প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রেখে একটি আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক উন্নত জাতি গঠনে অবদান রাখতে হজযাত্রী এবং আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (হজযাত্রীদের) এবং আলেম-ওলামাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের শিশুরা এটি থেকে দূরে থাকতে পারে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রস্তুত হতে পারে।’
রাজধানীর আশকোনা এলাকায় শুক্রবার হজ অফিসে হজ কর্মসূচি-২০২৩ (১৪৪৪ হিজরি) উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের
তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং এটি সর্বদা মানুষের কল্যাণের ধর্ম যা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে।
ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস করে এমন কিছু লোকের কারণে ইসলামকে নিন্দিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তাদের কোনো ধর্ম নেই।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করছে তারা সব ধর্মেই আছে। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ মনে করে যে তারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে, তা কখনই হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা বলেননি এবং আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তা বলেননি।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং এই অল্প কিছু মানুষই ইসলামের নিন্দার কারণ হয়ে উঠছে।’ তিনি বলেন, এই জঘন্য কাজটি থেকে এই লোকদের থামাতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সবাইকে আমাদের শিশুদের সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের (হজযাত্রীদের) কাছে আমার সবচেয়ে বড় দাবি হল, আপনারা আমার বাংলাদেশের জনগণের জন্য দোয়া করবেন, যাতে তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’
তিনি হজযাত্রীদের বাংলাদেশ ও এর জনগণকে মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে কোনো দুর্যোগ বা সংকট -তা মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ- বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগণের যাতে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য প্রার্থনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট বিপর্যয় ঘটে কারণ এখানে অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা এবং পরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়।
তিনি হজযাত্রীদের দোয়া করতে বলেন যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও বর্তমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকে।
প্রথম হজ ফ্লাইটটি শনিবার বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছেন। কভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে গত বছর বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৭,৫৮৫।
কোভিড-১৯ মহামারির আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করেছিলেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো.ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী, হাবিব হাসান এমপি, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আল দুলাইহান এবং হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হজ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সরকার প্রধান বলেন, তার সরকার দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আজ বাংলাদেশকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে যেখানে দেশের মানুষ অন্তত খাবার খেতে পারছে।
বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি।’
হজের সময় হাজীদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা আল্লাহর মেহমান হিসেবে আল্লাহর ঘরের পাশাপাশি মক্কা-মদিনা শরীফে যাচ্ছেন। ‘আমরা প্রার্থনা করি যেন আপনারা নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দরভাবে হজ পালন করতে পারেন এবং সেই সাথে আপনারা সুস্থভাবে দেশে ফিরে আসতে পারেন।’
তিনি বলেন, হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে তারা ‘ই-হজ ব্যবস্থাপনা’ চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন হজের যাবতীয় কার্যক্রম যেমন প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, ফেরত, মক্কা রোড সার্ভিস, ই-হেলথ, ই-ভিসা, ফ্লাইট, হেল্প ডেস্ক, কল সেন্টার, এজেন্সি প্রোফাইল ম্যানেজমেন্ট এসব ই-হজ ব্যবস্থাপনার অধীনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসএমএসের মাধ্যমে এবং কল সেন্টার থেকে প্রতিটি হজযাত্রীকে হজ সংক্রান্ত সকল তথ্য জানিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং হজযাত্রীরা ১৬১৩৬ নম্বরে ডায়াল করে সবকিছু জানতে পারবেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১ প্রণয়ন করেছেন, যা হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও সহজ করেছে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লা খান।
রোববার বিকেলে গণভবনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব হাসান জাহিদ তুষার বাসসকে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এ সময় আজমত উল্লা তার লেখা দুটি বই প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন। বই দুটি হচ্ছে-‘রাজনীতির মহাকবি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ আদর্শ ব্যক্তি ও জাতি গঠনে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত’।
‘রাজনীতির মহাকবি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইটিতে বঙ্গবন্ধুর বংশপরিচয়, কেন তিনি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, বঙ্গবন্ধুর ইসলামি মূল্যবোধ ও চেতনা, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ মুজিবের রাজনৈতিক সংগ্রাম, শেখ মুজিব ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে গাজীপুরসহ শিল্পনগরী টঙ্গীবাসীর ভূমিকা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকার ও বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ আদর্শ ব্যক্তি ও জাতি গঠনে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত’ বইটিতে বঙ্গবন্ধু : নেতা ও নেতৃত্বগুণের জীবন্ত কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব, শেখ মুজিবুর রহমানের দায়িত্ববোধ ও সংগ্রাম, সাংগঠনিক দক্ষতা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণ থেকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও শিক্ষা, শেখ মুজিবুর রহমানের সহনশীলতা ও দক্ষতা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বগুণের পরিচয় ও জাতি গঠনের প্রেরণা, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও জাতীয় নেতৃত্বের প্রতীক, ৭ মার্চের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তুতি, ২৫ মার্চের মধ্যরাতেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে বিশ্বের বিখ্যাত ব্যক্তিদের উক্তি তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, সদ্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের কাছে পরাজিত হয়েছেন আজমত উল্লা।
আরও পড়ুন:
দেশে ডেঙ্গু ও করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিনই রাজধানীসহ সারা দেশে ভর্তি হচ্ছেন এডিস মশার কামড় খাওয়া ও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীরা।
২৪ ঘণ্টার হিসাবে রোববার সর্বশেষ ডেঙ্গুতে দেশে ৬৭ জন এবং করোনায় ৭৩ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমের আগেই বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকবে। বাড়বে করোনাও। এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ডেঙ্গু
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে ঢাকায় নতুন ভর্তি রোগী ৫৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৯ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ২০৯ জন এবং ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ১৮০ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে ভর্তি রোগী ২৯ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ মে পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগী ১ হাজার ৭৭১ জন। এর মধ্যে ঢাকায় মোট ভর্তি রোগী ১১৭৭ জন। ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগী ৫৯৪ জন।
এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৪৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৯৮৭ জন, ঢাকার বাইরে ৫৬২ জন।
এ বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আগের দিন ৯২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৬১ জনের। সংক্রমণ কমেছে ১ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনিবার শনাক্তের হার ছিল ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। রোববার কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৪ লাখ ১৮ হাজার ৮১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭১ জন। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যাননি। এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৪৬ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ২০ লাখ ৬ হাজার ২১২ জন। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। শনিবার সুস্থতার হার ছিল ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। সূত্র: বাসস
আরও পড়ুন:মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা বেশি। তাই রাজধানীবাসীসহ দেশের মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়, কারণ ওই সময়ে শুরু হয় বর্ষাকাল। এই প্রাদুর্ভাব চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ বছর মৌসুম শুরুর আগেই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
সিটি করপোরেশনকে আরও বেশি তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, প্রাক মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক জনবহুল, তার ওপর এখানে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। ফলে এখানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সহজ না। এরই মাঝে অপ্রত্যাশিত কিছু মৃত্যু হয়েছে। মে মাসে যেটুকু হয়েছে, তা অন্যান্য সময়ে হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, নগরায়নের কারণে ঢাকা মহানগরে রোগীর সংখ্যা বেশি। আমাদের পরিসংখ্যান না দেখে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা শহরে ৯ ধরনের গবেষণা করে থাকি। এসব গবেষণার মাধ্যমে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দেখি এবং পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় যেখানে ঘনবসতি সেখানে মশার উপদ্রব বেশি। তবে নির্দিষ্ট করে কোন এলাকায় সবচেয়ে বেশি সেটি বলা এ মুহূর্তে কঠিন। রোগীদের তথ্য যাচাই করে তারপর বলা যাবে। আমরা পুরো ঢাকা শহরকেই বিবেচনায় নিচ্ছি। আমাদের কাজ রোগী ব্যবস্থাপনা। ডেঙ্গু কোথায় বেশি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকারের।
অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন বলেন, ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে নগরী গড়ে উঠছে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে আমরা প্লাটিলেটকে সামনে আনি। অথচ এটি সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের উচিত সচেতনতায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া।
ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রমণের পরীক্ষা সর্বোচ্চ মূল্য ৫০০ টাকা ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরীক্ষা ১০০ টাকা। কোনো হাসপাতালে এর বেশি নেওয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা মহানগরীর পর কক্সবাজারে বেশি ডেঙ্গু রোগী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১০৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর কক্সবাজারে থাকা বাংলাদেশীদের মধ্যে এই সংখ্যা ৪২৬। এ বছর সব মিলিয়ে ১৭৫০ জন ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১৬০ জন ঢাকায় এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৩ জন, যাদের দশজন ঢাকার।
রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলতি বছর ১ হাজার ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এ ক্যাম্পে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা কঠিন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানুষের ঘনত্ব বেশি এবং পানি সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে পানি পাত্রে জমিয়ে রাখা হয়, আর এ পানিতেই মশা জন্ম নেয়। তবে ভাষাগত সমস্যা ও ক্যাম্পের ভেতরে প্রবেশজনিত সমস্যার কারণে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেখানকার উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের টিম গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক রাশেদা ইসলাম, অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:স্থানীয় সরকারের সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। এবার তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণবিধি পালন নিশ্চিত করাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় সাংবিধানিক এ সংস্থা। তফসিল ঘোষণার পর এবারই বরিশালে প্রথম প্রস্তুতিমূলক একটি সভায় আয়োজন করে বর্তমান কমিশন। সে সভায় আইন-শৃঙখলা বাহিনীকে নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে লঙ্গন না হয় সেক্ষেত্রে মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান।
অন্যদিকে তফসিল ঘোষণার পরপরই প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে ওঠেন ভোটের মাঠে। প্রচারণা শুরু আগেই যে যার ক্ষমতা প্রদর্শন, মিছিল, শোভাযাত্রা করেন। আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে বরিশালের চরোমানাই পীরের ভাই ও বরিশাল সিটির ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীমকে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেও সর্তক করেছে কমিশন।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী গত ৯ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি টাকা জরিমানা আদায় করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। ৭২টি চেকপোস্টের মাধ্যমে এই অর্থ জরিমানা আদায় করা হয়। গত ১৭ দিনে ১২৮২ টি মামলা হয় যাতে ৮০০ গাড়ি আটক করা হয়।
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিন খান নিউজবাংলাকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১২৮২ মামলা থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ১০ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আটক থেকে জরিমানা আদায় করা হয় ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করে পুলিশ। সবচেয়ে বেশি মামলা করা হয় মোটরসাইকেলে। ১ হাজার ১ টি মোটরসাইকেলে মামলার পাশাপাশি ১৪৪ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
মূলত সড়ক পরিবহনের আইণ অমান্য করায় এসব মোটরযানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই (জানুয়ারি-মার্চ) বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।
গত বছরের মার্চে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।
ব্যাংক খাতে মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশই বর্তমানে খেলাপি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৫৭ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
অন্যদিকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর তিন হাজার ৪২ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ ঋণ খেলাপি। আর সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত তিনটি ব্যাংকের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বর্তমানে খেলাপি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো এখন নিজেরাই নিজেদের ঋণ পুনঃতফসিল করছে। ফলে ব্যাংক নিজেই খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণের এ তথ্য প্রকৃত চিত্র নয়। বাস্তবে খেলাপি ঋণ আরও বেশি হতে পারে। অনেক ব্যাংক ঋণ আদায় করতে না পেরে তারল্য-সংকটে ভুগছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মার্চে খেলাপি ঋণ দেয়ায় অনেক ব্যাংক দেরি করেছে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। ফলে বাস্তবে খেলাপি ঋণ এর চেয়েও বেশি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে তা প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। কারণ, আইএমএফ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখানোর পক্ষে।
সরকার আইএমএফের কাছে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করে। তার অংশ হিসেবে আইএমএফের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে নানা পরামর্শ দেয় আইএমএফ। সে সময় খেলাপি ঋণকে ব্যাংক খাতের অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না সে বিষয়েও জানতে চায় বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার তাগিদ দেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘বিতরণ করা এসব ঋণের বেশিরভাগই অসৎ উপায় অবলম্বন করে দেয়া হয়েছে। এমন লোকদের ঋণ দেয়া হয়েছে, যারা পরবর্তী সময়ে এসব টাকা আর পরিশোধ করছে না।
‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এসব ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত থাকে। এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দিন দিন খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আর্থিক খাত দুর্বল হওয়ার কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আর্থিক খাতে নানা রকম কেলেঙ্কারি সংঘটিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব খেলাপি ঋণের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি, সেসব বিষয়ে তারা এড়িয়ে যায়।’
আহসান মনসুর বলেন, ‘যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাস্তি দেয়। আর যারা খারাপ কাজ করে তাদের বিষয়ে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয় না।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি), সরকারসহ সব পক্ষের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা করেন।
এ নীতির আওতায় গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী যেকোনো বাংলাদেশির ভিসার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২৫ মে কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই গাজীপুর সিটির ভোট হয়। স্থানীয় সরকারের এ ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছে বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাসহ অনেক নাগরিক।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন নীতির পর নির্বাচন কমিশন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি, তবে রোববার এ বিষয়ে মুখ খোলেন কমিশনার আলমগীর।
সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে কখনোই চাপ আসেনি দাবি করে কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হয় ৪৫ দিন আগে থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কী হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা পড়ারও সুযোগ পাইনি, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।
‘ভিসা নীতির সাথে গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পর্কিত নয়। নির্বাচনে আইন মেনে না চললে তিনি যেই হোন না কেন, ইসি ব্যবস্থা নেবে।’
নির্বাচনে যারা আসবেন, তাদের সবার জন্য নির্বাচন কমিশন সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘ভোটাররাও যেন ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। গাজীপুরের মতোই আসন্ন সব নির্বাচন সুষ্ঠু করবে ইসি। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করার সবকিছুই করা হবে।’
সমালোচকরা সবসময়ই সমালোচনা করেন বলে মনে করেন এ কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন, সরকারসহ সব পক্ষের ভাবমূর্তি ভালো হয়েছে। বিদেশিরা কী চাইল, সেটা নির্বাচন কমিশনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ না। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কাজ করে ও ভবিষ্যতেও করবে।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটের ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘বড় সিটি করপোরেশন। এ ছাড়াও অনেক প্রার্থী ছিলেন। তাই নির্বাচনে ফলাফল দিতে সময় লেগেছে, তবে সংসদ নির্বাচনে ফলাফল দিতে এত সময় লাগবে না।
‘কারণ, সংসদ নির্বাচনে কোনো কাউন্সিলর পদপ্রার্থী থাকবে না। এ ছাড়া প্রায় চারটা সংসদীয় আসনের সমান গাজীপুর সিটি করপোরেশন। বড় হওয়াতেই মূলত ফলাফল প্রকাশে সময় বেশি লেগেছে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে নাই। তাই আমরা বলতে পারি না আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে, কিন্তু আমরা সব দলকে বলব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে আরও জনবান্ধব হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রোববার দুপুরে বঙ্গভবনে পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ তাগিদ দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের কাজ যাতে জনবান্ধব হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করতে হবে।’
জনস্বার্থে বিভিন্ন মামলা নিষ্পত্তিতে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি তদন্ত প্রতিবেদন জমারও নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে সাইবার ক্রাইম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাইবার ক্রাইম মোকাবিলায় পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে প্রযুক্তি জ্ঞানে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি ভবিষ্যতেও এ তৎপরতা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন আইজিপি।
ওই সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য