আর ১০ দফা ২০ দফা নয়, আজ থেকে দাবি মোদের একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পাশাপাশি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন তাদের ঠুটো জগন্নাথ। দেশে ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে সরকার। এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন করতে দেব না। আন্দোলনের মাধ্যমে এ ভোটচোর সরকারকে হটাতে হবে।
শনিবার বিকেলে লালমনিরহাটের কালেক্টরেট মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল এক জনসভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। বর্তমান সরকার দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংক ও বীমা খাত লুটপাট করে দেশের টাকা পাচার করেছে বিদেশে। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল। ঘরে ঘরে চাকরি দেবে বলেছিল, কিন্তু পারেনি। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে নেমে আসে জুলুম, নির্যাতন আর মিথ্যা মামলা। কারণ তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। সারা দেশে ৪০ লাখ নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার।
‘রংপুর থেকে যখন লালমনিরহাটে প্রবেশ করি তখন দেখি রাস্তাঘাট খুবই খারাপ। সরকার বলছে উন্নয়ন উন্নয়ন আর উন্নয়ন। কিন্তু এ উন্নয়ন শুধু আওয়ামী লীগের ঘরে হচ্ছে; বাইরে নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যাংকে টাকা ভরছে আর দেশের বাইরে বাড়ি করছে।’
কৃষক আন্দোলনের নেতা নুরল দীনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনাদের এই এলাকায় তার বাড়ি। যিনি কৃষক আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, ‘কোনটে বাহে জাগো সবাই।’ আজকে আবার সেই ডাক এসেছে। কারাগারের অভ্যন্তর থেকে গৃহবন্দী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে; তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, ‘ফয়সালা হবে কোন পথে? ফয়সালা হবে রাজ পথে।’ যে বাংলাদেশকে আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, যে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করেছিল একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে গড়তে, সেই বাংলাদেশকে আমরা ফিরিয়ে আনবো আবারো।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বিশেষ অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক উইং সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার হাসান রাজীব প্রধান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান, বিএনপি নেতা একেএম মমিনুল হক, রোকন উদ্দিন বাবুল প্রমুখ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বরগুনায় স্বামীর বাসা থেকে রোববার বিকেলে দেবশ্রী রায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো দেবশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার জেলার তালা উপজেলায়।
বরগুনা সদর থানার ওসি এ কে মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে দেবশ্রী আত্মহত্যা করেছে। স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল বলে জেনেছি আমরা।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তার বাবার সঙ্গে কথা হয়। ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার ক্লাস প্রতিনিধি আমাকে জানিয়েছে পারিবারিক কলহের কারণে সে আত্মহত্যা করেছে।’
আরও পড়ুন:বাবা-ছেলের অর্থের দ্বন্দ্ব নিয়ে সালিসে কথা কাটাকাটির জেরে আসামিপক্ষের একজনের হাতে কামড় দিয়েছেন বাদীপক্ষের একজন।
সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের আদালতে আইনজীবী সমিতির ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কূর্শা পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুপালি হাজী। টাকা-পয়সার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ তুলে দুই সন্তান নজরুল ও তাজরুলের নামে তিনি মামলা করেন আদালতে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে বাবার কাছে আমানত রাখা টাকা-পয়সার হিসাব দেন না বলে অভিযোগ সন্তানদের। এ বিষয়টি নিয়ে আদালতে সমাধানের জন্য আসে উভয়পক্ষ।
সন্তানদের সঙ্গী হন মেয়ের জামাই শাহিন। আর রুপালি হাজীর সঙ্গী হয়ে আদালতে আসেন অভিযুক্ত হুমায়ুন। সমাধানের আলোচনার এক পর্যায়ে শুরু হয় তর্ক। তর্কের জেরেই ঘটে এমন ঘটনা।
রুপালি হাজীর ছেলে তাজরুল ইসলাম জানান, টাকা পয়সার হিসেব নিয়ে তাদের বাবার সঙ্গে বেশ কিছুদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে তার বাবা তাদের দুই ভাইয়ের নামে মামলা করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা আদালতে এসেছিলেন।
তিনি জানান, আদালতে আসার পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হলে তাদের বাবার সঙ্গে থাকা এক ভাড়াটে তার ছোট বোন জামাইকে ডান হাতে কামড় দিয়ে মাংস ছিড়ে নিয়ে যায়। তার ছোট বোন জামাই শাহিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত মিনহাজ উদ্দিন শাহিন জানান, তার শ্বশুর রুপালি হাজীর সঙ্গে ছেলেদের ঝামেলা চলছিল। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের জন্য আইনজীবী সমিতিতে এসেছিলেন তিনি। এ সময় তার শ্বশুরের সঙ্গে থাকা একজনকে বাইরে যেতে বলেন তিনি। আর তাতেই তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে কামড় দেন তাকে।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীরের ভাষ্য, রুপালি হাজীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে তার ভালো সম্পর্ক। এ জন্য তার সঙ্গে আদালতে এসেছিলেন তিনি। এসে দেখেন রুপালি হাজীর ছেলেরা তার সঙ্গে তর্ক করছে। তিনি তাদেরকে থামতে বললে রুপালি হাজীর মেয়ের জামাই শাহিন তাকে ধরে ফেলেন। এক পর্যায়ে শাহিনকে কামড় দিতে বাধ্য হন তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. মাকসুদুর রহমান জানান, সকালে কামড়ে আহত হয়ে শাহিন নামে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আঘাতটা বেশ গুরুতর।
তিনি বলেন, কামড় দেয়া লোকটা যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে আহত ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আহত ব্যক্তিকে আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি, বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
কিশোরগঞ্জের আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন জানান, রুপালী হাজী এবং তার ছেলেদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় বাবা বাদী হয়ে তার ছেলেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা উভয় পক্ষ কোর্টে এসেছিল। বিভিন্ন বিষয় আলোচনার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তর্ক বেধে যায়। তখন রুপালী হাজীর সাথে থাকা হুমায়ুন নামে এক লোক তার ছেলেদের সাথে থাকা মিনহাজ উদ্দীন শাহিনকে (রুপালী হাজীর মেয়ের জামাই) কামড় দেয়।
তিনি বলেন, যেহেতু বাবা-ছেলে বিষয় তাই আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। সমাধান না হলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধুর সেতুর পূর্বপ্রান্তে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া বগি উদ্ধারের পর ওই রুটে প্রায় সাড়ে পাচ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সোমবার রাত ২টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ।
ট্রেন উদ্ধারের পর রাজধানীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেনকে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার রাত ৯টার দিকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটির একটি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। রাত ২টার দিকে ক্রেনের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনের বগি উদ্ধার করে বগিটি সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
পরবর্তীতে রিলিফ ট্রেনের সহায়তায় বগিটি টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। বগিটি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় অন্যান্য স্টেশনে কয়েকটি বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন আটকা পড়ে থাকে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ বলেন, রাত দুইটার দিকে ক্রেনের মাধ্যমে বগিটি উদ্ধার করা হয়। পঞ্চগড় ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন লাইনের জন্য এই ঘটনা কি না বা কী কারণে লাইনচ্যুত হয়েছে সেটা তদন্ত প্রতিবেদনের পরই বলা যাবে।
গাজীপুরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ বছর বয়সী তাওহীদের মৃত্যুতে ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাাঁড়াল ১১ জনে।
ইনস্টিটিউটের হাইডিফেন্সি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা গেছে। তার শরীরে ৮০ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
তাওহীদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানা এলাকায়। তার বাবা সজল মিয়া গাড়ি চালক। শিশুটি বাবা মায়ের সঙ্গে কালিয়াকৈর তেলিরচালা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকত।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাজীপুরে দগ্ধ তৌহিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। রোববার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোতালেব, জহিরুল, মো. সোলায়মান ও রাব্বি মারা যান। এ পর্যন্ত নারী শিশুসহ ১১ জন মারা গেলেন।
তিনি জানান, চিকিৎসাধীন ১৭ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। চারজন বার্ন রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুন থেকে দগ্ধ হয়ে নারী-শিশুসহ ৩৪ জনের মধ্যে ৩২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়।
তেলিরচালার টপস্টার কারখানার পাশে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী শ্রমিক কলোনি তৈরি করে ভাড়া দিয়েছিলেন। তার বাড়িতে থাকা সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে গেলে পাশের দোকান থেকে নতুন গ্যাস সিলিন্ডার কিনে নিয়ে আসেন তিনি। বাড়িতে সেটি লাগানোর সময় সিলিন্ডারের চাবি খুলে গিয়ে পাশের চুলা থেকে আগুন ধরে যায়। তখন তিনি গ্যাস সিলিন্ডারটি ছুড়ে মারেন বাইরে।
ওই সময় আশপাশে থাকা শিশু, নারী ও পথচারীর শরীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৩৪ জন দগ্ধ হন। দগ্ধদের কোনাবাড়ী এলাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাদের ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন:সিলেট-তামাবিল সড়কে পিকআপ ও লেগুনা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। সিলেট এমএজি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আহত পাঁচজন।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলায় সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সামনে তামাবিল সড়কে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন প্রাণ হারান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও দু’জন।
নিহতরা হলেন- জৈন্তাপুরের চিকনাগুল এলাকার যাত্রগোল (ঠাকুরের মাটি) গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলি পাত্র, একই গ্রামের নন্ত পাত্রের স্ত্রী সাবিত্রি পাত্র, কুষ পাত্রের স্ত্রী সুচিতা পাত্র ও তার ৬ মাস বয়সি মেয়ে সন্তান বিজলী, সুভেন্দ্র পাত্রের ৮ বছর বয়সী মেয়ে ঋতু পাত্র ও নিপেন্ত্র পাত্রের স্ত্রী শ্যামলা পাত্র।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন- সুভেন্দ্র পাত্রের স্ত্রী প্রণতি পাত্র, কুষ পাত্র ও তার দুই ছেলে এবং লেগুনাচালক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জৈন্তাপুরে তামাবিল সড়কে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সামনে সিলেটগামী গরু বোঝাই পিকআপের (সিলেট-মেট্রো-ন ১১-২২৬৪) সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা লেগুনার (সিলেট-ছ ১১-১২৫২) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মঙ্গলি পাত্র, সুচিতা পাত্র, শিশু ঋতু পাত্র ও বিজলী।
খবর পেয়ে হাইওয়ে ও থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠায়। ওসমানীতে নেয়ার পর সাবিত্রি পাত্র ও শ্যামলা পাত্র মারা যান।
জানা গেছে, হতাহতরা লেগুনায় চড়ে একটি বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সিলেট-তামাবিল সড়ক দিয়ে চিকনাগুল থেকে উপজেলার মোকামপুঞ্জি যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনার শিকার হন।
দুর্ঘটনায় ৬ জনের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এ সময় সড়কটিতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় অবরোধ তুলে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ডাকাত সন্দেহে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহতদের পরিচয় মিলেছে। তাদের মরদেহগুলো মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে নিহতের কোনো স্বজন এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজে আসেননি।
নিহতরা হলেন- আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ঝাউকান্দী নিতাইটেক গ্রামের ৪৮ বছর বয়সী আব্দুল রহিম, একই উপজেলার জালাকান্দি গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী নবী হোসেন ও সোনারগাঁ উপজেলার মুছারচর গ্রামের ৪০ বছর বয়সী জাকির হোসেন।
আরও এক জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশের তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এছাড়া আহত অবস্থায় রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্ত্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে আড়াইহাজার উপজেলা জাঙ্গালিয়া গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলীকে।
পুলিশ জানায়, রোববার রাত একটার দিকে বাঘারী গ্রামের বিলের পাড়ে ৭/৮ জনের একটি দল ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। এ সময় স্থানীয়দের কয়েকজন তাদের দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেন। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে তাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের ধরে পিটুনি দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনজন। অন্যরা বিলে ঝাঁপ দেন। পরে বিল থেকে উঠিয়ে আরও দুজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। আহত দুজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যান।
সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহত চারজন ডাকাত দলের সদস্য বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘নিহত তিনজনের পরিচয় মিলেছে, আরও একজনের পরিচয় শনাক্ত করতে সিআইডি কাজ করছে। যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাদের সবার নামেই মামলা আছে।’
মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের লোকজন পাওয়া গেলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আর জাকিরের মরদেহ ঢামেকের মর্গে আছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া নিহতের ঘটনায় থানায় মামলার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে, বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিহতদের কোনো স্বজন যোগাযোগ করেছে বলে জানা যায়নি। নিহত তিনজনের কোনো আত্মীয়-স্বজন তাদের খোঁজে বা মরদেহ বুঝে নিতে আসেননি বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
ঈদের পর কারওয়ান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। আর এখানকার পাইকারি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের গাবতলীতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম সোমবার এসব কথা বলেন।
গাবতলীতে ডিএনসিসির প্রস্তাবিত কাঁচাবাজারে ডিএনসিসির আওতাধীন কারওয়ানবাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের আমিনবাজার পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তরের বিষয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন ডিএনসিসি মেয়র।
এ সময় তিনি বলেন, ‘কারওয়ানবাজার কাঁচাবাজারের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে।
‘এখানকার ব্যবসায়ীদের দ্রুতই গাবতলিতে বরাদ্দ দেয়া হবে। বরাদ্দ দেয়ার পরও যারা আসবেন না তাদের দায় নিজেদেরকেই নিতে হবে। আর বরাদ্দ পাওয়ার পর কেউ না এলে সেটি নিয়ম অনুযায়ী অন্যজনকে বরাদ্দ দিয়ে দেয়া হবে।’
মতবিনিময় সভার শুরুতে কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ গাবতলীতে ব্যবসায়ীদের স্থানান্তরে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
মেয়র বলেন, ‘প্রথম ধাপে কারওয়ান বাজার আড়ৎ মার্কেটের প্রথম তলার ৪০০ বর্গফুটের ৬২টি দোকান এবং দ্বিতীয় তলার ১৭০ বর্গফুটের ১১৪টি দোকান অর্থাৎ মোট ১৭৬টি দোকান স্থানান্তর করা হবে।
‘এছাড়াও কারওয়ানবাজারে সম্পত্তি বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১৮০টি টিনশেড দোকান আমিনবাজারে পাইকারি কাঁচাবাজারের আশপাশের উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কারওয়ান বাজারের ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে বা আগুন লাগলে বহু মানুষ হতাহত হবে। আমরা আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে চাই না৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে- ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনো ব্যবসা চলতে দেয়া যাবে না। ঈদের পর কারওয়ান বাজারের কাচাবাজারের ব্যবসায়ীদের স্থানান্তর শুরু হবে। ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিন। আপনাদের জন্য সব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।’
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কারওয়ান বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রায় ৫শ’ বছর আগে। এটি যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ঢাকার কেন্দ্রবিন্দু ছিল সদরঘাট। পর্যায়ক্রমে ঢাকা গুলিস্তান, মতিঝিল হয়ে অনেকদূর প্রসারিত হয়েছে। তাই কারওয়ান বাজার ঢাকার প্রান্তে স্থানান্তর করার মাধ্যমে স্মার্ট শহর নিশ্চিত করতে হবে। গাবতলীতে বাজার শুরু হলে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সার্বিক ব্যবস্থা নেবে।’
মতবিনিময় সভা শুরুর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিএনসিসি মেয়র গাবতলী পাইকারি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য