে ৬০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছে বিধি পরিপন্থি অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদা নেয়। হাটের লোকজন আমাদের কাছে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন। একপর্যায়ে একদল লোক দৌড়ে এসে সংবাদকর্মীদের ওপর চড়াও হয় এবং আক্রোশমুলক গালমন্দ করতে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা এবং হত্যার হুমকি প্রদর্শন করেন।
লোকমুখে জানা যায়, তারা উপজেলা বিএনপির একাংশ একটি গ্রুপের বাহিনী। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরের বাংলা ১৪৩২ সালে উপজেলার ২৬টি হাট ইজারা দেওয়ার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে ১৭টি হাটের দরপত্র জমা হলে বিধিমোতাবেক দরপত্র দর দাতাদের মধ্যে হাট-বাজার গুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে ৯টি হাটের কোন দরপত্র জমা না হওয়ায় হাট-বাজার গুলো খাস খতিয়ানে চলে যায়। খাস খতিয়ানে যাওয়া হাট-বাজার গুলো হলো, মীরগঞ্জ হাট-বাজার, পাঠানপাড়া হাট-বাজার, হলদিবাড়ী নালারপাড় হাট-বাজার, হলদিবাড়ী জয়বাংলা হাট-বাজার, নবাবগঞ্জ হাট-বাজার, ডিয়াবাড়ী হাট-বাজার, বালারপুকুর চৌধুরীর হাট-বাজার, হরিশ্চন্দ্রপাঠ হাট-বাজর, খুটামারা রহমানিয়া হাট-বাজার ইত্যাদি। এই হাটগুলো বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন তাদের নিজেদের নিয়োগকৃত জনবল দিয়ে হাট-বাজারের টোল আদায় করছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন বলেন, লিখিতভাবে কাউকে হাট-বাজার দেওয়া হয়নি। কিন্তু খাস খতিয়ানের হাট-বাজারে কিছু লোকের সহযোগিতা নিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ২০০ টাকা টোল আদায়ের কোন এখতিয়ার নেই। যদি এরকম কোনো প্রমাণ আপনারা দিতে পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য